চিন্তা


চিন্তা ও তৎপরতার পত্রিকা

কে দেখেছে গৌরাঙ্গ চাঁদেরে

কে দেখেছে গৌরাঙ্গ চাঁদেরে
গৌর গোপীনাথ মন্দিরে গেল
     আর তো এলো না ফিরে।

যার লাগি কুল গেল
সেই আমারে ফাঁকি দিল
কলঙ্কী নাম প্রকাশ হল
     কেবল গো আজ আমারে।

দরশনে দুর্গতি যায়
পরশে পরশ করে নিশ্চয়
হেন চাঁদ হইয়ে উদয়
     লুকাইল কোন শহরে।

শুধু গৌর নয়– গৌরাঙ্গ
অন্তরে আছে গৌরাঙ্গ
লালন বলে, হেন সঙ্গ
     পেলাম না কর্মের ফেরে।।

(আরো পড়ূন)

গুরু দেখায় গৌর

গুরু দেখায় গৌর তাই দেখি কি গুরু দেখি
গৌর দেখতে গুরু হারা কোন্‌ রূপে দেই আঁখি?

গুরু গৌর রহিল দুই ঠাঁই
কিরূপ একরূপ করি তাই
এই নিরূপন না হলে মন
     সকল হবে ফাঁকি।।

প্রবর্তের নাই কোন ঠিকানা
সিদ্ধি হবে কজি সে হবে সাধনা
মিছে সদাই সাধু-হাটায়
     নাম পড়ায়ে সাধ কি

এক রাজ্য হলে দুজন রাজা
কার হুকুমে গত হয় প্রজা
লালন বলে তেমনি গোলে
     খাতায় প’লো বাকি।

 

(আরো পড়ূন)

গৌর প্রেম করবি যদি

গৌর প্রেম করবি যদি ও নাগরী
     কূলের গৌরব আর কোর না
কুলের লোভে মান বাড়াবি, কূল হারাবি
     গৌর চাঁদ দেখা দেবে না।।

ফুল ছিটাও বনে বনে মনে মনে
বনমালীর ভাব জানোনা।।
চৌদ্দ বছর বনে বনে রামের সনে
     সীতা, লক্ষণ এই তিন জনা।।

যত সব টাকা কড়ি এ ঘর বাড়ি
কিছুই তো সঙ্গে যাবে না

মরলে পাস কড়াকড়ি- তুলসী, দড়ি,
     কাঠখড়ি আর চট বিছানা।।

গৌরের সঙ্গে যাবি- দাসী হবি
এটাই মনে কর বাসনা|
লালন কয়, মনে প্রাণে এতই টানে
     ঐ পিরিতের খেদ মেটে না।।

 

(আরো পড়ূন)

ও গৌরের ভাব রাখিতে

ও গৌরের ভাব রাখিতে
     সামান্য কি পারবি তোরা
কুলশীলে ইস্তফা দিয়ে
     হতে হবে জ্যান্তে মরা 

থেকে থেকে গোরার হৃদয়
কত না ভাব হয় গো উদয়
ভাব জেনে ভাব নিতে সদাই
     জানবি কঠিন কেমন ধারা ।।

পুরুষ নারীর ভাব থাকিতে
পারবি কি সেই ভাব রাখিতে
আপনার আপনি হয় ভুলিতে
     যেজনে গৌর রূপ নিহারা ।।

গৃহে ছিলি ভালই ছিলি
কেন গৌরহাটায় মরতে এলি
লালন বলে কী আর বলি
     দুকূল যেন হসনে হারা ।।

(আরো পড়ূন)

ভজ রে আনন্দের গৌরাঙ্গ

ভজ রে আনন্দের গৌরাঙ্গ
যদি তরিতে বাসনা থাকে
   ধর রে মন সাধুর সঙ্গ।।

সাধুর গুণ যায় না বলা
শুদ্ধ চিও অন্তর খোলা
সাধুর দরশনে যায় মনের ময়লা
   পরশে প্রেমতরঙ্গ।।

সাধুজনার প্রেমহিল্লালে
কত মানিক-মুক্তা ফলে
সাধু যারে কৃপা করে
   প্রেমময়ে দেয় প্রেমানঙ্গ।।

একরসে হয় প্রতিবাদী
একরসে ঘুরছে নদী
একরসে নৃত্য করে
   নিত্যরসের শ্রী গৌরাঙ্গ।।

সাধুর সঙ্গগুনে রঙ ধরিবে
পূর্ব-স্বভাব দূরে যাবে
লালন  বলে পাইবে প্রানের গোবিন্দ
   করবে সৎসঙ্গ।।


(বৈষ্ণব রসতত্ত্বের ওপর এই গান আদৌ লালনের কালাম কিনা সন্দেহ আছে। লালন দাস্যভাবকেই শ্রেষ্ঠ ভাব মেনেছেন;  'আনন্দের গৌরাঙ্গ' ভজনা ফকির লালন শাহের ধারা নয়। তবে লালনের ভনিতা দিয়ে গানটি গাওয়া হয়। )

(আরো পড়ূন)

কাজ কি আমার এ ছার কুলে

কাজ কি আমার এ ছার কুলে
     আমার গৌর চাঁদকে যদি মেলে।।

মনচোরা পাশরা ও গৌর রায়
অকুলের কুল জগতময়
যে নবকুল আশায় সে কুল দোষায়
     বিপদ ঘটিবে তার কপালে ।।

কূলে কালি দিয়ে ভজিব সই
অন্তিম কালে বান্ধব যেই
ভব বন্ধুজন, কি করবে তখন
      দীনবন্ধুর দয়া না হইলে।।

কুল গৌরবী লোক যারা
গুরু গৌরব কি জানে তারা
যে ভাবের যে লাভ,জানা যাবে সব
     লালন বলে আখের হিশাব কালে।।

(আরো পড়ূন)

আর কি গৌর আসবেন ফিরে

আর কি গৌর আসবে ফিরে
মানুষ ভজে যে যা কর গৌরচাঁদ গিয়েছে সরে ।।

একবার প্রভু এই নদিয়ায়
মানুষ রূপে হইয়ে উদয়
প্রেম বিলায়ে যথা তথায়
      গেলেন প্রভু নিজপুরে ।।

চার যুগের ভজনাদি
বেদেতে রাখিয়া বিধি
ব্রজের নিগূঢ় রসপান্তি
      সঁপে গেলেন শ্রীরূপেরে ।।

আর কিরে সেই অদ্বৈত গোঁসাই
আনবেন গৌর এই নদিয়ায়
লালন বলে সেই দয়াময়
   মিলবে কি আর ভাগ্যে শিরে!

 

(আরো পড়ূন)

রংমহালে চুরি করে কোথায় সে চোরের বাড়ী

রংমহালে চুরি করে কোথায় সে চোরের বাড়ী,
  পাইলে সে চোরের কয়েদ করে,পায়ে দিতাম মণ বেড়ী।।

সিংহ দরজায় চৌকিদার একজন,অহোনিশি থাকে স-চেতন,
  কখন তারে ভেল্কি মেরে,কোন ঘরি করে চুরি।।

ঘর বেড়ে ষোল জান সেপাই,এক এক জনের বরেন সীমা নাই,
  তারাও চোরের কার হাতে দিবে দড়ি।।

পিতৃধন সব নিলো লুটে,লেংটী ঝাড়া করলো আমারে,
  লালন বলে,একই কাকই,চোরের হল কি আড়ি।।

 

(আরো পড়ূন)

কি বলিস গো তোরা আজ আমারে

কি বলিস গো তোরা আজ আমারে,
  গৌরাঙ্গ বুজঙ্গ ফণী দংশিল যার হৃদয় মাঝারে।।

রূপের কালে যারে দংশয়,
  সে দাহ যে বহে উজান বিষ ক্ষণে চলে ক্ষনে পিছায়,

ধন্বন্তরী ওঝা যায় গো ফিরে,
  ভুলবনা ভুলবনা বলি কটাক্ষেতে অমনি ভুলি,

জ্ঞান পবন যায় সকলই ব্রহ্ম মন্ত্রে ঝাড়িলে না সারে
মিলে যদি রসিক সুজন,অরসিকের যায়রে জীবন,
  বিনয় করে বলছে লালন,অরসিকের কথায় দুঃখ ধরে।।

 

(আরো পড়ূন)

গৌর প্রেম অথই আমি ঝাঁপ দিয়াছি তায়

গৌর প্রেম অথই আমি ঝাঁপ দিয়াছি তায়
এখন আমার প্রাণ রাখা ভার করি কি উপায়।।

ইন্দ্র বারি শাসিত করে
উজান ভাটা বাইতে পারে
সে ভাব আমার নাই অন্তরে
      কোট সাধি কথায়

একেত প্রেম নদীর জলে
ঠাঁই মিলেনা  নোঙর ফেলে
বেহুঁশারি নাইতে গেলে
      কামকুমিরে খায়।।

গৌর প্রেমের এমনি ল্যাঠা
আসতে ভাটা যেতে ভাটা
না বুঝে মুড়ালে  মাথা
      অধীন লালন কয়।।

(শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়: ৮ এপ্রিল ২০১৮)
(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৪৭)

 

(আরো পড়ূন)

কি করি ভেবে মরি মন মাঝি ঠাওর দেখিনে

কি করি ভেবে মরি মন মাঝি ঠাওর দেখিনে,
  ব্রহ্ম আদি খাচ্ছে খাবি,সেই নদী পারে যাই কেমন।।

মাড়ুয়া বাদীর এমনি ধারা,মাঝ দরিয়ায় ডুরায় ভারা,
  দেশে যায় পরিয়ে ধড়া, সেই দশা মোর ভাবনা জেনে।।

শক্তি পদে ভক্তি হারা,কপট ভাবের ভাবি যারা,
  আমার মন সেহি ধারা,ফাকে ফেরে রাত্র দিনে।।

মাখন ফলটি রাঙ্গা চোঙ্গা কোন ঘড়ি ডুবাই তুফানে,
  লালন কয় তালুয়া ডোঙ্গা,কোন ঘড়ি ডুবাই তুফানে।।

 

(আরো পড়ূন)

জ্যান্তে মরার সেই প্রেম-সাধনা  সেকি পারবি তোরা

জ্যান্তে মরার সেই সেই প্রেম-সাধনা সেকি পারবি তোরা
যে প্রেমে কিশোরী-কিশোর  মজেছে দুই জনে তারা।।

তারা সেধেছিল অরুণের কিরণ
কমলিনী প্রফুল্লা বদন
তেমনি গতি সাধনে রতি
     আকর্ষণে টানে, সেকি পারবি তোরা।।

কামে থেকে নিষ্কামী যে হয়
কামরূপে প্রেম শক্তির আশ্রয়
 লালন ফকির ফাঁকে ফেরে
     কঠিন দেখে শুনে, সেকি পারবি তোরা।

সামর্থা আর শম্ভু রসের মান
উভয় জনের সমান সমান
    লালন ফকির ফাঁকে ফেরে
     কঠিন দেখে শুনে, সেকি পারবি তোরা।।

................................................

