মুখে পড়বে সদাই লাইলাহা ইল্লাল্লা[১]
আইন ভেজিলেন রাসুলুল্লা।।
নামের সহিত রূপ
ধেয়ানে রাখিয়া যপ
নিরাকারে[২] যদি ডাক
চিনবি কিরূপ কে আল্লা
লা-শরিক জানিয়া তাকে
পড় কালাম দিলে মুখে
নামরূপের ধেয়ানে চোখে
দেখবিরে নূর তাজেল্লা।।
লাইলাহা নফি সে হয়
ইল্লাল্লাহ সেই দীন দয়াময়
নফি-এজবাত যাহারে কয়
সেহিতো এবাদত-উল্লা।।
বলেছেন সাঁই আল্লা নূরী
এই জেকেরের দারজা ভারি
সিরাজ সাঁই তাই কয় পুকারি
শোনরে লালন বে-লিল্লা।।
(আরো পড়ূন)
হক নাম বল রসনা
যে নাম শরণে যাবে জঠর যন্ত্রনা।
শিয়রে শমন বসে কোন সময় বাঁধিবে কষে
ভুলে রলি বিষয় বিষে দিশে হল না।।
কবার যেন ঘুরে ফির মানব জনম পেয়েছো রে
এবার যেন আলস্ করে সে নাম ভুলো না।।
ভবেরো ভাই বন্ধু আদি কেউ কারো নয় সাথের সাথী
লালন বলে মুরশিদ-রতি করো সাধনা।।
রাত পোহালে পাখটে বলে দে-রে খাই
আমি গুরু কার্য্য মাতায় থুয়ে,কি করি আর কমনে যাই।।
এমন পাখী কে পোষে,খেতে চায় সাগর চুষে,আমি কিরূপে যোগাই,
পাখী পেট ভরিলে হয় আনন্দ, কি করবে গুরু গোসাই।।
আমি বলি আত্মারাম,পাখী লওরে আল্লাহ,নাম;
পাখী কথাতে হয়না রত,খাব রব সদাই।।
আমি লালন পড়া,পাখী আমার সেই আড়া,সবুরি কিছু নাই,
আমি বুদ্ধি শুদ্ধি সব হারায়ে,সারা হলাম পেটুক ভাই।।
(আরো পড়ূন)
কোন কলে নানান ছবি নাচ করে সদায়,
কোন কলে হয় নানাবিধ আওয়াজ উদয়।।
কলমা পড়ি কল চিনিলে,যে কলে ঐ কলমা চলে,
উপর উপর বেড়াই শুনে,ডুবিনে হৃদয়।।
কলের পাখী কলের চোয়া,কলে মহর গিরা দেওয়া,
কল ছুটিলে যাবে হাওয়া,কে রবে কোথায়।।
আপন দেহের কল না পুড়ে,বিভোর হলে কলমা পড়ে,
লালন বলে মুরশিদ ছেড়ে,কে চিনে খোদায়।।
(আরো পড়ূন)
আমার মনের মানুষের সনে,
মিলন হবে কত দিনে।।
চাতকের প্রায় অহোনিশি চেয়ে আছি কাল শশী,
হবে বলে চরণদাসী,হয় না আমার কপালগুণে।।
মেঘের বিদ্যুৎ মেঘে যমন,লুকালেন না পাই অন্বেষণ,
কালারে হারায়ে ও মন রূপ হারায়ে দর্পণে।।
যখন ঐ রূপ স্মরণ হয়,থাকে না লোক লজ্জার ভয়,
অধিন লালন বলে সদায়,প্রেম যে করে সেই জানে।
(আরো পড়ূন)
যে তোর মালেক চিনলিনা রে,
মন কি এমন জনম আর হবে রে।।
দেবের দুর্লভ এবার,মানব জনম তোমার,
এমন জনমের আবার করলি কিরে।।
নিশ্বাসের নাইরে বিশ্বাস,পলকেতে করবে নিরাশ,
তখন মনে রবে মনেরই আশা,বলবি কারে।।
এখনও শ্বাস আছে বজায়,যা করবে তাই সিদ্ধ হয়,
সিরাজ সা কয় বালে,লালন জানলি নারে।
মন আমার আজ পলি ফেরে,
দিনে দিনে পৈতৃক ধন গেল চোরে।।
ধানো মদ খেয়ে মনা,দিবা নিশি ঝোক ছোটেনা,
পাক বাড়ীর উল হলনা,কে কি করে।।
ঘরের চোরে ঘর মারে মন,হয়না খোঁজ জানবি কখন,
এক বার দিলে না নয়ন,আপন ঘরে।।
ব্যাপার করতে এসেছিলি,আসলে বিনাশ হলি,
লালন বলে গেছে,বলবি কিরে।।
(আরো পড়ূন)
কে বোঝে সাঁইর লীলা খেলা
সে আপনি গুরু আপনি চেলা।।
সপ্ততালার উপরে সে
নিরূপে রয় অচিন দেশে
প্রকাশ্যে রূপলীলা বাসে
চিনা যায় না লেগে বেদের ঘোলা।।
অঙ্গের অবয়বে দৃষ্টি
করিল সে পরম ইষ্টি
তবে কেন আকার নাস্তি বলে,
না জেনে সে ভেদ নিরালা।।
যদি কার হয় চক্ষু দান
সেই দেখে সে রূপ বর্তমান
লালন বলে তার ধ্যান জ্ঞান
হরে দেখিয়ে সব পুঁথিপালা।।
(আরো পড়ূন)
মরি হায় এ কি ভাব তিনে এক জোড়া।।
তিনের বশত ত্রিভুবনে,মিলনের এক গোড়া।।
নর নারায়ণ পশু,জীবাদী,দুয়েতে এক মিলন জোড়া,
তারা কোন যুগের দাঁড়া।।
তিন মহাজন বসে তিন ঘরে,তিনজনার মন বাঁধা আছে,আধা নেহারে,
আধা মানুষ ধরবি যদি,ভোগে দেখি বিধির বেড়া।।
তিন জনা সাত পান্তির উপরে,আধা পান্তি আছে ধরা,জানগে যা তারে,
ফকির লালন বলে সেই ছলে মিলবে সেই পথের দাঁড়া।।
(আরো পড়ূন)
কে পাবে মক্কর উল্লার মক্কর বুঝিতে
আহাদে আহাম্মদ নাম হয় জগতে।।
আহাম্মদ নামে খোদায়, মিম হরপটি নফি কয়,
মিম উঠায়ে দেখনা সবায় কি হয় তাতে।।
আকারে হয়ে জুদা,খোদা যে বলছে খোদা,
দিব্যজ্ঞানী নইলে কি তা,কে পায়ে জানতে।।
কুলহো আল্লা সুরায় আছে বিচার,
লালন বলে দেখনা এবার দিন থাকিতে।
(আরো পড়ূন)
না দেখলে লেহাজ করে, মুখে পড়লে কি হয়।
মনের ঘোরে কেশের আছে পাহাড় লুকায়।।
আহাদ নামাতে দেখি, মিম হরফটি করে নফি,
মিম গেলে সে কি হয় দেখ, পড়ুয়া সবায়।।
আহাদ আর আহাম্মদে একা এক সে মর্ম যে পায়,
আকার ছেড়ে নিরাকারে ছেজদা কি দেয়।।
জানাতে ভজন কথা, তাইতে অলিরূপ হয় খোদা,
লালন গেল ঘোলায় পড়ে, দাহারিয়ারই ন্যায়।।
কে পারে মক্কর উল্লার মক্কর বুঝিতে।।
আহাদে আহাম্মদ নাম হয় জগতে।।
আহাম্মদ নামে খোদায়, মিমি হরপটি নফি কয়,
মিম উঠায়ে দেখনা সবায় কি হয় তাতে।।
আকারে হয়ে জুদা, খোদা যে বলছে খোদা,
দিব্যজ্ঞানী নইলে কি তা, কে পায় জানতে।।
কুলহো আল্লা সুরায় তার ইশারা আছে বিচার,
লালন বলে দেখনা এবার দিন থাকিতে।।
(আরো পড়ূন)
আলেফ আর লাম মিমেতে।।
কোরান তামাম শোধ লিখিতে।।
আলেফ আল্লাজী, মিম মানে নবী, লামের হয় দুই মানে,
আর এক মানে সরায় প্রচার, আর মানে মারেফাতে।।
তার দরমিয়ানে লাম, আছে ডানে বাম, আলেফ মিম দুজনা,
যেমন গাছ বিজ অস্কুর, এমত ঘোর,না পারি বুঝিতে।।
ইশারা লিখন কোরানেরই মানে, হিসাব কর দেহেতে,
তবে পাবি লালন সব, অন্বেষণে ঘুরিস না ঘুরে পথে।।
(আরো পড়ূন)
