চিন্তা


চিন্তা ও তৎপরতার পত্রিকা

আসুন, চিন্তা করতে শিখি

নীচের লেখাটা পুরনো। আশাকরি এখনও প্রাসঙ্গিক। এ বিষয়গুলো নিয়ে নানা ভাবে লিখেছি, আরো লিখব বলে এখানে আবার শেয়ার করলাম। কেউ একজন প্রশ্ন করেছিল 'গণতন্ত্র ও নাগরিকতা কি ধ্রুব কিছু?' । এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে এই লেখা।

কিন্তু লেখাটা উলুবনে মুক্তা ছড়ানোর মতো অপচয় হয়েছে। আমাদের দেশে এক ধরণের ভূয়া ইসলামিস্ট আছে যাদের সাধনা হচ্ছে সেকুলার মহলে স্বীকৃতি পাওয়া। তারা এমন ভাবে প্রশ্ন তোলে যাতে মনে হয় তারা বুঝি আসলেই এই প্রশ্নের মীমাংসা চায়। অথচ এটা কিন্তু আসলেই ভাল প্রশ্ন ছিল। কিন্তু ঘুরিয়ে ভাত খাওয়ার মতো অবস্থা। স্মার্টগিরি ফলানো আর কি!! ফেইসবুকে কিছু একটা জিজ্ঞাসা করলাম -- ব্যস। অতোদূর।

এই প্রশ্নের নিহিতার্থ জিজ্ঞাসা হচ্ছে ইসলাম কি পাশ্ (আরো পড়ূন)

মৃতরা মুর্দা কবর দিতে থাকুক, নবজীবনের রাজপথে প্রবেশ করতে পারা ঈর্ষণীয় ব্যাপার, আর সেটাই হোক আমাদের ভবিষ্যৎ

দুর্ভাগ্য আমাদের যে ‘কমরেড’ সম্বোধনকে বাংলাদেশে আমরা অতিশয় হীন ও তামাশাপূর্ণ করে তুলেছি। কারন আমরা সহযোগিতা, বন্ধুত্ব এবং একসঙ্গে কাজ করবার রীতি থেকে বহু আগে ভ্রষ্ট হয়েছি। আমাদের রাজনৈতিক দুর্দশা থেকেই সেটা স্পষ্ট।

দুঃখজনক যে বাংলাদেশে কোন শক্তিশালী গণরাজনৈতিক ধারা আমরা গড়ে তুলতে পারি নি। সবচেয়ে বিশাল ক্ষতি হয়েছে যখন বাংলাদেশের বামপন্থা গণবিপ্লবী মতাদর্শকে ধর্ম বিশেষত ইসলামের বিপরীতে হাজির করতে শুরু করে। এটা ছিল হিন্দুত্ববাদী দিল্লীর ইসলাম নির্মূল রাজনীতির অংশ। এর ফলে কমিউনিজমসহ সকল গণবিপ্লবী ধারার প্রতি জনগণ সন্দিহান ও অবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।

এর ফল হয়েছে মারাত্মক। এই দুর্দশা বাংলাদেশের বামপন্থাকে পর্যালোচনা না করলে বো (আরো পড়ূন)

মানবাধিকার অস্বীকার করার অর্থ মানুষের মানবিক সত্তা অস্বীকার করা

আমার একটি পোস্টে আমি নেলসন মানডেলাকে ‘কমরেড’ সম্বোধন করায় আমার একজন ফেইসবুক বন্ধু জিজ্ঞাসা করেছেন তাঁকে কেন আমি ‘কমরেড’ সম্বোধন করলাম? ভাল প্রশ্ন।

যারা জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের জন্য লড়েন তাদের যথাযথ সম্মান জানাবার জন্য ‘কমরেড’ ঐতিহাসিক কারণেই খুবই সম্মানসুচক সম্বোধন। দক্ষিণ আফ্রিকার ‘এপারথেইড’ বা জাতিবৈষম্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নেলসন মান্ডেলার লড়াইয়ের জন্য তাঁকে ‘কমরেড’ সম্বোধন করা রীতি।

এছাড়াও নেলসন মানডেলাকে 'কমরেড' সম্বোধন করা হয় কারণ তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ‘আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস’ (ANC)--এর একজন সক্রিয় সদস্য এবং শীর্ষ নেতা ছিলেন। ANC একটি সমাজতান (আরো পড়ূন)

সকল ফ্রন্টে প্রতিরোধ শক্তিশালী হোক

কোন আরব দেশ করে নি, কোন মুসলিম দেশও নয়, গাজায় গণহত্যার মতো জঘন্য অপরাধে অভিযুক্ত করে ইজরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতে (ইন্টারন্যাশলাল কোর্ট অফ জাস্টিস) তুলল দক্ষিণ আফ্রিকা: কালোমানুষদের দেশ, কমরেড নেলসন মান্ডেলার দক্ষিণ আফ্রিকা। জিন্দাবাদ দক্ষিণ আফ্রিকা, জিন্দাবাদ কমরেড নেলসন মান্ডেলা।   

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যা মামলার গণশুনানি বৃহস্পতিবার ১১ জানুয়ারী, ২০২৪ তারিখে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) শুরু হয়েছে। বিচারের প্রথম দিনে, দক্ষিণ আফ্রিকা গত ২৯ ডিসেম্বর গণহত্যার অভিযোগ তুলে অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির আভেদন জানিয়ে যে মামলাটি দায়ের করেছিল তার পক্ষে শক্ত প্রমাণ পেশ করেছে। ৭ অক্টোবর থে (আরো পড়ূন)

সংবিধান ও গণতন্ত্র 

ভূমিকা

এক 

পত্র পত্রিকায় ‘কলাম’ বলে খ্যাত যেসব লেখালিখি নব্বই সালের দিকে করেছি, তাদের মধ্যে কয়েকটি 'সংবিধান ও গণতন্ত্র' নামের পুস্তিকায় প্রতিপক্ষ প্রকাশনী ছেপেছিল ১৯৯৩ সালে— প্রায় পনেরো বছর পার হতে চলেছে। অনেকদিন হোল পুস্তিকাটি আর পাওয়া যাচ্ছে না। নানা কারণে পুস্তিকাটির কথা অনেকে বলেন। কিছু চাঁচাছোলা কথা সেই নব্বইয়ের শুরু থেকেই আমি বলে আসছি যার গুরুত্ব ক্রমে ক্রমে বাংলাদেশের বাস্তব রাজনৈতিক ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে বেড়েছে। যে সকল প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছি তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি কিভাবে প্রসঙ্গগুলো তুলেছিলাম সেই দিকটাও মূল্যবান বলে মনে করেন অনেকে; বিশেষত রাজনৈতিক ব (আরো পড়ূন)

‘ঘোড়ার জীন মাটিতে লাগে না, রাজাবাবুকে চড়ে বসলেই হোল’ অথবা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্ম হয় কীভাবে? 

একটি প্রবাদ শুনেছিলাম এরকম: ‘ঘোড়ার জিন মাটিতে লাগে না, রাজাবাবুকে চড়ে বসলেই হোল’। বাক্যটির পশ্চাতে সামন্ত ব্যবস্থার প্রতি একটা কটাক্ষ আছে‌। রাজার শরীর আর তার বাহনের উপর স্থাপিত আসনের সঙ্গে মাটির কোনো যোগ নেই। প্রজাদের সঙ্গে ধরাছোঁয়া নেই। আমাদের মত দেশে যেখানে আমরা পশ্চাদপদ সামন্ত সম্পর্কগুলোকে রাজনৈতিকভাবে লড়ে বিনাশ করি নি সেখানে ঔপনিবেশিক শক্তি সরে যাবার পর তার গাঁথুনির উপর ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্র হিসাবে যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটাও সেই রকম : ‘ঘোরার জীন মাটিতে লাগে না, রাজাবাবুকে চোড়ে বসলেই হোল’।

সেই সামন্ত উপনিবেশিক ধারাবাহিকতায় একদিকে আমাদের দেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও নিপীড়নের সকল রাষ্ট্রিক (আরো পড়ূন)

গণঅভ্যুত্থানের বিকল্প নাই 

গত সোমবার নভেম্বরের বারো তারিখে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন তাঁর পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাকে ‘নিরপেক্ষ সরকারের বিকল্প নাই’ শিরোনামে বর্তমান আন্দোলন সম্পর্কে তাঁর স্পষ্ট উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন। তিনি লিখছেন, ‘সুস্থ চিন্তা-ভাবনার লোকদের উদ্বেগের শেষ নাই, কীভাবে আন্দোলনকে নিয়মতান্ত্রিক পথে রাখা সম্ভব।’ কেন এই উদ্বেগ? মইনুল হোসেন লিখছেন, ছাত্র-জনতা ক্ষোভে-বিক্ষোভে ফাটিয়া পড়িতেছে। আন্দোলনে সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পাইতেছে। কোন কোন দায়িত্বশীল নেতা এই আশঙ্কা ব্যক্ত করিয়াছেন যে, আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের দিকে মোড় নিতেছে। ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজ এইবারের আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করিতেছে বিধায় আন্দোলন যে ঘামিবার নয় তাহাও বুঝি (আরো পড়ূন)

অভ্যুত্থান পরবর্তী পদক্ষেপ: এখন কী করতে হবে 

এরশাদের পতনের মধ্য দিয়ে দুটো ব্যাপার লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠেছে। একদিকে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতৃত্বে এক অসাধারণ গণঅভ্যুত্থান, অথচ অপরদিকে সমরতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গায়ে একটি আঁচড় না লাগা। জনগণকে দমন করবার সকল নাট-বল্টুসহ রাষ্ট্রের অগণতান্ত্রিক ভিত্তি ও কাঠামো পুরোপুরি সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত থেকে গেছে। অবাক লাগে, এত বড় অভ্যুত্থান হবার পরেও রাষ্ট্রের গায়ে একটি আঙ্গুলের টোকাও টুক্ করল না। ওটা বহাল তবিয়তেই খোশহাল বজায় আছে। এটাও আশ্চর্যের যে এতো বড়ো বিজয়ের পরেও আমরা ব্যক্তির মৌলিক অধিকার বিরোধী গণধিকৃত স্পেশাল পাওয়ার এক্টিটি পর্যন্ত এখনো রদ করতে পারি নি। অন্যান্য কালো আইনের কথাটি অনেক দূরের ব্যাপার। ইতিমধ্যে চক্রান্ত শুরু হয়েছে, সর্বদলীয় ছাত (আরো পড়ূন)

সংবিধান ও নাগরিকদের গণতান্ত্রিক চেতনা, ইচ্ছা ও সংকল্প 

বিচারপতি সৈয়দ সাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার রোকনুদ্দিন মাহমুদ। প্রধান বিচারপতি কে এম হাসান বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলেছেন বা আইনি ভাষায় ‘রেফারেন্স’ প্রেরণ করেছেন। তার মানে প্রধান বিচারপতি বা জুডিশিয়াল কাউন্সিল মনে করেছেন বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য বিষয়টি তদন্ত করে দেখা দরকার। রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি বা জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেলেও তদন্তের নির্দেশ দেবার এখতিয়ার রাখেন। খবরের কাগজে যখন আমরা দেখলাম যে, রাষ্ট্রপতি এই ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ চেয়েছেন তখন নাগরিক হিশাবে অনেক সাংবিধানিক এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আন্তরিক- অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ (আরো পড়ূন)

গণতন্ত্রের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের মৌলিক সংঘাতটা কোথায়? 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির যে নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে তাতে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। এই বর্বরতা শুধু ভয় জাগিয়েই ক্ষান্ত হয় নি, সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকের মনে প্রশ্নও জাগিয়ে তুলেছে হাজারো রকম। কী চায় জামায়াত-শিবির? তারা কি চায় নির্বাচন না হোক এবং আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির অজুহাতে সেনাবাহিনী আবার ক্ষমতা দখল করুক? অপরদিকে প্রশ্ন জাগে, এরশাদ ও তার অনুচররা তো এখন আর ক্ষমতায় নেই, অতএব প্রশাসনের নির্ভয়ে এখন কাজ করতে পারা উচিত। স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের অবর্তমানে এ ধরনের ঘটনা ঘটা তো অনেক পরের কথা, ঘটবার আগেই প্রশাসনের উচিত ছিল তা নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ দূরে থাকুক ঘটনা ঘটবার সময় পুলিশকে বরং দেখা গেলো ঘটনা ঘট (আরো পড়ূন)

যুদ্ধ আরো কঠিন আরো গভীর

ফরহাদ মজহারের এই নিবন্ধগুলো এক-এগারোর সময়কালে বিভিন্ন সময়ে লেখা। এক-এগারোর সময়কাল ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে পরের বছর ২০০৮ সাল জুড়ে। নিবন্ধগুলো ২০০৮ সালের রাজনৈতিক ঘটনা-ঘটনের পটভূমিতে বসে সমসাময়িক সময় ও প্রসঙ্গ নিয়ে লেখা। ফলে ইতিহাসের বাস্তব ও সুনির্দিষ্ট উপাদানে ভরপুর। তবে এটা কেচ্ছাকাহিনীর মতো বলে যাওয়া কোনো বিবরণ নয়। বরং তার মধ্য দিয়ে মূলত বাস্তবতা ও বাস্তব ঘটনাঘটনের প্রতি তাৎক্ষণিক পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই লেখালিখিগুলো বাংলাদেশের রাজনীতির ময়দানে নতুন বয়ান ও মতামত হাজির করেছে, রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। ফলে আমরা লেখাগুলিকে খোদ এই ইতিহাসের প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই পড়তে পারি। এই লেখাগুলি আ (আরো পড়ূন)

দখলদারদের বিরুদ্ধে ঐক্য চাই, ফাঁদে পা দেবেন না

ফরহাদ মজহারের এই নিবন্ধগুলো এক-এগারোর সময়কালে বিভিন্ন সময়ে লেখা। এক-এগারোর সময়কাল ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে পরের বছর ২০০৮ সাল জুড়ে। নিবন্ধগুলো ২০০৮ সালের রাজনৈতিক ঘটনা-ঘটনের পটভূমিতে বসে সমসাময়িক সময় ও প্রসঙ্গ নিয়ে লেখা। ফলে ইতিহাসের বাস্তব ও সুনির্দিষ্ট উপাদানে ভরপুর। তবে এটা কেচ্ছাকাহিনীর মতো বলে যাওয়া কোনো বিবরণ নয়। বরং তার মধ্য দিয়ে মূলত বাস্তবতা ও বাস্তব ঘটনাঘটনের প্রতি তাৎক্ষণিক পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই লেখালিখিগুলো বাংলাদেশের রাজনীতির ময়দানে নতুন বয়ান ও মতামত হাজির করেছে, রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। ফলে আমরা লেখাগুলিকে খোদ এই ইতিহাসের প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই পড়তে পারি। এই লে (আরো পড়ূন)

প্রস্থানপথ নাই, অতএব পদলেহন...

ফরহাদ মজহারের এই নিবন্ধগুলো এক-এগারোর সময়কালে বিভিন্ন সময়ে লেখা। এক-এগারোর সময়কাল ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে পরের বছর ২০০৮ সাল জুড়ে। নিবন্ধগুলো ২০০৮ সালের রাজনৈতিক ঘটনা-ঘটনের পটভূমিতে বসে সমসাময়িক সময় ও প্রসঙ্গ নিয়ে লেখা। ফলে ইতিহাসের বাস্তব ও সুনির্দিষ্ট উপাদানে ভরপুর। তবে এটা কেচ্ছাকাহিনীর মতো বলে যাওয়া কোনো বিবরণ নয়। বরং তার মধ্য দিয়ে মূলত বাস্তবতা ও বাস্তব ঘটনাঘটনের প্রতি তাৎক্ষণিক পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই লেখালিখিগুলো বাংলাদেশের রাজনীতির ময়দানে নতুন বয়ান ও মতামত হাজির করেছে, রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। ফলে আমরা লেখাগুলিকে খোদ এই ইতিহাসের প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই পড়তে পারি। এই লে (আরো পড়ূন)

জনগণের গণতান্ত্রিক ঐক্য গড়ে উঠুক

ফরহাদ মজহারের এই নিবন্ধগুলো এক-এগারোর সময়কালে বিভিন্ন সময়ে লেখা। এক-এগারোর সময়কাল ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে পরের বছর ২০০৮ সাল জুড়ে। নিবন্ধগুলো ২০০৮ সালের রাজনৈতিক ঘটনা-ঘটনের পটভূমিতে বসে সমসাময়িক সময় ও প্রসঙ্গ নিয়ে লেখা। ফলে ইতিহাসের বাস্তব ও সুনির্দিষ্ট উপাদানে ভরপুর। তবে এটা কেচ্ছাকাহিনীর মতো বলে যাওয়া কোনো বিবরণ নয়। বরং তার মধ্য দিয়ে মূলত বাস্তবতা ও বাস্তব ঘটনাঘটনের প্রতি তাৎক্ষণিক পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই লেখালিখিগুলো বাংলাদেশের রাজনীতির ময়দানে নতুন বয়ান ও মতামত হাজির করেছে, রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। ফলে আমরা লেখাগুলিকে খোদ এই ইতিহাসের প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই পড়তে পারি। এই লে (আরো পড়ূন)

ইসজরায়েল ও মোদির ভারতের মধ্যে স্বাভাবিক দোস্তি বর্তমান

“Today’s Israel and Modi’s India are natural partners, sharing values of racist ethnocracy and illegal annexation, and, for Israel, offering a market for military and other advanced technology". (Noam Chomsky)

জায়নবাদি ইজরায়েল আর হিন্দুত্ববাদী মোদির ভারতের মধ্যে স্বাভাবিক দোস্তি বর্তমান। অথচ কেউ কেউ দাবি করেন ফিলিস্তিন অনেক দূরের ব্যাপার, ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রাম নিয়ে আমাদের না ভাবলেও চলবে।

বাংলাদেশে যারা এই দাবি করে তারা শুধু যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, এবং জায়নিস্ট রাষ্ট্র ইজরায়েলের নীরব সমর্থক তা নয়, তারা একই সঙ্গে বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী দিল্লির স্থানীয় বরকন্দাজ। ফ্যাসিস্ট শক্তি ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ (আরো পড়ূন)

চিন্তা ও পর্যালোচনার শক্তি ছাড়া গণরাজনৈতক ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব না

এবার ভাববৈঠকি-১২ তে আলোচনা-পর্যালোচনার বিষয় ছিল ‘ফিলিস্তিন, সাম্রাজ্যবাদ এবং গণপ্রতিরোধের তাৎপর্য’। গণহত্যা, জাতিবৈষম্য এবং সারা দুনিয়ায় যুদ্ধ বিরতির প্রবল দাবির পরও ইজরায়েল নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। যারা শত ব্যস্ততার মধ্যেও ভাববৈঠকিতে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের ধন্যবাদ। যারা ভাববৈঠকি চালিয়ে যাবার জন্য আমাদের নানা ভাবে সহায়তা করেছেন তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

খেয়াল করলেই আমরা বুঝব আমাদের সবগুলো বৈঠকই ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা। বাংলাদেশে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাকে সক্রিয় রাজনীতি এবং গণচেতনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার প্রতি আমাদের প্রধান আগ্রহ। কাজটা মোটেও সহজ নয়। দ্বিতীয়ত আরও কঠিন কাজ হচ্ছে সাধারণ মান (আরো পড়ূন)

প্যালেস্টাইন নিয়ে কথা বলা বন্ধ করবেন না

আমেরিকার প্রতিটি মুসলিম নাগরিক জানে যে প্যালেস্টাইনের প্রতি ন্যায়বিচারের পক্ষে কথা বলার অর্থ  দুই দফায় শাস্তি পাওয়া: এক দফা আপনাকে ‘ইসলামোফোবিয়া’ (বা ইসলা্মের প্রতি আতংকের) মোকাবিলা করতে হবে, এবং আরেকবার ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লংঘনের  জন্য ইসর (আরো পড়ূন)

ফিলিস্তিন, সাম্রাজ্যবাদ ও গণপ্রতিরোধের তাৎপর্য

এর আগে ভাববৈঠকি-১০-এ আমরা “ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রাম: ইতিহাস, ভূ-রাজনীতি ও জায়নবাদ” নিয়ে একদফা আলোচনা করেছি। অনেকের সঙ্গে সম্মিলিত ভাবে প্যালেস্টাইনের জনগণের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সংহতি জানিয়ে শহিদ মিনারে অনুষ্ঠান করেছি। এবার আমরা ঘটনাঘটনের আরও একটু গভীরে যেতে চাইছি।