এই প্রক্ষিপ্ত বাক্যগুলোও পাওয়া যায়

শোষায় শ্বাসায় নাহি ছাড়ে শ্বাস
উজান তরী চালায় বার মাস
তার ফন্দি জানা বিষম সেনা,
     কঠিন জীবের মনে, সে কি পারবি তোরা ।।

(আরো পড়ূন)

সময় থাকতে বাঁধল বাঁধলে না

সময় থাকতে বাঁধল বাঁধলে না,
  জল শুখাবে মীন পলাবে,পস্তাবি-রে ভাই মনা।।

ত্রিবেণীর তিন ধারে,মীন রূপে সাঁই বিরাজ করে,
  উপর উপর বেড়াও ঘুরে, গভীরেতে ডুবলেনা।।

মাসান্তরে মহাযোগ হয়,নিরসেতে রস ভেসে যায়,
  করলে না যোগের নির্ণয়,মীনরূপ খেলা খেললে না।।

জগৎ জোড়া মীন অবতার,ছন্দির বোঝা ছন্দি উপর,
  সিরাজ সাই কয় লালন এবার,গেলনা আওনা যাওনা।।

 

(আরো পড়ূন)

শুদ্ধ প্রেম সাধল যারা

শুদ্ধ প্রেম সাধল যারা কামরতি রাখিল কোথা
বলগো রসিক রসের মাফিক ঘুচাও আমার মনব্যথা।।

আগে উদয় কামের রতি
রস আগমন তারই গতি,
সেই রসের করে স্থিতি
     খেলছে মানুষ প্রেমদাতা।।

মন জানিত রসের করণ
নয়রে সে প্রেমের ধরন,
জল সেঁচে  তার হয়রে মরণ
    কথায় কেবল বাজি জেতা।।

শুদ্ধ রাগের বাধ্য যে জন
আপনারে আপনি ভোলে সে জন,
ভেবে কয় ফকির লালঢ়
     ডাকলে সে-ত কয় না কথা।।

 

(আরো পড়ূন)

অনুরাগ নইলে কি সাধন হয়,শুধু মুখের কথা নয়

অনুরাগ নইলে কি সাধন হয়,শুধু মুখের কথা নয়,
  তার সাক্ষী চাতক পাখীরে,কোট সাধনে যায়রে মরে।।

অন্য বারি খায় না রে,থাকে মেঘের জল আশায়,
  বনের পশু হনুমান,রাম বিনে তার নাই ধিয়ান।।

নিরীখ রেখে ঐ চরণের পর,অন্যরূপ না ফিরে চায়
রামদাস মুচির ভক্তিতে,গঙ্গা এল চামড়ার কেটোতে,
  তাঁরে সাধলো কত মহতে লালন কূলে কূরে রয়।।

 

 

 

(আরো পড়ূন)

কোন সাধনে তারে পাই।। জীবনের জীবন সাঁই

কোন সাধনে তারে পাই।। জীবনের জীবন সাঁই,
  শক্তি শৈব বৈরাগ্য ভাব,তাতে যদি হয় চরণ লাভ।।

তবে কেন দয়াময়;সদা সর্বদায়,বিধি ভক্তি বলে দোষিলেন তায়,
  সাধিলে সিদ্ধির ঘরে,আবার শুনি পায় না তারে।।

সাজুগ্য মুক্তি,পেলেও সে ব্যক্তি,আবার শুনি ঠকে যাবে-রে ভাই
গেলনা মোর মনের ভ্রান্ত;পেলাম না তাঁর ভাবের অন্ত,
  বলে মূঢ় লালন,ভবে এসে মন কি করিতে যেন কি করে যাই।।

 

(আরো পড়ূন)

সামান্য জ্ঞানেতে মন তাই পারবি রে

সামান্য জ্ঞানেতে মন তাই পারবি রে,
  বিষ জুদা করিয়ে সুধা রসিক জনা পান করে।।

দেখাদেখি মন কি ভাব,সুধা খেয় অমর হব,
  পার যদি ভালই ভাল,নইলে লেঠা বাধবে রে।।

কত জনে সুধার আশায়,ফণীর মুখে হাত দিতে যায়,
  বিষের আতষ লেগে গায়,অমনি ঢলে পড়েরে।।

অহি মুণ্ডে উভয় যদি,হিংসা ছেড়ে হয় পীড়িতি,
  লালন কয় সে সুধা নিধি,খেলে অমর হয় সে রে।।

 

(আরো পড়ূন)

জানরে মন সেই রাগের করণ

জানরে মন সেই রাগের করণ,
যাতে কৃষ্ণ বরণ হল গৌর বরণ।।

শত কোটি গোপী সঙ্গে,
কৃষ্ণ প্রেম রস রঙ্গে
সে যে টলের কার্য্য নয়,
     অটল না বলয়সে আর কেমন।।

রাধাতে কি ভাব কৃষ্ণের
কি ভাবে বশ গোপীকার,
সে ভাব না জেনে
     সে সঙ্গ কেমনে পাবে কোন জন।।

শম্ভু রসের উপাসনা,
না জানিলে রসিক হয় না,
লালন বলে সে যে নিগূঢ় করণ
     ব্রজে,অকৈতব ধন।।

 

(আরো পড়ূন)

জানরে মন সেই রাগের কারণ

জানরে মন সেই রাগের কারণ,
যাতে কৃষ্ণ বরণ হল গৌর বরণ।।

শত কোটি গোপী সঙ্গে
কৃষ্ণ প্রেম রস রঙ্গে,
সে যে টলের কার্য্য নয়,অটল না বলয়
     সে আর কেমন।।

রাধাতে কি ভাব কৃষ্ণের
কি ভাবে বশ গোপীকার,
সে ভাব না জেনে সেই সঙ্গ
     কেমনে পাবে কোন জন।।

শম্ভুরসের উপাসনা
না জানিলে রসিক হয় না,
লালন বলে সে যে নিগূঢ় করণ ব্রজে
     অকৈতক ধন।।

 

(আরো পড়ূন)

সে করণ সিদ্ধি করা সামান্যের কাজ নয়

সে করণ সিদ্ধি করা সামান্যের কাজ নয়
গরল হতে সুধা নিতে আতশে প্রাণ যায়।।

সাপের মুখে নাচায় বেঙ্গা
এ বড় আজব রাঙ্গা
রসিক যদি হয় রে ঘোঙ্গা
     তারে অমনি ধরে খায় ।।

ধন্বন্তরি গুণ শিখিলে
সে মানে না রূপের কালে
সে গুণ তার উল্টায়ে ফেলে
     মস্তকে দংশায় ।।

আত্মতত্ত্বের যে অনুরাগী
নিষ্ঠা রতি ভড়ং ত্যাগী
লালন বলে রসিক যোগী
     সে তো আমার কার্য নয় ।।

 

 

(আরো পড়ূন)

কি সাধনে পাই গো তারে

কি সাধনে পাই গো তারে,
  মন আমার অহোনিশি চায় গো যারে।।

হোম,যজ্ঞ,স্বব,ব্রত;
  ইহাতে সাঁই নহে রত,সাধু শান্ত্রে কয় সতত,

মনে কোনটি জানি সত্য করে,
  পঞ্চ প্রকার মুক্তির বিধি,অষ্টাদশ প্রকারে সিদ্ধি।।

এ সকল হয় হেতু ভক্তি,এতে বশ নয় আলেক সাইজী মোরে,
ঠিক পড়েনা প্রবত্তের ঘর,সাধন সিদ্ধ হয় কি প্রকার,
  সিরাজ বলে লালন তোমার,নজর হয় না কোলের ঘোরে।।

 

(আরো পড়ূন)

কীর্তিকর্মার খেলা কে বুঝাতে পারে

কীর্তিকর্মার খেলা কে বুঝাতে পারে,
  যে নিরঞ্জন সেই নূর নবী নামটি ধরে।।

গঠিতে সয়াল সংসার,এক দেহ দুই দেহ হয় যার,
  আহাদে আহম্মদের বিচার,দেখ বিবারে।।

টারেতে নাম আহম্মদ হয়,এক হরফ তার নফি কেন হয়,
  সে কথাটি জানব কোথায়,নিশ্চয় করে।।

এ মরম যাহারে সুধাই,ফাজিল ঝগড়া বাধায় সেই ভাই।।
  লালন বলে স্থুল বুরে যাই তার তোড়ে।।

 

(আরো পড়ূন)

মন কে তোর আজ যাবে সাথে

মন কে তোর আজ যাবে সাথে,
  কোথায় রবে ভাই বন্ধ সব পড়বি যে দিন কালের হাতে।।

যে আশায় এই ভবে আসা,হলনা তার রাত মাখা,
  ঘটিলরে কি দুর্দশা,কুসঙ্গে কুরঙ্গে মেতে।।

নিকাশের দায় করব খাড়া,মারিবে আতসের কোড়া,
  সোজা করবে বাঁকা তেড়া,জোর জবর খাটবে না তাতে।।

যারে ধরে পাবি নিস্তার,তারে সদায় ভাবলিরে পর,
  সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার যাবে ভবের কুটুম্বিতে।।

 

(আরো পড়ূন)

সদা মন থাক বা-হূশ ধর মানুষ রূপ নিহারে,

সদা মন থাক বা-হূশ ধর মানুষ রূপ নিহারে,
  আয়না আটা রূপের ছটা,চিলে কোঠায় ঝলক মারে।।

স্বরূপ রূপে রূপকে জানা,সেইত বটে উপাসনা,
  গাঁজায় দম চড়িয়ে মনা,বোম কালি আর বলিও না-রে।।

বর্তমানে দেখ ধরি,নরদেহে অটল বিহারী,
  মর কেনে হড়ি বড়ি,কাঠের মালা টিপে হারে।।

দেল দোড়ে দরবেশ যারা,রূপ নেহারে সিদ্ধ তারা,
  লালন কয় আমার খেলা,ডাণ্ডাগুলি সার হলরে।।

 

(আরো পড়ূন)

সোনার মান গেল বেঙ্গো পিতলের কাছে

সোনার মান গেল বেঙ্গো পিতলের কাছে,
  শাল পটকের ফের,পাটের বনাত দেশ জুড়েছ।।

বাজিল কলির আরতি,পেচ পল বাই মানীর প্রতি,
  ময়ুরের নৃত্য দেখে,পেঁচায় পেখাম ধরেছে।।

শাল গ্রামকে করিয়ে নাড়া,ভুতের করে ঘন্টা নাড়া,
কলির ত এমনি ধারা,স্থুল কাজে সব ভুল পড়েছে,
  লালন কয় জানা গেল, চটকে জগৎ মেতেছে।।

 

(আরো পড়ূন)

রূপের তুলনা রূপ সে,
  ফণী মনি সৌদামিণী,কি আর তার কাছে শোভে।।

যে দেখেছে সেই অটল রূপ,রাগ নাহি মেরেছ চুপ,
  পার হল এ ভব কূপ,রূপের মালা হৃদয় জ্বেলে।।

আমি বিদ্যাবুদ্ধি হীন,বলব কি রূপ বাকানি,
  মেঘে যেমন সৌদামিনী,মনমোহসীন মন কল্পে।।

বেদে নাই রূপের খবর,কেবল শুধু নামে বিভোর,
সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোর
  নিজরূপে রূপ দেখ সংক্ষেপে।।

 

(আরো পড়ূন)