গুরু তত্ত্ব না জানিলে।।
ভজন হবেনা পড়বিরে গোলে।।
আগে জানগে কালুল্লা, আনল হক আল্লা,
যারে মানুষ বলে, পড়ে ভূত মন আর, হসনে বারংবার,
একবার তদখনা প্রেম নয়ন খুলে।।
আপনি সাঁই ফকির, আপনি হয় ফিকির,ও
সে লীলাছিলে আপনারে আপনি ভুলে,
রব্বানা আপনি ভাসে, আপন প্রেম জন্মে।
লায়লাহাতন, ইল্লাল্লা জীবন আছে প্রেমজালে,
লালন ফকির কয়, যাবি মন কোথায়,
আপনার আজ আপনি ভুলে।।
(আরো পড়ূন)
যা যা ফানার ফিকির জানগে যারে।।
যদি দেখা বাঞ্ছা হয়, সে চাঁদেরে।।
ফিকিরি কিসের ফিকির, কিসের ফিকিরী,
নিজে হও ফানা, ভাব রব্বানা দেখে শমন যাকে ফিরে।।
নিজরূপ মুরশিদরূপ মাঝার, আছে ফানার বিধি মনরে আমার,
বিছে মুরশীদরূপ, মনরে সে স্বরূপ, মিশাও সাঁইর অটল নূরে।।
ফানার ফিকির মুরশিদের ঠাঁই,
তাই মুরশিদ ভজন আইন ভেজলেন সাই,
সিরাজ সাইর র্কপায়,
অধীন লালন কয়, জাজন করলে সাঁই রত রে।।
(আরো পড়ূন)
যদি সরায় কার্য্য সিদ্ধ হয়।।
তবে মারফতে কেন মরতে ধায়।।
শরিয়ত আর মারফত যেমন,
দুগ্ধেতে মিশান মাখন,
মাখন তুললে দুগ্ধ তখন,
ঘোল বলে তা জানে সবায়।।
মারফত মূল বস্তু জানি,
শরিয়ত তার সরপোষ খানি,
ঘুচাইলে সরপোষখানি,
বস্তুরয় কি সরপোষখানি রয়।।
আক্কেল আওল দরিয়া,
দেখনা মন-গুণ-যে ডুবিয়া,
মুর্শিদ ভজন যে লাগিয়া,
লালন বলে তাতে ভোল সবায়।।
(আরো পড়ূন)
পড়গে নামাজ জেনে শুনে।।
নিয়ত বাঁধগা মানুষ মক্কা পানে।।
মানুষে মনস্কামনা সিদ্ধি কর বর্তমানে,
খেলছে খেলা লা-শারীকাল,
এই মানুষের তন ভুবনে।।
শতদল কমলে কালা,
আসন শুন্য সিংহাসনে,
চৌভুবনা ফিরয়ে নিশান,
ঝলক দিচ্ছে নয়ন কোণে।।
মুরশিদের মেহেরে যার,
খুলেছে সেইতো জানে,
তাই বলছে লালন,
ঘর ছেড়ে মন খুঁজিস কি তুই বনে বনে।।
(আরো পড়ূন)
মনের লেঙ্গুটি এটে কররে ফকিরী।।
আমানতের ঘরে যেন হয় নাকো চুরি।।
এদেশে দেখি সদায়, ডাকিনী বোগনীর ভয়,
বিনেতে মানুষ ধরে খায়, থাকব হুসিয়ারী।
বারে বারে করি বারণ,কর আত্মা সাধন,
আকর্ষণে দুষ্ট দমন, ধরি ধরি।
কাজে দেখি বড় ফ’ড়ে লেংটি তোমার নড়ভড়ে,
খাটবেনা রে লালন ভেড়ে, টাকশালে চাতুরী।।
(আরো পড়ূন)
আছে দিন দুনিয়ায় অচিন মানুষ একজনা ।। একদিন সাঁই নৈরাকারে
কাজের বেলা পরশমণি, অসময়ে চিন না।।
ভাসলেন একা একেশ্বরে,
অচিন মানুষ পেয়ে তারে,
দোসর করলেন তৎক্ষণা।।
আলী নবী এই দুইজনা
কলমা দাতা কুল আরফিনা,
বেতালিম বে মুরিদ সে-না,
পীরের পীর হয় জান না।।
খোদায় ছোট নবীর বড়,
লালন বলে নড় চড়,
সে বিনে কেউ কুল পাবেনা।।
(আরো পড়ূন)
কে মুরিদ হয় কে মুরিদ করে।।
শুনলে জ্ঞান হয় তাইতে সুধাই, যে জান সে বল মোরে।।
হাওয়া রুহু লতিফারা, হুজুরের কারবারি,
বে মুরিদ হলে এরা, হুজুরে কি থাকতে পারে।।
মুরশিদ বালকা এই দুই জনে, কোন মোকামে বশত করে,
জানলে মনের যেত আধার, দেখতাম কুদরত আপন ঘরে।।
নূতন সৃষ্টি হলে পরে, মুরশিদ লাগে শিক্ষার তরে,
তাই বলছে লালন, সব পুরাতন নতুন সৃষ্টি হচ্ছে কেরে।।
(আরো পড়ূন)
আমি কি তাই জানলে সাধন সিদ্ধ হয়।।
আমি কথার অর্থ ভারি, আমিতো সে আমার নয়।।
অনন্ত শহর বাজারে, আমি আমি শব্দ করে,
আমার আমি চিনতে না রে, বেদ পড়ি পাগলের প্রায়।।
মুনছুর হাল্লাজ ফকির সেতো, বলেছিল আমি সত্য,
ঠিক হল সাঁইর আইন মত, সবাই কি তাই বুঝতে পায়।।
কম-বে এজনে বা-এজনে আল্লা, সাঁইর হুকুম আমি হেল্লা,
লালন তেমনি কেটো মোল্লা, ভেদ না জেনে গোল বাধায়।।
মনের ঘোর গেলনা।।
(আরো পড়ূন)
আছে মায়ের ওতে জগৎ পিতা, ভেবে দেখনা।।
হেলা করনা বেলা মেরনা।।
কোরানে সাঁই এসারা দেয়, আলেফ-যেমন লামে লুকায়,
আকারে সা-কার ঝাপা রয়, সামান্যে কি যায় জানা।।
নিষ্কামি নির্বিকার হয়ে, দাঁড়াও মায়ের স্মরণ লয়ে,
বর্তমানে দেখ চেয়ে, স্বরূপে রূপ নিশানা।।
কেমন পিতা কেমন মা সে,চিরকাল সাগরে ভাসে,
লালন বলে কর দিশে, আছে ঘরের মধ্যে ঘরখানা।।
(আরো পড়ূন)
এক অজানা মানুষ ফিরছে দেশে তারে চিনতে হয়।।
তারে চিনতে হয় তারেজানতে হয়।।
শরিয়াতের বেনা যত, জানেনা তা শরিয়তে,
জানা যাবে মারেফাত, যদি মনের বিকার যায়।।
মূল ছাড়া আজগৈবী এক ফুল, ফুটেছে ফুল ভব নদীর কূল,
চিরদিন এক রসিক বুলবুল, সেই ফুলেতে মধু খায়।।
কোরানেতে আছে খবর, আলেফে জের মিমে জবর,
লালন বলে হসনে ফাপা, মোরশেদ ভজলে জানা যায়।।
(আরো পড়ূন)
পড়ে ভূত আর হসনে মনরায়।।
কোন হরফে কি ভেদ আছে; লেহাজ করে জানতে হয়।।
আলেফ-হে-আর মিম দালেতে,আহাম্মদ নাম লেখা যায়,
মিম হরফটি নফি করে, দেখনা খোদা কারে কয়।।
আকার ছেড়ে নিরাকারে ভজলিরে আধেঁলা প্রায়,
আহাদে আহাম্মদ হল, করলিনে তার পরিচয়।।
জাতে ছেফাত ছেফাতে জাত, দরবেশে তাই জানতে পায়,
লালন বলে কাট মোল্লাজী ভেদ না জেনে গোল বাধায়।।
(আরো পড়ূন)
কে বোঝে সাঁইর আলেকবাজি।।
হচ্ছে রে কোরানের মানে
যা আসে যার মনের বুঝ-ই।।
একই কোরান পড়াশুনা
কেউ মৌলভি কেউ মওলানা
দাহেরা হয় কত জানা
সে কি মানে শরার কাজী।।
রোজ কিয়ামত বলে, সবায়
কেউ বলে না তারিখ নির্ণয়
হিসাব হবে কি হচ্ছে সদায়
কোন কথায় মন করি রাজী।।
আর এক খবর শুনিতে পাই
এক গৌর মানুষের মউত নাই,
আ মরি কোন ভজন রে ভাই,
লালন বলে কারে পুঁছি।।
....................................