সাতই অক্টোবর হামাসের প্রতিরোধের পর বর্ণবাদী ও জায়নিস্ট রাষ্ট্র ইজরায়েলের হিংস্র পালটা হামলা, নির্বিচার বোমা মেরে গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা, প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া ইত্যাদির জন্য সারা বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের জন্য ইজরাইলের নেতাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি উঠেছে। এই লেখা যখন লিখছি তখন গাজার স্বাস্থ্য দফতরে (আরো পড়ূন)

বিএনপি, ভোটাভুটির বাজার ও গণতন্ত্র - ২

 ‘নো ট্যাক্স উইদাউট রিপ্রেজেন্টেশান’

এবার আমরা আসি বিএনপির অসহযোগ ঘোষণার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে। সেটা হোল, অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকারকে ট্যাক্স, খাজনা ও ইউটিলিটি বিল না দেওয়া। নির্বাচিত সরকার না হলে ট্যাক্স, খাজনা বা কর নেবার অধিকার নাই, বা "নো ট্যাক্স উইদাউট রিপ্রেজেন্টেশান" – গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র সম্পর্কে এই ধারণা দানা বেঁধেছে মার্কিন দেশে আঠারোশ শতকের শেষের দিকে। এই রণধ্বণি প্রথম তোলা হয়েছিল ১৭৬৫ সালে, যখন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট আমেরিকার উপনিবেশগুলিতে স্ট্যাম্প আইন পাস করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখন ব্রিটেনের কলোনি। এই আইন অনুসারে, আমেরিকার উপনিবেশবাসীরা সকল সরকারি দলিল, পত্রিকা, বই, ইত্যাদিতে স্ট্যাম্প কর দ (আরো পড়ূন)

বিএনপি, ভোটা ভুটির বাজার ও গণতন্ত্র -১

২১ ডিসেম্বর ২০২৩ 

বিএনপি এবং ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শেখ হাসিনার সরকারের ২০২৪ সালের নির্বাচনে যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে বিএনপি বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে সাতই জানুয়ারির ভোট বর্জন করা, ট্যাক্স, খাজনা ও ইউটিলিটি বিল না দেওয়া। এই আহ্বান বিএনপি প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি জানিয়েছে। ক্ষমতা থেকে ফ্যাসিস্ট শক্তি উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। শুরু থেকেই আমরা বলেছি চরম প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচনী ডামাডোলে সময় অপচয় না করে ফ্যাসিস্ট শক্তি ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করাই আমাদের কাজ। দেরিতে হলেও বা ন (আরো পড়ূন)

একুশ শতকে বাঙালি

বাঙালির জীবনে দুবার জাগরণ এসেছিল; বাংলার ইতিহাস থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়‌। বর্তমানে বাঙালি তৃতীয় জাগরণের ধাপ অতিক্রম করছে। অন্যভাবে বলা যায়, বাঙালি তৃতীয় জাগরণের পর্যায়ে রয়েছে।

বিশ্বের কোন দেশ আজ আলাদা বা বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে পারে না। আবার কোনো দেশ নিজস্ব ভিত্তি বা শেকড়হীন হয়েও চলতে পারে না।

প্রতিটি দেশ, প্রতিটি জাতি আজ পরস্পর যুক্ত এবং একে অপরের উপর নির্ভরশীল। পারস্পরিক সহযোগিতা এবং প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে এই সম্প্রীতি ক্রমাগত গড়ে উঠেছে। বাঙালি জাতিও এই বাস্তবতার ভেতর দিয়ে ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছে তৃতীয় জাগরণের পথে‌। পূর্ববর্তী দুই জাগরণ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্নতর তৃতীয় এই জাগরণ বাঙালি জীবনে নবতর সামাজিক উপাদান স (আরো পড়ূন)

বিজয় দিবস 

।। ১।।

আজ বাংলাদেশের অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করবার দিন। যারা জীবনপণ লড়েছেন এবং বাংলাদেশকে হানাদারমুক্ত করবার জন্য জীবন দিয়েছেন। আজ আমরা আমাদের সেই সকল যোদ্ধাদের স্মরণ করব, যাদের ঋণ কখনই শোধ হবার নয়। আজ ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা ও চেতনাবাজদের মুখোশ খুলে ফেলার দিন।

এটাও স্মরণে রাখতে হবে সেই সকল অকুতোভয় সৈনিকদের আত্মত্যাগের সঙ্গে আমরা প্রতিদিনই বিশ্বাসঘাতকতা করে চলেছি। কারন আমরা ধরে নিয়েছি যুদ্ধ শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে বাংলাদেশে ধর্ম বনাম ধর্ম নিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতিবাদ বনাম ইসলাম ইত্যাদি নানান কিসিমের বিরোধ ও দ্বন্দ্ব জিইয়ে রেখে আমরা বাংলাদেশে নিরন্তর একটা গৃহযুদ্ধ জারি রেখেছি। আমরা বাংলাদেশে কেউ সজ্ঞানে আর কেউ না জেনে ফ্যাসিস্ট রাষ্ (আরো পড়ূন)

ইসরায়ের পক্ষে ভেটো: যুক্তরাষ্ট্র

আজ ১০ ডিসেম্বর ২০২৩। পঁচাত্তর বছর আগে এই দিনে সার্বজনীন মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক সনদটি (Universal Declaration of Human Rights) প্যারিসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ঘোষিত হয়। কিন্তু মানবাধিকারের কি দুর্দশা সেটা গাজাকে কিভাবে সবার চোখের সামনে প্রকাশ্যে ধ্বংস করা হচ্ছে তাতে স্পষ্ট। অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবি তোলার দিন আজ। বাংলাদেশেও যা কিছু জয় করবার তা জনগণকেই লড়ে আদায় করে নিতে হবে।

আজ মানধিকার দিবসে শিক্ষণীয় কি? পরাশক্তি আমাদের মানবাধিকার রক্ষা করবে এবং একের পর এক স্যাংকশন দিয়ে বিরোধী দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এই উদ্ভট, অ-রাজনৈতিক, গণবিরোধী এবং কাপুরোষচিত চিন্তা থেকে মুক্ত হওয়ার দিন। কিন্তু মানবাধিকারের ক (আরো পড়ূন)

শ্রমিক, কৃষক ও মেহনতজীবী শ্রেণীর দাবিদাওকে জাতীয় প্রশ্ন হিশাবে তুলবার সক্ষমতা অর্জন জরুরি

তৈরি পোশাক কারখানা বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত। এই রপ্তানি খাতের ওপর আমাদের বৈদেশিক আয় নির্ভরশীল। গার্মেন্ট শ্রমিকদের ঘামে ও পরিশ্রমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জিত হয়। অথচ সবসময়ই তাদের মজুরি বাড়ানোর জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়, শ্রমিকের রক্ত ঝরে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির দাবি সব সময়ই উপেক্ষা করা হয়েছে। কেন?

ন্যুনতম মজুরি ইস্যুকে সর্বোচ্চ জাতীয় রাজনৈতিক ইস্যু হিশাবে গুরুত্ব না দিয়ে নিছকই শ্রমিক আর মালিকদের দরকষাকষির বিষয় হিসেবে দেখা যাবে না। এটা রাষ্ট্রের সহায়তায় মালিকপক্ষের এক তরফা সিদ্ধান্ত নেবার বিষয় না। একদিকে গার্মেন্ট শ্রমিক এবং পাশাপাশি বিদেশে ঘাম ও রক্ত উজাড় করে পাঠানো রেমিটেন্সই আমাদের অর্থনীতির খুঁটি। (আরো পড়ূন)

হামাস জিতেছে

গাজায় ইসরায়েলের টানা ৪৭ দিনের হামলার করবার পর ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় চার দিনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মুখে যুদ্ধে বিরতি দেওয়া হয়। আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে ভূ-রাজনৈতিক স্থিতাবস্থার গ্রন্থি ছিঁড়ে যাবার উপক্রম ঘটায় এ যুদ্ধ সাময়িক থামানো হোল। যুদ্ধবিরতিতে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র ওকালতি করে। এরপর দুই দফায় মোট তিন দিন বাড়ানো হয় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ।

প্রাক্তন মার্কিন মেরিন স্কট রিটার বলেছেন "ইসরায়েলের নিজস্ব মানদন্ড দ্বারা"-ও যদি পরিমাপ করা হয় তাহলে তাদের বোমা হামলা এবং স্থল আক্রমণ ব্যর্থ হয়েছে।

কেন? তাঁর যুক্তি হচ্ছে ইসরায়েল ৭ অক্টোবর সর্বশেষ উত্তেজনা শুরু হওয়ার পর থেকে যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিশেষত হামাস যখ (আরো পড়ূন)

দাবায়ে রাখতে পারবা না

জো বাইডেন শুরু থেকেই যেভাবে নিঃশর্তে নেতানিয়ানহুকে সমর্থন করে যাচ্ছিলেন তার রাজনৈতিক পরিণতি তাঁর জন্য ভাল হয় নি। ইসরায়েলের গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের প্রতি তার নিঃশর্ত সমর্থন দেশের ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে মার্কিন জনগণের বৃহৎ একটি অংশ তাঁর বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ভাবে যুক্তরাষ্ট্র তার ভাবমূর্তি ও আধিপত্য খুইয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যুদ্ধে বিধ্বস্ত ইউক্রেনের পরাজয় এবং ইউরোপে রাজনৈতিক ও জ্বালানি সংকট। ইউরোপে রাজনৈতিক সংকট বাড়বে এবং বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোভূক্ত দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে প্রক্সি ওয়ার চালাচ্ছে তা এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। জায়নিস্ট ইসরায়েলের নির্লজ্জ তল্পিবাহক হিশাবে স্নায়ুযুদ্ধোত্তর বিশ (আরো পড়ূন)

উপমহাদেশে জায়নবাদ ও হিন্দুত্ববাদের কোলাকুলি

নির্বাচন কমিশন বিএনপি ও বিরোধী দলের দাবিদাওয়ার প্রতি কোন কর্ণপাত না করে একতরফা নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। এটা কার্যত বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং এশিয়ায় মার্কিন ভূরাজনৈতিক স্বার্থের বিপরীতে আঞ্চলিক পরাশক্তি হিশাবে দিল্লির পেশী প্রদর্শন। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, এটা তারা বারবার বলেছে; জনগণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়ে সরকার বদলাক, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হোক -- সেটাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের অনুকুল। চিন ও মায়ানমার মোকাবিলার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। কুটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে এবং স্যাংকশান দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দ (আরো পড়ূন)

মানবাধিকার, প্যালেস্টাইন ও বাংলাদেশ

বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ১৬ নভেম্বর তারিখের প্রতিবেদন অত্যন্ত সময়োচিত হয়েছে। (দেখুন, Bangladesh: UN Rights Review Amid Violent Crackdown) । তবে ‘মানবাধিকার’ কতোটা কাজের তা নিয়ে তর্ক আছে। থাকবে। বিশ্বের সামনে প্রকাশ্যে ইসরাইল প্যালেস্টাইনের জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটাচ্ছে এবং জায়নিস্ট বর্ণবাদি রাষ্ট্র কায়েম রেখে বর্ণবৈষম্য ব্যবস্থা ( Apartheid) সবার নাকের ডগায় অনায়াসেই বহাল রাখতে পারছে। তাই মানবাধিকার নিয়ে বিতর্ক অস্বাভাব (আরো পড়ূন)

নদী থেকে সমুদ্র...

From River to the Sea
Palestine WILL be FREE

সারা দুনিয়ায় ইহুদি, খ্রিস্টান, মুসলমান কিম্বা পরিচয় নির্বিশেষে সকলেই একদা মুক্ত হবে। জায়নিস্ট রাষ্ট্র ইসরায়েল এবং ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তির বিরুদ্ধে সারা দুনিয়ার জনগণের এই রণধ্বণি নতুন রাজনীতির ইঙ্গিত ঘোষণা করছে।

সমুদ্রের পরিবেশ ও বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ আন্দোলনের জন্য পরিবেশবাদীদের কাছে সম্ভবত প্রাক্তন মার্কিন সেনা সদ্য Ken O' Keefe অপরিচিত নন। তবে ২০১০ সালে হামাস সম্পর্কে তার একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার ভাইরাল হয়েছিল।

হামাস কি সন্ত্রাসী?

যদি ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার থাকে তাহলে হামাসও প্যালেস্টাইনের জনগ (আরো পড়ূন)

রাষ্ট্রেরও আগে মানুষ

পাশ্চাত্য মিডিয়াগুলিতে হরদম যখন দাবি করা হয় যে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে, তখন অনেকের কাছে সেটা যুক্তিসঙ্গত মনে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আন্তর্জাতিক আইনে ‘এপারথেইড’ যদি অপরাধ হয়, তাহলে একটি এপারথেইড রাষ্ট্র সগর্বে টিকিয়ে রাখার যুক্তি কি? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোভূক্ত ইউরোপ কেন ইসইরাইল রাষ্ট্রের চরিত্র না বদলিয়ে সশস্ত্র, সহিংস ও ‘এপারথেইড’ রাষ্ট্র হিশাবেই ইসরায়েলকে টিকিয়ে রাখতে চাইছে? কেন ইসরাইলের চরিত্র ও নীতি পরিবর্তনের কথা বলছে না। কেন সারা বিশ্বের সামনে প্রকাশ্যেই তারা একটি জনগোষ্ঠিকে এপারথেইড রাষ্ট্রের অধিকারের ধূয়া তুলে নির্মূল করবার সহযোগী হয়েছে? কেন তারা নির্বিচারে নিরীহ শিশু সহ নিরপরাধ ফিলিস্তিনীদ (আরো পড়ূন)

এবার কি হামাস তাহলে প্রথম দফাতেই জিতে গেল?

নিজ বাসভূমি থেকে বিতাড়িত প্যালেস্টাইনের জনগণের ন্যায্য দাবি অস্বীকার করা, অসলো শান্তি চুক্তিসহ বিভিন্ন সময়ে জাতিসংঘের প্রস্তাব বাস্তবায়িত না করা, প্যালেস্টাইন জনগণের দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামকে চিরকালের জন্য যাদুঘরে পাঠিয়ে যাবার সকল প্রক্রিয়া জারি রাখা এবং সেটলার-কলোনিয়াল রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সোদি আরব সহ মুসলিম দেশগুলোর সম্পর্ক ‘স্বাভাবিক’ করবার যে নীতি মার্কন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নেতৃত্বে বাস্তবায়িত হচ্ছিল – দেখা যাচ্ছে হামাসের এক হামলায় সবই ভেস্তে গিয়েছে। হামাসের হামলার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এখন স্পষ্ট।

বাধ্য হয়ে ইসরাইলের সমর্থক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ এখন প্যালেস্টাইনের জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোকেই হামাসের পক্ষে (আরো পড়ূন)

বিপ্লবী নবী 

মওলানা আবদুল কাদির আজাদ সুবহানি (১৮৯৬-১৯৬৩) ছিলেন বিখ্যাত রব্বানি দর্শনের প্রবক্তা। তিনি আল্লামা আজাদ সুবহানি নামে অধিক পরিচিত। ইসলামের নবি রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসালামকে রুহানি বয়ানের আলোকে পেশ করা এবং  'বিপ্লবী নবি হিশাবে হাজির করার প্রচেষ্টা সাহসী ও নতুন। ধর্ম নির্বিশেষে  মোহাম্মদ (সা) দলিত,  গরিব, হতদরিদ্র, লাঞ্ছিত, নিপীড়িত জনগণের সিপাহসালার হিশাবে  হাজির করার মধ্য দিয়ে আজাদ সুবহানি  বিখ্যাত হয়েছেন। বলাবাহুল্য ইসলামকে ক্রমাগত পরকালবাদী জগৎবিমুখ ধর্ম হিশাবে প্রতিষ্ঠিত করার  ধারা শক্তিশালী। বিপরীতে বিপ্লবী রাজনৈতিক চিন্তার জায়গা থেকে রাসুলকে (আরো পড়ূন)

নির্বাচন বনাম 'গঠন'

এক

জাতীয় ইনসাফ কমিটি গত ১৬ মার্চে তাদের প্রস্তাবনায় বাংলাদেশ নতুন ভাবে ‘গঠন’ করবার প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল। বাংলাদেশে চিন্তার দুর্ভিক্ষ এতোই প্রবল যে দৈনিক পত্রিকাগুলো গণরাজনৈতিক সত্তা হিশাবে রাষ্ট্রের ‘গঠন’-কে স্রেফ আইনী ব্যাপার ধরে নিয়েছে। তাদের রিপোর্টে সকলেই লিখেছে আমরা নাকি নতুন সংবিধান চাইছি। অথচ আমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলেছি। বলেছি, রাষ্ট্র স্রেফ ‘আইনী’ প্রতিষ্ঠান নয় যে উকিল-ব্যারিস্টারদের ধরে এনে একটি টুকলিফাই সংবিধান লিখে নিলেই ল্যাঠা চুকে যায়। এই ধরনের ধ্যান ধারনা কলোনিয়াল হ্যাঙ্গওভার। ইংরেজের শাসন করবার দরকার হয়েছে, তাই তারা একটা 'শাসন (আরো পড়ূন)

মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ: রণক্ষেত্র ও আর্থ-সামাজিক যুদ্ধ

জাফর ভাইকে ডায়ালাইসিস নিতে হবে, এটা আমি কখনও ভাবি নি। কিন্তু তিনি নির্বিকার। কোন কাজের কথা থাকলে ফোন দিলেই চলে যেতাম। কাজের গতিতে কোন খামতি নাই। যখন অসুস্থতা তাঁকে কাবু করে ফেলছে, তারপরও তাঁর টেলিভিশান টক শোতে সুযোগ পেলেই হাজির থাকতেন। ডায়ালাইসিস নিতে নিতে নিজের বেডে বসে কথা বলেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচিতে হুইল চেয়ারে বসে ছুটে গিয়েছেন। মৃত্যুর আগে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বিছানায় জোর করে তাঁকে ধরে বেঁধে রাখতে হয়েছে। একদমই অসুস্থ হয়ে পড়ার পর একদিন তাঁকে দেখে মানসিক ভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত হয়ে যাই। ঠিক করেছিলাম আর যাব না। এই শীর্ণকায় অসুস্থ জাফর ভাইকে আমি চিনি না। মৃত্যুর দুইদিন আগে ফরিদা আখতার আর আমি আবার গিয়েছিলা (আরো পড়ূন)

জাফর ভাই ও ‘গণলাইন’

হঠাৎ দৈনিক সমকাল থেকে স্বল্প পরিসরে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরি – অর্থাৎ জাফর ভাইকে নিয়ে কিছু কথা বলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এটা আসলে আমার জন্য কঠিন। তাঁকে নিয়ে লেখার বিষয় বিপুল। এ ধরণের মানুষ সমাজে কালেভদ্রে জন্মগ্রহণ করে। জর্মন দার্শনিক নীটশের একটা কথা মনে পড়ল; নীটশের একটি ফয়সালা হচ্ছে বড় মাপের মানুষদের নিয়ে কিছু বলতে চাইলে হয় বিস্ময়ে অভিভূত থাক, অথবা উন্নাসিক হও! নাক উঁচু করে ভাব দেখাও এ আর এমন কী! কিছুই হয় নি ভাব করে এড়িয়ে যাও! আমার এখন হয়েছে সে অবস্থা! অর্থাৎ জাফর ভাইকে নিয়ে লেখালিখি কঠিন কাজ।

জাফর ভাইয়ের সাথে আমার জীবন নানা ভাবে সরাসরি জড়িত। আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি, তার জন্য নয়। তাঁর সঙ্গে অনেকেই কাজ করেছেন এবং নিষ্ঠার সঙ্গ (আরো পড়ূন)