চিনবে তারে এমন আছে কোন ধন

চিনবে তারে এমন আছে কোন ধনী
নয়সে আকার নয় নিরাকার নাই  ঘরখানি।।

বেদ আগমে জানা গেল
ব্রহ্ম যার হদ্দ হল,
জীবের কি সাধ্য বল
     তাঁরে চিনি।।

কত কত মুনি জনা
করিয়ে রে যোগ সাধন
লীলা অন্ত কেউ পেলনা
  লীলা এমনই।।

সবে বরে কিঞ্চিৎ ধ্যানী
গণ্য হল শূলপানি
লালন বলে আমি হব তেমনি।।

 

(আরো পড়ূন)

আত্নতত্ত্ব না জানিলে

আত্নতত্ত্ব না জানিলে,
  ভজন হবে না,পড়বি গোলে।।

আগে জানগা কালুল্লা আনল হক আল্লা,যাবে মানুষ বলে,
  পড়ে ভূত হসনে বারংবার,একবার দেখ না প্রেম নয়ন খুলে।।

আপনি সাঁই ফিকির,আপনি বুরে রব্বানী,আপনি ভাসে প্রেম জলে,
লায়লাহাতন ইল্লাল্লা জীবন,আচে প্রেম যুগলে,লালন ফকির কয়,
  যাবি মন কোথায়,আপনারে আজ আপনি ভুলে।।

 

(আরো পড়ূন)

সে ধন কি চাইলে মিলে

সে ধন কি চাইলে মিলে
  হরি ভক্কের অধীন কালে কালে।।

ভক্তের বড় পণ্ডিত যায়,প্রমাণ তার প্রহ্লাদকে কয়,
  যারে আপনি কৃষ্ণ গোসাই,অগ্নিকুন্ডে জ্বালাইলে।।

বনের একটা পশু বই নয়,ভক্ত হনুমান তারে কয়,
  কৃষ্ণ রূপ সে রামরূপ ধরায়,কেবল শুধু ভক্তি বলে।।

অভক্তে সে দেয় না দেখা,কেবল শুধু ভক্তের সখা,
  লালন বেড়োর স্বভাব বাঁকা,অধর চাঁদেক রইল ভুলে।।

 

(আরো পড়ূন)

দেল দরিয়ায় ডুবলে দরিয়ার খবর পায়

দেল দরিয়ায় ডুবলে দরিয়ার খবর পায়,
  নৈলে পুথিঁ পড়ে পণ্ডিত হলে কি ফল হয়।।

স্বয়ংরূপ দর্পণে নেহার,মানব রূপ সৃষ্টি করে,
  দিব্য জ্ঞানী যারা,ভাবে বোঝে তারা।।

 মানুষ ভজে সিদ্ধি করে যায়,
  একেতে হয় তিনটি আকার,অযোনী সহজ সংষ্কার।।

যদি ভাব-তরঙ্গে ওর,মানুষ চিনে ধর,
দিনমনি গেলে কি হবে উপায়।।

মূল হইতে হয় ডালেরই সৃজন,ডাল ধরলে হয় মূল অন্বেষণ,

অমনি রূপ হইবে স্বরূপ,তারে ভেবে বিরুপ,
 অবোধ লালন সদায়,নিরূপ ধরতে চায়।।

 

(আরো পড়ূন)

আপন ঘরের খবর নে-না

আপন ঘরের খবর নে-না
  অনায়াসে দেখতে পাবি,কোন খানে সাঁই বারাম খানা।।

কমল ফোটা কারে বলি,কোন মুখে তার আছে গলি,
  কোন সময় পড়ে ফুলে,মধু খায় সে অলি জনা।।

অন্য জ্ঞান যায় সখ্য,মূখ্য সাধকের উপলক্ষ,অপরূপ তার বৃক্ষ,
  দেখলে জীবের পাপ থাকে না।

শুষ্ক নদীর মূখে সরোবর,তিলে তিলে হয়গো সাঁতার,
  লালন কয় কীর্তিকর্মার,কি কারখানা।

 

(আরো পড়ূন)

কোন সুখে সাঁই করে খেলা এই ভরে

কোন সুখে সাঁই করে খেলা এই ভরে,
  আপনি বাজে আপনি বাজায়,আপনি মজে সেই রবে।।

নাম শুনি লা-শারিকালা,সবার শরিক সেই একেলা,
  আপনি করঙ্গ আপনি ভেলা,আপনি খাবি খায় ডুবে।।

ত্রিজগতের যে রায় রাঙ্গা,তার দেখি ঘরখানি ভাঙ্গা,
  হায় কি মজার আজব রঙ্গা,দেখায় ধনি কোন ভাবে।।

আপনি চোর হয় আপনি বাড়ী,আপনি লয় সে আপন বেডী,

লালন বলে এ লা-চাড়ি,কেন থাকি চুব চুবে।।

 

(আরো পড়ূন)

নানারুপ শুনে শুনে ক্রমে শূন্য পলাম রে সাধুর খাতায়

নানারুপ শুনে শুনে ক্রমে শূন্য পলাম রে সাধুর খাতায়,
  বুঝিতে বুঝিতে বোঝা চাপল মাথায়।।

যা শুনিতে হয় বাসনা,শুনেলে মনে আট বসেনা,
  তার বড় শুনিয়ে মনা দৌড়ায় সেথায়

একবার বলি যাই কাশীতে,আবার পেড়োয় যেতে,
  দিন গেল মোর দোটানাতে,যাইবা কোথায়।।

এক জেনে যে এক ভজিল,সেই সে পাড়ি সেরে গেল,
  লালন বারো তালে পল,শেষ অবস্থায়।।

 

(আরো পড়ূন)

পড়বে নামাজ ভেদ বুঝে সুঝে

পড়রে নামাজ ভেদ বুঝে সুঝে
বরজখ নিরিখ না হলে ঠিক
     নামাজ তার হয় মিছে।।

সুন্নত নফল ফরজ সকল
রাকাত গোণা নামাজে কেবল,
থাকলে এসব হিসাবে নিকাশ
     বরজখ ঠিক রয় কিসে।।

আপনি আপনার পানে কিসে,
তাকাও জায়নামাজে বসে,
পড় আত্তাহায়াত রুকু ছালাম
     তাহার প্রমাণ আছে।।

দেখে তার ভজনের মূল
হুকুম ছাবেদ করছে রাছুল,
লালন বলে আঁধলা ইমাম
    এক্তেদা নাই তার পিছে।।

 

(আরো পড়ূন)

যদি গুরু শিষ্য হয় একতার

যদি গুরু শিষ্য হয় একতার,
  তার শমন বলে ভয় কিরে আর ।।

যমন গঙ্গার ন্যতিা গেড়েয় থাকলে,সে জল কি ফুরায় সেচিলে,
  তমনি তারে তার মিশালে,হয় অমর।।

সজল ধরে মিশার লক্ষণ,করিতে হয় তার অন্বেষণ,
  ভ্রমে ভুলনা অবোধ মন,ভুল না আর ।।

মিশার সন্ধান জেনে,মিশাগা ত্বরায় চরণে,বরখাস্ত হউক শমনে,
  লালন বলে তা-কি ঘটবে আমার।।

 

(আরো পড়ূন)

কাল কাটালি কালের বশে

কাল কাটালি কালের বশে,
  সদায় কামে চিত্ত কাল,কোন কালে তোর হবে দিশে।।

যৌবন কালে কামে দিলি মন,হারা হলি পিতৃধন
  গেল রবির জোর,আঁখি হল ঘোর;

কোন দিন ঘিরিরে মন কাল শমনে এসে,
  যাদের সঙ্গে রঙ্গে ছিলি চিরকাল

কালে কালে তারাই হল কাল,তা জাননা তার কি গুণপনা,
  ধনির ধন গেল সব রিপুর বশে।।

বাদী বিবাদী সদায়,সাধন সিদ্ধি করিতে না দেয়,নাটের গুরু হয়,
  লালস মহাশয়,ডুবি দাওরে লালন লোভ লালসে।।

 

(আরো পড়ূন)

খেয়েছি বে-জেতে কচু না বুঝে

খেয়েছি বে-জেতে কচু না বুঝে,
  এমন তেঁতুল কোথা পাই খুঁজে।।

কচু এমন মান গোসাই,তারে চিনলি নারে ভাই,
  খেয়ে হলাম পাগল প্রায়,এখন চুবনী ঘরা চুলকাইছে।।

ভেবে নিম বৃক্ষ তার,তা’তে দিয়ে চিনির সার,
  কখনও সে হয় না মিঠা,এমনি কচুর বংশ যে।।

যত সব ভডুয়া বাঙ্গাল,কচুর মান গোসাই বলে,
  লালন ভেড়ো দেখলো ভেবে,ঐ কথায় কি আর মজে।।

 

(আরো পড়ূন)

ঢুঁড় আজাজিল রেখেছেন সেজদা বাকি কোনখানে

ঢুঁড় আজাজিল রেখেছেন সেজদা বাকি কোন খানে
কররে মন কর সেজদা সেই জায়গা চিনে।।

জগৎ জুড়ে করল সেজদা
তবু ঘটল দূর-অবস্থা
ঈমান না হোল পোস্তা
খোঁড়াই জমিনে।।

এমন মাহিত্ম জায়গায়
সেজদা দিলে মকবুল হয়
আজাজিলের বিশ্বাস না হয়
লানত সেই কারণে।।

ইবলিসের জদার পর
সেজদা দিলে কি ফল তার
লালন বলে সেহি বিচার
ত্বরায় লও জেনে।।

 

(আরো পড়ূন)

সে ভাব উদয় না হলে

সে ভাব উদয় না হলে,
  কে পাবে সেই অধর চাঁদের বারাম কোন কালে।।

ডাঙ্গাতে পাতিয়ে আসন ,জেল রয় তার কীর্তি এমন,
  বেদে কি তার পায় অন্বেষণ,রাগের পথ ভুলে।।

ঘর ছেড়ে ছেঞ্চেতে বাসা,অপথে তার যাওয়া আসা,
  না জেনে ভেদ খোলাসা,কথায় কি তাই মেলে।।

জলে যমন চাঁদ দেখো যায়,ধরতে গেলে হাতে না পায়,
  লালন তমনি সাধক ধারায়,পল গোল মালে।।

 

(আরো পড়ূন)

মনের মানুষ খেলছে দ্বিদলে

মনের মানুষ খেলছে দ্বিদলে,
  যমন সৌদামিনী মেঘের কোলে।।

রূপ নিরূপণ হবে যখন,মানুষ ধরা যাবে তখন,
  জনম সয়ল হবে সেরূপ দেখিলে।।

না জেনে দল উপাসনা,আন্দাজী কি হয় সাধন,
  মিছে ঘুরে মর গোলমালে।।

সে মানুষ চিনল যারা,পরম মহৎ তারা,
  সিরাজ সা কয় অবোধ লালন,দেখ নয়ন খুলে।।

 

(আরো পড়ূন)

দেখনা এবার আপন ঘর ঠাওরিয়ে

দেখনা এবার আপন ঘর ঠাওরিয়ে
  আঁখি কোণায় পাখীর বাসা,যায় আসে হাতের কাছ দিয়ে।।

পাখী একটা সহস্র কুঠরী,কোঠা আছে আড়া পাতিয়ে,
  নিগুমে তার মূল একটি ঘর অচিন হয় সেথা যেয়ে।।

ঘরের আয়না আটা,চৌপাশে,মাঝখানে পাখী বসে,
  আছে আনন্দিত হয়ে;দেখনারে ভাই,

ধরবার যো নাই,হাত বাড়িয়ে।।
দেখতে যদি সাধ কর,সন্ধানী চিনে ধর,দিবে দেখাইয়ে,
  সিরাজ সাই কয় লালন তোমার বোঝাতে দিন যায় বয়ে।।