তৃতীয় অন্তরা হিশাবে অনেকে এটা গেয়ে থাকেন। আদিতে ছিল কিনা নিশ্চয়তা নাই।
মলে জান ইল্লিন সিজ্জিন রয়
যতদিন রোজ হিসাব না হয়
কেউ বলে জান ফিরে জন্মায়
তবে ইল্লিন সিজ্জিন কোথায় আজি।।
কে বোঝে সাঁইর আলেক বাজী
আগে শরিয়ত জান বুদ্ধি শান্ত করে
রোজা আর নামাজ শরিয়তের কাজ
ঠিক শরিয়ত বলছ কারে ।।
রোজা-নামাজ-হজ-কালেমা-জাকাত
তাই করলে কি হয় শরিয়ত
শরা কবুল করে ।
ভাবে জানা যায় কলমা শরিয়ত নয়
শরিয়তের অর্থ কিছু থাকতে পারে ।।
এলম বে-মুরিদ জনা
শরিয়তের আঁক্ চেনে না
শুধু মেখে তোড় ধরে
চিনতো যদি আঁক্ অদেখা নিয়াত
বাঁধতো না কভু বর্জখ ছেড়ে ।।
শরিয়তের গম্ভু ভারি
যে যা বোঝে ফল হয় তারি
হয় আখেরে
লালন বলে মোর, ভক্তিহীন অন্তর
মারি অস্ত্র মূলে লাগে ডালের পরে ।।
আগে শরিয়ত জান বুদ্ধি শান্ত করে,
শরিয়তের কাজ রোজা আর নামাজ
আসল শরিয়ত বলছে কারে।।
কালেমা আর নামাজ রোজা, যাকাত, হজ্ব,
এই পড়িয়ে আদায় কর শরিয়ত, আমি ভাবে বুঝতে পাই
এসব আসল নয় আরও কিছু অর্থ থাকতে পারে।।
এলম বে-মুরিদ জনা, শরিয়তের আঁক চেনে না,
কেবল মুখে তোড় ধরে, যদি চিনতে আঁক,
ছাড়তো অদেখা নিয়ত, নিয়ত বাঁধতে হবে, আসল বরজখ ধরে।।
শরিয়তের গর্ম ভারি, যে যা করে, সে ফল তার হবে আখেরে,
ফকির লালন কয় আমার, বুদ্ধিহীন অন্তর,
আমি মারি মূলে লাগে ডালের পরে।।
(আরো পড়ূন)
আদি মক্কা এই মানব দেহে, দেখনারে মন ভরে।।
দেশ বিদেশে ঘুরে ঘুরে মরছ কেন হাফায়ে।।
মানুষ মক্কা কুদরতী ময়,
হচ্ছে গায়বী আওয়াজ সাত তালা ভেধিয়ে,
সিংহ দরজায় একজন নূরী, নিদ্রা ত্যাগী হয়ে।।
কুদরতিময়, মানুষ মক্কা, গুরু পদে ডুবে ধাক্কা ধাক্কা সামলিয়ে,
চার পাশে চার নূরী এমাম, মধ্যে সাঁই বসিয়ে।।
তিল পরিমাণ যায়গার উপর, গড়েছে সাঁই আজব শহর,
মানুষের কদ দিলে, লাখ লাখ হাজী করছে হজ্ব,
সেই জাগা জমিয়ে।। করেছে সাই আজব ভাক্কা,
গড়েছে এই মানুষ মক্কা, কুদরতী নূর দিয়ে,
সিরাজ সাঁই কয় অবোধ লালন, ঘরে আদি এমাম মেয়ে।।
(আরো পড়ূন)
সে যারে বোঝায় সেই বোঝে।।
মক্কর উল্লার মক্কর বোঝা, সাধ্য কার আছে।।
যথা কাল্লা, তেমনি রে সে মক্কর উল্লা,
মনের চক্ষু থাকতে ঘোলা, মক্কা পায় কিসে।।
এরফানী কেতাব রে ভাই, হরফ নোক্তা তার কিছু নাই,
তাই ঢুড়িলে খোদাকে পায়, খোদে বলেছে।।
এলম লাদুন্নী হয় যার, সর্ব ভেদ মালুম হয় তার,
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার, বৃদ্ধি অকেজো।।
(আরো পড়ূন)
পড়রে দায়েমী নামাজ এ দিন হল আখেরী।।
মাশুকরূপ হৃদ কমলে
দেখ আশেক বাতি জ্বলে
কিবা সকাল কিবা বৈকালে
দায়েমীর নাই আঁধারী।।
সালেকের বাহ্যপনা
মুজ্জুবী আশেক দেওয়ানা
আশেক দেল করে ফানা
মাশুক বিনে অন্য জানে না
আশার ঝুলি লয়ে সেনা মাশুকের চরণ ভিখারী।।
কেফায়া আইনি জিন্নি
এহি ফরজ জাত নিশানী,
দায়েমী ফরজ আদায়
যে করে তার নাই জাতের ভয়,
জাত এলাহির ভাবে সদায়
মিশেছে সে জাতে নূরী।।
আইনি অদেখা তরিক
দায়েমী বরজখ নিরিখ,
সিরাজ সাঁইজীর হকের বচন
ভেবে কহে অবোধ লালন,
দায়েমী নামাজী পড়ে যে জন
সমন তাহার আজ্ঞাকারী।।
(আরো পড়ূন)
নবী না চিনে কি আল্লা পাবে।।
নবী দিনের চাঁদ আজ দেখনারে ভেবে।।
যার নূরে হয় সয়াল সংসার, কলির ভাবে নবী পয়গম্বর,
হাটের গোলমালে, মনের তারে, চিনলাম না ভবে।।
বাতুনের ঘরে নবী, সে পুরুষ কি প্রকৃতি ছবি,
পড় দেল কিতাব, করবে বিধান, মনের অন্ধকার যাবে।।
বোঝা কঠিন কুদরত খেয়াল, নবীজী গাছ, সাঁইজী তারই ফল,
সে ফল যে পাড়ে, ঐ গাছে চড়ে, লালন কয় কাতর ভাবে।।
(আরো পড়ূন)
নবীর অঙ্গে জগতে পয়দা হয়।।
সেই যে আকার কি হল তার, কে করে নির্ণয়।।
আবদুল্লার ঘরেতে বল, কিরূপে সে জন্ম নিল,
মূল দেহ তার কোথায় ছিল, সুধাব কোথায়।।
কিরূপে নবীর জান সে, যুক্ত হয় যে বাপের বীজে,
আব হায়াতে নাম লিখেছে, হাওয়া নাই সেথায়।।
এক জানে দুই কায়া ধরে কেউ পাপ কেউ পুণ্য করে,
কি হবে তার রোজ হাসরে হিসেবের সময়।।
নবী ভেদ পায় একান্তি,
ঘুচে যায় তার মনের ভ্রান্তি দৃষ্ট হয়,
তার আলেক পান্তি, লালন ফকির কয়।।
(আরো পড়ূন)
দ্বীনের ভাব যেদিন উদয় হবে
সে দিন মন তোর ঘোর অন্ধকার
ঘুচে যাবে।।
মণিহারা ফণী যেমন
এমনি ভাব রাগের লক্ষণ
অরুণ বসন ধারন
বিভূতি লবে।।
ভাবশূন্য হৃদয় মাঝার
মুখে পড় কালাম আল্লার
তাইতে কি মন হবে তারণ
ভেবেছ এবার।।
অঙ্গে ধারন কর বেহাল
হৃদে জ্বালো প্রমের মশাল
দুই নয়ন হইবে উজ্জল
মূরশিদ বস্তু দেখতে পাবে।।
হাদিসে লিখেছে প্রমান
আপনারে আপনি জান
কীরূপে সে কোথা থেকে
কহিছে জবান।।
না করলি মন সে সব দিশে
তরিকার মঞ্জিলে বসে
তিনতে তিন আছে মিশে
মুরশিদ ধরলে জানতে পাবে।।
একের যুত তিনের লক্ষণ
তিনের ঘরে আছে সে ধন
তিনের মর্ম খুঁজিলে পায়
স্বরূপ দর্শন।।
সাঁই সিরাজের হক্কের বচন
ভেবে কহে ফকির লালন
কথায় কি তার হয় অন্বেষণ
রাজি হও মন দ্বীনের ভাবে।।
কোন নামে ডাকিলে তারে হৃদাকাশে উদয় হবে
আপনায় আপনি ফানা হলে সে ভেদ জানা যাবে।।
আরবী ভাষায় বলে আল্লা
ফারসীতে কয় খোদাতা’লা
গড বলেছে যীশুর চ্যালা,
ভিন্ন দেসে ভিন্ন ভাবে।।
মনের ভাব প্রকাশিতে
ভাষার উদয় এ জগতে
মনাতীত অধরে চিনতে,
ভাষা বাক্য নাহি পাবে।।
আল্লা হরি ভজন পুজন
সকলই মানুষের সৃজন