খরতাপ: বেশি উন্নয়ন ও কম পরিবেশ ধারণার পরিণাম

যে উন্নয়নের জন্যে পরিবেশ বিসর্জন দেয়া হয়েছে সেই উন্নয়ন ধরে রাখাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। প্রায় শতভাগ ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু এখন গ্রামেগঞ্জে বিদ্যুতের লাইন আছে বটে কিন্তু তাতে সরবরাহ নিয়মিত নাই। এরই আরেক নাম লোডশেডিং। সারাদেশে এই খরতাপের মধ্যে ঘরে লাগানো ফ্যানটিকে ঘুরতে দেখার প্রত্যাশায় কেটে যাচ্ছে দিনরাত। বিদ্যুৎ যাচ্ছে যতবার, আসছে তার চেয়ে অনেক কম।

চৈত্র-বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত চলে গ্রীষ্মকাল। কাজেই গরম পড়বে, তাপমাত্রা বেশি থাকবে এই বিষয় নিয়ে অবাক হবার কিছু নেই। এই সময় খরার মৌসুম, তাই প্রকৃতিতে ফসলের মৌসুমও সেভাবে ভাগ করা আছে। আউশ ধান খরাতেই হয়, সে কারণে খরাপ্রবণ এলাকায় আউশ ধানের চাষও খুব ভাল হয়। অন্যদিকে (আরো পড়ূন)

জেসমিন সুলতানার মৃত্যু ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে প্রশ্ন

জেসমিনের কি অপরাধ ছিল তা তদন্তের বিষয়। কিন্তু, তাকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দেয়া এই আইনের ‘অপব্যবহার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ২৯ মার্চ আইনমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তা অনেকটা ‘এপোলজেটিক’।

জেসমিন সুলতানা র‍্যাবের হাতে আটক অবস্থায় মারা গেছেন। তাঁকে রাজশাহী র‌্যাব-৫ এর একটি দল রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (যুগ্মসচিব) এনামুল হকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটক করেছিল। জেসমিন সুলতানা একজন চাকরিজীবী নারী ছিলেন, তিনি সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন।

যেদিন জেসমিনকে আটক করা (আরো পড়ূন)

গৌরবের মৃত্যু জাফর ভাইয়ের

তার মৃত্যুতেও গৌরব আছে। নিজ দেশে, নিজ হাসপাতালে, নিজ চিকিৎসক ও কর্মীদের হাতের সেবা নিয়ে তিনি গেছেন। কোনো আপোষ করেন নি।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বা জাফর ভাইকে আর কোনো সভায় বা মানববন্ধনের ব্যানারের পেছনে কিংবা মিছিলের সামনে হুইল চেয়ারে দেখা যাবে না । কিংবা দেখা যাবে না কোনো টেলিভিশন টক শো তে। তিনি এই ইহজগতের মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন। তাকে বেঁধে রাখতে পারেনি দেশের কোটি মানুষের ভালবাসা। তিনি সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে গেছেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।

তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে অনেকের মতো আমরাও ছুটে গিয়েছিলাম। এত শোকের মাঝখানেও সেখানে গিয়ে মনে হল, জাফর ভাইয়ের এই মৃত্যুতে গৌরব আছে। তিনি নিজের গড়ে তোলা হাসপাতালেই, নিজেদের গড়ে তোলা চিকিৎসক ও (আরো পড়ূন)

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সমস্যা

‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সমস্যা’ চটি পুস্তিকাটি মোহাম্মদ তোয়াহা (২ জানুয়ারি ১৯২২ - ২৯ নভেম্বর ১৯৮৭) গত শতাব্দির আশির দশকের মাঝামাঝি লিখেছেন। এটি প্রকাশিত হয়েছে ১লা অগাস্ট ১৯৮৫ সালে। বাংলাদেশের তরুণরা বাংলাদেশে বিপ্লবী কমিউনিস্ট ধারার চিন্তা ও কর্মতৎপরতা সম্পর্কে কিছুই প্রায় জানে না। এই পুস্তিকাটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে বিপ্লবী কমিউনিস্ট ধারার বহু ভুলভ্রান্তি রয়েছে, কিন্তু পাকিস্তান আমলে এবং পুরা ষাট ও সত্তর দশকে তাদের অবদান ছিল অসামান্য।  সামন্ততন্ত্র, আধা বা সামন্ততান্ত্রিক অবশিষ্ট – অর্থাৎ প্রাক-পুঁজিতান্ত্রিক সকল সম্পর্ক উৎখাত করে উৎপাদন শক্তির গতিশীল বি (আরো পড়ূন)

প্রবাসী শ্রমিকদের বাদ দিয়ে কি এলডিসি থেকে উত্তরণ সম্ভব?

মার্চের ৫ থেকে ৯ তারিখে কাতার জাতীয় সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত হয় পঞ্চম স্বল্পোন্নত দেশের সম্মেলন। দোহার এই সম্মেলনে গিয়ে সরাসরি জানার সুযোগ হয়েছে কাতারে অবস্থানরত রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসী শ্রমিকরা কত কষ্টে আছেন। বড় বড় দালান, আকাশছোঁয়া বিল্ডিং আছে দোহায়। এসব দেখে মনে পড়লো আমাদের প্রবাসী ভাইদের কথা। তাদেরই শ্রমে-ঘামে এই বিল্ডিং এবং রাস্তা তৈরি হয়েছে। দোহার চাকচিক্য তাদেরই অবদান।

কাতারের দোহা শহরে অনুষ্ঠিত হলো পঞ্চম স্বল্পোন্নত দেশের সম্মেলন। মার্চের ৫ থেকে ৯ তারিখে কাতার জাতীয় সম্মেলন কেন্দ্রে এই আয়োজন করা হয়েছিল। আমি এবং আমার প্রতিষ্ঠান উবিনীগের পক্ষ থেকে তিন জন গিয়েছিলাম সিভিল সোসাইটি ফোরামে অংশগ্রহণের জন্য। মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি (আরো পড়ূন)

নির্বাচনী বছর ও সংরক্ষিত নারী আসনের ভবিষ্যৎ

নারী আন্দোলনের দাবি, আসন সংরক্ষিত যদি থাকে তা হতে হবে সরাসরি নির্বাচিত; যেখানে রাজনৈতিক দলের নারী সদস্য, সমাজ কর্মী, নারী আন্দোলন কর্মী সকলেই নারীদের পক্ষে কথা বলার জন্যে এবং সার্বিকভাবে দেশের মানুষের জন্যে কাজ করার সুযোগ পাবেন। একইসাথে এটাও বলা দরকার যে নারী আজীবন সংরক্ষিত আসনে থাকবেন এটাও কাম্য নয়। নারীরা পুরুষের মতোই সাধারণ আসনে নির্বাচন করবেন এটাই হচ্ছে লক্ষ্য।

এই বছর বাংলাদেশের রাজনীতির জন্যে খুব গুরুত্বপুর্ণ। আগামী ২০২৪ সালের শুরুতেই দ্বাদশ সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখন থেকে ছোট বড় সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে তাদের নিজ নিজ দাবিগুলো পেশ করছেন। তারমধ্যে অন্যতম প্রধান দাবি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে। সুষ্ঠু (আরো পড়ূন)

৭. বিএনপির 'রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা'

এক
রাজনৈতিক প্রস্তাবনা হিশাবে বিএনপির ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’- অতিশয় সংকীর্ণ ও সীমাবদ্ধ। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সেই গুরুত্বটুকু আমরা দিতে চাই। এর কারন হচ্ছে ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য এটি পেশ করা হয়েছে। জনগণ এই লড়াই থেকে বিএনপির কাছ থেকে কি পেতে পারে তার একটি ধারনা আমরা এই দলিলে পাই। অর্থাৎ আন্দোলনকে বেগবান করবার জন্য এই ধরনের রূপরেখা জনগণের সামনে হাজির করার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের কাছে আন্দোলন সংগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ, তাই রূপরেখাকে আমরা প্রাধান্য দিতে চাই।

জনগণ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য (আরো পড়ূন)

তামাকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও ই-সিগারেট

ই-সিগারেটের বিষয়টি অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি হচ্ছে এবং শহরের তরুণদের মধ্যে ‘জনপ্রিয়’ হয়ে উঠেছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অনেকেই ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে অবগত না হয়েই এর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। ধুমপান ছাড়ার চেষ্টা করা শুধুমাত্র নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নির্ভর হওয়া খুব যুক্তিসংগত কাজ নয়, তাতে অন্য আরেকটি পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ে।

তামাকজাত দ্রব্য সেবন স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর- এই কঠিন সত্য কথাটি সকলেই বোঝেন। এর জন্যে নতুন তথ্য উপাত্ত্ব হাজির করে প্রমাণ করতে হবে না। বছরে ১,২৬,০০০ মা (আরো পড়ূন)

গোলাপবাগ জিন্দাবাদ

বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দলের বিভাগীয় সমাবেশ সফল হোক।

শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মধ্য দিয়ে ফ্যসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধের এই কৌশল সঠিক। আওয়ামী লীগের যেসকল ফ্যাসিস্ট বলছে পল্টনে সভা করার দাবি ত্যাগ করে গোলাপবাগে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত মানা বিএনপির ‘অর্ধেক পরাজয়’, তারা ভুল। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশের উৎকন্ঠা আমলে নিয়ে সংঘর্ষ ও সন্ত্রাস এড়ানোই এই মূহূর্তের সঠিক কৌশল। ফ্যাসিস্ট শক্তি ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের জনগণের আন্তর্জাতিক সমর্থন লাভ জরুরি। কারন এই লড়াই সবে দানা বাঁধছে মাত্র। এটা দীর্ঘস্থায়ী লড়াই হতে পারে।

ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট শক্তি ইতোমধ্যে (আরো পড়ূন)

৪. সাত থেকে দশ ডিসেম্বর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আট তারিখ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। শুরুতে গোয়েন্দারা জানিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দারা তাদের আটক করেছেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের প্রতি ককটেল মারার মামলা দেওয়া হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া প্রধান বিরোধী দলের মহা সচিব এবং স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্যকে আটক করতে পেরেছে পুলিশ। কোন আইনী বাধার মুখোমুখি হয় নি। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের ফ্যাসিস্ট রূপ বারবার সাধারণের মানুষের চোখে ধরা পড়ছে। এই ধরণের ঘটনায় জনগণের মধ্যে ক্রোধ সঞ্চারিত হয়েছে তীব্র ভাবে। কিন্তু একে রাজনৈতিক ভাবে প্রকাশ করবার পথ ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট শক্তি (আরো পড়ূন)

৩. সাত থেকে দশ ডিসেম্বর

আওয়ামী লীগ আরেকটি গৃহযুদ্ধ ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। ফ্যাসিস্ট শাসনের দায়ভার এড়াবার এটাই সবচেয়ে শস্তা কিন্তু ভয়ংকর বিপজ্জনক পথ। তাঁর বিরুদ্ধে আনা ফালতু অভিযোগ আইনী ভাবে মোকাবিলার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া আন্তর্জাতিক ভাবে প্রমাণ করেছেন তিনি আইন ও আইনী প্রক্রিয়া মানেন, সেই আইন ফ্যাসিস্ট শক্তির হাতে প্রতিহিংসার হাতিয়ার হলেও তিনি শান্তিপূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংঘাতের মীমাংসা চান। তাঁকে চিকিৎসার জন্য বাইরে যাবার অনুমতি দেওয়া হয় নি। আইন ও আইনী প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধার যে উদাহরণ খালেদা জিয়া সৃষ্টি করেছেন আজ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সেটাই বিএনপির প্রধান রাজনৈতিক পুঁজি হয়ে উঠেছে। এটা বিএনপির রাজনৈতিক কর্মীদের – বিশেষত তরুণদের বুঝতে হবে। তিনি (আরো পড়ূন)

২. সাত থেকে দশ ডিসেম্বর

সাত তারিখের ঘটনার মধ্য দিয়ে আরও পরিষ্কার হোল বিএনপি আসলে কী চায় সেটা পরিষ্কার ভাবে বিএনপি এখনও বলে নি, বলাবাহুল্য বলার দরকার রয়েছে। আমরা চাই বা না চাই তুফান তো ঘাড়ের ওপর এসে পড়েছে। এর আগে ‘গণমুখী রাজনৈতিক ধারার নীতি ও কৌশল প্রসঙ্গে’ নিবন্ধে আমি বলেছি নীতি হিশাবে বিজয়ী গণভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে নতুন ভাবে গঠন করবার কথা জনগণের মধ্যে প্রচার করতে হবে। এটাই গণরাষ্ট্র হিশাবে বাংলাদেশকে নতুন করে ‘গঠন’ করার নীতি বা পথ।

তবে বিএনপিকে ‘গণমুখী’ রাজনৈতিক দল গণ্য করে তাদের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলি নি। বিএনপি এর আগে ক্ষমতায় ছিল, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে বিএনপি সম্পর্কে নির্মোহ ধারণা আমাদের থাকা দরকার। আমাদের দু (আরো পড়ূন)

১. সাত থেকে দশ ডিসেম্বর

শেষ পর্যন্ত যা অনুমান করেছিলাম তাই হোল। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সংঘর্ষকে ব্যাপক হানাহানি এবং গৃহযুদ্ধের দিকে ঢেলে দিচ্ছে। দশ তারিখে বিএনপির ঢাকা সমাবেশ করতে না দিয়ে বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশি হামলা এবং গুলি করে হত্যার নিন্দা জানাবার ভাষা নাই। দশ তারিখের বিএনপির সমাবেশের আগেই বাংলাদেশকে সংঘাতের দিকে সামনে ঢেলে দেওয়া হোল। এর রাজনৈতিক পরিণতি সম্পর্কে আওয়ামি লীগ অজ্ঞ তা নয়। এটা বিপজ্জনক এবং পরিস্থিতি যে কোন দিকেই গড়াতে পারে। বিএনপির মহা সচিব ঘ্টনাস্থলে গিয়ে সকলকে শান্ত ও স্থির থাকবার যে অনুরোধ করেছেন তা সঠিক ও দুরদর্শী হয়েছে। কারন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ সকল পরাশক্তি গভীর ভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এই সময় বিএনপিকে অবশ্যই শান্ত, ধৈর্য (আরো পড়ূন)

৩. বিএনপির 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা'

আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণরাজনৈতিক চেতনা বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে বিএনপির ‘রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা’ পর্যালোচনা করছি। রাষ্ট্র ‘মেরামত’ করা জরুরি হয়ে পড়েছে এই দাবি শিশু কিশোরদের (আরো পড়ূন)

২. বিএনপির 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা'

বাংলাদেশের রাজনীতির দুর্ভাগ্য হচ্ছে জাতীয় রাজনীতিতে শ্রমিক শ্রেণীর উপস্থিতি যেমন নাই, তেমনি কৃষকও হাজির নাই। জাতীয় রাজনীতিতে হতদরিদ্র সর্বহারা এবং বিভিন্ন মেহনতজীবী জনগণকেও আমরা হাজির দেখি না। দ্বিতীয়ত তথাকথিত প্রতিনিধিত্বমূলক গমতন্ত্র (?) জনগণকে স্রেফ ভোটের সংখ্যায় পর্যবসিত করে। বিএনপি আওয়ামী লীগের মতোই জনগণকে ভোটের সংখ্যা হিশাবে বোঝে। এর অধিক কিছু বোঝার কোন বাধ্যবাধকতা বিএনপির নাই। কারণ বিএনপি শ্রেণী রাজনীতি করে না। কিন্তু 'জনগণ' স্রেফ সংখ্যা নয়। গণরাজনৈতিক ধারার বিকাশের জন্য তাই বিভিন্ন শ্রেণীর আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সত্তার বিচার জরুরি। কিন্তু তথাকথিত নির্বাচন-সর্বস্ব গণতন্ত্রে সেটা বোঝার প্রয়োজন পড়ে না। ক্ষমতার বৈধতা নির্ব (আরো পড়ূন)

৫. বিএনপির 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা'

কিছুদিন আগেও আমরা প্রায়ই শুনতাম দল হিশাবে বিএনপি শেষ হয়ে গিয়েছে, একদিকে ভুল রাজনীতি এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা এবং অপরদিকে আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুমখুন হাজার হাজার কর্মীকে কারাগারে নিক্ষেপ এবং লক্ষ লক্ষ কর্মীর মাথার ওপর মামলা ঝুলিয়ে রেখে তাদের ঘরছাড়া করা ইত্যাদি নানা কারনে বিএনপির পক্ষে আর জাতীয় দল হিশাবে দাঁড়ানো সম্ভব না, ইত্যাদি। এই সময় ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলো গড়ে উঠেছিল এবং তাদের ছোট বড় আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ এবং ফ্যাসিস্ট শক্তি বিরোধী গণরাজনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটেছে। কিন্তু বিএনপির দিক থেকে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ যে উপাদান যুক্ত হয়েছে সেটা হচ্ছে বিএনপি তৃণমূল পর্যায়ে নিজেদের সংগঠিত করবার চেষ্টা করে গিয়েছে, তার (আরো পড়ূন)

৪. বিএনপির 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা'

বিএনপি ‘দেশপ্রেমের শপথে উজ্জীবিত এক সুকঠিন ‘জাতীয় ঐকমত্য’ চায়। কিন্তু ‘দেশপ্রেমের শপথে উজ্জীবিত এক সুকঠিন ‘জাতীয় ঐকমত্য’ বলতে বিএনপি কি বোঝে? কিম্বা আমরাই বা এর দ্বারা কি বুঝেছি? ‘দেশ প্রেম’, 'জাতি' ‘জাতীয় ঐক্য’ ইত্যাদি আবেগী ধারণা। রাজনীতিতে আবেগের দরকার হয়, তার ব্যবহার আছে। সাধারণ মানুষের কাছে দেশ অরধানত তার 'আবাস', তার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমাজ, সংস্কৃতি, ইত্যাদি। কিন্তু লুটেরা ও ধনী শ্রেণীর কাছে দেশ নিছকই তাদের অর্থ-সম্পদ বৃদ্ধি ও ব্যাক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তি স্ফীত করবার উপায় মাত্র। তারা চাইলেই দেশ ছেড় (আরো পড়ূন)

১. বিএনপির 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা'

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপির ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ (An Outline of the Structural Reforms of the State) তুলে ধরেছেন। এই ঘোষণা উপলক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও উদ্বোধনী ভাষণ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দশই ডিসেম্বর ঢাকা সমাবেশ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা। গোলাপবাগ সমাবেশে বিএনপি তার দশ দফা পেশ করেছিল। আমরা তখন বিএনপির সমাবেশের সাফল্যকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ বলেছি। কিন্তু গোলাপবাগ সমাবেশে ঘোষিত দশ দফাকে বলেছি, 'যাহা বাহান্ন তাহাই তেপ্পান্ন'। সমাবেশে জনগ (আরো পড়ূন)

গণমুখী রাজনৈতিক ধারার নীতি ও কৌশল প্রসঙ্গে

১.

পাকিস্তান আমল থেকেই গণতন্ত্র কায়েমের প্রশ্ন স্রেফ নির্বাচনী প্রশ্ন, অর্থাৎ নির্বাচন করা বা না করা, কার অধীনে নির্বাচন হবে, কিভাবে হবে -- ইত্যাদি তর্কের মধ্যে ঘুরপাক খেয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরও আজ অবধি সেই তর্কের অবসান হয় নি। বাংলাদেশ পুরানা প্রত্নতাত্ত্বিক ভাঙা রেকর্ডের মতো নির্বাচনসর্বস্ব পাকিস্তানী রাজনীতিই করে যাচ্ছে। নির্বাচন আর গণতন্ত্র সমার্থক নয় -- এই অতি প্রাথমিক জ্ঞানটুকু আমরা আজও অর্জন করতে পারি নি।

‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ ও রাষ্ট্র ‘গঠন’ করবার ধারণা যে একদমই ভিন্ন ও পৃথক এবং গণতন্ত্র কায়েম যে আসলে সকল শৃংখল থেকে মুক্ত স্বাধীন জনগণের (আরো পড়ূন)

চিন্তা পাঠচক্র কী? এবং তারা কি চায়?

১. আমরা কি চাই?