 

(আরো পড়ূন)

সমঝে কর ফকিরী মনরে

সমঝে কর ফকিরী মনরে,
  এবার গেলে আর হবে না,পড়বি বিষম ঘোর তরে।।

বিষ অমৃত আছে মিলন,জানতে হয় তার কিরূপ সাধন,
  দেখে যেন গরল ভক্ষণ কর না হারে।।

অগ্নি জৈছে ভষ্মে ঢাকা,অমৃত গরলে মাখা,
  মৈথুন দণ্ডে যাবে দেখা,বিভিন্ন ক’রে।।

কয়বার করলে আসা যাওয়া,নিরুপণ কৈ করলে তাহা,
  লালন বলে কে দেয় খেওয়া,চিনলে না তারে।।

 

(আরো পড়ূন)

সাঁইর লীলা দেখে লাগে চমৎকার

সাঁইর লীলা দেখে লাগে চমৎকার
  ছুরাতে করিল সৃষ্টি,আকার কিসে নিরাকার।।

আদমের পয়দা করে,খোদ ছুরাতে পরওয়ারে,
  মুরশিদ বিনে ছুরাতে কিসে,হইল সে হঠাৎ কারে।।

নূরর মানে হয় কোরানে,কি বস্তু সে নূর তাহার,
  নিরাকারে কি প্রকারে,নূর চোয়ায়ে হয় সংসার।।

আহাম্মদীরূপে হাদী,দুনিয়ায় দিয়াছে বার,
  লালন বলে শুনে দেলে,সেওত বিষম ঘোর আমার।।

 

(আরো পড়ূন)

বড় নিগুমেতে আছে গো সাঁই

বড় নিগুমেতে আছে গো সাঁই
  যেখানে আছে মানুষ,চন্দ্র সূর্যের বারাম নাই।।

চন্দ্র সূর্য্য যে গড়েছে,ডিম্বরূপে সেই ভেসেছে,
  একদিনে হিল্লোলে এসে,নিরঞ্জন জন্ম হয়।।

হাওয়া দ্বারী দেল কুঠরী,মানুষ আছে স্বণপুরী,
  শূন্য কারে শূন্যপুরী,মানুষ রয় মানুষের ঠাঁই।।

আত্ম তত্ত্ব পরম তত্ত্ব,বৃন্দাবনে নিগূর তত্ত্ব,
  লালন বলে সে সব অর্থ,সে ধামেতে মানুষ নাই।।

 

(আরো পড়ূন)

দেল দরিয়ায় ডুবে দেখ না

দেল দরিয়ায় ডুবে দেখ না
অতি অজান খবর যাবে জানা
  আলখানার শহর ভারি,তাহে আজব কারিগরী।।

বোবায় কথা কয়,কালায় শুনতে পায়,
আধেলাতে পরখ করছে সোনা।।

ত্রিবেনীর ঐ পিছল ঘাটে,বিনা হাওয়ায় মৌজা ছোটে,
ডওরায় পানি নাই,ভিটা ডোবে তাই,
  শুনলে কি পাবি এ কারখানা।।

কাবার যোগ্য নয় সে কথা,সাগরে ভাসে জগৎ মাতা,
  লালন বলে উদরে,পিতা জন্মে,পত্নীর দুগ্ধ খেল না।।

 

(আরো পড়ূন)

সাঁইর লীলা দেখে লাগে চমৎকার

সাঁইর লীলা দেখে লাগে চমৎকার,
  ছুরাতে করিল সৃষ্টি,আকার কিসে নিরাকার।।

আদমের পয়দা করে,খোদ ছুরাতে পরওয়ারে,
  মুরশিদ বিনে ছুরাতে কিসে,হইল সে হঠাৎ কারে।।

নূরর মানে হয় কোরানে,কি বস্তু সে নূর তাহার,
  নিরাকারে কি প্রকারে,নূর চোয়ায়ে হয় সংসার।।

আহাম্মদীরূপে হাদী,দুনিয়ায় দিয়াছে বার,
  লালন বলে শুনে দেলে,সেওত বিষম ঘোর আমার।।

 

(আরো পড়ূন)

কয় দমেতে বাজে ঘড়ি কররে ঠিকানা

কয় দমেতে বাজে ঘড়ি কররে ঠিকানা,
  কয় দমে আজ দিন রজনী ফিরানা ঘুরানা।।

দেহের খবর যে জন করে,আলেক বাজী দেখতে পারে,
  আলেক দম হাওয়ায় চলেরে,কি আজব কারখানা।।

ছে মওলাতে ঘড়ি ঘোরে,শব্দ হয় নিঃশব্দের ঘরে,
  কলকাঠি দ্বারে,দমে সে আসল বেনা।।

দমের সাথে কর সম্মিলন,অজান খবর জানবিরে মন,
  বিনয় করে বলছে লালন,ঠিকের ঘরে ভুলনা।।

 

(আরো পড়ূন)

আছে কোন মানুষের বসত

আছে কোন মানুষের বসত কোন দলে
ওরে মানুষ মানুষ সবাই বলে।।

অযোনী সহজ সংস্কার
তারা কি সন্ধানে সাধক এতবার
বড় গহীন মানুষ লীলে
     ওরে মানুষ লীলে।।

ভজন সাধন নাহি জানি
কোথায় পায় সহজ কোথায় অযোনী,
বেড়াই বলে হরি বলে
     ওরে হরি বোল বলে।।

তিন মানুষের করণ বিচক্ষণ
তারে জানলে হবে এক নিরূপণ,
লালন পল গোলমালে
     ওরে মহা গোলমালে।।

 

(আরো পড়ূন)

মানুষ আছে সেই মানুষে মিশে

মানুষ আছে সেই মানুষে মিশে,
  কত মুনি ঋষ যোগী তপস্বী,তার খুঁজে বেড়াচ্ছে।।

যমন পানর মধ্যে চাঁদ দেখা যায়,ধরতে গেলে হাতের কে পায়,
  তমনি আলেক মানুষ আলোকে থাকে,আলোকে মিশে।।

অচিন দলে বসতি ঘর,দ্বিদল পদ্মে বারাম তার,
  দল নিরূপণ হয়েছে যার,মানুষ দেখ অনায়াসে।।

আমার হল বিভ্রান্ত মন,বাহিরে খুঁজি ঘরের ধন,
  সিরাজ সাঁই কয় ঘুরিস লালন,আত্ম তত্ত্ব না খুঁজে।।

 

(আরো পড়ূন)

কে বানালে এমন রংমহালখানা

কে বানালে এমন রংমহালখানা,
 হাওয়া আদম দেখ তার আসল বেনা।।

বিনা তেলে জ্বলছে বাতি,দেখা যায় যমন মুক্তা মতি,
  ঝলক দেয় তার চতুর্দিক,মধ্যখানা।।

তিল পরিমাণ যায়গায় সে যে,দুজন রং তাহার মাঝে,
  কালায় শুনে,আঁধলায় দেখে,লেংড়ার নাচনা।।

যে বানাল এই রং মহালখান,না জানি তার রূপটি কেমন,
  সিরাজ সাঁই কয় নাইরে লালন,তার তুলনা।।

 

(আরো পড়ূন)

কেন খুঁজিস ক্ষেপা মনের মানুষ বনে সদায়

কেন খুঁজিস ক্ষেপা মনের মানুষ বনে সদায়,
এবার নিজ আত্মা যে রূপ আছে, সেই রূপেতে দিন দয়াময়।।

কারে বলি জীবের আত্মা, কারে বলি স্বয়ং কর্তা,
অককা দেখি খুব আটা, ভিলকি লেগে মামলা হারায়।।

বলব কি তার আজব খেয়াল, আপনি গুরু সে আপনি চেলা,
পড়ে ভূত এ ভুবনের পণ্ডিত, যে আত্ম তত্ত্বের প্রবত্ত নয়।।

 পরম আত্মারূপ ধরে, জীব আত্মাকে হরণ করে,
লোকে বলে যায়রে নিদ্রা, অভেদ ব্রহ্ম লালন কয়।।

 

 

 

(আরো পড়ূন)

তুমি কার আজ কেবা তোমার এই সংসারে

তুমি কার আজ কেবা তোমার এই সংসারে
 ভ্রমিছ মায়ায় মজিয়ে সংসারে।।

এক পিরীতি দন্তে জিহৃয়,ফাঁক পেলে সেও সাজা দেয়,
  স্বপনেতে সব জানতে হয়,ভাবনারে।।

সময়ে সকলে সখা,অসময় না দেয় দেখা
  কার ভোলায় ভোল একা,চার যুগেরে।।

আপনি যখন নয় আপনার,কারে বল আমার আমার,
  সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার জ্ঞান নাহিরে।।

 

(আরো পড়ূন)

যদি গৌর চাঁদকে পাই

যদি গৌর চাঁদকে পাই
গেল গেল এ ছার কুল তা’তে ক্ষতি নাই।।

কি ছার কুলের গৌরব করি
অকূলের কূল গৌর হরি
এ ভব তরঙ্গে তরী
     গৌর গোঁসাই।।

জন্মিলে মরিতে হবে
কুল কি কারো সঙ্গে যাবে
মিছে কেবল দুই দিন ভবে
     কুলের বড়াই।।

ছিলাম কুলের কুলবালা
সঙ্গে লয়ে আঁচলা ঝোলা
লালন বলে গৌরবালা
     আর কারে ডরাই।।

 

 

(আরো পড়ূন)

যে পরশ স্পর্শে পরশ

যে পরশ স্পর্শে পরশ
সে পরম পরশ চিনে লেনা
সামান্য পরশের গুণ
     লোহার কাছে যাবে জানা।।

পরশমণি স্বরূপ গোঁসাই
যে পরশের তুলনা নাই,
পরশিল যে জন তায়
     গিয়াছে জঠর যাতনা।।

কুমুরে পতঙ্গ যেমন
ধরাইল আপন বরণ,
সে পরশে জানে যে জন
     তেমনি তার উপাসনা।।

ব্রজের জলদ কালো
যে পরশে পরশ হল,
লালন বলে মনরে চল
     জানিতে তার উপাসনা।।

 

(আরো পড়ূন)

যে জন শিষ্য হয়,গুরুর মনের খবর লয়

যে জন শিষ্য হয়,গুরুর মনের খবর লয়
  এক হাতে যদি বাজতো তালি,তবে দুই হাত কেন লাগায়।।গুরু

শিষ্য এমনি ধারা,চাঁদের কোলে থাকে তারা,
  কাঁচা বাঁশে ঘুণে জ্বরা,গুরু না চিনলে ঘটে তাই।।

গুরু লোভী শিষ্য কামি, প্রেম করা তার সেচা পানি,
  উলু খড়ে জ্বলছে অগ্নি,জলতে নিভে যায়।।

গুরু শিষ্য প্রেম করা,মুঠের মধ্যে ছায়া ধরা,
 সিরাজ সাঁই কয় লালন তেরা,এমনই প্রেম করা চাই।।

 

(আরো পড়ূন)

অনেক ভাগ্যের ফলে,যে চাঁদ কেউ দেখিতে পায়

অনেক ভাগ্যের ফলে,যে চাঁদ কেউ দেখিতে পায়
  অমাবশ্যা নাই সে চাঁদে,দ্বিদলে তার কিরণ উদয়।।