অনামক অচিনায় বচন
বাগেন্দ্রিয় না সম্ভবে।।
(কবে)সাধুর চরন ধুলি(মোর) লাগবে গায়
(আমি) বসে আছি আশাসিন্ধু কুলে সদাই।।
চাতক যেমন মেঘের জল বিনে
অহর্নিশি চেয়ে থাকে মেঘ ধেয়ানে
(ও সে) তৃষ্ণায় মৃত্যুর গতি জীবনে (হোল)
সে দশা আমার।।
ভজন সাধন আমাতে নাই
কেবল মহৎ নামের দেই গে দোহাই
(তোমার) নামের মহিমা জানাও গো সাঁই
পাপীর হও সদয়।।
শুনেছি সাধুর করুনণা
সাধুর চরন পরশিলে হয়গো সোনা
বুঝি আমার ভাগ্যে তাও হোলনা ফকির
লালন কেঁদে কয়।।
(আরো পড়ূন)
কোন সাধনে তারে পাই
জীবনের জীবন সাঁই।।
শক্তি শৈব বৈরাগ্য ভাব
তা’তে যদি হয় চরন লাভ
তবে ভক্তি দয়াময় সদা সর্বদায়
বিধি ভক্তি বলে দোষিলেন তায়।।
সাধিলে সিদ্ধির ঘরে
আবার শুনি পায়না তারে সাজুগ্য মুক্তি
পেলেও সে ব্যক্তি আবার শুনি
ঠকে যাবে-রে ভাই।।
গেলনা মোর মনে ভ্রান্ত
পেলাম না তাঁর ভাবের অন্ত
বলে মূঢ় লালন ভবে এসে মন
কি করিতে যেন কি করে যাই।।
কৈ হল মোর মাছ ধরা।।
সারাদিন ধাপ ঠেলিয়ে বল হারা।।
একে যাই ধাপো বিলে
তাতে মোর ঠেলা জালি
ওঠে শামুকের ভরা
যোগ না পেলে সে মাছ
হয় না কভু ক্ষার ছাড়া।।
কেউ বলা কওয়া করে
সে মাছ তো প্রেম সাগরে
সে নদীর তিন ধারা
আমি মারতে গেলাম সেই নদীতে
খাটল না ক্ষেপলা ধরা।।
যে জন ডুবারু ভাল
মছের ক্ষার সেই চিনিল
তার যাত্রা সিদ্ধি হল
লালন বলে একই কালে
সার হল মোর লাল পড়া।।
খুলবে কেন সে ধন মালের গ্রাহক বিনে।
মুক্তামনি রেখেছে ধনী
বোঝাই করে সে দোকানে।।
সাধু সওদাগর যারা
মালের মূল্য জানে তারা
মন দিয়ে মন অমূল্য রতন
জেনে শুনে তারাই কেনে।।
মাকাল ফলে রূপ দেখে
সদায় যেমন নাচে কাকে
আমার মন চটকে বিভোর
সার পদার্থ নাহি চিনে।।
মন তোর গুন জানা গেল
পিতল কিনে সোনা বল
সিরাজ সাঁই বচন, মিথ্যা নয় লালন
তুই মন হারালী দিনে দিনে।।
আমি দেখলাম এ সংসার ভোজবাজীর প্রকার
দেখিতে দেখিতে অমনি কেবা কোথা যায়।
মিছে এ ঘরবাড়ি টাকা মিছে টাকা কড়ি
মিছে দৌড়া দোড়ি করি কার মায়ায়।।
কীর্তি কর্মার কীর্তি কে বুঝতে পারে
সেই বা জীবকে লয়ে কোথায় রাখে ধরে
একথা আর শুধাব কারে নিগূঢ় আত্মতত্ত্ব অর্থ
কে বলবে আমায়।।
যে করে এই লীলা তাঁরে চিনলাম না
'আমি' 'আমি' করি ভবে 'আমি' কোন জনা
মরি একি হায় আজব কারখানা
আমি গুণে পড়ে কিছু ঠাহর নাহি পাই।।
ভয় ঘোচে না আমার দিবা রজনী
কার সঙ্গে কোন দেশে যাব না জানি
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় এ বিষম করণি
পাগল হও রে লালন এবার যে যা’ বুঝতে চায়।।
(আরো পড়ূন)
খালি ভাঁড় থাকবে রে পড়ে
দিনে দিনে কর্পূর সব যাবে উড়ে।।
মন যদি গোল মরিচ হতো
তবে কি আর কর্পূর যেত
তিলকাদি না থাকিত
সুসঙ্গ ছেড়ে।।
অমূল্য কর্পূর যাহা
আছে সদায় ঢাকা দেওয়া
কেমনে প্রবেশে হাওয়া
কর্পূরের ভাঁড়ে।।
সে ধন রাখিবার কারন
মিলনা মন গুরুর স্মরন
লালন বলে বেড়ায় এখন
আগাড়ে ভাগাড়ে।।
(আরো পড়ূন)
মন এখন আর কাঁদলে কী হবে।
কীর্তিকর্মার লেখাপড়া আর কি ফিরিবে।।
তুষে যদি কেউ পাড় দেয়
তাতে কি আর চা’ল বাহির হয়
মন হ’ল সেই তুষেরই ন্যায়
বস্তহীন ভবে।।
কর্পূর উড়ে যায় রে যেমন
গোলমরিচ মিশায় তার কারন
মন হ’ল গোলরিচের মতন
বস্ত কেন যাবে।।
হাওয়ায় চিড়ে কথার দধি
ফলার দিচ্ছে নিরবধি
লালন কায় যার যেমন প্রাপ্তি
কেন না পাবে।।
চিরদিন ইচ্ছা মনে আইল ডিঙায়ে ঘাস খাবা
মন সহজে কি সই হবা
ডাবার পর মুগুর প'লে
সেই দিনে গা টের পাবা।।
বাহার তো গেল চলে
পথে যাও ঠ্যালা পেয়ে
কোন দিনে পাতাল ধাবা।।
তবু তোমার যায় না দেখি
ত্যাড়া চলন বদলোভা।।
সুখের আশ থাকলে মনে
দুঃখের ভার ঘোর নিদানে
অবশ্যই মাথায় নিবা।
সুখের চেয়ে সোয়াস্তি ভাল
শেষ কালেতে পস্তাবা।।
ইল্লতের স্বভাব হলে
পানিতে কি যায় রে ধুলে
খাসলতি কিসে ধোবা।
লালন বলে হিসাব কালে
সকল ফিকির হারাবা।।
শব্দার্থঃ
সই= ছহি>সহি>সই। আসল হওয়া। ঠিক হওয়া। মানুষের আসল স্বভাব অর্জন করা।
ডাবা = মাথা; ডাবের মতো গোল বলে ডাবে।
বাহার= বসন্ত। যৌবন।
ঠ্যালা = লাঠি তে ভর করে।
পাতাল ধাবা = পাতালে ঢুকবে। মরে গোরস্থানের কবরে যাবে।
নিদান = অন্তিম কালে, মওতের সময়।
সোয়াস্তি = স্বস্তি; আশ্বস্ত থাকা; নিশ্চিত থাকা। স্বস্তি>সোয়াস্তি।
'আইল ডিঙায়ে ঘাস খাওয়া' = ঘাসের লোভে সীমা অতিক্রম করে ঘাস খাবার চেষ্টা। সীমা লংঘন করা।
ইল্লত = নোংরা, নষ্ট, মলিন।
সরলার্থ:
মন, তোমাকে কিভাবে ঠিক করব? তোমাকে খুঁটি বেঁধে রাখি, কিন্তু তুমি নিজের সীমানা বোঝ না। সীমানা লংঘন কর। যখন তোমার মাথার ওপর মুগুরের বাড়ি পড়বে, সেই দিনই তুমি ঠিক টের পাবা।
তোমার যৌবন চলে গিয়েছে। কোনদিন মরবে তার ঠিক নাই। এখন বাঁচবার ঠেলায় পথে হাঁটছ। অথচ এখনও তোমার বদ স্বভাব যায় নি। তোমার চলন বলন ত্যাড়া, বদ জিনিসের প্রতি তোমার লোভ।
যদি সুখের আশা কর, তাহলে দুঃখের দিনের ভারও তোমাকে বহন করতে হবে। সুখের চেয়ে মানুষ জীবনে নিঃশর্ত আশ্রয় চায়। স্বস্তি চায়। আশ্বস্ত থাকতে চায়। যদি এই সরল হিশাব না মান, তাহলে একদিন তোমাকে পস্তাতে হবে
তোমার স্বভাব যদি নোংরা হয়, যদি বদ হয়ে থাকো, তাহলে পানিতে ধুলে কি যাবে? কয়লা ধুলে যেমন ময়লা যায় না, তোমার এই খাসিলত বা স্বভাব ধুলেও ময়লা যাবে না। কি দিয়ে সাফ করবে?