আমরা মানুষের মহিমা উপলব্ধি করতে চাই, একালে তার তাৎপর্য বিচারের জন্য সজীব ও সক্রিয় চিন্তার ধারা গড়ে  তোলা জরুরি মনে করি, যেন বৈষয়িক জীবন ও জগতের অন্তর্গত মানুষকে তার সামগ্রিক কায়কারবারসহ আমরা বুঝতে পারি। বুঝতে পারি কিভাবে বৈষয়িক জীবন ও জগত মানুষকে এবং বিপরীত দিক থেকে মানুষের চিন্তা বৈষয়িক জীবন ও জগতকে প্রভাবিত ও নির্ণয় করে। এই পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝা ও বিচার একালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তার পরও  কোন অতিরিক্ত দিব্য সম্ভাবনা 'মানুষ' নামক জীবের রয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন আমরা তুলি। কারণ এর দ্বারাই মানুষের অনাগত ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আগাম আন্দাজ করা সম্ভব এবং সেই অনু (আরো পড়ূন)

আইন, সংবিধান ও গণতন্ত্র

সাজানো বা বিন্যাসের প্রশ্ন

আমরা ‘আইন, সংবিধান ও গণতন্ত্র’ নিয়ে কথা বলব। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সমালোচনা নতুন নয়, কিন্তু সম্প্রতি গণতন্ত্র কাজ করছে না, এই অভিযোগ খোদ পাশ্চাত্যে প্রবল ভাবে উঠেছে। লিবারেলিজম সম্পর্কে পুরানা অভিযোগ যে উদারবাদী রাজনৈতিক আদর্শের কেচ্ছা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা কায়েমের আদর্শ। মার্কিনিরা তাদের স্বার্থের তাগিদে  দেশে দেশে যাকে যখন দরকার ক্ষমতায় বসায়, সরকার বদলায়, অভ্যূত্থান ঘটায়, ইত্যাদি। তাদের কাজ বিশ্ব ব্যবস্থার মোড়লি করে বেড়ানো এবং হামেশা গণতন্ত্রের কেচ্ছা গেয়ে যাওয়া।। রাশিয়া দীর্ঘকাল ধরেই সাবধান করছিল যা তারা ত (আরো পড়ূন)

'ঈমান': একটি খসড়া নোট

এই খসড়া নোটটি চিন্তা পাঠচক্রের একটি চলমান কাজের খসড়া যা  ইসলাম নিয়ে আমাদের  অপরাপর কাজের সঙ্গে যুক্ত।  এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্মচিন্তা ও দর্শনের ইতিহাসের আলোকে ইসলামের মৌলিক প্রস্তাবনা নতুন ভাবে উপলব্ধি এবং বিদ্যমান জ্ঞানচর্চার সীমানা অতিক্রম করবার সম্ভাবনা অন্বেষণ।  ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক বর্গ নিয়ে ফলপ্রসূ পর্যালোচনার ধারা গড়ে তোলা খুবই জরুরি হয়ে উঠেছে। গ্রিক-খ্রিস্টিয় চিন্তা এবং সম্প্রতিকালে পাশ্চাত্যে আধুনিক ও উত্তরাধুনিক পরিমণ্ডলে যে তর্কবিতর্ক চলছে সেখানে ইসলাম তার নিজের উন্মোচন, স্বাতন্ত্র্য ও সম্ভাবনা নিয়ে কিভাবে হাজির হতে পারে সেই সম্ভাবনা বিচার একালে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। গ্রিক-খ্রিস্টিয় চিন্তার ঐতিহাসিক অবদান (আরো পড়ূন)

টাকা আসলে কি ?

পুঁজিতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থায় উৎপাদিত জিনিস (product) কে বলা হয় পণ্য (commodity)। পণ্য বা কমোডিটির বৈশিষ্ট্য হল তার মূল্য বা ভ্যালুকে দুইভাবে বিবেচনা করা হয়ঃ একটি হল তার use value বা ব্যবহারিক মূল্য আর আরেকটি হল তার exchange value বা বিনিময় মূল্য। Use value বা ব্যবহারিক মূল্য হল পণ্য স্বয়ং। আর Exchange value বা বিনিময় মূল্য হল পণ্যটির মূল্য (value), যা দামের (price) মাধ্যমে টাকায় প্রকাশিত হয়। পণ্যের এই use value এবং exchange value দুই বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে। অর্থাৎ, একপ্রান্তে থাকে পণ্যটি আর অপর প্রান্তে থাকে টাকা।

 

পণ্যের মধ্যে যুগপৎভাবে নিহিত থাকা ইউজ ভ্যালু ও একচেঞ্জ ভ্যালুকে আলাদা ভাবে বিবেচনা করার মাধ্যমে বিমূ (আরো পড়ূন)

৫. ইউক্রেন: ঠাণ্ডাযুদ্ধ এবং ভূ-রাজনীতি

ইউক্রেন যুদ্ধ বুঝতে হলে বিশ্ব ব্যবস্থার দ্বন্দ্ব বোঝার জন্য পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়ন এবং মরণাস্ত্র উৎপাদন ব্যবসার কালে ভূ-রাজনীতি কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সেটা সবার আগে বুঝতে হবে। বিশ্ব ব্যবস্থার গোড়াতে টান পড়ছে এবং পারমাণবিক যুদ্ধের কথাও শোনা যাচ্ছে। বর্তমান বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের চরিত্র সম্পর্কে ভালভাবে অবহিত থাকা খুবই জরুরি।

ইউক্রেন যুদ্ধকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার দ্বন্দ্ব হিশাবে দেখায় ভুল নাই, যেখানে ইউক্রেনের জনগণকে বলি দেওয়া হচ্ছে। পতনশীল সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিশাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক নীতি ও কৌশল এবং রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া সঠিক ভাবে বোঝা ও পর্যালোচনা জরুরী। রাশিয়া সরাসরি যুদ্ধে জড়ালেও মার্কিন য (আরো পড়ূন)

রমজান ও রুহানিয়াত

আপনাতে আপনি ফানা
হলে তারে যাবে জানা।
সিরাজ সাঁই কয় লালন কানা
স্বরূপে রূপ দেখ সংক্ষেপে।।

-- ফকির লালন শাহ

প্র: ধর্ম সম্পর্কে আপনার জানাশোনা, দৃষ্টিভঙ্গী এবং অবস্থান আলাদা, কিন্তু দেখা যায় আপনি রোজা রাখেন এবং রমজানের শেষ দশদিন আপনার আচার আচরণে লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন দেখা যায়। এরপর আপনার কবিতা, চিন্তা ও লেখালিখির মধ্যে নতুন চিন্তা বা ভাবের স্ফূরণ দেখা যায়। এর কারন কি?

উ: উপবাস, রোজা রাখা শুধু ইসলাম ধর্মের বিধান তাতো না। অন্য ধর্মেও উপবাস থাকার বিধান আছে। পৃথিবীতে এমন কোন ধর্ম নাই যেখানে উপবাস, রোজা, কৃচ্ছসাধন বা নিজের শরীর ও আত্মার দিকে পরিষ্কার ও প (আরো পড়ূন)

৪. ইউক্রেন: এক-কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা এবং তার মতাদর্শ

পশ্চিমা মিডিয়া সাড়ে পনেরো আনা মিথ্যুক। তাদের মিত্থ্যাচার সম্পর্কে আমাদের কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা আছে। ইউক্রেনের পরিস্থিতি যদি আমরা শুধু পশ্চিমা গণমাধ্যমের প্রপাগান্ডা দিয়ে বূঝতে চেষ্টা করি, তাহলে কিছুই আসলে বুঝব না। তারা যেটা হামেশা প্রচার করছে সেটা হোল রাশিয়া একটি সার্বভৌম দেশের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। সম্প্রসারণবাদী রুশদের খায়েশ মেটাতে রাশিয়া ইউক্রেন নিজের দখলে নিতে চায়। এর ফলে শুধু ইউক্রেন নয় একই সঙ্গে ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশসহ পূর্ব ইউরোপের আঞ্চলিক অখণ্ডতাও হুমকির মুখে পড়েছে, ইত্যাদি। এই যুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো জোটভূক্ত ইউরোপীয় দেশগুলো যে রণধ্বণি তুলছে ও ইউরোপের জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছে সেটা হোল রাশিয়াকে শাস্ত (আরো পড়ূন)

৩. ইউক্রেন: ইতিহাস, মতাদর্শ ও হাইব্রিড যুদ্ধ

ইউক্রেনের যুদ্ধ আরও তীব্র হচ্ছে। যুদ্ধ পূর্ব ইউক্রেনের দিকে জোরদার হবার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের চরিত্রেরও বদল ঘটতে থাকবে। পূর্ব ইউক্রেন বলতে বোঝায় পাঁচটি প্রদেশ:  দনেস্ক (Donesk), খারখিভ (Kharkiv), লুহান্সক (Luhansk), জাপোরিঝঝিয়া (Zaporizhzhia) এবং নিপ্রোপেট্রোভস্ক(Donipropetrovsk)। ডনবাস অঞ্চল দখল নিয়ে ডনবাসের বিভিন্ন শহরে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার বাহিনীর মধ্যে এখন রাস্তায় রাস্তায় লড়াই চলছে। ডনবাসে ৩০০ মাইল দীর্ঘ এক রণক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীকে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তবে  লুহানস্ক এলাকায় ক্রেমিনা এবং আরও একটি ছোট শহরের দখল রুশ বাহিনীর হাত চলে গেছে। ডনবাস যুদ্ধের জয়-পরাজয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে নির্ধারক ভূমিকা রাখবে বলে স (আরো পড়ূন)

ভারতের বাঙালি মুসলমান ও নমঃশূদ্রের রাজনৈতিক সঙ্কট

‘ঘরে কেবা জাগে কে বা ঘুমায়, কে কারে দেখায় স্বপন’ - ফকির লালন শাহ

ভারতে বাঙালি মুসলমানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি পশ্চিমবঙ্গে। এখানের জনসংখ্যায় প্রায় তিরিশ শতাংশ মানুষ বাঙালি মুসলিম। আর বাঙালি নমঃশূদ্র ও বাঙালি মুসলমান মিলিয়ে যে সংখ্যা দাঁড়ায় তা বাঙালি বর্ণহিন্দুর থেকে অনেক অনেক বেশি। একই চিত্র অসমের। সেখানে অহমিয়াদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রয়েছে বাঙালির উপস্থিতি। আর সেখানকার বাঙালির বেশিরভাগটাই হয় বাঙালি নমঃশূদ্র, নয়তো বাঙালি মুসলিম। বাঙালি বর্ণহিন্দু এদের থেকে সংখ্যায় কম। আবার পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে বাঙালি মুসলিমরা সকলেই ভূমিসন্তান (আরো পড়ূন)

জাহাঙ্গিরপুরী, হিন্দু জাতিবাদ এবং বাংলা বিদ্বেষ

আবারও ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী দিল্লিতে বাঙালি মুসলমানের ওপর রাষ্ট্রীয় আক্রমণ চালানো হোল। এবার হামলা ঘটেছে জাহাঙ্গিরপুরি এলাকায়। এর আগে দিল্লির শাহীনবাগে এনআরসি-সিএএ বিরোধী আন্দোলনকে দমন করতে ‘দাঙ্গা’র নাটক সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে একতরফা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছিল সংঘ পরিবারের রাজনৈতিক দল বিজেপি এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় ক্ষমতার সুবাদে ভারতের রাষ্ট্রযন্ত্র, সংগঠিত হয়েছিল গণহত্যা। তারই চুড়ান্ত পরিণতিতে বুল ডোজার দিয়ে বাঙালি মুসলমানের মসজিদ আর বস্তি গুঁড়িয়ে দিল ভারতের গেরুয়া শাসকবর্গ। বাঙালি মুসলমানের রুটিরুজি-আশ্রয় আর ঈমানের ওপর হামলা চালালো গেরুয়া দিল্লী! সেটা তারা করেছে পবিত্র রমযান মাসে। প্যালাস্টাই (আরো পড়ূন)

২. ইউক্রেনের যুদ্ধ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কপট নীতি

যুদ্ধ মাত্রই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। কোন যুদ্ধই ব্যাতিক্রম নয়। যে কারণে রাশিয়ার যুদ্ধকে নৈতিক বা নীতিবাগীশ জায়গা থেকে অনেকেই 'আগ্রাসন বলে নিন্দা করছেন। আমরাও সরবে যুদ্ধ বন্ধ করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরুর ওপর জোর দিচ্ছি। কিন্তু নীতিবাগীশগিরি আর রাজনীতি দুটো ভিন্ন বিষয়। তাই ইউক্রেন কেন্দ্র করে একদিকে রাশিয়া আর অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো জোটভূক্ত ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে সেটা আমাদের বোঝা দরকার। নির্মোহ ভাবে এই যুদ্ধের বাস্তব কারণ সম্যক অবহিত হওয়া জরুরি। তাই  রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে নিজেদের নীতিগত ভাবে ছহি আছি প্রমাণের চেষ্টা এখানে আমরা করব না। বরং মার্কন পররাষ্ট্র নীতির (আরো পড়ূন)

১. ইউক্রেন: ইউরোপের যুদ্ধ এবং আমাদের শিক্ষণীয়  

১. আবার লেনিন!

ইউক্রেনের সংকট শেষাবধি যুদ্ধে গড়ালো। তথাকথিত স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পর অনেকে এই আশা করেছিলেন যে অস্ত্রের প্রতিযোগিতা এবং যুদ্ধ বিগ্রহের দুর্দশায় বিশ্বকে পড়তে হবে না। মানুষের বৈষয়িক সমৃদ্ধি এবং নৈতিক বিকাশের দিকে নজর দেওয়া সহজ হবে। কিন্তু ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের 'সাম্রাজ্যবাদ' সংক্রান্ত তত্ত্ব সত্য বলে বারবারই প্রমাণিত হয়েছে। পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার বৈশিষ্টই হচ্ছে হানাদারি এবং যুদ্ধ । ইউক্রেন যুদ্ধ  সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের অনন্ত যুদ্ধের কালপর্বের পর গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক ঘটনা। যা নতুন করে পুরানা সত্যকে যেমন আমাদের সামনে হাজির ক (আরো পড়ূন)

দারিদ্র ও ইনসাফ

এক

জাতীয় ইনসাফ কমিটি গত ১৬ মার্চে তাদের প্রস্তাবনায় বাংলাদেশ নতুন ভাবে ‘গঠন’ করবার প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল। বাংলাদেশে চিন্তার দুর্ভিক্ষ এতোই প্রবল যে দৈনিক পত্রিকাগুলো গণরাজনৈতিক সত্তা হিশাবে রাষ্ট্রের ‘গঠন’-কে স্রেফ আইনী ব্যাপার ধরে নিয়েছে। তাদের রিপোর্টে সকলেই লিখেছে আমরা নাকি নতুন সংবিধান চাইছি। অথচ আমরা বলেছি রাষ্ট্র স্রেফ ‘আইনী’ প্রতিষ্ঠান নয় যে উকিল-ব্যারিস্টারদের ধরে এনে একটি টুকলিফাই সংবিধান লিখে নিলেই ল্যাঠা চুকে যায়। উত্তর-ঔপনিবেশিক দেশ হিশাবে আমরা এখনও এই সকল কলোনিয়াল হ্যাঙ্গওভার কাটিয়ে উঠতে পারি নি। তাই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিভাবে ‘গঠিত’ হয় (আরো পড়ূন)

ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার যুদ্ধ চালানো এবং পুতিনের আব্বাগিরি

গত বছর, মানে ২০২১ সালের সামারে করোনাকালীন কঠিন নিয়ন্ত্রণ ট‍্যুরিজম-বাণিজ‍্যের কারণে শিথিল হওয়ায়, আমি এবং আমার শিক্ষক, পোস্টকলোনিয়াল স্টাডিজের এসোসিয়েট প্রফেসর একটা ঝুলে থাকা আড্ডা দিতে তালিনের কেজিবি মিউজিয়ামের ২৩ তলার টপফ্লোর রেস্টুরেন্টে বসি। কেজিবি, সোভিয়েত ইউনিয়নকালে যেটা দেশটির প্রধান সিকিউরিটি এজেন্সি ছিল, সেটা এখন জাদুঘর, ট‍্যুরিস্টদের প্রধান আকর্ষণও। তালিন রাজধানীর স্বাধীন দেশ এস্তোনিয়া স্বাধীন হয় ১৯৯১ সালে, সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের সাথে-সাথে ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে এবং তখন আমার শিক্ষক বিশ্ববিদ‍্যালয়ের ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং তার কাছে কেজিবি আর সোভিয়েত ইউনিয়ন একই জিনি -- প্রচণ্ড ভয়ের, আতঙ্কের। ইউরোপীয়ান ইউন (আরো পড়ূন)

৬. বিএনপির 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা'

এর আগের কিস্তিতে আমরা একটি বিষয় বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছি। আমরা দেখছি বর্তমান ফ্যাসিস্ট শক্তি ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বিএনপিসহ সেকুলার জোট ও দলগুলো ইসলাম প্রশ্ন মোকাবিলা এবং ইসলামপন্থি দলগুলোকে জাতীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করবার বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ গণ্য করছে না। একে আমরা জাতীয় রাজনীতির বিপজ্জনক প্রবণতা বলে মনে করি। ইসলাম প্রশ্ন মোকাবিলার নানান দিক আছে। আমরা বিশেষ ভাবে রাজনৈতিক কর্তব্য হিশাবে ইসলাম প্রশ্ন মোকাবিলার গুরুত্ব উপলব্ধি না করা এবং জাতীয় রাজনীতিতে ইসলাম প্রশ্ন অবহেলার কথা বলছি। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে ইসলাম প্রশ্ন মোকাবিলার অর্থ কী?

(আরো পড়ূন)

গণতন্ত্রের সংকট: উত্তরণের উপায়

গত ২৫ ডিসেম্বর (২০২১) প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফিউজে) আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের সংকট শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ হিশাবে লেখাটির সারসংক্ষেপ পেশ করেছি। কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনাও করেছি। পুরা নিবন্ধটি এখানে পেশ করা হোল। 

বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এবং এখনকার সুনির্দিষ্ট কর্তব্যের আলোকে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের সংকট নিয়ে কিছু কথা বলবার জন্য এই খসড়া। উদ্দেশ্য হচ্ছে কিছু বিষয় কেন্দ্র করে আলোচনার সুত্রপাত ঘটানো। আমি মতবাদী নই, অর্থাৎ আগাম নির্ধারিত বদ্ধমূল মতের বোঝা বেড়ানো আমার ধাতে নাই। অতএব এখানে উদ্দেশ্য হবে চিন্তা উসকে দেওয়া, যেন আমরা বদ্ধমূল চিন্তার খোপ থেকে বেরিয়ে এসে নতুন ভ (আরো পড়ূন)

চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা

১. ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রকাশ, মিছিল, জনসভা

অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশে অল্প কয়েকটি কোটিপতি এবং মাফিয়া পরিবার ছাড়া অধিকাংশ মানুষই অতিশয় খারাপ অবস্থায় আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে কোটিপতি আমানতকারী ৭৫ হাজার ৫৬৩ জন। দেশে আয়বৈষম্য বাড়ছে বিপুল ভাবে। পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্ব ব্যবস্থায় আয় বৈষম্যের যে মাত্রা সহনীয় বলে গণ্য করা হয় বাংলাদেশ তা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর সময় দেশে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫ জন। আর চলতি বছরের মার্চ শেষে তা বেড়ে দাঁড় (আরো পড়ূন)

সবাই অরুন্ধতী নয়

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী নানা কিসিমের হয়, কিন্তু সবাই অরুন্ধতী রায় নয়। অরুন্ধতীই বলতে পারেন, ‘কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়, কখনোই ছিল না, ভারত সরকারও তো তা মানে।’ এই সত্য কথা বলার তৌফিক ভারতের কংগ্রেসি কিংবা সিপিআই/সিপিএম মার্কা প্রগতিবাদীদের মধ্যে দেখি না। কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ কখনও ছিল না, এই ঐতিহাসিক সত্য অস্বীকার করার মুরোদ ভারতের সরকার বিশেষত বাম ও বামসমর্থিত কংগ্রেসিদের কখনোই ছিল না। ঐতিহাসিক সত্য অস্বীকার করার কোনো যুক্তি তাদের নেই।

কিন্তু অরুন্ধতীর হিম্মত আলাদা, অতএব তার সাহিত্য, রাজনীতি, মায় ধর্মনিরপেক্ষতাও আলাদা। ভারতকে ‘অখণ্ড’ রাখার দায় তার আছে বলে মনে হয় না, যদি ভারত সবার ভারত না হয়ে ওঠে। যদ (আরো পড়ূন)

ভাসানী ও নতুন বৈপ্লবিক চিন্তার পুনর্গঠন

ভাসানী নিয়ে আমার পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে তরুণ সমাজের পক্ষে হাফিজ আল- মুতাসিম আমাকে কয়েকটি প্রশ্ন করেছেন।

১. বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামপন্হার রাজনীতির সাথে ভাসানীর পার্থক্য ও গুরুত্ব কোথায়?