যথা সে চাঁদের ভুবন,দিবা রাতের নাই আলাপন,
  কোটি চন্দ্র জিনি কিরণ বিজলী চঞ্চলে সদায়।।

সিন্ধু মাঝে বিন্দু বারি,মাঝখানে তার স্বর্ণগিরি,
অধর চাঁদের বিরাজ পুরী,
  সেহিত তিল প্রমাণ যায় গায়।।

দরশনে দুঃখ হরে,পরশিলে পরশ করে,
  এমনি সে চাঁদের মহিমা,লালন ডুবে ডোবে না তায়।।

 

(আরো পড়ূন)

দেখবি যদি সে চাঁদেররে

দেখবি যদি সে চাঁদেররে
  যা যা কারণ সমুদ্দুরের পারে।।

কারুন্য তারুণ্য আড়ি,যে জম দিতে পাড়ি,
  সে বটে সাধক এড়ায় ভবলোকে,

বশত হবে তার অমর নগরে
  এক নদীর তিন বইছে ধারা,

নাইকো নদীর কূল কিনারা,বেগে তুফান ধায়,দেখে লাগে ভয়,
  পার হও যদি সাজাও প্রেমের তরী রে।।

মায়ার গেরাফি কাট ত্বরায় প্রেম তরতে চড়,
সামনে কারণ সমুদ্দুর,পার হ’য়ে হুজুর,
    যারে লালন শুধু গুরুর বাগ ধরে।।

 

(আরো পড়ূন)

হীরালাল মতির দোকানে গেলেনা

হীরালাল মতির দোকানে গেলেনা
  সদায় কিনলিরে পিতল দানা।।

চটকে ভুলেরে যন,হারালি অমূল্য ধন,
  এবার হেরে বাজী কাঁদলে তখন,আর সরেনা।।

শেষের কাথা আগে ভাবে,উচিত বটে তাই জানিবে,
  গত কর্মে বিধি কিরে,মন রসনা।।

ব্যাপারের লাভ করলি ভাল,সে গুণপনা জানা গেল,
  অধীন লালন বলে মিছে হল,আনা যানা।।

 

(আরো পড়ূন)

পাগল দেওয়ানের কি ধন দিয়া পাই

পাগল দেওয়ানের কি ধন দিয়া পাই।।
      আছে কি ধন আমার,সদায় মনে ভাবি তাই।।

দেহ মন ধন দিতে হয়,সেও ধন তাঁরই আমার ত নয়,
     আমি মুটে মোট চালাই,ভেবে দেখি,

আমি বণিক তাও আমার হিসাব নাই।।
     নাগলা বেটার পাগলা খিজি,নয় সামান্য ধনে রাজি,

কোন ভাবে কোন ভাব মিশাই,পাগলার ভাব না জেনে,
    যদি যাই সামনে,পাগল হয় কি সঙ্গে মাখলে ছাঁই।।

পাগল ভেবে পাগল হলাম,সেই পাগল কৈ সরল হলাম,
   আপন পরত ভুলে নাই,অধীন লালন বলে,
আপনার আপনি ভুলে,ঘটে প্রেমপাগলের এমনি বাই।।

 

(আরো পড়ূন)

হীরালাল মতির দোকানে গেলেন

হীরালাল মতির দোকানে গেলেন।।
সদায় কিনলিরে পিতল দানা।।

চটকে ভুলেরে মন,অমূল্য ধন,
এবার হেরে বাজী কাঁদালে তখন,আর সরেনা।।

শেষের কথা আগে ভাবে,উচিত বটে তাই জানিবে,
গত কর্মে বিধি কিরে,মন রসনা।।

ব্যাপারের লাভ করলি ভাল,সে গুণপনা জানা গেল,
অধীন লালন বলে মিছে হল,আনা যানা।।

 

(আরো পড়ূন)

হীরালাল মতির দোকানে গেলেন

হীরালাল মতির দোকানে গেলেন।।
সদায় কিনলিরে পিতল দানা।।

চটকে ভুলেরে মন,অমূল্য ধন,
এবার হেরে বাজী কাঁদালে তখন,আর সরেনা।।

শেষের কথা আগে ভাবে,উচিত বটে তাই জানিবে,
গত কর্মে বিধি কিরে,মন রসনা।।

ব্যাপারের লাভ করলি ভাল,সে গুণপনা জানা গেল,
অধীন লালন বলে মিছে হল,আনা যানা।।

 

(আরো পড়ূন)

মন বিবাগী বাগ মানেনারে

মন বিবাগী বাগ মানেনারে।।
যাতে অপমৃত্যু হবে সদায় করে।।

কিসে হবে আমার ভজন সাধন, মন হলনা মনের মতন,
দেখে শিমুর পুল, সদায় ব্যাকুল,
মনকে বুজাইতে নারি জনম ভরে।।

মনের গুণে কেহ মহাজন হয়,
ঠাকুর হয়ে কেহ নিত্যপূজা খায়, আমার এই মনেত,
আমায় করল হত, দুকূল হারালাম মনে ফেলে।।

মন কি মনাই তারে হাতে পালাম না কিরূপ তার করি সাধনা,
লালন বলে আমি হলাম পাতাল গামী,
কি করিতে এসে গেলাম কি করে।।

 

(আরো পড়ূন)

হায় কি কলেন ঘরখানি ভেঁধে

হায় কি করে ঘরখানি বেঁধে, বিরাজ করেন সাঁই আমার।।
দেখবি যদি সে কুদরতি দেলদরিয়ার খবর কর।।

জলের জোড়া সকল সেই ঘরে
খুটির গোড়া শূন্যের উপর,
শূন্য ভরে সন্ধি করে
     চার যুগে আছেন অধর।।

তিল পরিমাণ যায়গা বোঝা যায়
শত মত কুঠরী কোঠা তায়,
নীচে উপর নয়টি দুয়ার
     নয় ভাবে সাঁই দিচ্ছে বার।।

ঘরের মালেক আছে বর্তমান একজন,
তারে দেখলি নারে দেখবি আর কখন,
সিরাজ সাই কয় লালন তোমার
     বলব কি সাঁইয়ের কীর্তি আর ।।

 

(আরো পড়ূন)

আকার কি নিরাকার সাঁই রাব্বানা

আকার কি নিরাকার সাঁই রাব্বানা।।
আহাদ আর আহাম্মদের বিচার হলে যায় জানা।।

আহাদ নামেতে দেখি, মিম হরফ লেখে নফি,
মিম গেলে আহাদ বাকি, আহাম্মদ নাম থাকে না।।

খুদিতে বান্দার দেহে, খোদা সে লুকাইয়ে;
আহাদে মিম বসায়ে, আহাম্মদ হল সেনা।।

এই পদের অর্থ বুঝে, কর জ্ঞান বসবে ধড়ে,
কেউ বলবে লালন ভেড়ে, ফাকড়াম সেই বোঝেনা।।

 

(আরো পড়ূন)

কে বুঝিতে পারে আমার সাঁইর কুদরতি

কে বুঝিতে পারে আমার সাঁইর কুদরতি।।
অগাধ জলের মধ্যে জ্বলছে বাতি।।

বিনা কাষ্ঠে অনল জ্বলে, জল রয়েছে বিনা স্থলে,
আখের হবে জল অনলে, প্রলয় অতি।।

অনলে জল উম্ম হয় না, জলে সে আনল নিভে না,
এমনি সে কুদরত কারখানা, দিবা রাতি।।

যে জলে ছাড়বে হুংকার, ডুবে যাবে আগুনের ঘর,
লালন বলে সেই দিন বান্দার, হয় কি গতি।।

 

(আরো পড়ূন)

হক নাম বল মন পাখী

হক নাম বল মন পাখী।।
ভবে কেউ কারো নয়রে দুঃখের দুখী।।

ভুলনারে ভবে ভ্রান্ত কাজে,
অদেখারে সব কাণ্ড মিছে মনরে আসতে একা যেতে একা,
এ ভব বিপরীতের ফল আছে কি।।

হাওয়া বন্ধ হলে সুপদ কিছুই নাই,
বাড়ীর বাহির করেন সবায়, মনরে কেবা আপন পরকে তখন,
দেখে শুনে খেদে ঝরছে আঁখি।।

গোরের কিনারে যখন লয়ে যায়, কেঁদে সবে জীবন ছাড়তে চায়,
লালন বলে কারো কেউ যায়না, থাকতে হয় একাকী।

 

(আরো পড়ূন)

যেখানে সাইর বারামখানা

যেখানে সাইর বারামখানা।।
শুনিলে প্রাণ চমকে ওঠে, দেখতে যেন ভুজঙ্গন।।

যা ছুঁইলে প্রাণে মরি, এ জগতে তাইতে তরি,
বুঝে-ত বুঝতে নারি, কি করি তার নাই ঠিকানা।।

আত্মতত্ত্ব যে জেনেছে, দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে,
কুবৃক্ষে সুফল পেয়েছে, আমার মনের ঘোর গেলনা।।

যে ধনে উৱপত্তি প্রাণধন,সে ধনের হলনা যতন,
অকাজের ফল পাবা লালন,দেখে শুনে জ্ঞান হলনা।।

 

(আরো পড়ূন)

না জেনে ঘরের খবর তাকাই আসমানে

না জেনে ঘরের খবর তাকাই আসমানেট
চাঁদ রয়েছে চাঁদে ঘরে ঘরের ঈশান কোণে।।

প্রথমে চাঁদ উদয় দক্ষিণে
কৃষ্ণ পক্ষে অধো হয় বামে
আবার দেখি শুল্কপক্ষে
      কিরূপে যায় দক্ষিণে।।

খুঁজলে আপন ঘরখানা
পাইবে সকল ঠিকানা
বার মাসে চব্বিশ পক্ষ
      অধর ধরা তার সনে।।

স্বর্গচন্দ্র মণিচন্দ্র হয়
তাহাতে বিভিন্ন কিছু নয়
এ চাঁদ ধরলে সে চাঁদ মিলে
      লালন কয় তাই নির্জনে।।

 

শুদ্ধপাঠ নির্ণয়: ৪ এপ্রিল ২০১৮

(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা. ৪৮)

 

(আরো পড়ূন)

ঠিকের ঘুরে ভুল পড়েছে মন

ঠিকের ঘুরে ভুল পড়েছে মন।।
কিসে চিনবিরে মানুষ রতন।।

আপন খবর নাই আপনারে, বেড়াও পরের খবর করে,
আপন-খবর জানলে পরকে চেনা যায় তখন।।

ছিলে কোথা এলে হেথা, নিরূপন কি করলি তাহা,
না বুঝে মুড়ালি মাথা, পথের নাই তোর অন্নেসণ।।

যার সঙ্গে এই ভবে এলি, তারে অজ কোথায় হারালি।।
সিরাজ সাঁই কয় পেট শাখালি; তাই লয়ে পাগল লালন।।

 

(আরো পড়ূন)

যার আপন খবর আপনার হয় না

যার আপন খবর আপনার হয় না।।
আপনার আপনি চিনতে পারলে পাবি সেই অচিনারে চিনা।।

আত্মা রূপে কর্তা হরি, সাধন করতে পারলে,
পাবিরে তার ঠিকানা,
ঘুরে বেড়াও দিল্লী শহর, কোলের ঘোর কেন যায়না।।