ফকির লালন তোমাকে সাবধান করে দিচ্ছে শেষকালে তুমি নিজেকে নিয়ে নিজেই পস্তাবে।
তাহলে এখনি ঠিক হয়ে যাও, মনা।
বিষয় বিষে চঞ্চলা মন দিবারজনী
মন তো বোঝালে বোঝে না কর্মকাহিনী।।
বিষয় ছাড়িয়া কবে
মন আমায় শান্ত হবে হে
আমি কবে সে চরন করিব স্মরন
শীতল হবে তাপিত প্রানী।।
কোনদিন শ্মশানবাসী হবো
কি ধন সঙ্গে লয়ে যাবো হে
(আমি) যাই কি করে বয়ে ভূতের বোঝা লয়ে
ভাবলাম না গুরুর বানী।।
অনিত্য দেহেতে বাসা
তাইতো এত আশায় আশা হে
অধীন লালন তাই বলে নিত্য হলে
আর কতই মনে করতাম না জানি।।
(আরো পড়ূন)
দিনে দিনে হল আমার দিন আখেরি
ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়
যাবো কোথায় সদা ভাবে মরি।।
বসত করি দিবা রাতে
ষোল জন বোম্বেটের সাথে
যেতে দেয় না সরল পথে
আমায় কাজে কামে করে তাগাদারি
বাল্যকাল খেলাতে গেল
যৌবনে কলংক হল
বৃদ্ধকাল সামনে এল
মহাকালে করল অধিকারী
যে আশায় প’ল ভগ্ন দশা
লালন বলে হায় কী দশা
উজান যেতে ভাটি প’ল তরী।।
(আরো পড়ূন)
কে তোমার আর যাবে সাথে
কোথায় রবে ভাই বন্ধু সব
পড়বি যেদিন কালের হাতে।।
নিকাশের দায় করে খাড়া
মারবে রে আতশের কোড়া
সোজা করবে ব্যাকা ত্যাড়া
জোরজবর খাটবে না তাতে।।
যে আশায় এই ভবে আসা
হোল না তার রতি মশা[১]
ঘটালিরে কী দূর্দশা
কুসঙ্গে কুরঙ্গে মেতে।।
যারে ধরে পাবি নিস্তার
তারে সদাই ভাবলিরে পর
সিরাজ কয় লালন তোমার
ছাড়ো ভবের কুটুম্বিতে।।
(আরো পড়ূন)
চাতক বাঁচে কেমনে
মেঘের বরিষন বিনে।।
তুমি হে নব জলধর
চাতকিনী মল এবার,
ঐ নামের ফল সুফল
এবার রাখ ভুবনে।।
তুমি দাতার শিরোমনি
আমি চাতক অভাগিনী,
তোমা ভিন্ন আর না জানি
রাখ চরনে।।
চাতক মলে যাবে যানা
ঐ নামের গোরব রবে না
জল দিয়ে কর সান্ত্বনা
অবোধ লালনে।।
(আরো পড়ূন)
চিরদিন দুখের অনলে জ্বলছে আমার
আমি আর কত দিন জানি অবলারও এ পরানই
এজ্বলনে জ্বলবে ওহে দয়েশ্বর।।
দাসী ম’লে ক্ষতি নাই যাই হে মরে যাই
দয়াল নামের দোষ রবে হে গোঁসাই।।
আমায় দেও হে দুঃখ যদি তবু তোমায় সাধি
তোমা বিনে দোহাই আর দিব কার।।
ও মেঘ হইয়ে উদয় লুকালো কোথায়
পিপাসীর প্রান গেল পিপাসায়।
(আমার) কি দোষের ফলে এ দশা ঘটালে
(তুমি) চাও হে নাথ ফিরে চাও হে একবার।।
আমি উড়ি হাওয়ার সাথে ডুরি তোমার হাথে
তুমি না ওড়ালে কেই বা ওড়ায় হে নাথ।।
ক্ষম অপরাধ দেও হে শীতল পদ
লালন বলে প্রান বাঁচে নারে আর।
(আরো পড়ূন)
আমি ঐ চরনের দাসের যোগ্য নই [১]
নইলে মোর দশা কি এমন হয়।।
নিজগুনে পদারবিন্দ
দেন যদি সাঁই দীনবন্ধু
তবে তরি ভব সিন্ধু
(নইলে) আর তো না দেখি উপায়।।
ভাব জানি নে প্রেম জানি নে
দাসী হতে চাই চরনে
ভাব দিয়ে ভাব নিলে পরে
সেই রাঙা চরন পায়।।
অহল্যা পাষানী ছিল
চরন ধুলায় মানব হোল
লালন পথে পড়ে রইল
যা করে সাঁই দয়াময়।।
(আরো পড়ূন)
আমারে কি রাখবেন গুরু চরনদাসী
ইতরপনা কার্য আমার ঘটে অর্হনিশি।।
জঠর যন্ত্রনা পেয়ে
এসেছিলাম কড়ার দিয়ে
সে সকল গিয়েছি ভুলে ভবেতে আসি।।
চিনলাম না সেই গুরু কী ধন
করলাম না তার সেবাসাধন
ঘুরেতে বুঝি হল ও মন এবার চুরাশি[১]।।
গুরু রূপ যার বাঁধা হূদয় [২]
শমন বলে তার কিসের ভয়
লালন বলে মন তুই আমায় করিলি দোষী।।
(আরো পড়ূন)
গুরু দোহাই তোমার মনকে আমার
লও গো সুপথে
তোমার দয়া বিনে চরন আমি
সাধব কী মতে।।
তুমি যার হও গো সদয়
সে তোমারে সাধনে পায়
বিবাদী তার স্ববশে রয়
তোমার কৃপাতে।।
যন্ত্ররেতে যন্ত্রী যেমন
যে বোল বাজাও বাজে তেমন
তেমনি যন্ত্র আমারি মন
বোল তোমারি হাতে।।
জগাই মাধাই দস্যু ছিল
তাহে প্রভুর দয়া হোল
ফকির লালন পথে পড়ে রইল
সেহি আশাতে।।
(আরো পড়ূন)
জগত শক্তিতে[১] ভোলালে সাঁই
ভক্তি দেও হে যাতে চরন পাই।।
রাঙা চরন দেখবো বলে
বাঞ্ছা সদাই হূদ-কমলে
তোমার নামের মিঠায় মন মজেছে
(আমি) রূপ কেমন তাই দেখতে চাই।।
ভক্তি-পথ বঞ্ঝিত করে
শক্তি-পথ দিচ্ছ তারে
যাতে জীব ব্রহ্মাণ্ডে ঘোরে
কাণ্ড তোমার দেখি তাই।।
চরনের যোগ্য মন তো নয়
তথাপি মন ঐ চরন চায়
অধীন লালন বলে , হে দয়াময়
(তুমি) দয়া করো আজ আমায় ।।
(আরো পড়ূন)
কাজ কি আমার এ ছার কুলে
আমার গৌর চাঁদকে যদি মেলে।।
মনচোরা পাশরা ও গৌর রায়
অকুলের কুল জগতময়
যে নবকুল আশায় সে কুল দোষায়
বিপদ ঘটিবে তার কপালে ।।
কূলে কালি দিয়ে ভজিব সই
অন্তিম কালে বান্ধব যেই
ভব বন্ধুজন, কি করবে তখন
দীনবন্ধুর দয়া না হইলে।।
কুল গৌরবী লোক যারা
গুরু গৌরব কি জানে তারা
যে ভাবের যে লাভ,জানা যাবে সব
লালন বলে আখের হিশাব কালে।।
(আরো পড়ূন)
আমায় চরন ছাড়া কোরো না হে দয়াল হরি
(হরি আমি) পাপ করি পামর বটে[১], দোহাই দেই তোমরই।।
চরনের যোগ্য মন নয়
তবু মন ঐ রাঙা চরন চায়
দয়াল চাঁদের দয়া হইলে
পারে যাই অপারি।।
অনিত্য সুখের সব ঠাঁই
তাই দিয়ে জীব ভুলাও হে গোঁসাই
চরন দিতে কেন তাতে
কর হে চাতুরি।।
ক্ষম অধীন দাসের অপরাধ
শীতল চরন দাও হে দীননাথ
লালন বলে ঘুরিও না হে
করে মায়াকারী।।
আমার দিন কি যাবে এই হালে
আমি পড়ে আছি অকুলে
কত অধ্ম পাপী তাপি
অবহেলায় তারিলে।।
জগাই মাধাই দুটি ভাই,
কাঁধা ফেলে মারিলে গায় তারেও তো নিলে,
আমি পাপি ডাকছি সদায়
দয়া হবে কোন কালে।।
অহল্যা পাষানী ছিল
সেও ত মানবী হল(প্রভুর) চরন ধুলতে,
আমি তোমার কেউ নহি গো[১]
তাই কি মনে ভাবিলে।।
তোমার নাম লয়ে যদি মরি
দেখব তবু তোমারেই আর যাব কোন কুলে
তোমা বই আর কেউ নাই আমার
মূঢ় লালন কেঁদে বলে।।
(আরো পড়ূন)
আয় কে যাবি ওপারে
দয়াল চাঁদ মোর দিচ্ছে খেয়া অপার সাগরে
যে দিবে সেই নামের দোহাই