২. মুজিব জিয়া পরিবারতন্ত্রের দাগের বাহিরে ভাসানী আদর্শের জাগরণ ও সম্ভাবনা কতটুকু?

৩. আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠাতা ও কাগমীর সম্মেলনে 'আসসালামু আলাইকুম', বলনে ওয়ালা জননেতা ভাসানীর রাজনৈতিক অন্তিমকাল কেমন ছিলো ও কেন?

বলা বাহুল্য, তরুণদের প্রতি আমি দায় বোধ করি। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বড় বিষয়, কিন্তু সংক্ষেপে দুই একটি কথা বলবো।

ভাসানীর যে কোন জীবনী গ্রন্থে তৃতীয় প্রশ্নের কিছুটা হলেও উত্তর পাওয়া যাবে। তাই বাদ রাখছি।

ভাসানী-আদর্শের (আরো পড়ূন)

ভাসানী ও প্রচলিত ইসলামপন্থা

আরেকটি প্রশ্ন: বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামপন্হার রাজনীতির সাথে ভাসানীর পার্থক্য ও গুরুত্ব কোথায়? ('ভাসানীঃ বৈপ্লবিক চিন্তার পুনর্গঠন' দেখুন)< (আরো পড়ূন)

২. বেগম খালেদা জিয়া এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

একটি দৃশ্যমান হত্যা প্রক্রিয়ায় কিভাবে আমরা সকলে শামিল হই সেটাই আমার আলোচনার বিষয়। সুনির্দিষ্ট ভাবে ফ্যাসিবাদকে শনাক্ত করতে হলে বুঝতে হবে ফ্যাসিবাদ একনায়কতন্ত্র নয়। ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আমাদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পর্কে্র ধরণ একনায়কতন্ত্র থেকে আলাদা। আমাদের মন ও বুদ্ধির জগতে ফ্যাসিবাদ কিভাবে কাজ করে সেটাই এখানে বুঝবার এবং বোঝাবার চেষ্টা করছি।

আজকাল অনেকে বাংলাদেশের বিদ্যমান রাষ্ট্রব্যবস্থাকে 'ফ্যাসিস্ট' বলতে চায় না। মনে হয় তারা খুব শরমিন্দা বোধ করেন। এর একটা কারণ হতে পারে 'ফ্যাসিবাদ', 'ফ্যাসিস্ট শক্তি ' বা ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থা কিছুটা ক্লিশে শব্দ হয়ে গিয়েছে, যা্র কারনে তারা মনে করেন এই শব্দগুলো বিশেষ কোন অর্থ বহন করে না (আরো পড়ূন)

১. বেগম খালেদা জিয়া এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

খুবই দৃশ্যমান ভাবে -- অর্থাৎ বাংলাদেশের জনগণকে দেখিয়ে দেখিয়ে এবং জনগণের সক্রিয় ও সচেতন অংশগ্রহণের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে 'হত্যা' করা হচ্ছে। বলাবাহুল্য 'হত্যা'র এই প্রক্রিয়া বা কাণ্ডটিকে যার যার মর্জি মাফিক স্রেফ মেটাফোর হিশাবে, কিম্বা বাস্তবেই ঘটানো হচ্ছে বলে নানান জনে নানান ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন, অসুবিধা নাই। তাই সকলে যেন নিজের নিজের অনুমান ও ধারনাগুলোর প্রতি ঘনিষ্ঠ ভাবে ফিরে তাকাতে পারেন সেটাই আমরা চাই। এতে আমি যে বিষয়ের অবতারণা করতে চাই তার জেরজবরে বিশেষ ভেদ হবে না।আইন ও রাজনীতির বিবিধ অনুমান নিয়ে জিজ্ঞাসা জাগিয়ে তোলা জরুরী।

বেগম খালেদা জিয়া হত্যা প্রক্রিয়ার কর্তা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং তার জোট, কিন্তু অংশগ্রহণকারী (আরো পড়ূন)

‘বাচ্চাবাজি’, শরিয়া এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আফগান জনগণের বিজয়

এক

এখানে আফগানিস্তান নিয়ে আমরা একটু ভিন্ন ভাবে আলোচনা করব, যেন বাঁধিগৎ তর্কাতর্কি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারি।

বাঁধিগৎ তর্কাতর্কি নানান ধরনের হতে পারে। যেমন, তালেবানরা হানাদার ও দখলদার মার্কিন বাহিনীর চোখে সন্ত্রাসী বা ‘টেররিস্ট’। তাদের ইসলাম , বিশেষত ‘শরিয়া আইন’ পাশ্চাত্যের লিবারেল বা উদারবাদী চিন্তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ফলে আফগানিস্তানের আর্থ-সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে কোন আলোচনা আসলে আফগানিস্তানে কি ঘটছে বা কি ঘটল সেই দিকে নিবিষ্ট না থেকে সেটা ইসলাম ও ‘শরিয়া’ আইন নিয়ে তর্কে পর্যবসিত করা হয়। যার পরিণতি শেষাবধি ইসলামের (আরো পড়ূন)

ফরহাদ মজহারের কুরবানি বিষয়ক প্রস্তাবনা: মুফাসসিরিনের সিদ্ধান্তের আলোকে

 প্রথম কিস্তি

সম্প্রতি শ্রদ্ধেয় ফরহাদ মজহার কুরবানি নিয়া একটি সিরিজ লেখা শুরু করছেন। কুরবানি নিয়া ফরহাদ মজহারের লেখাগুলা ধারাবাহিক; এখন পর্যন্ত দুইটা কিস্তি উনি লিখছেন। সেই দুই কিস্তিতে যা যা আসে নাই, তা সামনের কিস্তিগুলায় আনবেন— বলছেন সেকেন্ড কিস্তির শেষে। তাই কুরবানি নিয়া ফরহাদ মজহার যা যা বলতে চান, তা এখনো সম্পন্ন ও সম্পূর্ণ না। ফলে, মন্তব্য করা মুশকিল।

তবু, ওনার লেখা নিয়া নানা ধরনের বিতর্ক তৈয়ার হইছে। এই ধরনের বিতর্করে আমি ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখি। যদিও, বিতর্কের পাশাপাশি নানা ধরনের কুতর্ক ও ব্ (আরো পড়ূন)

৪. ইসলামে কোরবানি: ‘মনের পশু তত্ত্ব’ ও খ্রিস্ট ধর্ম

সোরেন আবায়া কিয়ের্কেগার্ড (Søren Aabye Kierkegaard) বা সংক্ষেপে সোরেন কিয়ের্কেগার্ড (১৮১৩-১৮৫৫) আধুনিক কালের সামনের সারির দার্শনিক। পাশ্চাত্য যখন এনলাইটমেন্টের শিখরে – অর্থাৎ জীবন ও জগতের প্রচলিত অনুমান, সংস্কার, ধারণা, প্রত্যয় প্রতিজ্ঞা সবকিছুই যখন বুদ্ধির প্রবল পরাক্রমে বিধ্বস্ত, সবকিছুই যখন সার্বভৌম বুদ্ধির সঙ্গে লড়ে পরাজিত এবং বুদ্ধির অধীনস্থ, শুধু বুদ্ধি যখন মানুষের সকল বৃত্তির সর্দার হিশাবে ঘোষিত ও প্রতিষ্ঠিত -- সেই ডামাডোলের মধ্যে তাঁর আবির্ভাব। তাঁকে পাঠের সময় একটা অদ্ভুত শিহরণ জাগে। মনে হয় একজন বিশ্বাসী তাঁর বিশ্বাসকে এক প্রবল ঝড় ও তুফানের মধ্যে বুকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চাইছেন। যুক্তি, বুদ্ধি ও মানুষের সকল বৃত্তির অতীত যে (আরো পড়ূন)

আফগানিস্তান: পাশ্চত্যের 'ক্রুসেড' ও নিপীড়িত জনগোষ্ঠির সংগ্রাম

আফগানদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ‘ক্রুসেড’ চলছে। সেকুলার ভাষায় এই ক্রুসেডের নাম ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’। আফগানদের লড়াই দখলদার মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই, দখলদারদের বিরুদ্ধে নিপীড়িত আফগানদের লড়াই। এই লড়াই ন্যায় সঙ্গত ও ন্যায্য। গণতান্ত্রিক ধ্যানধারনার দিক থেকে আফগানদের লড়াই জাতীয় মুক্তি ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আদায়ের লড়াই। এই লড়াই করতে গিয়ে যে মতাদর্শকে সঠিক ও বাস্তবোচিত মনে হয়েছে আফগানরা তাই গ্রহণ করেছে। কিন্তু আফগানদের জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের 'তালেবান' বলা হয়। 'তালেবান' বলা উদ্দেশ্যপূর্ণ।

জর্জ বুশের ক্রুসেড শুরু হবার সময় থেকে ‘ইসলাম’- (আরো পড়ূন)

৩. ইসলামের কোরবানি: 'মনের পশু' তত্ত্ব ও খ্রিস্ট ধর্ম

 এক

সুরা আস-সাফফাত ও কোরবানি নিয়ে আমাদের আলোচনার প্রধান উদ্দেশ্য কোরান ঠিক যেমন আছে তেমন পাঠের মধ্য দিয়ে এ সময়ের ধর্মতত্ত্ব, দর্শন ও রাজনীতির পরিমণ্ডলে প্রবেশ করা। তাফসীর, হাদিস কিম্বা ইসলামের নিজের আভ্যন্তরীণ তর্ক বিতর্ক (discursive tradition) খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু ইসলামের চোখে কোরানুল করিম আল্লার ‘ওহি’। ‘ওহি’ সবার উর্ধে। কোরানুল করিমকে ‘ওহি’ হিশাবে সবার আগে আলাদা গণ্য করতে না শিখলে বর্তমান সময়কালের জিজ্ঞাসাগুলোকে ক (আরো পড়ূন)

কোরবানি: বাইবেলে ও কোরানে

কোরআনের হিকমত ও প্রজ্ঞা অন্বেষণ সাধারণ কাজ না। তার জন্য সবার আগে দরকার আল্লার ওহি হিসাবে কোর‌আন ঠিক যেভাবে নাজিল হয়েছে ঠিক সেভাবেই তাকে পাঠ করা। কোরআন নিয়ে অতীতে অনেক তাফসির ও অনেক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হয়েছে। কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার ইহুদি- খ্রিস্টিয় ধর্মতত্ত্ব এবং গ্রিকচিন্তার মিশ্রণে যে ধর্মতাত্ত্বিক, জ্ঞানগত, আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডল গড়ে উঠেছে তার আধিপত্য থেকে আমরা মুক্ত হতে পারছি না। তাহলে প্রথম কাজ ইহুদি–খ্রিস্টিয় চিন্তার আধিপত্য থেকে আমাদের মুক্ত হওয়া।

সম্প্রত (আরো পড়ূন)

২. ইসলামের কোরবানি: 'মনের পশু' তত্ত্ব ও খ্রিস্ট ধর্ম 

কারো কারো অভিজ্ঞতা ভিন্ন হতে পারে, তবে আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই মনে করেন আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আঃ)-কে তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রমাণ করবার জন্য নিজের সন্তান কোরবানি করবার ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন। এটা আসলে বাইবেলের আদি পুস্তক বা তৌরাত শরিফের গল্প। কিন্তু এই গল্পকেই তাঁরা কোরানুল করিমের বয়ান মনে করেন। এটা ঠিক না। কোরানুল করিমে আল্লার 'আদেশ' পালন করবার জন্য সন্তানকে হত্যা ও কাঠের চিতায় বলীদানের গল্প নাই। ইসলামে আল্লাহ 'দয়ার দয়া', 'দয়াল'। তিনি 'রাহমানুর রাহিম'। তিনি আনুগত্য প্রমানের জন্য পিতাকে নিজের প্রিয় সন্তান বলি দানের কথা বলতে পারেন কি? আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনে বাইবেলের গল্পের সূত্রে এই তর্ক জারি রয়েছে।

বাইব (আরো পড়ূন)

স্বাধীন সাংবাদিকতা


[এক]
আজ মে মাসের ৩ তারিখ। ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ বা বিশ্বব্যাপী স্বাধীন সাংবাদিকতা চর্চা দিবস। সংবাদপত্র যেন রাষ্ট্রের রক্তচক্ষুকে ভয় না পায় কিম্বা মাফিয়ায়দের গোলাম না হয় সেটা মনে করিয়ে দেবার দিবস।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ২০২১ সালের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম সূচকে বাংলাদেশ খালি পেছাচ্ছে তো পেছাতেই আছে। বাংলাদেশ ২০১৯ সাল থেকে এক ধাপ করে পিছিয়েছে। দুই হাজার উনিশে বাংলাদেশের অবস্থান সূচক ছিল ১৫১, দুই হাজার একুশ সালে ১৫২। পাকিস্তান উপরে,  ১৪৫; অর্থাৎ বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা উত্তম। পাকিস্তানের সঙ্গে ইন্ডিয়া্র সঙ্গে বিরা (আরো পড়ূন)

বাংলাদেশের রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে?

অনেকে প্রায়ই প্রশ্ন করেন বাংলাদেশের রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে? কিন্তু প্রশ্ন হওয়া উচিত আমরা একে কোন দিকে নিতে চাই?

বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে শ্রমিক ও কৃষকদের উপস্থিতি না থাকলেও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও ছাত্র অধিকার পরিষদের অধিকাংশ সংগ্রামী তরুণেরা গরিব কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের সন্তান। আন্দোলনে শ্রেণিগত ছাপ স্পষ্ট না হলেও এটা পরিষ্কার সড়ক দুর্ঘটনায় যারা মরে কিম্বা পঙ্গু হয়ে দুঃসহ জীবন কাটায় তাদের অধিকাংশই 'মফিজ' -- অর্থাৎ তাদের পরিচয় বা নাম থাকে না। এছাড়া আছে মেহনতি ও নিম্নবিত্তের মানুষ -- যাদের খবর কেউ রাখে না। তাহলে আমাদের উচিত হচ্ছে যে কোন আন্দোলনে অন্তর্নিহিত শ্রেণি প্রশ্নটা ধরতে পারা এবং অন্যদের বোঝানো। দিনশেষে লড়াইটা হচ্ছে অল্প কয়েকট (আরো পড়ূন)

চলমান রাজনীতির ইতিবাচক উপাদান।

এক

এই লেখা যখন লিখছি তখন হেফাজতের হরতাল চলছে। হেফাজতে ইসলাম ২৮ মার্চ রোববার জানিয়েছে ইতোমধ্যে শহিদ হয়েছেন ১৭ জন এবং কমপক্ষে ৫০০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ও ছাত্রলীগ, অর্থাৎ রাষ্ট্র ও দলের যৌথ সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভও তীব্র হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতি একটা নতুন কালপর্বে প্রবেশ করেছে এবং সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক পরিসরের বেশ কিছু গুণগত রূপান্তর ঘটে গিয়েছে। সেই বিষয়ে এবং এর সম্ভাব্য পরিণতি কি হতে পারে তা নিয়েই এই লেখা। আগামি দিনে পরিণতে কি দাঁড়াবে আমি জানি না। তবে সমাজ, ইতিহাস এবং রাজনীতির অভিজ্ঞতার আলোকে কয়েকটি কথা আজ বলব।

(আরো পড়ূন)

‘স্বাতন্ত্র্য’ ও ‘গঠন’: ধারণা ও রাজনৈতিক অস্পষ্টতা

[এক]

বাংলাদেশের আগামি রাজনীতির অভিমুখ সঠিক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দুটো ধারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি হচ্ছে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিশাবে নিজেদের ‘স্বাতন্ত্র্য’ সঠিক ভাবে নির্ণয়, উপলব্ধি এবং তা কার্যকর ভাবে প্রকাশ করবার সঠিক ভাষা ও রণধ্বণি আবিষ্কার। অর্থাৎ কেন জনগোষ্ঠি হিসাবে আমরা স্বতন্ত্র সেই উপলব্ধি এবং তা প্রকাশের উপযুক্ত ভাষা আমাদের থাকা চাই। একই ভাবে অন্য জনগোষ্ঠির সঙ্গে আমাদের পার্থক্যও বোঝা দরকার। যেমন, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বাঙালি, কিন্তু তারপরও পশ্চিম বাংলার যে বাঙালি নিজেকে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিশাবে ‘ভারতীয়’ গণ্য করে, আমরা তাদের চেয়ে ভিন্ন। কিন্ (আরো পড়ূন)

ক্লারা জেৎকিন ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস

জার্মানির কমিউনিস্ট নেত্রী ক্লারা জেৎকিনের  (৫ জুলাই ১৮৫৭ -- ২০ জুলাই ১৯৩৩) প্রস্তাবে মার্চের ৮ তারিখ 'আন্তর্জাতিক নারী দিবস' হিসেবে ১৯১১ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। এটির শুরু আদিতে 'আন্তর্জাতিক নারী শ্রমিক দিবস' হিশাবে। এর পেছনে রয়েছে শতাব্দি জুড়ে শ্রমিক আন্দোলন এবং নারীপুরুষ নির্বিশেষে পুঁজির শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাবার অদম্য তাগিদ। তিনি প্রধানত নারীবাদী হিশাবে এখন অধিক পরিচিত, কিন্তু ক্লারা জেৎকিন ইউরোপে কমিউনিস্ট আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন।  তিনি ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, রুশ বিপ্লবে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। লেনিনের সঙ্গে একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের জন্য তিনি খ্যাত। কমিউনিস্ট আন্দোলনে পুরুষতান্ত্রিক আধ (আরো পড়ূন)

২. চিন ও আমরা

আমরা চিন নিয়ে কথা বলছি, কিন্তু যেভাবে চিন নিয়ে কথা হয় তাতে আমাদের বিশেষ আগ্রহ নাই। যেমন, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনরা কি ভারত ছেড়ে পিকিং-এর দিকে ঝুঁকছে? ভারতকে শায়েস্তা করতে হলে আমাদের কি চিনের পক্ষে থাকা উচিত? ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থাকে কি চিন সমর্থন দিচ্ছে? এইসব নিরর্থক কৌতুহল ও গালগল্পের আবর্জনার বাইরে ভাবতে পারার সামর্থ্য আমাদের এতদিনে হওয়া উচিত ছিলো। হয় নি। তা নিয়ে দুঃখ করার কিছু নাই। কারণ ফ্যাসিস্ট বাঙালি জাতীয়তাবাদী (পড়ুন, হিন্দুত্ববাদী) মতাদর্শ এবং উপমহাদেশ থেকে ইসলাম নির্মূলের বিরুদ্ধে লড়াই বাংলাদেশের জনগণের জন্য মোটেও সহজ ছিল না। কখনই না। সামনে দিনগুলোতে আরও কঠিন হবে। একাত্তরে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙা (আরো পড়ূন)

‘এখনকার তরুণরা তাদের সময়ে বাস করে না’

‘আজকের পত্রিকা’র জন্য ফরহাদ মজহারের এই সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন কবি সিফাত বিনতে ওয়াহিদ। তরুণ কবি সিফাত বিনতে ওয়াহিদের দুটো কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে:  'নিঃসঙ্গতায় আরো কিছু দেখা হোক' (২০১৯), এবং 'ঘরের ভেতরে ঘর নাই' (২০১৮)।

সাক্ষাৎকারটি ছাপা হয় ২০১৯ সালের ঈদ সংখ্যায়। এখানে দুই একটি জায়গায় অর্থ স্পষ্ট করবার জন্য বাক্য ঠিক করা ছাড়া আজকের কাগজ ঈদ সংখ্যায় যেভাবে ছাপা হয়েছে সেভাবেই তুলে দেওয়া হোল। যারা নেটে সাক্ষাৎকারটি সহজলভ্য চাইছিলেন তারা এখন সহজে পড়তে পারবেন আশা করি। সাক্ষাৎকারটি ছাপার সময়, ফরহাদ মজহার সম্পর্কে ‘আজকের পত্রিকা’ লাইন কয়েকের পরিচিতিমূলক ভূমিকা পেশ করে। নীচে তা উল্লেখ করা হোল:

“কবি (আরো পড়ূন)