নিকট থাকতে দূরে তাকায়,
কেশের আড়ে পাহাড় লুকায় দেখনা,
বেদ বেদান্ত পড়বি যত পড়বেরে তোর লখান।।

অনন্ত নদীর সুধী, পান করিলে রয়না ভব ক্ষুধা
লালন মরল জল পিপাসে থাকতে মেঘনা।।

 

(আরো পড়ূন)

হুজুরে কার হবেরে নিকাশ দেনা

হুজুরে কার হবেরে নিকাশ দেনা।।
পঞ্চজন আছে বেরাদার তার ঘোল জনা।।

পণ্ডিত পাঠকের কাছে জনম ভরে সুধাই এসে ঘোর গেলনা,
পরে লয় পরের খবর, নিজের খবর নিজের হয় না।।

ক্ষিতি জল বাও হুতাশনে, যার যার বস্তু সেই সেখানে,
মিশিবে তাই, আকাশে মিশেবে আকাশ জানা গেল পঞ্চ বেনা।।

আত্ম কর্তা কারে বলি, কোন মোকাম তার কোথায় গলি,
আওনা যাওনা, সেই মহালে লালন কোন জন,
তাও লালনের ঠিক হলনা।।

 

(আরো পড়ূন)

যে রুপে সাঁই আছে মানুষে

যে রুপে সাঁই আছে মানুষে।।
শুদ্ধ রসের রসিক না হলে কি পাবি তার দিশে।।

তালার উপরে তালা, তার ভিতরে চিকণ কালা,
দেখা যায় সে দিনের বেলা, রসেতে ভাসে।।

বেদী ভাই বেদ পড়ে সদায়, আসলে গোলমাল বাধায়,
রসিক ভাইয়ে ডুবে হৃদয়; রত্ন পায় সে।।

লা মোকামে আছে নূরী, সে কথা অকৈতব ভারি,
লালন হয় তার দ্বারের দ্বারি,আদ্য মাতাসে।।

 

(আরো পড়ূন)

চিরদিন পোষলাম এক অছি পাখী

হায় চিরদিন পোষলাম এক অছি পাখী।।
পাখী ভেদ পরিচয় দেয়না মোরে, ঐ খেদে ঝোরে আখিঁ।।

পাখী বুলি বলে শুনতে পাই, পাখীর রূপ কেমন দেখিয়া ভাই,
উপায় কি করি,
চেনাল পেলে চিনে নিতাম যত মনের ধুকধুকি।।

পোষা পাখী চিনলাম না, আমার এ লজ্জাত যাবে না,
বিষম ঘোর দেখি, কোন দিন সাধের পাখী উড়ে যাবে,
ধুলা দিয়ে দুই চোখী।।

পাখী বসে থাকে খাঁচাতে যায় আসে কোন পথে,
আমার দিয়ারে ভিলকী সিরাজ সাঁই কয়,
বয় লালন বয়, ফাঁদ পেতে ঐ সম্মুখী।।

 

(আরো পড়ূন)

আমার এ ঘর খানায় কে বিরাজ করে

আমার ঘর খানায় কে বিরাজ করে।।
জনম ভরে একদিনও না
        দেখলাম তারে।।

নড়ে চড়ে ঈশান কোণে
দেখতে পাইনে এই নয়নে,
হাতের কাছে যার ভবের হাট বাজার,
        ধরতে গেলে হাতে পাইনা তারে।।

সবে বলে প্রাণ পাখী
শুনে চুপে চেপে থাকি,
জল কি হুতাশন
মাটি কি পবন,
কেউ বলে না একটা নির্ণয় করে।।

আপন ঘরের খবর হয় না
বাঞ্ছা করি পরকে চিনা,
লালন বলে পর বলতে পরমেশ্বর
সে কী রূপ আমি কী রূপ রে।।

 

(আরো পড়ূন)

তারে চিনবে কি এই মানুষে

তারে চিনবে কি এই মানুষে।।
মেরে সাঁই ফিরে যে রূপে সে।।

গোলকে আটল হরি
ব্রজপুরে বংশীধারী,
নদীয়াতে অবতরী
     বামনরূপে প্রকাশে।।

মায়ের শুরু পুতের শিষ্য
দেখে জীবের জ্ঞান নৈরাশ্য,
এবার কি তাহার মনের উদ্দেশ্য
     ভেবে বোঝা যায় কিসে।।

আমি বলি নয় নিরাকার
সে ফেরে স্বরূপ আকার,
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার
      কৈ হলরে সে দিশে।।

 

(আরো পড়ূন)

না জানি কেমন রূপ সে

না জানি কেমন রূপ সে।।
রূপের গৌরবে যার, ত্রিভুবন মোহিত করেছে।।

দেখতে মনে হয় বাসনা, নাইকো রূপের ঠিক ঠিকানা,
কিসে হয় তার উপাসনা, রূপ সৃষ্টি করলেন কোথায় বসে।।

আকার কি সাকার ভাবিব,নিরাকার কি জ্যোতিরূপ,
একথা কারে সুধাব, কি রূপে যাই রূপের দেশে।।

রূপের দেশে গোল যদি রয় কি বলিতে কি বলা যায়,
গোলে হরি বল্লে কি হয়, লালন ভেবে না পায় দিশে।।

 

(আরো পড়ূন)

সাধ্য কিরে আমার সে রূপে দেখিতে

সাধ্য কিরে আমার সে রূপে দেখিতে।।
অহোনিশি মায়াঠুসি জ্ঞান চোখেতে।।

ঈশান কোণে হামেশ ঘড়ি, সে নড়ে কি আমি নড়ি,
আমার আমি হাতড়ে ফিরি, পারি না ধরতে।।

অচিন আর আমি একজন, এক জাগাতে থাকি দুজন,
ফাঁকে থাকি লক্ষ্য যোজন,পারি না চিনতে।।

ঢুড়ে হদ্দ মেনে আছি,এখন বসে খেদাই মাছি;
লালন বলে মরে বাঁচি কোন কার্যতে।।

 

(আরো পড়ূন)

খুঁজে ধন পাই কী মতে

খুঁজে ধন পাই কী মতে?
পরের হাতে (ঘরের) কল কাঠি।।

শব্দের ঘরে নিঃশব্দের কুঁড়ে
সদায় তারা আছে জুড়ে
দিয়ে জীবের নজরে
ঘোর টাটি।।

আপন ঘরে পরের কারবার
আমি দেখলাম নারে (তার) বাড়ী ঘর
আমি বেহুশ মুটে
কার মোট খাটি।।

থাকতে রতন আপন ঘরে
একি বেহাদ আজ আমারে
লালন বলেরে মিছে
ঘর বাটি।।

(আরো পড়ূন)

কি সন্ধানে আমি যাই সেখানে

কি সন্ধানে আমি যাই সেখানে
মনের মানুষ যেখানে
আঁধার ঘরে জ্বলছে বাতি
দিবারাতি নাই সেখানে।।

যেতে পথে কাম নদীতে
পাড়ি দিতে তীর বিনে
(কতো) ধনীর ভাড়া যাচ্ছে মারা
পড়ে নদীর তোর তুফানে।।

রসিক যারা চতুর তারা
তারাই নদীর ধারা চিনে
উজান তরী যাচ্ছে বেয়ে
তারাই স্বরূপ সাধন জানে।। 

লালন বলে ম’লাম জ্বলে
ম’লাম আমি নিশি দিনে
মনের মানুষ স্থূলে রেখে
দেখাও স্বরূপ নীলাঞ্জনে।।

(আরো পড়ূন)

অবোধ মন তোরে আর কী বলি

অবোধ মন তোরে আর কী বলি।
পেয়ে ধন সে ধন হারালি।।

মহাজনের ধন এনে
ছড়ালি তুই উলুবনে
কী হবে নিকাশের দিনে
সে ভাবনা কই ভাবিলি।।

সই করিয়ে পুঁজি তখন
আনলি রে তিন রতি এক মণ
ব্যাপার করা যেমন তেমন
আসলে খা’দ মিশালি।।

করলি ভালো বেচাকেনা
চিনলি না মন রাং কই সোনা
লালন বলে মন রসনা
কেন সাধুর হাটে আ’লি।।

(আরো পড়ূন)

শহরে ষোলজনা বোম্বেটে

শহরে ষোলজনা বোম্বেটে
করিয়ে পাগল পারা
নিল তারা সব লুটে।। 

রাজ্যেশ্বর রাজা যিনি
চোরের শিরোমনি
নালিশ করিব আমি
কোন সময় কার নিকটে।।

ছয়জন ধনি ছিল
তারা সব ফতুর হল
কারবারে ভঙ্গ দিল
কখন যেন যায় উঠে।।

ছিল ধন মাল পোরা
খালি ঘর জমা করা
লালন কয় খাজনারই দায়
কখন যেন যায় লাটে।।

(আরো পড়ূন)

আমার হয়না রে সেই মনের মত মন

আমার হয়না রে সেই মনের মত মন
কি-সে জানব রে সেই রাগের করন।।

পড়ে রিপু ইন্দ্র ভোলে
মন বেড়ায়রে ডালে ডালে
দুই মনে এক মন হইলে
এড়ার শমন।।

রসিক ভক্ত যারা
মনে মন মিশাল তারা
শাসন করে তিনটি ধারা
পেল রতন।।

কবে হবে নাগীনি বশ
সাধব করে অমৃত রস
সিরাজ সাঁই কয় বিষেতে নিশ
হলি লালন।।

 

(আরো পড়ূন)

মন বুঝি মদ খেয়ে মাতাল হয়েছে

মন বুঝি মদ খেয়ে মাতাল হয়েছে।
জানে না কানচির খবর রঙমহলের নিকাশ নিচ্ছে।।

ঠিক পড়ে না কুড়ো কাঠা
মুলে ধরে সতের গণ্ডা
অকারন খাটিয়ে মনটা
পাগলামি প্রকাশ করতেছে।।

যে জমির নাই আড়া-দিঘতলা
কীরূপ কালি করে সেথা
শুনি চৌদ্দ পোয়ার কথা
কুড়ো কাঠা কই আন্দোজে।।

কৃষ্ণদাস পণ্ডিত ভাল
কৃষ্ণলীলার সীমা দিল
তার পণ্ডিতি চুর্ণ হ’ল
টুনটুনি এক পাখির কাছে।।

বামন হয়ে চাঁদ ধরতে যায়
অমনি আমার মন মনুরায়
লালন বলে কবে কোথায়
এমন পাগল কে দেখেছ।।

(আরো পড়ূন)

ভাল জল-ছেঁচা কল পেয়েছ মনা

ভাল জল-ছেঁচা কল পেয়েছ মনা।
ডুবারু জন পায় সে রতন তোর কপালে ঢনঢনা।।

মান সরোবর নামটি তার
লালমতি আছে অপার ডুপতে পারলে না
ডুবতে যেয়ে খাবি খেয়ে
সুখটা বোঝ শেষখানা।।

ইন্দ্রদ্বারে কপাট দেয়
সেই বটে ডুবারু হয়, নইলে হবেনা;
আপা ছেঁচা কাদা খচা
কী অদ্ভুতের কারখানা।।

জল ছেঁচা নদী শুকায়
কার বা এমন সাধ্য হয় কে পায় পরশখানা;
লালন বলে ছন্দি পেল
যায় সমুদ্দুর লঙ্ঘনা।।