তারে দয়া করবেন গোঁসাই
এমন দয়াল আর কেহ নাই
ভবের মাঝারে।।
পার করে জগৎ বেড়ি
নেয় না সে পারের কড়ি,
সেরে সুরে মনের দেড়ি
ভার দে না তারে।।
দিয়ে ঐ শ্রীচরনে ভার
কত অধ্ম পাপী হলো যে পার,
সিরাজ সাঁই কয়, লালন তোমার
বিকার যায় না রে।।
(আরো পড়ূন)
পারে কে যাবি তোরা আয় না ছুটে
নিতাই চাঁদ হয়েছে নেয়ে ভবের ঘাটে
হরি নামে তরনী তার
রাধা নামে বাদাম সার
(ভব) তুফান বলে ভয় কিরে তার
সেই নায় উঠে।।
নিতাই আমার বড় দয়াময়
পারের কড়ি নাহি সে লয়
এমন দয়াল মিলবে কোথায়
এই ললাটে।।
ভাগ্যবান যে জন ছিল
সেই তরীতে পার হইল
লালন ঘোর তুফানে প’লো
ভক্তি কেটে।।
(আরো পড়ূন)
দয়াল নিতাই কারো ফেলে যাবে না
ধর চরন ছের না ।।
দৃড় বিশ্বাস করেরে মন
ধর নিতাই চাঁদের চরন
এবার পার হবি পার হবি তুফান
এপারে কেউ থাকবে না।।
হরি নাম তরনী লয়ে
ফিরছে নিতাই নেয়ে হয়ে
এমন দয়াল চাঁদকে পেয়ে
শরন কেন নিলে না।।
কলির জীবকে হয়ে সদায়
পারে যেতে ডাকছে নিতাই
অধীন লালন বলে মন চল যাই
এমন দয়াল মিলবে না।।
(আরো পড়ূন)
রাসুল রাসুল বলে ডাকি
রাসুল নাম নিলে বড় সুখে থাকি।।
মক্কায় যেয়ে হজ্ব করিয়ে
রাসুলের রূপ নাহি দেখি
মদিনাতে যেয়ে রাসুল
মরেছে তার রওজা দেখি।।
হায়াতুল মুরসালিন বলে
কোরানেতে লেখা দেখি
দ্বীনের রাসুল মারা গেলে
কেমন করে দুনিয়ায় থাকি।।
কুল গেল কলঙ্ক হল
আর কিবা আছে বাকি
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় অবোধ লালন
রাসুল চিনলে আখের পাবি।।
(আরো পড়ূন)
আল্লার বান্দা কিসে হয় বলো গো আমায়।
খোদার বান্দা নবির উন্মত কী করিলে হওয়া যায়।।
আঠারো হাজার আল্লার আলম
কত হাজার তার কালাম
সিনা সফিনায় কয় হাজার তামাম
কয় হাজার এই দুনিয়ায় ।।
কত হাজার আহাদ কালাম
তাহার খবর বল আমায়
কোন সাধনে নূর সাধিলে
সিনার কালাম হয় আদায়।।
গোলামি করিলে পরে
আল্লাহ-ভেদ পেতে পারে
লালন বলে আহাদ কালাম
দিবেন কি সাঁই দয়াময়।।
(আরো পড়ূন)
নাম সাধন বিফল বরখজ বিহনে
এখানে সেখানে বরজখ
মূল অন্বেষণ [১] দেখ মনে ।।
বরজখ ঠিক না হয় যদি
ভুলায় তারে শয়তান গিধি
ধরিয়ে রূপ নানাবিধি
চিনবি কি রূপ-প্রমানে।।
চার ভেঙ্গে দুই হল পাকা
এই দুই বরজখ লেখা
তাতে হল আর এক ধোঁকা
দুই দিক ঠিক রাখা যায় কেমনে।।
নৌকা ঠিক নাই বিনা পাড়ায়
নিরাকারে মন কি দাঁড়ায়
অধর ধরতে চায় বরজখ বিনে।।
(আরো পড়ূন)
আল্লার নাম সার করে যেজন বসে রয়
তার আবার কিসের কালের ভয়।।
আল্লার নাম মুখেতে বল
সময় যে বয়ে গেল
মালেকুত মওত এসে বলিবে চল
যার বিষয় সে লয়ে যাবে
সেকি করবে ভয়।।
আল্লার নামের নাই তুলনা
সাদেক দিলে সাধলে পরে
বিপদ থাকে না।
সে যে খুলবে তালা, জ্বালবে আলা
দেখতে পাবে জ্যোতিময়।।
ভেবে ফকির লালন কয়
নামের তুলনা দিতে নয়
আল্লা হয়ে আল্লা ডাকে
জীবে কি তার মম পায়।।
(আরো পড়ূন)
কোথা আছে রে সেই দীন দরদী সাঁই।
চেতগুরুর সঙ্গ ধর লয়ে[১] খবর কর ভাই।।
চক্ষু আঁধার দেলের ধুকায়
কেশের আড়ে পাহাড় লুকায়
কী রঙ্গ সাঁই দেখছে সদাই
বসে নিগুম ঠাঁই।।
এখানে না দেখি যারে
চিনব তারে কেমন করে
ভাগ্যগতি আখেরে তারে
দেখতে যদি পাই।।
সুমঝে ভজন সাধন কর
নিকটে ধন পেতে পার
লালন কয় নিজ মোকাম ধোঁড়
ভহু দূরে নাই।।
[১] অনেক সঙ্গ ‘ধর’ গেয়ে থাকেন।
(আরো পড়ূন)
এদেশেতে এই সুখ হল
আবার কোথায় যাই না জানি
পেয়েছি এক ভাঙ্গা তরনী[১]
জনম গেল ছেঁচতে পানি।।
কার বা আমি কেবা আমার
প্রাপ্ত বস্তু ঠিক নাহি তার
বৈতিক মেঘে ঘোর অন্ধকার
উদয় হয়না দিনমনি।।
আর কি রে এই পাপীর ভাগ্যে
দয়াল চাঁদের দয়া হবে
কতদিন দিন এই হালে যাবে
বাইয়ে পাপের তরনী।।
কার দোষ দিব এই ভুবনে
হীন হয়েছে ভজন গুনে
লালন বলে কত দিনে
পাব সাঁইর চরন দুখানি।।
(আরো পড়ূন)
এস হে প্রভু নিরঞ্জন
এ ভব তরঙ্গ দেখে
আতঙ্কেতে যায় জীবন।।
তুমি ভক্তি তুমি মুক্তি
অনাদির হো আদ্যাশক্তি
দাওহে আমায় ভক্তির শক্তি
তৃপ্তি হয় (যেন) ভবজীবন।।
ধ্যান যোগে তোমায় দেখি
তুমি সখা আমি সখী
মম হুদায় মন্দিরে থাকি
ঐরূপ দাও দরশন।।
ত্রিগুনে শুনি সংসার
লীলা দেখে কয় লালন শাহ্
ছাদরাতুল মন তাহার উপর
নুর তাজেল্লার হয় আসন।।
(আরো পড়ূন)
কে আমারে পাঠালে এহি ভব নগরে
মনের আন্ধারহরা চাঁদ সেই যে দয়াল চাঁদ
আর কতো দিনে দেখবো তারে।।
কে দিবে রে উপসনা
করি রে আজ কি সাধনা
কাশীতে যাই কি কাননে থাকি
আমি কোথা গেলে পাবো সে চাঁদেরে।।
মনো ফুলে পুজিব কনাম ব্রহ্ম রসনায় জপি
কি সে দয়া তার হবে পাপীর পর
অধীন লালন বলে তাইতো প’লাম ফেরে।।
(আরো পড়ূন)
ক্ষম ক্ষম অপরাধ
দাসের পানে একবার চাও হে দয়াময়।
বড় সংকটে[১] পড়িয়ে দয়াল বারেবার ডাকি তোমায়
ক্ষম ক্ষম অপরাধ।।
তোমারি ক্ষমতায় আমি
যা ইচ্ছা তাই করো তুমি
রাখো মারো সে নাম নামী
তোমারই এই জগৎময়।।
পাপী অধ্ম তরাইতে সাঁই
(তোমার) পতিত পাবন নাম শুনতে পাই
সত্য মিথ্যা জানবো হেথায়
তরাইলে আজ আমায়।।
কসুর পেয়ে মার যারে
আবার দয়া হয় গো তারে
লালন বলে এ সংসারে
আমি কি তোর কেহই নয়।।
(আরো পড়ূন)
এসো দয়াল, পার কর ভবের ঘাটে
ভবনদীর তুফান দেখে
ভয়ে প্রান কেঁদে ওঠে।।
পাপ ও পূন্য যতই করি
ভরসা কেবল তোমারি
তুমি যার হও কাণ্ডারী
ভব ভয় তার যায় ছুটে।।
সাধনের বল যাদের ছিল
তারাই কূল- কিনারা পেল
আমার দিন অকাজেই গেল
কি জানি হয় ললাটে।।
পুরানে শুনেছি খবর [১]
পতিত পাবন নামটি তোমার
লালন বলে আমি পামর
তাইতে দোহাই দেই বটে।।
(আরো পড়ূন)
এমঅন সুভাগ্য [১] আমার কবে হবে
দয়াল চাদঁ আসিয়ে আমায়