'আগামী একশো বছর নজরে রেখে কবিতা লিখি'

 ফরহাদ মজহারের এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন পশ্চিম বাংলার কবি অতনু সিংহ। অতনু সিংহের পরিচিতি 'ঘুমের চেয়ে প্রার্থনা শ্রেয়' কাব্যপুস্তিকার জন্য। দুজনেই মনে করেন সীমান্তের দুই পাশে বাংলাভাষীদের মধ্যে জানাশোনার সম্পর্ক আরও দ্রুত বাড়ানো দরকার, ঔপনিবেশিক আমলের বিভাজন, বিভেদ ও ক্ষতস্থানগুলো নিরাময়ের ক্ষেত্রে কবিতা ভূমিকা রাখে, বলাবাহুল্য কবিরাও। ফরহাদ মজহারের সঙ্গে অতনু সিংহ প্রায় দুই বছর আগে দীর্ঘ সময় কথাবার্তা বলেছিলেন। সেই কথাগুলোরই প্রধান অংশ সাক্ষাৎকার হিশাবে এখানে পেশ করা হোল।

'প্রথম বিপ্লবের খুন বেরুবে ভাষা থেকে' শিরোনামে এই সাক্ষাৎকার 'ত্রৈমাসিক দেশকাল' পত্রিকার ২য় বর্ষ, প্রথম সংখ্যা, জানুয় (আরো পড়ূন)

১. চিন এবং আমরা

নিজের ঠিক নাই কিন্তু চিন ও ভারত নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার অবধি নাই। সম্প্রতি ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিবাদ বাংলাদেশে খুবই হাস্যকর কিছু তর্ক তৈরি করেছে। যেমন, আমরা কার পক্ষে থাকব? বালখিল্য জোকারে দেশ ভর্তি বলেই এই ধরণের প্রশ্ন তোলা হয়। কেন বললাম? কারন আপনি কার পক্ষে থাকবেন কি থাকবেন না সেটা কেউই বাংলাদেশকে জিজ্ঞাসা করে নি, করবেও না। ঘুড়ির সুতা অনেক আগেই ছিঁড়ে গিয়েছে। ভূ-রাজনীতির হিশাব নিকাশ এখন বাংলাদেশের নাগালের বাইরে।

দশক দেড়েক আগেও ভূ-রাজনৈতিক কারণে পরাশক্তিগুলো কিছুটা হলেও বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিত। সেসময় চিন, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বঙ্গোপসাগরীয় দেশ বাংলাদেশকে পক্ষে রাখা না রাখার প্রতিযোগিতা ছিল। সেই প্রতিযোগিতার সুবিধা বাংলাদে (আরো পড়ূন)

২০. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

কোভিড-১৯ ভাইরাসকে বলা হচ্ছে ‘নোভেল’, মানে এই ভাইরাস আগে শনাক্ত হয় নি, কিম্বা আগে ছিল না। এর আগে কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বের মানুষ মোকাবিলা করে নি। এই ভাইরাস সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানও অপ্রতুল; বিশেষত সংক্রমণ বিস্তারের চরিত্র এবং সম্ভাব্য চিকিৎসার তথ্য। ফলে মহামারী মোকাবিলার পরিকল্পনা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনুমানের ওপর নির্ভর করে নির্ণয় করা হয়েছে। অল্প কিছু ধনি দেশ অর্থনীতি, সামরিক শক্তি এবং বিজ্ঞানের ওপর দখলদারির কারনে দরকারি গবেষণা করতে পারছে, তারা প্রতিদিন নিজের এবং অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা যাচাই বাছাই করতে সক্ষম। তারা নতুন তথ্য ও গবেষণার ভিত্তিতে মহামারি মোকাবিলা পরিকল্পনায় অদল-বদল ঘটাচ্ছে, পদ্ধতির সংস্কার করছে কিম্বা বদলাচ্ছে। বিতর্ (আরো পড়ূন)

১৯. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বিল গেইটস নিয়ে আলোচনায় আমরা দেখেছি তিনি কিভাবে মহামারীকে সিরিঞ্জ, শিশি, ভ্যাকসিন, নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের ঘুলঘুলি দিয়ে দেখেন। এই দেখা খণ্ডিত দেখা। অর্থাৎ ভাইরাস যাকে আক্রমণ করে সেই ‘হোস্ট’ বা আক্রান্ত দেহের দিক থেকে দেখা। অথচ ‘হোস্ট’, দেহ বা জীবন সমাজ, পরিবেশ, সংস্কৃতি, রাজনীতি ইত্যাদি কোন কিছু থেকে কোন ভাবেই বিচ্ছিন্ন কোন সত্তা নয়। কিন্তু দেহ, জীবন বা ‘হোস্ট’কে বিল গেইটস তাদের সামগ্রিক জাগতিক সম্পর্ক থেকে আলাদা বা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। 'দেহ'কে আলাদা করে ফেলার পর বিচ্ছিন্ন দেহ এবং সংক্রামক ভাইরাসের ‘হোস্ট’ পুঁজি বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র হিশাবে হাজির হয়। ‘হোস্ট’ কেন্দ্র করে তা (আরো পড়ূন)

১৮. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

ধরুন, আপনি আমাকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করলেন যে আপনি আসলেই করোনা মহামারী থেকে বাঁচতে চান। যদিও আমি তা একদমই বিশ্বাস করি না। ধরে নিন আমি গোঁয়ার টাইপের। তবে এইটুকু জানুন, বিশ্বাস না করার পক্ষে আমার বিস্তর কারন রয়েছে।

তবু ধরুন, তর্কের খাতিরে মানলাম যে আপনি আসলেই কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হতে চান না, ইনফ্লুয়েঞ্জা সর্দি-কাশি-মাথাব্যথা ভাল লাগে না। তাছাড়া মরতে নিশ্চয়ই ভয় পান। ঠিক আছে মানলাম। তাহলে সবার আগে নিজের অতি সাধারণ কিছু কাণ্ডজ্ঞান আপনাকে ব্যবহার করতে শিখতে হবে।
সেটা কি রকম?

ধরুন, আপনি কি আসলেই বিশ্বাস করেন যে এই যে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধংদেহী ভাব, তুলকালাম কোভিড-১৯ যুদ্ধাবস্থা, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং, লকডাউন -- আপনাকে ঘরবন্দী, এলাকাব (আরো পড়ূন)

১৭. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বিল গেইটসের প্রবল আগ্রহ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে। মাইক্রোসফটের বিশাল সাফল্য বিচার করলে আমরা তা অনায়াসেই বুঝি। তিনি আমাদের অফিসে যেমন, তেমনি জীবনের অন্দর মহলে নিত্য হাজির রয়েছেন। প্রতিদিন যখন আমরা কম্পিউটার অন করি, মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ বা জানালা দিয়েই আমাদের জগত দেখা এবং নতুন টেকনোলজির জগতে বেঁচে থাকা শুরু হয়। কৃৎকৌশলের নিয়ন্ত্রণে আমরা ইতোমধ্যেই বিল গেইটসের হাতে বাঁধা পড়ে আছি। তবে এখন তিনি মহামারীর অজুহাতে আমাদের দেহের ওপর পুরাপুরি নিয়ন্ত্রণ চান।

শুধু মাইক্রোসফট নিয়ে গেইটস তৃপ্ত না। তিনি আরও আবিষ্কার চান। এবার এমন আবিষ্কার চান যাতে আমাদের শরীর বহুজাতিক কোম্পানির কাছে পুরাপুরি জিম্মি হয়ে পড়ে। গেইটস চাইছেন নতুন ভ্যাক্সিন ও নতুন বীজ আবিষ্কা (আরো পড়ূন)

১৬. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

13 May 2020

এখন চতুর্দিকে যেমন মার মার কাট কাট যুদ্ধের আওয়াজ শুনছি, বিলগেইটসও মনে করেন মহামারির মোকাবিলা রীতিমতো একটা যুদ্ধই বটে। প্রথাগত যুদ্ধে সৈনিকের হাতে থাকে বন্দুক বা মারণাস্ত্র। পার্থক্য হচ্ছে বিল গেইটস সিরিঞ্জ হাতে নেমেছেন। তিনি লড়বেন ভ্যাকসিন আর সিরিঞ্জ নিয়ে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার বলেছেন সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার শ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে কার্যকর পথ হচ্ছে শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা। শুধু আমাদের মতো গরিব দেশের জন্য নয়, ধনি গরিব সব দেশের জন্য। কিন্তু বিল গেইটস সেটা চান না। তিনি চান ভ্যাকসিন। তাই মহামারীকে তিনি আর্থ-সামাজিক বৈষম্য, প্রাণ ও পরিবেশের ধ্বংস, খাদ্য চক্রের বিনাশ, জলবায়ু বিপর্যয়, যুদ্ধ বিগ (আরো পড়ূন)

১৫. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

চিনের উহানে নতুন করোনা ভাইরাস (তারিখ) সংক্রমণ দেখা দেবার আগে SARS-CoV-2 নামক কোন ভাইরাস আছে এটা কেউই জানত না। এই নতুন ভাইরাসটির নাম দেওয়া হয় কোভিড-১৯। এখন কোভিড-১৯ সারা দুনিয়াকে আক্রমণ করছে, প্রায় সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। খুব সম্ভবত দুনিয়ার খুব কম মানুষই এর সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাবে। বিল গেইটস স্বাস্থ্যকে আগামি দিনে প্রধান বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিশাবে চিহ্নিত করবার পেছনে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তি দিচ্ছিলেন, আগামি দিনে ১ কোটির মতো মানুষ আগের মতো পারমাণবিক বোমায় না, মরবে ভয়ানক সংক্রামক রোগে। কোভিড-১৯-এর মতো ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারীর কথা আজ নয়, অনেক আগে থেকেই বিল গেইটস সহ অনেকেই বলে আসছিলেন। দুনিয়াব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিপর্যয় এবং বিপর্যস্ত স্ব (আরো পড়ূন)

১৪. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

একদিকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে জীবন বাঁচাবার জন্য এলাকা লকড ডাউন করা, মানুষকে ঘরবন্দী বা কোয়ারান্টাইন করবার চেষ্টা, পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ ঘোষণা করা, পুলিশ হঠাৎ ক্ষমতা পেয়ে অভ্যাসবশত নাগরিকদের লাঠিপেটা চর্চা, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের টহল নামানো, অন্যদিকে কথা নাই বার্তা নাই পোশাক ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানগুলোর আকস্মিক ঘোষণা যে ৫ এপ্রিল (রবিবার) থেকে কারখানা খুলে দেওয়া হবে! শ্রমিকদের বৃহৎ একটি অংশ বাড়ি চলে গিয়েছিল। গাড়িঘোড়া নাই, এখন ফিরবে কি করে? পথের মাঝে অল্পকিছু ট্রাক, বাস, মোটর সাইকেল পেয়ে কেউ কেউ ফিরেছে। অধিকাংশই পায়ে হেঁটে, অমানবিক ও অমানুষিক ধকল সহ্য করে শহরে ফিরতে বাধ্য হয়েছে। প্রথমত চাকুরি হারাবার ভয়, দ্বিতীয়ত বেতন পায় নি তারা, বেতন দরকার। (আরো পড়ূন)

১৩. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

মার্চের তিরিশ তারিখে নিউইয়র্ক টাইমসের একটি খবরের শিরোনাম হচ্ছে এরকম: For Autocrats, and Others, Coronavirus Is a Chance to Grab Even More Power। একনায়কতান্ত্রিক সরকার এমনিতেই অবারিত ক্ষমতা ভোগ করে। করোনাভাইরাসের সুবিধা নিয়ে তারা আরও ক্ষমতা হস্তগত করবে। যারা ইতোমধ্যেই একনায়কতান্ত্রিক শুধু তারা না, অন্যেরাও আরও ক্ষমতা কব্জা করবে। একনায়কতান্ত্রিক ক্ষমতা আরও পোক্ত ও সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি নতুন একনায়কী ক্ষমতা উৎপাদিত হবে। মার্চের ১৩ তারিখ থেকে এই সিরিজটি লিখছি। কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা আমাদের উদ্দেশ্য। তার মধ্যে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। আমরা কিভাবে খাঁচায় বন্দী হ (আরো পড়ূন)

১২. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বয়ান চলতেছে।

আপনাদের আর কোন আবেগ থাকতে পারবে না। বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। কেন আপনারা মসজিদে যেতে চান? আপনারা কি জানেন না এতে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়াবে?

না জানি না।

যারা এই সব বড় বড় কথা এখন বলছে তাদের হাতে দীর্ঘ সময় ছিল, তারা সাধারণ মানুষকে এই বিশাল কোভিড-১৯ বিপর্যয় সম্পর্কে জানাতে পারত। মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ছোঁয়াচে রোগে ছোঁয়াছুঁয়ির ভয়ংকর বিপদ বোঝাতে পারত। তাদের সংগঠিত করতে পারত। মুসল্লিদের দিয়েই মসজিদের নেতৃত্বে পাড়ায় পাড়ায় সঙ্গরোধ কমিটি করতে পারত। কিন্তু হাতে বিস্তর সময় থাকা সত্ত্বেও তারা জনগণকে একদমই সচেতন করে নি। মহামারী বিপর্যয়ে মানুষ সহায়তা পাবে তার জন্যও নিজেরা কোন প্রস্তুতি গ্রহণ করে নি। এখন মানুষকে দোষারোপ করে (আরো পড়ূন)

১১. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

 “ভূয়া যুক্তিরকায়দা সবসময় একই রকম। সন্ত্রাসের অজুহাতে বলা হয়েছিল স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে স্বাধীনতা দমন করতে হবে, এখন বলা হচ্ছে জীবন রক্ষা করতে চাইলে আমাদের জীবনযাপন বিসর্জন দিতে হবে” – জর্জিও আগামবেন

.......................................

জর্জিও আগামবেনের লেখা কেন্দ্র করে দার্শনিক মহলে যে তর্ক উঠেছে তার অধিকাংশই অযৌক্তিক। এমনকি জাক দেরিদার বন্ধু জাঁ-লুক ন্যন্সির আপত্তিও। ন্যন্সি জর্জিওকে বন্ধু দাবি করেছেন। হার্ট ট্রান্সপ্লান্টেশান সম্পর্কে জর্জিও তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে কি বলেছেন সেটা প্রকাশ্যে এনে জাঁ-লুক ন্যান্সির যুক্তি প্রতিষ্ঠা করাটাও আমার ভাল লাগে নি।

ন্যন্সিকে হার্ট ট্রান্সপ্লেন্টেশানের (আরো পড়ূন)

১০. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

“আমরা সারাবছর সংকট এবং জরুরি অবস্থার মধ্যে বাস করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি যে এখন আর খেয়ালই করতে পারি না যে জীবন স্রেফ একটি বিশুদ্ধ জৈবিক পদার্থে পর্যবসিত। এই অবস্থায় আমরা রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবন -- এমনকি মানবিক ও আবেগের জায়গাগুলিও হারিয়ে ফেলেছি। একটি সমাজ যখন সার্বক্ষণিক জরুরি অবস্থার মধ্যে থাকে তাকে আর মুক্ত বলা যায় না। বাস্তবিকই আমরা তথাকথিত ‘নিরাপত্তা’র চিন্তা করতে গিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে কোরবানি দিয়ে দিয়েছি, নিজেদের সেই গজবে নিক্ষেপ করেছি যেখানে সারাক্ষণ ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আমাদের বাঁচতে হয়”।

“এ কেমন সমাজ স্রেফ বাঁচা ছাড়া যার আর কোন মূল্য নাই”
--জর্জিও আগামবেন
....... (আরো পড়ূন)

৯. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

ইংরেজি ‘হার্ড’ (Herd) কথাটার মানে 'পশুর পাল'। এখান থেকে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ (Herd Immunity) কথাটার জন্ম। অর্থাৎ পুরা পশুর পালের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির চেষ্টা করা। করোনাভাইরাস জাতীয় সংক্রমণের ক্ষেত্রে 'পাল' মানে পশুর পাল না, মানুষের পাল। জনগোষ্ঠি। ‘হার্ড ইমিউনিটি’র মানে পালের , অর্থাৎ জনগোষ্ঠির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন যাতে কোভিড-১৯ আমাদের কাবু করতে না পারে।

কিভাবে আমরা ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করি? দুই ভাবে সেটা সম্ভব। একটি হচ্ছে রোগ প্রতিষেধক টিকা-ভ্যাক্সিন দেওয়া, অর্থাৎ কৃত্রিম ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করা। অন্যটি হচ্ছে প্রাকৃতিক ভাবে অর্জন। সংক্রমিত হলে শরীর রোগ প্রতি (আরো পড়ূন)

৮. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

ভাইরাস অজৈব ও জৈব জগতের মাঝখানে এক অদ্ভূত আমিষ পদার্থ। না জীব না বস্তু। পরাশক্তিগুলোর মধ্যে এই আজব জগতের ওপর আধিপত্য বিস্তারের তীব্র প্রতিযোগিতা রয়েছে। এই আজব চিজের ওপর বৈজ্ঞানিক, সামরিক ও কৃৎকৌশল্গত আধিপত্য অর্জনের ওপর আগামিতে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে বিশ্বব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক কারা হতে যাচ্ছে তা নির্ভর করে। কোভিড-১৯ সম্পর্কে জৈব মারণাস্ত্রের তর্ক ভাইরাসের আজব বৈশিষ্ট্যের কারণেই রয়েছে। সংক্রমণের বিপর্যয় থেকে সুরক্ষার প্রশ্ন ছাড়াও শুরু থেকেই আমি তাই এর উপর জোর দিচ্ছি। আধিপত্য বিস্তারের ক্ষমতা আমাদের নাই। কিন্তু কেন বারবার হাত ধোবার পরামর্শ দেওয়া হয় সেই বৈজ্ঞানিক কারণ নিদেন পক্ষে জানা কি আমাদের কর্তব্য নয়?