(আরো পড়ূন)

মন রে দিনের ভাব যেই ধারা

মন রে দিনের ভাব যেই ধারা।
শুনলে রে জীবন অমনি হয় সারা
ও সে মরার সঙ্গ মরে ভাবসাগরে
ডুবতে যদি পারে স্বাভাবিক তারা।।

অগ্নি ঢাকা জৈছে ভস্মের ভিতরে
সুধা তেমনি আছে গরলে হল করে
ও কেই সুধার লোভে যেয়ে মরে গরল খেয়ে
মস্থনে সু-তাক না জানে যারা।।

দুধে ননীতে মিলন সর্বদা
মন্থন দণ্ডে করে আলাদা আলাদা
মন রে তেমনি ভাবের ভাবে, সুধানিধি পাবে
মুখের কথা নয় রে সে ভাব করা।।

যে স্তনেতে দুগ্ধ খায় রে শিশু ছেলে
মন্থন জোঁকের মুখে সে তা রক্ত এসে মেলে
অধীন লালন ভেবে বলে বিচার করিলে
কুরসে সুরস মেলে সেই ধারা।।

(আরো পড়ূন)

আবোধ মন রে তোর হলো না দিশে

আবোধ মন রে তোর হলো না দিশে।
এবার মানুষের করন হবে কিসে।।

কোনদিন আসবে যমের চেলা
ভেঙে যাবে ভবের খেলা
সেদিন হিসাব দিতে বিষম জ্বালা
ঘরবে শেষে।।

উজান-ভেটেন দুটি পথ
ভক্তি-মুক্তির করন সেতো
এবার তাতে যায় না জরা-মৃত
যমের ঘর সে।।

যে পরশে পরশ হবি
সে করন আর কবে করবি
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় লালন রলি
ফাঁকে বসে।।

(আরো পড়ূন)

যেওনা আন্দাজি পথে মন রসনা

যেওনা আন্দাজি পথে মন রসনা
কুপাকে কুপেঁচে পড়ে
(তোমার) প্রান বাঁচবে না।। 

পথের পরিচয় করে
যাও না মনে সন্দেহ মেরে
লাভ লোকসান বুদ্ধির দ্বারে
যায় গো জানা।।

উজান ভাটি পথ দুটি
দেখে নয়ন কর খাঁটি
দাও যদি মন-গড়া ভাটি
কুল পাবা না।।

অনুরাগ তরনী কর
বাও চিনে উজানে ধর
লালন বলে করতে পার
মূল ঠিকানা।।

 

(আরো পড়ূন)

মন কি তুই ভেড়ুয়া বাঙ্গাল জ্ঞান ছাড়া

মন কি তুই[১]ভডুয়া বাঙ্গাল জ্ঞান ছাড়া
সদরে সাজ করছ ভাল
পাছ-বাড়ী তোর নাই বেড়া।। 

কোথায় বস্তু কোথায় মন
চৌকি পাহারা দাও অনুক্ষন
কাজ দেখি পাগলের মতন
কথায় দেখি কাঠ ফাঁড়া।।

কোন কোণায় কি হচ্ছে ঘরে
এক দিন দেখলি না তারে
পিতৃধন সবে গেল চোরে
হলিরে তুই ফুকতারা।।

পাছ-বাড়ী আঁটেল কর
ঘর-চোরার চিনে ধর
লালন বলে নইলে তোরও
থাকবে না মুল এক কড়া।।

(আরো পড়ূন)

আমি ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়

(আমার) মনের মনে হোল না একদিনে
আমি ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়
যাব কার সনে।। 

আমার বাড়ী আমারই ঘর
বলা কেবল ঝাকমারী সার
কোনদিন পলকে হইবে সংহার
হবে কোন দিনে।।

পাকা দালান কোঠা দিব
মহাসুখে বাস করিব
(আমি) ভাবলাম না কোনদিকে যাব
যাব শ্মশানে।।

কি করিতে কিবা করি
পাপে বোঝাই হইল তরি
ফকির লালন কয় তরঙ্গ ভারী
দেখি সামনে।।

 

(আরো পড়ূন)

সরল হয়ে করবি কবে ফকিরি

সরল হয়ে করবি কবে ফকিরি।
দেখ মনুরায় হেলায় হেলায় দিন তো হল আখেরি।।

ভজবি রে লা-শরিকালা
ঘুরিস কেন কালকেতলা
খাবি রে নৈবেদ্য কলা
সেইটা কি আসল ফকিরি।।

চাও অধীন ফকিরি নিতে
ঠিক হয়ে কই ডুবলি তাতে
কেবল দেখি দিবারাতে
পেট-পূজার টোল ভারি।।

গৃহে ছিলি ছিলি ভাল
আঁচলা ঝুলায় কী লাভ হ’ল
সিরাজ সাঁই কয় নাহি গেল
নাল পড়া লালন তোরি।।

 

(আরো পড়ূন)

কারে দিব দোষ নাহি পরের দোষ

কারে দিব দোষ নাহি পরের দোষ
(আপন) মনের দোষে আমি পলাম রে ফেরে।
আমার মন যদি বুঝিত , লোভের দেশ ছাড়িয়ে
      লয়ে যেত আমায় বিরজা পারে।।

মনের গুনে কেউ হলো মহাজন
বযাপাড় করে পেল অমূল্য রতন
আমারে মজালি ওরে অবোধ মন
      পারের সম্বল না গেলাম করে।।

অন্তিমকালের কালে কিনা জানি হয়
একদিন ভাবিলে না অবোধ মনরায়
মনে ভেবেছ এ দিন এমনি বুঝি যায়
     জানা যাবে যে দিন শমনে ধরে।।

কামে চিও হত মন রে আমার
সুধা ত্যেজে গরল খায় বেসুমার
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার
     ভগ্নদশা ভারি ঘটলো আখেরে।।

(আরো পড়ূন)

অন্তিম কালের কালে ওকি হয় না জানি

অন্তিম কালের কালে ওকি হয় না জানি।
কি মায়াঘোরে কাটালাম হারে দিনমনি।।

এনেছিলাম বসে খেলাম,
উপার্জন কৈ কি করিলাম,
নিকাশের বেলা খাটবে না ভোলা
      এলো বাণী।।

জেনে শুনে সোনা ফেলে,
মন মজালাম রাঙ পিতলে,
এ লাজের কথা বলিব কোথা
      আর এখনি।।

ঠকে গেলাম কাজে কাজে,
ঘিরিল উনপঞ্চাশে,
লালন বলে, মন কি হবে এখন
     বলরে শুনি।।

 

(আরো পড়ূন)

আজ রোগ বাড়ালি শুধু কুপথ্যি করে

আজ রোগ বাড়ালি শুধু কুপথ্যি করে
ঔষধ খেয়ে অপযশটি করলি কবিরাজেরে।।

মানিলে কবিরাজের বাক্য
তবে রোগ হত আরোগ্য
মধ্যে মধ্যে নিজে বিজ্ঞ
     হয়ে গোল বাধালি রে।।

অমৃত ঔষধ খালি
তাতে মুক্তি নাহি পেলি
লোভ-লালসে ঘুরে মলি
    ধিক তোর লালসেরে।।

লোভে পাপ পাপে মরণ
তা কি জান না রে মন
লালন বলে যা যা এখন
      মন গা যা ঘোর বিমারে।।

 

(আরো পড়ূন)

আপন মনে যার গরল মিশে

আপন মনে যার গরল মিশে
যেখানে যায় সুধার আশে তলায় গরল দেখে।।

মনের গরল যাবে যখন
সুধাময় সব দেখবে তখন
পরশিলে এড়ায় শমন
     নইলে পড়বি পাকে।।

কীর্তিকর্মার কীর্তি ইঠাঁই
যে যা ভাবে তাই দেখতে পায়
গরল বলে কারে দোষাই
     ঠিক পড়ে না ঠিকে।।

রামদাস মুচির মন সরলে
চামের কৌটায় গঙ্গা মিলে
সিরাজ সাঁই কয় লালনের
     তা কি ঘটবে তোকে।।

 

(আরো পড়ূন)

গুনে পড়ে সারলি দফা

গুনে পড়ে সারলি দফা
       করলি রফা গোলেমালে
চিনলি না মন কোথা সে ধন
      ভাজলি বেগুন পরের তেলে

করলি বহুত পড়াশোনা
      কাজে কামে ঝলসে কানা
কথায় তো চিড়ে ভেজে না
       জল কিম্বা দুধ না দিলে।।

আর কি হবে এমন জনম
      লুটবি মজা মনের মতন
বাবার হোটেল ভাঙবি যখন
       খাবি তখন কারবা শালে।।

হায় কি মজা তিলে খাজা
      দেখলিনা মন কেমন মজা
লালন কয় বেজাতের রাজা
       হয়ে রইলাম একই কালে।।

 

(আরো পড়ূন)

এ জনম গেলো রে অসার ভেবে

এ জনম গেলো রে অসার ভেবে
পেয়েছো মানব জনম হেন দুর্লভ জনম আর কি হবে?

জননীর জঠরে যখন
অধোমুণ্ডে ছিলে রে মন
বলেছিলে করব সাধন
       এখন কী তা মনে হয় না ভবে।।

ও মন কারে বলো আমার
ও তুমি কার আজ কেবা তোমার
যাবে সকল গোমর
      যেদিন শমন রায় আসিবে।।

ও মন এদিনে সেদিন ভাবলে না
কি ভেবে কি করো মনা
লালন বলে যাবে জানা
      হারলে বাজি কাঁদলে কি আর পাবে।।

 

(আরো পড়ূন)

অবোধ মনরে তোমার হল না দিশে

অবোধ মনরে তোমার হল না দিশে
এবার মানুষের করন হবে কিসে।।

কোনদিন আসবে যমের চেলা
ভেঙে যাবে ভবের খেলা
সেদিন হিসাব দিতে বিষম জ্বালা
     ঘটবে শেষে।।

উজান ভাটি দুটো পথ
ভক্তিমুক্তির করন সেতো
এবার তাতে যায় না জরাস্রোত
    যমের ঘর সে।।

যে পরশে পরশ হবি
সে কারন আর কবে করবি
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় লালন রইলি
    ফাঁকির বশে।।

 

(আরো পড়ূন)

চল দেখি মন কোন দেশে যাবি

চল দেখি মন কোন দেশে যাবি
অবিশ্বাসী কোথায় কি ধন পাবি।।

এ দেশে ভূত প্রেতে হলে
যারে পিঁড়েয় ফয়তা দিলে
পেঁড়োর ভূত কোন দেশে গেলে
      মুক্তি পায় কীসে ভাবি।।

মন বোঝে না তীর্থ করা
মিছামিছি খেটে মরা
পেঁড়োর কাজ পিঁড়েয় সারা
      নিষ্ঠা মন হয় যদ্যপি।।

বার ভাটি বাংলা জুড়ে
একই মাটি আছে পড়ে
সিরাজ শাহ কয় লালন ভেড়ে
      ঠিক দাও আপন নসিবি।।

 

(আরো পড়ূন)

বুঝবি রে গৌরপ্রেমের কালে

বুঝবি রে গৌর প্রেমের কালে
আমার মতো প্রাণ কাঁদিলে।
দেখা দিয়ে ভাবের শহর কোথায় গৌর লুকাইলে ।।