পার করবে।।
সাধনের বল আমার কিছুই নাই
কেমনে সে পারে যাই
কূলে বসে দিচ্ছি দোহাই
অপার ভেবে।।
পতিত পাবন নামটি তার
তাই শুনে বল আমার
আবার ভাবি এই পাপী আর[২]
সেকি নিবে।।
গুরুপদে ভক্তিহীন
হয়ে রইলাম চিরদিন
লালন বলে কি করিতে
এলাম ভবে।।
(আরো পড়ূন)
এস হে অপারের কাণ্ডারী
(আমি) পড়েছি অকুল পাথারে
দাও আমায় চরনতরী।।
প্রাপ্ত পথও ভুলেছি এবার
ভবকুপে জ্বলবো কত আর[১]
তুমি নিজ গুনে শ্রীচরন দাও আমায়
তবে কূল পেতে পারি।।
ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়
আবার আমি যাই যেন কোথায়[২]
তুমি মনরথের সারথি হয়ে
স্বদেশে নাও মনেরি।।
পতিত পাবন নাম তোমার গো সাঁই
পাপী তাপী তাইতে দেই দোহাই
অধীন লালন ভনে তোমা বিনে
ভরসা কারে করি।।
(আরো পড়ূন)
পার কর দয়াল এসে কেশে ধরে[১]
পড়েছি এবার আমি ঘোর সাগরে।।
মনেন্দ্রিয় ছয়জন সদাঁই অশেষ কুকাণ্ড বাধায়
ডুবালে ঘাট অঘাটায় আজ আমারে।।
ভব কুপেতে আমি ডুবে হইলাম পাতালগামী
অপারের কাণ্ডারী তুমি নাও কিনারে।।
আমি কার কেবা আমার বুঝেও বুঝিলাম না এবার
এবার অসারকে ভাবিয়ে সার প’লাম ফেরে।।
হারায়ে সকল উপায় শেষকালে তোর দিলাম দোহাই
লালন কয় দয়াল নাম সাঁই জানিবো তোরে।।
(আরো পড়ূন)
কোথায় হে দয়াল কাণ্ডারী
এ ভবতরঙ্গে এসে (আমার) কিনারায় লাগাও তরী।।
তুমি হে করুনা সিন্ধু
অধ্ম জনার বন্ধু
দাও হে আমায় পদারবিন্দ
যাতে তুফান তরিতে পারি।।
পাপী যদি না তরাবে
অধ্মতারন [১] নাম কে লবে
জীবের দ্বারে এহি ভবে [২]
নামের ভ্রম রবে[৩] তোমারি।।
ডুবাও ভাসাও হাতটি তোমার
এ ভবে আর কেউ নাই আমার
ফকির লালন বলে দোহাই তোমার
আমায় চরনের ঠাঁই দাও হে, তরি[৪]
(আরো পড়ূন)
(এসো) পার করহে দয়াল চাঁদ আমারে
ক্ষম হে অপরাদ আমার
এ ভব কারাগারে।।
পাপী অধ্ম জীব হে তোমার
তুমি যদি না কর পার
দয়া প্রকাশ করে;
পতিতপাবন পতিতনাশন
কে বলবে আজ তোমারে।।
না হইলে তোমার কৃপা
সাধন সিদ্ধ কোথায়ই বা
কে করতে পারে
আমি পাপি তাইতে ডাকি
ভক্তি দাও মোর অন্ত্ররে।।
জলে স্তলে সর্ব জায়গায়
তোমারই সব কীর্তিময়
ত্রিবিধ সংসারে;
তাই না বুঝেয়ে অবোধ লালন
প’ল বিষ্ম ঘোরতরে।।
(আরো পড়ূন)
পারে লয়ে যাও আমায়
আমি অপার হয়ে বসে আছি
ওহে দয়াময়।।
আমি একা রইলাম ঘাটে
ভানু সে বসিল পাটে
তোমা বিনে ঘোর সংকটে
না দেখি উপায়।।
নাই আমার ভজন সাধন
চিরদিন কুপথে গমন
নাম শুনেছি পতিত পাবন
তাইতো দোহাই দিই তোমায়।।
অগতির না দিলে গতি
ওই নামে রবে অখ্যাতি[১]
লালন কয় অকূলের পতি
কে বলবে তোমায়।।
(আরো পড়ূন)
মুরশিদের ঠাঁই নে না রে তার ভেদ বুঝে
এ দুনিয়ার সিনায় সিনায় কী ভেদ নবী বিলায়েছেন।।
নেকতন বান্দারা যত
ভেদ পেলে আউলিয়া হোত
নাদানেরা শূল চাঁচিত
মনসুর তার সাবুদ আছে।।
সিনার ভেদ সিনায় সিনায়
সফিনার ভেদ সফিনায়
যে পথে যার মন হোল ভাই
সেই সেভাবে দাঁড়িয়েছে।।
কুতর্ক আর কুস্বভাবী
তারে ভেদ বলে নাই নবী
ভেদের ঘরে দিয়ে চাবি।।
শরমতে বুঝায়েছে।।
তফসির হোসাইনি যার নাম
তাঁই ধুঁড়ে মসনবি কালাম
ভেদ-ইশারায় লেখা তামাম
লালন বলে নাই নিজে।।
(আরো পড়ূন)
মুরশিদকে মানিলে খোদার মান্য হয়।
সন্দ যদি হয় কাহারো কোরান দেখলে মিটে যায়।।
দেখ বেমুরিদ যত
শয়তানের অনুগত
এবাদত বন্দেগি তার তো
সই দেবে না দয়াময়।।
মুরশিদের মেহের হলে
খোদার মেহের তারে বলে
হেন মুরশিদ না ভজিলে
তার কি আর আছে উপায়।।
মুরশিদে পথের দাঁড়া
যাবে কোথায় তারে ছাড়া
সিরাজ সাঁই কয় লালন গোড়া
মুরশিদ ভজলে জানা যায়।।
(আরো পড়ূন)
মুর্শিদের মহৎ গুন নেনা বুঝে
যার কদম বিনে ধরন করম মিছে।।
যতসব কলেমা কালাম
ধুঁড়িলে মেলে তামাম কোরান মিছে
তবে কেন পড়া ফাজেল মুর্শিদ ভজে।।
মুর্শিদ যার আছে নিহার
ধরিতে পারে অধর সেই অনাসে
মুর্শিদ খোদা ভাবলে জুদা পড়বি প্যাঁচে।।
আলাদা বস্তু কী ভেদে
কিবা সেই ভেদ মুর্শিদে জগৎ মাঝে
সিরাজ সাঁই কয়
দেখরে লালন আক্কেল খুঁজে।।
(আরো পড়ূন)
দিন থাকতে মুরশিদ রতন চিনে নেনা
এমন সাধের জনম
বয়ে গেলে আর হবে না।।
মুরশিদ আমার বিষয়াদি
মুরশিদ আমার গুন নিধি
পারে যেতে ভব নদী
ভরসা ওই চরনখানা।।
কোরানে ছাপ শুনিতে পাই
অলিয়েম মুরশিদ সাঁই
ভেবে বুঝে দেখ মনরায়
মুরশিদ (হন) কেমন জনা।।
মুরশিদ-বস্ত চিনলে পরে
চিনা যাবে অচেনারে
লালন বলে মরি ঘুরে
হয়ে যেমন জন্ম-কানা।।
(আরো পড়ূন)
মুরশিদ বিনে কি ধন আর আছে রে মন এ জগতে
যেনামে শরনে হারে তাপিত অঙ্গ শীতল করে
ভববন্ধন ছুটে যায় রে জব ঐ নাম দিবারাতে।।
মুরশিদের চরনের সুধা পান করিলে যাবে ক্ষুধা
কোরনারে দিলে দ্বিধা যেহি মুরশিদ সেহি খোদা
ভজ অলি আল-মুরশিদা আয়াত লেখা কোরানেতে।।
আপনি খোদা আপনি নবী আপনি সেই আদম শফি
অনন্তরূপ করে ধারন কে বুঝে তার নিরাকরন
নিরাকার হাকিম নিরঞ্জন মুরশিদ রূপ ভজন পথে।।
কুল্লে শাইয়িন মহিদ আরো আলা কুল্লে শাইয়িন কাদির পড়ো
কালাম নেহাজ করো তবে সব জানিতে পার
কেনে লালন ফাঁকে ফেরো ফকিরি নাম পাড়াও মিথ্যে।।
(আরো পড়ূন)
মদিনায় রাসুল নামে কে এল ভাই
কায়াধারী হয়ে কেন
তার ছায়া নাই।।
ছায়াহীন যার কায়া
ত্রিভুবন তারি ছায়া
এই কথাটির মর্ম লওয়া
অবশ্যিই চাই।।
কি দিব তুলনা তারে
খুঁজেন না পাই এ সংসারে
মেঘে যেমন ছায়া ধরে
ধুপের সময়।।
কায়ার শরিক ছায়া দেখি
ছায়াহীন সেই লা-শরিকী
লালন বলে তার হাকিকী
বলীতে ডরাই।।
(আরো পড়ূন)
ভেবে দেখ রে আমার রাসুল যাব কাণ্ডারী এই ভবে
ভব নদীর তুফানে কি তার নৌকা খানি ডোবে।।
তরিকার নৌকা খানি,
এশেক নাম তার বলেন শুনি,
বিনা বাওয়ায় চলছে অমনি,
রাত্রি দিবে।।
ভুল না মন কারো ধোঁকায়,
চড়ো ঐ তরিকার নৌকায়,
বিষম ঘোর তুফানের দায় ,
বাঁচবি তবে।।
ভাবের নৌকা নাহি চড়ি,
কেমনে দিবে ভব পাড়ি,
লালন বলে এহি ঘড়ি,
দেখ মন ভেবে।।
(আরো পড়ূন)
আল্লা সে আল্লা বলে ডাকছে সদাই কার ফিকিরি।
জানলে সেই ফিকির-ফাকার তারই এবার হয় ফকিরি।।
আত্নারূপে পরিচয় নাই যার
পড়লে কি যায় মনের অন্ধকার
আবার আত্মারূপে কর্তা হয়
হয় বিচারি।।
কোরানে কোরান কালুল্লায়
কুল্লে সাইন মোহিত লেখা যায়,
আল জবানের খবর জেনে
হও হুঁশারি।।
বাদ পড়ে ভেদ পেত যদি সবে
গুরুর গৌরব থাকত না তবে
লালন ভনে তাই না জেনে
গোলমাল করি
(আরো পড়ূন)
মুখে পড়বে সদাই লাইলাহা ইল্লাল্লা[১]
আইন ভেজিলেন রাসুলুল্লা।।
নামের সহিদ রূপ ধেয়ানে রাখিয়া জব
নিরাকারে[২] যদি ডাক চিনবি কিরূপ কে আল্লা
লা-শরীক জানিয়া তাকে পড় কালাম দিলে মুখে
নামরুপের ধেয়ানে চোখে দেখবিরে নূর তাজেল্লা।।
লাইলাহা নফি সে হয় ইল্লাল্লাহ সেই দীন দয়াময়
নফি-এজবাত যাহারে কয় সেহিতো এবাদত-উল্লা।।
বলেছেন সাঁই আল্লা নূরী এই জেকেরের দারজা ভারি
সিরাজ সাঁই তাই কয় পুকারি শোনরে লালন বে-লিল্লা।।
(আরো পড়ূন)
আল্লা [১] বল মন রে পাখি
ভবে কেউ কারো নয় রে দুঃখের দুখী।।
ভুলো না রে ভবে ভ্রান্ত কাজে
অদেখা[২] সব কাণ্ড মিছে
মন রে আসতে একা যেতে একা
এ ভব-পিরিতের ফল আছে কি।।
হাওয়া বন্ধ হলে সুবাদ কিছুই নাই
বাড়ির বাহির করেন সবাই
মন তোর কেবা আপন পর কে তখন
দেখে শুনে খেদে ঝরবে আঁখি।।
গোরের কিনারে যখন লয়ে যায়
কাঁদিয়ে সবায় প্রান ত্যজিতে চায়
লালন কয় কারো গোরে কেউ না
যায়থাকতে হয় একাকি।।
(আরো পড়ূন)
একবার ডাক রসনা মওলা বলে
গেল দিন ছাড় বিষয় বাসনা
যে দিনে সাঁই হিশাব নিবে
আগুন পানির তুফান হবে
এ বিষয় তোর কোথায় রবে
(একবার) ভেবে দেখলে না।।
সোনার কুঠুরি কোঠারে মন
সোনার খাট পালঙ্কে শয়ন
শেষে হবে সব অকারন
(সার হবে) মাটির বিছানা।।
ঈমান-ধন আখেরের পুঁজি
সে ঘরে দিলে না কুঁজি
লালন বলে হারলে বাজি
(শেষে আর) কাঁদলে সারবেনা।।
[ভাবসঙ্গীতঃ ;/গান নং ২৮৪]
(আরো পড়ূন)
হক নাম বল রসনা
যে নাম শরনে যাবে
জঠর যন্ত্রনা।
শিয়রে শমন বসে কোন সময় বাঁধিবে কষে
ভুলে রলি বিষয় বিষে দিশে হল না।।
কবার যেন ঘুরে ফির মানব জনম পেয়েছো রে
এবার যেন আলস্য করে সে নাম ভুলো না।।
ভবেরো ভাই বন্ধু আদি কেউ কারো নয় সাথের সাথী
লালন বলে মুরশিদ-রতি করো সাধনা।।
[ভোলাই শা-র খাতা, গান নং -২৯৬; ভাব- সঙ্গীত; গান নং ১৬১
(আরো পড়ূন)ডাকরে মন আমার হক নাম আল্লা বলে
ভেবে বুঝে দেখ সকলি না হোক
হক মোর আল্লার নামাটি, দাও ভুলিলে।।
ভরসা নাই এ জেন্দেগানি[১]
যেমন পদ্ম পাতার পানি পড়বে টলে।
সুখের বাড়ি ঘর কোথা পাব কার
হোকনা হোক কেবল সঙ্গে চলে।।
ভবেরো ভাই বন্ধু যারা
বিপদ দেখিলে তারা পালাবে ফেলে।।
কায়-প্রানে ভাই আখের সুপদ নাই
ক্ষনেক পহ্মী যেমন থাকে বৃহ্ম ডালে।।
অকাজে দিন হোল রে সাম
কখন লবা সেই আল্লার নাম বাজার ভাঙিলে
পেয়েছিলে মন দুলভ জনম
লালন কয় এ জনম যায় বিফলে।।
ভাব-সঙ্গীত; গান নং ১০৮; ভোলাই শা-র খাতা, গান নং ২২০; লালন –গীতিকা, গান নং ৪৬২;}]
ডাকরে মন আমার হক নাম আল্লা বলে
ভেবে বুঝে দেখ সকলি না হোক
হক মোর আল্লার নামাটি, দাও ভুলিলে।।
ভরসা নাই এ জেন্দেগানি[১]
যেমন পদ্ম পাতার পানি পড়বে টলে।
সুখের বাড়ি ঘর কোথা পাব কার
হোকনা হোক কেবল সঙ্গে চলে।।
ভবেরো ভাই বন্ধু যারা
বিপদ দেখিলে তারা পালাবে ফেলে।।
কায়-প্রানে ভাই আখের সুপদ নাই
ক্ষনেক পহ্মী যেমন থাকে বৃহ্ম ডালে।।
অকাজে দিন হোল রে সাম
কখন লবা সেই আল্লার নাম বাজার ভাঙিলে
পেয়েছিলে মন দুলভ জনম
লালন কয় এ জনম যায় বিফলে।।
ভাব-সঙ্গীত; গান নং ১০৮; ভোলাই শা-র খাতা, গান নং ২২০; লালন –গীতিকা, গান নং ৪৬২;}]
এলাহি আলামীন (গো) আল্লা-বাদশা আলমপনা তুমি
(তুমি) ডুবায়ে ভাসাইতে পার, ভাসায়ে কিনার দাও কারো
রাখো মারো হাত তোমারও, তাইতে তোমায় ডাকি আমি [১]।।
নূহ নামে এক নবীরে, ভাসালে অকুল পাথরে
আবার তারে মেহের করে, আপনি লাগাও কিনারে
জাহের আছে এিসংসারে, আমায় দয়া কর স্বামী।।
নিজাম নামে বাটপার সেতো, পাপেতে ডুবিয়া রইত
তার মনে সুমতি দিলে,কুমতি তার গেল চলে[২]
আউলিয়া নাম খাতায় লিখিলে, জানা গেল এই রহমি।।
নবী না মানে যাঁরা, মোয়াহেদ-কাফের তারা[৩]
সেই মোহাহেদ-দায়মাল হবে, বেহিশাব দোজখে যাবে
আবার তারে খালাস দিবে, লালন কয় মোর কি হয় জানি।।
[১] ভোলাই শা-র খাতা, গান নং ৮৭; বাংলার বাউল, গান নং ৬; রবীন্দনাথ [২.১];১, পৃ-১৩২; লালন-গীতিকা, গান নং ৪০০; ভাব-সঙ্গীত, গান নং ১৩৫}]
(আরো পড়ূন)
আল্লাহ্ কে বোঝে তোমার অপার লীলে
তুমি আপনি আল্লাহ ডাকো 'আল্লাহ্' বলে।
নীরাকারে তুমি নূরী
ছিলে ডিম্ব অবতারী
সাকারে সৃজন করলে ত্রিভুবন
নিরাকারে চমৎকার ভাব দেখালে।।
নিরাকার নিগম্ভু ধ্বনি
তাইতো সত্য সবাই মানি
তুমি আগমের ফুল নিগমে রসূল
আদমের ক্বালেবে জান হইলে।।
আত্মতত্ত্ব জানে যা'রা
নিগূঢ় লীলা দেখছে তা'রা
নীরে নিরঞ্জন অকহিতব্য ধন
লালন খুঁজে ফিরে বন-জঙ্গলে।।
(আরো পড়ূন)
নইলে দশা ঘটতো নারে
ঘটতো নারে মোর জীবনে
দাসের যোগ্য নই চরণে ।।
পদে যদি দাসী হতাম
চরণে রাখতেন গুণধাম
থাকতো নারে আসক্তি-কাম
দুরে যেত ভয় শমনের ॥
জানা গেল বেদ পুরানে
ভক্তের বাক্য সবাই মানে
তোমা বিনে যাই কোন খানে
পদে রেখ দীনহীনে ॥
কেঁদে বলে বংশীধারী
দাসের ভার কি এতোই ভারী
লালন বলে দেখবো তারি
দেখবো রে স্বরূপ সাধনে ॥