যেদিনে হতে গৌর হেরেছি
আমাতে কী আমি আছি।
কী যেন কী হয়ে গেছি প্রাণ কাঁদে গৌর গৌর বলে।।

তোরা থাক জাত কূল লয়ে
আমি যাই চাঁদ গৌর বলে
আমার দুঃখ বুঝলিনা রে এক মরণে না মরিলে।।

চাঁদমুখেতে মধুর হাসি
আমি ঐরূপ ভালোবাসি।
লোকে করে দ্বেষাদ্বেষী (আমি) গৌর বলে যাই গো চলে।।

একা গৌর নয় গৌরাঙ্গ
নয়ন বাঁকা শ্যাম ত্রিভঙ্গ।
এমনই তার অঙ্গ গন্ধ লালন কয় জগত মাতালে।।

 

(আরো পড়ূন)

কে বোঝে কৃষ্ণের অপার লীলে

কে বোঝে কৃষ্ণের অপার নিলে
শুনি তিলার্ধ নাই ব্রজ ছাড়া
     কে তবে মথুরায় রাজা হলে॥

শুনি রাধা ছাড়া তিলার্ধ নয়
ভারত পুরাণে তাই কয়
তবে কেন ধনী দুর্জয়
     বিচ্ছেদ জগতে জানালে॥

সবে বলে অটল হরি
সে কেন হয় দণ্ডধারী?
কিসেরি অভাব তারি
     ঐ ভাবনা ভেবে ঠিক না মেলে॥

নিগূঢ় খবর জানা গেলে
পুরুষ হৈতে নারী হোল
তবে কেন এমন হোল
     আগে রাধা পাচ্ছে কৃষ্ণ বলে॥

কৃষ্ণের লীলার লীলে অথই
থই দিবে কেউ সেসাধ্য নাই
কি ভাবিয়ে কি করে যাই
লালন বলে প’লাম বিষম ভোলে॥

ভোলাই শা-র খাতা গান-নং৮৪/৪৯

 

(আরো পড়ূন)

ব্রজ লীলে একী লীলে

ব্রজ লীলে একি লীলে!
     কৃষ্ণ গোপিকারে জানাইলে ॥

যারে নিজ শক্তিতে গঠলেন নারায়ন
আবার গুরু বলে ভজলেন তার চরণ
একি ব্যবহার শুনি চমৎকার
     জীবের বোঝা ভার ভূমণ্ডলে ॥

লীলে দেখে কম্পিত ব্রজধাম
নারীর মান ঘুচাতে যোগী হলেন শ্যাম
দুর্জয় মানের দায় বাঁকা শ্যাম রায়
     নারীর পাদপদ্ম মাথায় নিলে ॥

এ জগতের চিন্তে শ্রীহরিত
আজ কি হরির চিন্তে হলেন গো নারী
অসম্ভব বচন ভেবে কয় লালন
     রাধার দাসখাতে শ্যাম বিকাইলে ॥

 

(আরো পড়ূন)

কানাই একবার ব্রজের দশা

কানাই একবার ব্রজের দশা দেখে যারে
তোরই মা যশোদে কি হালে আছে রে।।

শোকে তোর পিতা নন্দ
কেঁদে কেঁদে হোল অন্ধ
গোপীনীগণ সবার ধন্দ
     হয়েছে রে।।

বালক যুবা বৃদ্ধ আদি
নিরানন্দ নিরবধি
না দেখে চরণ নিধি
     তোরই তরে।।

না শুনে তোর বাঁশীর গান
পশুপাখী উচাটন
লালন বলে ছিদাম হেন
     বিনয় করে রে।।

 

(আরো পড়ূন)

সেই কালাচাঁদ নদেয় এসেছে

(মরি) সেই কালাচাঁদ নদেয় এসেছে
সে না বাজিয়ে বাঁশী ফিরতো সদাই
     কুলবতীর (ব্রজাঙ্গনার) কুল-নাশে॥

যদি মজবি ও কালার পীরিতি
আগে জান গে উহার কেমন রীতি
ও তার প্রেম করা নয় প্রাণে মারা
     অনুমানে বুঝিয়েছে॥

যদি ও পদে কেউ রাজ্য দেয়
তবু কালার মন না পাওয়া যায়
এখন রাধা বলা কাঁদচ্ছে এখন
     তারে কত কাঁদিয়েছে॥

ব্রজে ছিল জলদ কালো
না জানি কি সাধনে গৌর হ’ল
(ফকির) লালন বলে চিহ্ন কেবল
     দুনয়ন বাঁকা আছে॥

 

(আরো পড়ূন)

তিন পাগলে হলো মেলা

তোরা কেউ যাস নে ও পাগলের কাছে
তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে॥

একটা পাগলামী করে
জাত দেয় সে অজাতেরে দৌড়ে গিয়ে
আবার হরি বলে পড়ছে ঢলে ধুলার মাঝে
    প’লো ধুলার মাঝে॥

একটা নারকেলের মালা
তাতে জল তোলা ফেলা করঙ্গ সে
পাগলের সঙ্গে যাবি পাগল হবি বুঝবি শেষে
     ওরে মন বুঝবি শেষে॥

দেখতে যে যাবি পাগল
অবশ্যই হবি পাগল অবশেষে
ছেড়ে দার ও ঘর দুয়ারও ফিরবি নেচে
     ওরে ফিরবি নেচে॥

পাগলের নামটি এমন
বলিতে ফকির লালন হয় তরাসে
অদ্বৈ’ নিতে চৈতে পাগল
     নাম ধরেছে॥

 

(আরো পড়ূন)

রাইসাগরে ডুবল শ্যামরায়

রাইসাগরে ডুবল শ্যামরায়
তোরা ধর গো হরি ধর গো হরি
     হরি নাগর ভেসে যায় ॥

রাইসগারে তরঙ্গ ভারি
ঠাই দিতে কি পারবেন শ্রীহরি
ছেড়ে রাজস্য প্রেমে ঔদাস্য
     কৃষ্ণের চিন্তার ক্যাঁথা উড়ে গায় ॥

চার যুগে ঔ কেলে সোনা
শ্রীরাধার দাস হতে পারল না
যদি হত দাস, যেত অভিলাষ
     আসতো কি আর নদীয়ায় ॥

তিনটি বাঞ্ছা অভিলাষ করে
প্রভু জন্ম নিল শচীর উদরে
সিরাজ সাঁইর বচন, মিথ্যা নয় লালন
     সে ভাব জানলে পরে রসিক হয় ॥

 

(আরো পড়ূন)

এনেছে এক নবীন গোরা

এনেছে এক নবীন গোরা
নতুন আইন নদিয়াতে।
বেদ পুরাণ সব দিচ্ছে দুষে
     সে আইনের বিচার মতে ॥

সাতবার খেয়ে একবার স্নান
নাই পূজা তার পাপ পূণ্যি জ্ঞান
অসাধ্যের সাধ্য বিধান
     শিখাচ্ছে সব ঘাটে পথে ॥

করে না সে জাতের বিচার
কেবল শুদ্ধ প্রেমের আচার
সত্য মিথ্যা জানব এবার
     সাঙ্গ পাঙ্গ জাত অজাতে ॥

পেয়ে ঈশ্বরের রচনা
তাই বলে সে বেদ মানে না
লালন কয় ভেদ-উপাসনা
     কর দেখি মন দোষ কি তাতে ॥

 

(আরো পড়ূন)

বলরে নিমাই বল আমারে

বলরে নিমাই বল আমারে
রাধা বলে আজগবি আজ
     কাঁদলি কেন ঘুমের ঘোরে?

সেই যে রাধার কি মহিমা
বেদাদিতে নাইরে সীমা
ধ্যানে যারে পায় না ব্রক্ষা
    কী রূপে জানলি সে রাধা রে! 

রাধে তোমার কি হয় নিমাই
সত্য করে বল রে আমায়
এমন বালক সময়
    এ বোল কে শিখাল তোরে ॥

তুমি শিশু ছেলে আমার
মা হয়ে ভেদ পাইনে তোমার
লালন কয় শচীর কুমার
     জগৎ ফেলল চমৎকারে ॥

 

(আরো পড়ূন)

গৌর এসে হৃদে বসে

গৌর এসে হৃদে বসে
     করলো আমার মন চুরি
সেকি আমার কবার কথা
     আপন বেগে আপনি মরি।।

কিবা রূপ গৌর-লম্পটে
ধৈর্যের ডুরি দেয়গো কেটে
লজ্জা ভয় সব যায় গো ছুটে
     যখন ঐ রূপ মনে করি।।

দেখা দেয় গৌর ঘুমের ঘোরে
চেতন হয়ে পাইনে তারে
লুকাইল কোন শহরে
     নবরসের রসবিহারি।।

মেঘ যেমন চাতকেরে
দেখা দিয়ে ফাঁকে ফেরে
লালন বলে তাই আমারে
     করল গৌর বরাবরই।।

(আরো পড়ূন)

ধন্য মায়ের নিমাই ছেলে

ধন্য মায়ের নিমাই ছেলে

এমন বয়সে নিমাই

ঘর ছেড়ে ফকিরী নিলে॥

 

ধন্য যে ভারতী যিনি

সোনার অঙ্গে দেয় কৌপিনী

শিখাইল হরি ধ্বনি

করেতে করঙ্গ দিলে॥

 

ধন্য পিতা বলি তারে

ঠাকুর জগন্নাথ মিশ্রে

যার ঘরে গৌরাঙ্গ হারে

মানুষ রুপে জন্মইলে॥

 

ধন্য রে নদীয়া বাসী

হেরিল গৌরাঙ্গ শশী

যে বলে জীব সেই সন্ন্যাসী

লালন কয় সে প’ল ফেরে॥

 

(আরো পড়ূন)

মনের কথা বলব কারে

মনের কথা বলব কারে আমি
মনের কথা বলব কারে
মন জানে আর জানে মরম
      মজেছি মন দিয়ে যারে॥

মনের তিনটি বাসনা
নদীয়ায় করব সাধনা
নইলে মনের বিয়োগ যায় না
     তাইতে ছিদাম বলি তোরে॥

কটিতে কৌপিন পরিব
করেতে করঙ্গ নিব
মনের মানুষ মনে রাখ
     কর যোগাব মনুষ্যিরে॥

যে দায়ের দায়িক আমার মন
রসিক বিনে জানে কোনজন
গৌর হয়ে নন্দের নন্দন
     লালন কয় তাই বিনয় করে॥

 

 

 

(আরো পড়ূন)

জানবো এই পাপী হতে

জানবো হে এই পাপী হতে
যদি এসেছে হে গৌর জীবকে তারিতে ॥

নদীয়া নগরে (ছিল) যত জন
সবারে বিলালে প্রেম (রত্ন) ধন,
আমি নরাধম না জানি মরম,
   চাইলে না হে গৌর আমা পানেতে ॥

তোমারি সুপ্রেমেরই হাওয়ায়
কাষ্ঠের পুতুলী নলিন হয়,
আমি দীনহীন ভজনবিহীন
   অপার হয়ে বসে আছি কোণেতে ॥

মলয় পর্বতের উপর
যত বৃক্ষ সকলি হয় সার,
কেবল যায় জানা বাঁশে সার হয় না,
   লালন পেলো তেমনি প্রেম, শূন্য-চিতে ॥

[রবীন্দ্র-ভবন, গান নং (২।২৫):৯, পৃ-১১১]

 

(আরো পড়ূন)