কোভিড-১৯ ছোঁয়াচে, ফলে ছোঁয়াচে রোগ (আরো পড়ূন)

৭. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বাংলাদেশে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দ্বারা নির্বাচিত সরকার আছে কি ? যাদের কাছে আপনি মহা বিপর্যয়ের সময় ন্যূনতম দায়িত্ববোধ আশা করতে পারেন? কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ না হয় পরের কথা। না, নাই।

চিনের অভিজ্ঞতার আলোকে অনেকে দেশকালপাত্র ভেদ বিচার বাদ দিয়ে 'রেজিমেন্টেড রেসপন্স'-এর কথা বলছেন। এতো কঠিন ভাষায় না বললেও অনেকে সরাসরি বলছেন শেখ হাসিনার হাত দৃঢ় করে, তার নিরংকুশ ক্ষমতা ও নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করা হোক। কিন্তু তাঁর নিংকুশ ক্ষমতা তো আছেই। নতুন কি ক্ষমতা দেওয়া যায় এখন তা গবেষণা করে বের করতে হবে। যারা 'জরুরি অবস্থা' ঘোষণার কথা বলেছিলেন, তাঁরা কি ভেবে বলেছেন জানি না। হয়তো একই কথা সাংবিধানিক ভাষায় বলতে চেয়েছেন। 'জরুরি অবস্থা' জারি ম (আরো পড়ূন)

৬. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

যারা সরকার তথ্য লুকাচ্ছে বলে আওয়াজ করছেন, তাঁদের সঙ্গে আমি একমত না। তাদের অভিযোগ মিথ্যা সেটা বলছি না। এখন তথ্য লুকানো হোক বা নাহোক সেটা কোন ইস্যুই না। এটাই হবার কথা। জনগণকে বিকল্প নির্ভরযোগ্য তথ্যের কেন্দ্র তৈরি করতে হবে।

দ্বিতীয়ত সরকারী তথ্যে জনগণের এক তিলও বিশ্বাস নাই। ফলে তথ্য লুকানো হোল নাকি হোল না তাতে কিছুই আসে যায় না। আমাদের বাঁচা আমাদেরই বাঁচতে হবে।

তৃতীয়ত পাশ্চাত্য দেশ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমরা যা তথ্য পাচ্ছি সেটা সম্পূ্র্ণ তথ্য নয়। এটা বুঝতে পারছি কোভিড-১৯ ভয়ানক একটি ভাইরাস, যার উৎপত্তি কিম্বা উৎপত্তির কারণ সম্পর্কে যারা জানে তারা তথ্য দিচ্ছে না। দেবে না। শুধু দেখছি চিন ক (আরো পড়ূন)

৫. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

'নতুন করোনাভাইরাস কোন কৃত্রিম উপায়ে না, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়েছে' -- এই কথা আমরা কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মারি শুরুর প্রথম দিন থেকেই শুনে আসছি। বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় দেখলাম স্ক্রিপ্স রিসার্চ ইন্সটীটিউটের (The Scripps Research Institute বা সংক্ষেপে Scripps Research) বরাতে একই শিরোনামে একটি খবরও ছাপা হয়েছে।

স্ক্রিপ ইন্সটিটিউট একটি অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। বৈজ্ঞানিক মহলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেউ কেউ দাবি করেছিল উহানের ল্যাবরেটরিতে জেনেটিক কারিগরির মাধ্যমে এই ভাইরাস চিনই তৈরি করেছে। দুর্ঘটনা বশে বেরিয়ে গিয়ে এই মহা বিপদ ঘটেছে। বিজ্ঞানীদের মধ্যে শুরু থেকেই এই মতৈক্য ছিল যে কোভিড-১৯ কোন ল্যাবরেটরিতে তৈরি ভ (আরো পড়ূন)

৪. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

করোনাভাইরাস ভয়ংকর বৈশ্বিক মহামারী পরিস্থিতি। সেনাবাহিনী, পুলিশ বা আইন দিয়ে মহামারী দমন করা যায় না। এটা 'জরুরি অবস্থা' ঘোষণার পরিস্থিতি নয়। দেশে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির কোন অবনতি ঘটেনি যাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। জনগনকে সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ করবার প্রশ্ন বাদ দিয়ে এই সময় 'জরুরী অবস্থা' ঘোষণার কথা একমাত্র গণশত্রুদের পক্ষেই তোলা সম্ভব। এই যুদ্ধে জয়ের একমাত্র উপায় নিজের সুবিধা বা অসুবিধার চেয়ে সবার জীবন রক্ষাকে সবকিছুর উর্ধে স্থান দেওয়া। চাই দায়িত্ববোধ, যাতে আমি নিজে মহামারী বিস্তারের কারন না হয়ে উঠি। এবং নিজেকেও রক্ষা করতে পারি। এই বোধ বলপ্রয়োগ করে কিম্বা আইন জারি করে হয় না। মানুষকে বোঝানোর ও সচেতন করবার কোন বিকল্প নাই। কোন শর্টকাট নাই।

(আরো পড়ূন)

৩. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বাংলাদেশ মারাত্মক করোনা ভাইরাস ঝুঁকিতে পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি এই বিপর্যয় মোকাবিলা করতে পারব? বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমাদের আস্থা থাকা উচিত। মোকাবিলা দুঃসাধ্য বটে, কিন্তু মোটেও অসম্ভব নয়। কিন্তু সেটা সম্ভব যদি আমরা আতংকিত না হই। দ্বিতীয়ত সরকারকে বুঝতে হবে আইন করে, মিলিটারি-পুলিশ দিয়ে মহামারী দমন করা করা যায় না। চিনের উহানে অসম্ভব সম্ভব করেছে প্রধানত স্বাস্থ্যকর্মী এবং স্থানীয় জনগণ। অর্থাৎ জনগণকেই সম্পৃক্ত করতে হবে। আইন, লাঠি বা বন্দুক দিয়ে পিটিয়ে মহামারি দমন করা যায় না। এতে হিতে বিপরীত হবে। নিপীড়নের মুখে মানুষ তথ্য লুকাবে। ভয়ংকর পরিস্থিতি ঘটবে। ঠাণ্ডা মাথায় আমাদের বিভিন্ন দিক ভাবা দরকার।

প্রথমত কোভিড-১৯ সম্পর্কে আমাদের যারপ (আরো পড়ূন)

২. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

চিন ছাড়া আর দুটি দেশ মৃত্যু হার ও প্রাদুর্ভাবের দিক থেকে করোনাভাইরাসে ভীষণ ভাবে আক্রান্ত: একটি ইটালি, আরেকটি ইরান। ইরান করোনাভাইরাসে অতিশয় আক্রান্ত তিনটি দেশের একটি। ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতার পরামর্শদাতাদের একজন আয়াতুল্লাহ হাশেম বাথায়ি গোলপায়েগানি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডাক্তারি পরীক্ষায় নিশ্চিত হবার দুই দিনের মধ্যেই মারা গিয়েছেন। ইরানের রেভুলিউশনারি গার্ড কোরের একজন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসের শাবানি কোভিড-১৯ সংক্রমণে মারা গিয়েছেন। ইরানে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে, যখন এ লেখা লিখছি, ৮৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।

বাংলাদেশ ভয়ংকর বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। সরকারি সংক্রমণ সরকারী পর্যায়ে অস্বীকার করবার প্রবণতা আমরা শুরু থেকেই লক্ষ্য (আরো পড়ূন)

১. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

করোনাভাইরাস নিয়ে দেশে বিদেশে যতো আলোচনা দেখছি তার প্রায় সবই এই সংক্রামক ব্যাধি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত , বিশেষভাবে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিখুঁত করবার সঙ্গে যুক্ত।

সংক্ষেপে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার নীতিগত মূল্যায়ন, কারিগরি বা চিকিৎসাশাস্ত্রীয় সামর্থ বিচার এবং এপিডিওমেলজি -- অর্থাৎ কোথায় কয়জন আক্রান্ত হোল, কয়জন মরলো এবং কয়জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলো, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা বা পর্যালোচনা। বাড়তি ভূ-রাজনৈতিক আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল চীন কিভাবে কঠোর ভাবে তার নাগরিকদের কার্যত ‘শহরবন্দী’ করেছে তার সমালোচনা। পাশ্চাত্য নিজের নৈতিক মাহাত্ম প্রচার করবার জন্য চিনের বিরুদ্ধে প্রচারণা। যেমন, চিনের কমিউনিস্ট পার্টির একক ক্ষমতায় যা সম্ভ (আরো পড়ূন)

মত প্রকাশের স্বাধীনতা বনাম চিন্তার স্বাধীনতা: একটি তৎপর চিন্তার পত্রিকা দরকার

[এই লেখাটি ৮ অগাস্ট ১৯৯১ সালে চিন্তা প্রথম প্রস্তুতি সংখ্যায় ছাপা হয়েছিল। বাংলাদেশে 'পাক্ষিক চিন্তা'র মতো একটি পত্রিকা বের করার পেছনে কী ধরণের ইচ্ছা কাজ করেছিল তার কিছুটা হদিস এই লেখায় পাওয়া যাবে। সাপ্তাহিক  চিন্তা পাঠচক্রে সম্প্রতি গ্রুপের রাজনৈতিক অবস্থান গুছিয়ে হাজির করবার আলোচনা চলছে। সেই দিকে থেকে এই পুরানা লেখাটি সামনে আনা দরকার। গ্রুপ হিশাবে চিন্তা পাঠচক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান হচ্ছে সক্রিয় ও সজীব চিন্তাকে 'মত' বা ছকে বাঁধা আদর্শ থেকে আলাদা গণ্য করা। একে আমরা পর্যালোচনা ও মতাদর্শিক বিশ্বাসের পার্থক্য হিশাবেও গণ্য করতে পারি। চিন্তা গ্রুপের স্বাতন্ত্র্য বা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বাংলাদেশে পর্যালোচনার  (Critique) সামর্থ্য গড়ে (আরো পড়ূন)

৪. মার্কসের 'পুঁজি': 'পণ্য' দিয়ে শুরু কেন?

৯ নভেম্বর, ২০১৯, চিন্তা পাঠচক্রের পঞ্চম বৈঠকে আমরা বসেছিলাম। দুই সপ্তাহের বিরতির পর আবার বসা। কার্ল মার্কসের ‘পুঁজি’ গ্রন্থ ধারাবাহিক পাঠ হিসেবে মার্কসের মুদ্রাতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। প্রধান আলোচক জনাব ফরহাদ মজহার।

পাঠের শুরুতে নতুন সদস্যদের জন্যে পূর্ব-পাঠের একটা সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরা হয়। এরপর থেকে যারা যোগ দেবেন তাদের অবশ্যই পাঠচক্রের নোটগুলো পাঠ করে আসতে হবে। প্রয়োজনে দুই একটি প্রসঙ্গ বারবার ফিরে আসতে পারে। কিন্তু দ্রুত এগিয়ে যাবার জন্য পাঠচক্রে যারা আন্তরিক ভাবে আগ্রহী তাঁদের নিজের চেষ্টা থাকতে হবে।

‘মুদ্রাতত্ত্ব’ নিয়ে আলোচনা শুরু হয় মার্কসের খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি মন্তব্য দিয়ে। এই মন্তব্য তিন (আরো পড়ূন)

কাশ্মিরের নারী: নারীমুক্তি ও স্বাধীনতা

কাশ্মির পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশে আমরা বেশ উদ্বিগ্ন। এমন নয় যে কাশ্মিরে এখন যা ঘটছে তা হঠাৎ করে হয়েছে বলেই এই উদ্বিগ্নতা। বিগত ৭০ বছর ধরে, ১৯৪৭ সালের পর থেকেই কাশ্মির নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে বিরোধ ও কাড়াকাড়ি তার বিরুদ্ধে কাশ্মিরের মানুষ সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে ভারত অধ্যুষিত জম্মু ও কাশ্মিরে ভারতীয় সৈন্যদের দমন-পীড়ন আমাদের সকলের জানা। এরই মধ্যে কাশ্মীরের জনগণ জীবন-যাপন করছেন; লেখা-পড়া, চাকুরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, সব কিছুই হচ্ছে।

কিন্তু সম্প্রতি গত ৫ আগস্ট ২০১৯ ভারতের বিজেপি সরকার ভারতের সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ রহিত করে জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এরপর তাদের ওপর দমন পীড়ন যেভাবে শুরু করেছে, তাতে বিশ্বের সব দ (আরো পড়ূন)

গোপাল ভাঁড়ও এভাবেই রাজার সমালোচনা করতেন

এই লেখাটি ৭ জুন ২০১৪ দৈনিক যুগান্তরে উপসম্পাদকীয় হিশাবে ছাপা হয়েছে। 'গোপাল ভাঁড়' রসিক সন্দেহ নাই, গোপাল শুধু হাসায় না, দার্শনিক আগ্রহও জাগায়।  কিন্তু গোপাল নিয়ে মনের মতো কিছু লেখা হোল না।  এই লেখাটি কবে লিখেছিলাম নিজেই ভুলে গিয়েছি। মোহাম্মদ রোমেল মনে করে দিয়েছেন এবং জোগাড়ও করে দিয়েছেন। রোমেলকে অশেষ ধন্যবাদ।

সাম্প্রতিক কালে 'ভাঁড়', বিশেষত রাজকীয় ভাঁড়ামির দার্শনিক তাৎপর্য নিয়ে নতুন করে ভাবা জরুরী হয়ে পড়েছে। রাজা যখন একই সঙ্গে শাসক,  আইনদাতা ও বিচারক তখন কিভাবে আপনি আপনার কথা পেশ করবেন?  আপনাকে তখন ভান করতে হবে, আপনি সিরিয় (আরো পড়ূন)

৩. মার্কসের 'পুঁজি': পণ্য

১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯। মার্কসের ‘পুঁজি’ পড়বার চতুর্থ পাঠ শুরু হয়। মূল্যের রূপ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শেষ হয়। ‘পণ্যের ভতুড়ে কারবার’ নামক গুরুত্বপূর্ণ অংশ আপাতত বাদ রাখা হয়। কারন এর সঙ্গে ধর্মতত্ত্ব, দর্শন ও সমাজতত্ত্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তর্কবিতর্ক জড়িত। আগামিতে সেই বিষয়ে আলাদা ভাবে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  এখানে আলোচনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ পেশ করা হোল।

১. আবারও নতুন যাঁরা যোগ দিয়েছেন তাঁদের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে ‘পুঁজি’ সম্পর্কে বাংলাদেশে বিভ্রান্তিকর নানান চলতি অনুমান নিয়ে আলোচনা ওঠে। বাংলাদেশের বামপন্থি শিবিরে ‘পুজি গঠন’ নামক একটি অনুমান বা ধারণা কাজ করে। সেটা অনেকটা এরকম যে (আরো পড়ূন)

২. মার্কসের 'পুঁজি': প্রাথমিক বিষয়াদি

২৪ আগস্ট, ২০১৯। চিন্তা পাঠচক্রের ‘পুঁজি’ পড়ার ছিল দ্বিতীয় পাঠ। প্রধান আলোচক ছিলেন ফরহাদ মজহার। ‘পণ্য’ নিয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছিল, এই ক্লাস ছিল তারই ধারাবাহিকতা। পাঠ শুরুর আগে ‘পুঁজি’ পাঠের ভূমিকা হিশাবে কিছু বিষয় আলোচনা করা হয়।

১. ‘চিন্তা পাঠচক্রের ‘পুঁজি’ পাঠের ক্লাস সকলের জন্যে। যারা অর্থনীতি নিয়ে পড়েছেন কিম্বা পড়েন নাই তাতে কিছু আসে যায় না। আগ্রহ এবং নিয়মিত থাকার চেষ্টাই প্রধান। আমাদের তরুণ সমাজের জন্যে, যাদের কার্ল মার্কস সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা রয়ে গেছে। সেসব ভুল ধারণা থেকে মুক্ত হয়ে মার্কসের ‘পুঁজি’ গ্রন্থটি নিষ্ঠা ও মনোযোগের সঙ্গে পড়বার আগ্রহ তৈরির জন্যই এই উদ (আরো পড়ূন)

১. মার্কসের 'পুঁজি': প্রাথমিক বিষয়াদি

[এই লেখাটি গত ১৭ আগস্ট, শনিবার চিন্তা পাঠচক্রে ‘পুঁজি’ বইটি পাঠের পরিপ্রেক্ষিতে ফরহাদ মজহারের আলোচনার ভিত্তিতে লেখা। আলোচনায় আমার কাছে যে কথাগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তুলে দিচ্ছি। এটি চলবে। অন্যদের গুরুত্বপূর্ণ কোন পয়েন্ট বা প্রশ্ন  থাকলে আশা করি যোগ করবেন।  ‘পণ্য’ নিয়ে সরাসরি আলোচনা আরেকটি পোস্টে পেশ করা হবে]

১. সতেরো অগাস্টে পাঠচক্রে নির্ধারিত আলোচনার বিষয় ছিল পুঁজি গ্রন্থে বিধৃত মার্কসের ‘পণ্য’। গ্রন্থের প্রথম কয়েক পাতা পড়া এবং বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে অন্যদের পড়তে উৎসাহিত করা ছিল উদ্দেশ্য।

‘পণ্য’ নিয়ে আলোচনা শুরুর আগে ফরহাদ মজহার‘পুঁজি’ সম্পর্কে আমাদের (আরো পড়ূন)

জম্মু গণহত্যা: স্মৃতির আড়ালে চলে যাওয়া ইতিহাস

কাশ্মীর সমস্যা, কাশ্মীরিদের উপর নির্যাতন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সময় আবশ্যিকভাবেই কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যা ও বিতাড়নের প্রসঙ্গ উঠে আসে। ১৯৯০ সালে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর চলা নির্যাতন এবং কাশ্মীর থেকে তাঁদের বিতাড়ন অবশ্যই ঘৃণিত ও চরম নিন্দনীয়। কিন্তু ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে জম্মুতে সংঘটিত লক্ষ গুণ ভয়াবহ মুসলিম গণহত্যার নৃশংসতা ইতিহাসের আড়ালেই রয়ে যায়, রেখে দেওয়া হয়।

পেক্টা সান্ট সারভেন্ডা (Pacta Sunt Servanda) হল আন্তর্জাতিক দেওয়ানি আইনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নীতি। ল্যাটিন ভাষায় লিখিত বাক্যটির মর্মার্থ হল, দুটি পক্ষ একে অপরের সঙ্গে চুক্ (আরো পড়ূন)

দুই: তুখমি রক্ষায় তাজিক নারী

মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানে মানুষের সংখ্যা খুব কম, মাত্র ৭৫ লাখ, তাদের দেশের আয়তন ১৪৩,১০০ বর্গ কিলোমিটার। তুলনায় বাংলাদেশের আয়তন ১৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার অথচ জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। অর্থাৎ প্রায় একই সমান আয়তনে তাজিকিস্তানে ১৭ গুন কম মানুষের বাস। শুধু বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরেই প্রায় ২ কোটি মানুষ থাকে। তাজিকিস্তানে উঁচু পর্বত থেকে শুরু করে নিচে সমতল ভূমি – তার মানে এই সব অঞ্চলে যতো রকম ফসলের বৈচিত্র্য পাওয়া যাওয়ার কথা তাদের কাছে সবই ছিল এককালে, এখন অনেক কিছু হারিয়ে গিয়েও আছে। তাজিকিস্তান বিশ্বের শুষ্ক অঞ্চলের অন্যতম, তাই শুষ্ক অঞ্চলের ফসল এখানকার কৃষির প্রধান বৈশিষ্ট্য।

তাজিকিস্তান মূলত কৃষি প্রধান দেশ। কিন্তু পাহাড়ি। উঁচু পর (আরো পড়ূন)

এক: তাজিকিস্তানে তাজিকদের সঙ্গে

২০ জুন, ২০১৯ তারিখে খুব ভোরে প্রায় সাড়ে তিনটায় টার্কিস এয়ারলাইনের বিমানে করে দুসাম্বে এয়ারপোর্টে পৌঁছালাম তখন সূর্য ওঠে নি। একটু আলো-আঁধারিতে নামলাম। ইস্তাম্বুলে দীর্ঘ যাত্রা বিরতি খুব আরামদায়ক ছিল না। আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টগুলো দিনে দিনে সাধারণ যাত্রীদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে উঠছে। ব্রান্ডের ডিউটি ফ্রী শপ নানান বিলাস সামগ্রীতে ভরা অথচ সাধারণ যাত্রীদের খাবার জন্য ভাল কোন ব্যবস্থা নাই। এই রুটটি প্রবাসী শ্রমিকদের রাস্তা, ভাবছিলাম যাতায়াতে তাদের কত না কষ্ট হয়। ইস্তাম্বুলে আমার নিজেরও খুব কষ্ট হয়েছে দীর্ঘ আট ঘন্টা বসে থাকতে।

দুসাম্বে এয়ারপোর্ট ছোট, চার পাশে পাহাড়ের সারি, ভোরের আলোতে সুন্দর দেখাচ্ছিল। কিন্তু পাহাড়গুলোকে কেমন যেন ন্যাড়া মনে হচ (আরো পড়ূন)

কৃষক কন্যা নারী শ্রমিক: অর্থনৈতিক ও শ্রেণী বৈষম্য থেকে বেরুতে পারে নি

আজকের আন্তর্জাতিক নারী দিবস শ্রমিক নারীর সংগ্রামের ফসল। লাল সালাম। আজ নারী অনেক এগিয়েছে, সমাজের সর্ব স্তরে নারীকে দেখা যাচ্ছে; তারা সবাই মিলে পালন করছেন মার্চের ৮ তারিখ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এই দিনটি একসময় ছিল শুধু নারী সংগঠনের এবং নারী শ্রমিক সংগঠনের নিজস্ব পালনের দিন। এখন তা হয় রাষ্ট্রীয় ভাবে, যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকেন এবং বক্তৃতা করেন। জাতিসংঘ ঘোষিত দিনের মধ্যে অন্যতম প্রধান দিন ৮ই মার্চ। বেগুনি শাড়ী বা বেগুনি পোষাক পরবার, নারীদের পরস্পরের প্রতি সংহতি প্রকাশের দিন।

কিন্তু এর ইতিহাস কতজন মনে রাখি? মনে হয় সকলের আর মনে রাখার প্রয়োজন হয় না, কারণ নারী দিবস এখন ‘বুর্জোয়া’ নারীদের ‘মুক্তি’ বা &l (আরো পড়ূন)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ নারী নেতৃত্ব

ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল ঐতিহাসিক আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা মিছিলে মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছেন, আন্দোলন করেছেন, কিন্তু তাঁদের স্বীকৃতি দিতে ইতিহাস সবসময়ই কার্পণ্য করেছে। কিন্তু এবার ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (বা ইংরেজি সংক্ষিপ্ত নাম ডাকসু) নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ছাত্রীরা যে ভূমিকা রেখেছেন, তা সবার নজর কেড়েছে। তাদের লাল সালাম জানাই। নারী আন্দোলনের একজন কর্মী হিশেবে আমি গর্ব বোধ করছি। আর একটি ইতিহাস রচনা হচ্ছে যেখানে নারীর অবদান খোঁজার জন্যে হারিকেন নিয়ে বেরুতে হবে না; তাদের অবদান জ্বলজ্বল করে সবার চোখের সামনে ফুটে উঠেছে। এটা ২০১৯ সাল, এখন নারীর অবদান ঢেকে (আরো পড়ূন)

২. গুগি ওয়া থিয়োঙ্গো: নয়া-উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সাহিত্য  

শুধু সাম্রাজ্যবাদীর মুখোশ উন্মোচন নয়, নয়া-উপনিবেশ অধিকৃত দেশগুলোর স্বৈরশাসকদের মুখোশও উন্মোচিত হয় নগুগি ওয়া থিয়াঙ্গোর উপন্যাসে। ২০০৬ সালে প্রকাশিত ‘উইজার্ড অফ দ্যা ক্রো’-কে সমালোচকরা চিহ্নিত করেছেন ‘অ্যান এপিক স্যাটায়ার অফ নিও কলোনিয়ালিজাম’ নামে; উপন্যাসটা ঠিক তেমন ধাঁচেরই একটা কালজয়ী উপন্যাস। ৭৬৬ পৃষ্ঠার বিশাল কাহিনীটি যাদু বাস্তবতার আদলে অত্যন্ত রসালোভাবে একজন নয়া ঔপনিবেশিক স্বৈরশাসক এবং তাকে বেষ্টন করে রাখা চাটুকার মন্ত্রী, অমাত্য আর উপদেষ্টাদের নিয়ে নির্মাণ করেছেন থিয়োঙ্গো। তার কালজয়ী এই উপন্যাস। ‘যে বছর আবুরিরিয়া-র স্বৈরাচারী শাসক পৃথিবীর সর্বোচ্চতম টাওয়ার বানানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করলেন, কামিতি নামে এক হত (আরো পড়ূন)

১. গুগি ওয়া থিয়োঙ্গো: নয়া-উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সাহিত্য

১৯৯৬ সালে ভারতের হায়দ্রাবাদের নিজাম মহাবিদ্যলয়ে কেনিয়ার নাট্যকার,ঔপন্যাসিক এবং প্রাবন্ধিক গুগি ওয়া থিয়োঙ্গো  ( Ngũg wa Thiong'o) যখন নয়া ঔপনিবেশবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আফ্রিকার জাতীয় আন্দোলনগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তখন ইদি আমিন, গাদ্দাফি এবং সাদ্দাম হোসেন সম্পর্কে তার অভিমত জানাতে চাওয়া হয়। উত্তরে বলেন “ আমার কাছে কি ধরণের উত্তর আশা করছেন তা আমি জানি। দুচার কথায় এর জবাব দেয়া কঠিন। তবে একটা কথা আমি জোর দিয়ে বলতে চাই -- আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারজাত মৌলবাদ অন্য সমস্ত রকম মৌলবাদের চেয়ে বিপজ্জনক”। মৌলবাদের সংজ্ঞার পরিধি ব্যাপ্তির কারণে লেখক থিয়োঙ্গো যথার্থভাবে সব থেকে বিপজ্জনক মৌলবাদকে সনাক্ত করতে যে পেরেছেন সেই বিষয়ে কো (আরো পড়ূন)

উপসাগরীয় দুই শাহজাদা'র কাহিনী

 সাংবাদিক জামাল খশগগীর হত্যার ঘটনা ৩৩ বছর বয়সী সউদী শাহজাদা মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) ক্যারিয়ারে কি ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ এবং পর্যবেক্ষকরা নানা আন্দাজ পেশ করছেন। ঠিক সেই সময় তার চেয়ে ২৫ বছরের বড় আরেক শাহজাদা একটু দূরে থেকে সব দেখছেন এবং নিশ্চয়ই একটু অস্বস্তি বোধ করছেন।

এমবিএসের সঙ্গে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ইস্যুতে জড়িয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাহজাদা মোহাম্মদ বিন জায়েদ (এমবিজেড)। এর মধ্যে দুটি হচ্ছে, ইয়েমেন যুদ্ধ এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সদস্য রাষ্ট্র কাতারের বিরুদ্ধে আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে অবরোধ আরোপ।

এই দুটি বিষয়ের ফল বেশি সুখকর ছিল না। ইয়েমেন য (আরো পড়ূন)

নারীর মান-মর্যাদার প্রশ্ন

সম্প্রতি ‘নারীর প্রতি কটূক্তি’ করার কারণে সমাজের প্রভাবশালী একটি অংশ হঠাৎ ভীষণ রকম সক্রিয় হয়েছে। ফলে নারীর প্রতি যিনি কটূক্তি করেছেন, তার বিরুদ্ধে দ্রুত বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং জামিনযোগ্য হলেও আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

বাংলাদেশে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চলছে, কথা বলা, সভা-সমাবেশের অধিকার গায়েব হয়ে গেছে। মানহানির মামলায় ত্বরিত অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনাকে বাংলাদেশের বিদ্যমান ক্ষমতাচর্চার পরিপ্রেক্ষিতেই বিচার করতে হবে। কিন্তু এ ঘটনায় অনেকে এমন ধারণা দিতে চাইছেন যে বাংলাদেশে ‘নারীবাদ’ খুব শক্তিশালী। প্রমাণ হচ্ছে নারীকে কোনো অবস্থায় বাংল (আরো পড়ূন)

কৃষির কর্পোরেট চরিত্র ও জিএমও

সবুজ বিপ্লবের রাজনীতি, বিষ ও প্যাকেজ

গত শতাব্দির মাঝামাঝি সময় থেকে কৃষির কৃৎকৌশলে পরিবর্তন আনবার পরিপ্রেক্ষিতে বীজের ধারণায় এবং বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আনা হয়। সরকারি উদ্যোগে হলেও সেটা ছিল আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। ফসলের একাংশকে বীজ হিশাবে সংগ্রহে রাখা, বীজ বাছাই, পরের মৌসুমে বীছন তৈরি এবং জমির বৈচিত্র ও বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে বিভিন্ন জাতের ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনের সিদ্ধান্ত কৃষক পরিবারই নিতেন। সেখানে কৃষক নারীর প্রত্যক্ষ ভূমিকা থাকত। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, বিশেষ ভাবে চিনে, কৃষকদের নেতৃত্বে কমিউনিস্ট পার্টি কৃষকদের সংগঠিত করে এবং গণযুদ্ধ ও রাজনৈতিক বিপ্ল (আরো পড়ূন)

নারীর মুক্তি: কতিপয় বাস্তবিক প্রসঙ্গ

মানুষ কে যে কোন একসময় সকল কর্মের হিসাব দিতে হয়; এটা জীবনের এমন এক অকাট্য সত্য যা নানান জাতির নানান ভাষায় প্রবাদ বাক্য হয়ে টিকে আছে। ইংরেজিতে বলে ' As you sow, so you reap' । খুব সম্ভবত বাইবেলের Old Testament থেকে উদ্ভূত। ইসলাম ধর্মে একে বলে ‘আমলনামা’ আর হিন্দু ধর্মে বলে ‘কর্মফল’। কর্মফলে বিশ্বাস করতে গেলে, আস্তিক হতে হবে কিম্বা বেহেস্ত-দোজখে বিশ্বাস করতে হবে, এমনটির প্রয়োজন নাই। নিউটন এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে একটি পদার্থবিদ্যার ধর্ম (Law of Physics) হিসাবে দেখেছেন; তাই বলেছেন, Every action has an equal and opposite reaction '। ‘যেমন কর্ম তেমন ফল’এই প্রাকৃতিক আইন যেমন ব্যক্তির জন্য সত্য, তেমনই এটা গোষ্ঠি বা জ (আরো পড়ূন)

ওমর মুখতার ও উপনিবেশবিরোধী যুদ্ধ

“হয় জিতবো নয় মরবো” -ওমর মুখতার

“অবিচার নিপীড়িত মানুষকে নায়ক করে তোলে। প্রতিরোধের একজন আইকনিক নেতা হিসেবে লিবিয়ার জনগণ আজও স্মরণ রেখেছে ওমর-আল-মুখতারকে ( ১৮৬২-১৯৩১ ), যিনি তার জীবনের শেষ বিশ বছর নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন ইতালির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। লিবিয়াবাসীদের কাছে আল-মুখতার মৃত্যুর ছিয়াশি বছর পরেও, সমষ্টিগত চেতনায় জীবিত ; তিনি বেঁচে আছেন আমাদের মধ্যেও। শুধুমাত্র একজন প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবেই নয় বরং তার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব এবং তার ট্রেডমার্ক এর মতো চোখের সেই চিকন ফ্রেমের চশমার কারণেও” --ঠিক এভাবেই গত ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ওমর-আল-মুখতারে (আরো পড়ূন)

নিরাপদ সড়ক আন্দোলন: ঘটনাক্রম

নিরাপদ সড়কের দাবি কেন্দ্র করে বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থিদের আন্দোলন সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। এদের অধিকাংশই ছিল শিশু-কিশোর বয়েসি। কিন্তু আন্দোলনের মাত্রা বিস্তার ও শৃঙ্খলা সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। শিশু-কিশোর আন্দোলন আন্তর্জাতিক আগ্রহ ও বিস্ময় তৈরি করে। সরকার ও রাষ্ট্র এই আন্দোলনের মুখে নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখমুখি হয় যা এর আগে কোন সরকারকে মোকাবিলা করতে হয় নি। যথারীতি এই আন্দোলন দমন করবার জন্য সরকার দমন-পীড়নের পথ বেছে নেয়।

বাসের নীচে চাপা পড়ে শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুজন শিক্ষার্থির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে স্কুলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদ সড়কের দাবি গড়ে ওঠে। এবং তৎক্ষণাৎ তা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনে (আরো পড়ূন)

সাবা মাহমুদঃ ইসলাম প্রশ্ন ও পাশ্চাত্য মোকাবেলা

প্রাক কথা

৯/১১ পরবর্তী দুনিয়ায় সাধারণ ভাবে ধর্ম এবং বিশেষ ভাবে ইসলাম প্রশ্ন সামনে চলে আসার কারনে একাডেমিক জগতে ধর্ম, দর্শন, রাষ্ট্র ইত্যাদি নতুন করে পর্যালোচনার অধীন হচ্ছে আবার, বিশেষত এদের পারস্পরিক সম্পর্ক বিচার জরুরী হয়ে উঠেছে। এই তাগিদে নতুন উৎসাহে ইসলাম নিয়ে নতুন পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। ‘আধুনিকতা’, ‘প্রগতি’, ‘স্বাধীনতা’, ‘অধিকার’ ইত্যাদি ধারণা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে তার ছেদ ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে গিয়ে সেক্যুলার, উদারনৈতিক এবং প্রগতিশীল ধারার যে চিন্তা জারি আছে, সেটাও বাস্তব ও ব্যবহারিক প্রশ্নের কোন কার্যকর মীমাংসার প্রস্ (আরো পড়ূন)

মাহমুদুর রহমান ও ‘বাঙালি মুসলমান’

মাহমুদুর রহমানকে ভালবাসেন এমন মানুষের অভাব নাই। তেমনি, তাঁকে ঘোরতর অপছন্দ করেন এমন লোকও আছেন। এর মধ্য দিয়ে একটি বিভক্ত ও বিভাজিত সমাজের ছবি আমাদের সামনে হাজির  হয় যারা স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের নাগরিক হিশাবে নিজেদের সামষ্টিক স্বার্থের জায়গা থেকে কোন রাজনৈতিক প্রশ্নে বাস্তবোচিত অবস্থান নিতে অক্ষম। সমাজ ও রাজনীতিতে সক্রিয় যে কোন ব্যক্তি সম্পর্কে সমাজে নানান মূল্যায়ন থাকতেই পারে। কিন্তু মাহমুদুর রহমান যেভাবে গুণ্ডামি, হামলা, মামলা এবং অবিশ্বাস্য অবিচারের মুখোমুখি হয়েছেন তার তুলনা নাই। কুষ্টিয়ার আদালতে তিনি প্রকাশ্যে ক্যামেরার সামনেই পুলিশের উপস্থিতিতে গুণ্ডামির শিকার হয়েছেন, মারাত্মক জখম নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই ঘটনা, বলা বাহুল্ (আরো পড়ূন)

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নারীর সংগ্রাম

কিছু বিষয় আছে যা মেয়েদের খুব গভীরে আহত করে, যা মেয়ে না হলে বোঝা কঠিন।

সালেহা বেগম, কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানের মা। তিনি ঢাকায় ছুটে এসেছেন ছেলের ওপর আক্রমণ এবং তাকে রিমান্ডে নেয়া থেকে মুক্তি দিতে। ছেলের জীবন বাঁচাবার জন্যে কতখানি অসহায় হলে, হাত জোড় করে একজন মা বলতে পারেন, ‘আমার মণিকে তোমরা মাফ করে দাও। শুধু মুক্তি দাও। ও আর চাকরী চাবে না গো। ওকে ভিক্ষা দাও। আমার মণিকে আমি ঢাকায় আর রাখব না গো। গ্রামে নিয়ে চলে যাব।’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাত পেতে তিনি সন্তান ভিক্ষা চাইছেন। যে আন্দোলন সারা দেশের মানুষকে নাড়িয়ে দিয়েছে আজ সে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থির মায়ের ক্ষমা চাইবার ভাষা সব মায়ের মাথা নুইয়ে দিয়েছে। এই (আরো পড়ূন)

এবারের ঈদ

আজ ঈদ। ঈদ মোবারক।

বাংলাদেশের জনগণ বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী রেখে ঈদুল ফিতর পালন করছে। এ এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা। রাজনৈতিক সংবেদনা ও উপলব্ধির দিক থেকে অস্বস্তির।

আইন প্রণেতা ও আইন বাস্তবায়নকারীর মধ্যে যখন ফারাক লুপ্ত হয়, তখন আইন, অধিকার বা ন্যায় বিচারের তর্ক অর্থহীন। জনগণকে এই সহজ সত্যটুকু বোঝাবার কার্যকর কোন চেষ্টা বিএনপি করে নি। বাংলাদেশের বাস্তবতায় শুধু আইনী পদ্ধতিতে ন্যায়-অন্যায় মীমাংসার রাজনীতি আত্মঘাতী চিন্তা। যার পরিণতি খালেদা কেন, বাংলাদেশের বহু নাগরিক ভোগ করছেন। অথচ পাশাপাশি দরকার ছিল এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার সুস্পষ্ট রাজনীতি ও গণআন্দোলন।

দিল্লির মসনদে উপমহাদেশের ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজ শক্ত (আরো পড়ূন)

কবি ফররুখ আহমদের কি অপরাধ?

এই লেখাটি ফররুখ আহমদকে নিয়ে আহমদ ছফা লিখেছিলেন ১৯৭৩ সালে। সেই সময়ের 'গণকন্ঠ' পত্রিকায় সম্ভবত  ১৬ জুন তারিখে এটি  ছাপা হয়েছিল। এই লেখার মধ্যে আহমদ ছফার মানবিক দিকটি স্পষ্টতই ধরা পড়ে। ফররুখের কাব্য প্রতিভার শক্তি নিয়ে ছফার কোন দ্বিধা ছিল না। তবে ছফা বাংলাদেশে আরও অনেক ভাল মানুষের মতো ফররুখ আহমদকে 'ইসলামি রেঁনেসা'র কবির অধিক ভাবতে পারেন নি। উচ্চবর্ণের হিন্দুর হাতে সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বাঙালির যে নবজাগরণ ঘটেছিল শিল্প-সংস্কৃতির আধুনিকতা ও প্রগতিশীলতার মানদণ্ড তার দ্বারাই নির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বলাবাহুল্য ১৯৭৩ সালে সেই সাম্প্রদায়িক অচলায়তন আহমদ ছফার পক্ষেও ভাঙা সহজ ছিল না। তারপরও ফররুখ আহমদ সম্পর্কে ছফার এই সাহসী, স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন অ (আরো পড়ূন)

ঘাস

থাইল্যান্ডের রাজকুমারী মহাচক্রী সিরিধরন চট্টগ্রামে ঘাস রোপন করছেন, এই ছবিটি আমার মনে গভীর ভাবে দাগ কেটেছে। ঘাস রোপন করা যে একটি রাজকীয় কর্ম হতে পারে রাজকুমারির বিন্না ঘাস রোপন দিয়ে বুঝতে পারছি।  কিন্তু এই রাজকীয় বার্তা সবার কাছে এবং সর্বদিকে ঠিকমতো পৌঁছালো কিনা হলফ করে বলতে পারব না। আমার ভাল লাগছে।  প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করি বলে ঘাসের প্রতি আমার মমতা অতিশয় গভীর, রীতিমতো আধ্যাত্মিকতার স্তরের মায়া বলা যায়। তাই এখন তুচ্ছ ঘাস নিয়ে কিছু কথা বলার চেষ্টা করব।

ঘাস রোপন 'বিন্না ঘাস উন্নয়ন কেন্দ্র' উদ্বোধনের অংশ। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বিন্না ঘাস ব্যবহার করে পাহাড়ে ভূমিক্ষয় রোধ করা। চট্টগ্রামের টাইগারপাস এলাকায় বিন্না ঘাস উন্নয়ন প্র (আরো পড়ূন)

সব বাড়ে শ্রমিকের মজুরি বাড়ে না

গ্যাসের দাম বাড়ে, বিদ্যুতের দাম বাড়ে, বাড়ী ভাড়া বাড়ে, শুধু গার্মেন্ট শ্রমিকের মজুরী বাড়ে না। রানা প্লাজায় শ্রমিকদের জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছিল। যদি স্রেফ বেঁচে থাকা আর মজুরির তুলনা করা হয় তাহলে বলতে হয় গার্মেন্ট মালিকরা তিলে তিলে নিত্যদিনই শ্রমিকদের মারে। সে্টা কম ভয়াবহ নয়। রানা প্লাজার পাঁচ বচর পর্যালোচনা করতে এসে শ্রমিক নেতারা এই সময়ের গার্মেন্ট শ্রমিকদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু যে মজুরি সেটাই বারবার জোর দিয়ে বললেন।

বর্তমানে গার্মেন্ট শ্রমিকরা যে বেতন পায় বাড়ী ভাড়া তার চেয়েও বেশি। দু’বছর আগে শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন যে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা হলো ৫৩০০ টাকা। এই টাকা থেকে বাড়ি ভাড়া দিতে হচ্ছে চার হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে বা (আরো পড়ূন)

আফগানিস্তান: মাদ্রাসার হাফেজ ও শিশুকিশোর হত্যা

কিশোর হাফেজ হত্যার ক্ষরণ

আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশে মাদ্রাসার শহিদ কিশোর ছাত্রদের ছবি মন ভয়ংকর ভাবে বিষন্ন ও শোকার্ত করে। এই কিশোরদের অনেকে সবে মাত্র মাদ্রাসায় তিরিশ পারা কোরান হেফজ ব মুখস্থ করেছে। হাফেজ হবার স্বীকৃতি ও সনদ পত্র পাবার জন্য মাদ্রাসার ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় তারা জড়ো হয়েছিল। এই বাচ্চাদের মিলিটারি হেলিকপ্টার থেকে বোমা মেরে হত্যা করা হয়েছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো কোয়ালিশানের 'পরামর্শদাতা'দের সহায়তায় আফগান এয়ার ফোর্স হত্যা অভিযানগুলো পরিচালনা করে। আল জাজিরার কাছে একজন প্রত্যক্ষদর্শী হাজি গোলাম বলছেন, 'আমি ক্ষেতে কাজ করছিলাম, এমন সময় আমি হেলিকপ্টার ও জেট বিমানের ম (আরো পড়ূন)

মানুষ ও পিঁপড়া: প্রসঙ্গ পরিচয়

সরল জিজ্ঞাসা, গভীর বিষয়

পিঁপড়া সমাজবদ্ধ জীব। সামাজিক প্রাণী। পিঁপড়া বা পিপীলিকা ফর্মিসিডি (Formicidae) গোত্রের অন্তর্গত সামাজিক জীব। এদের ঘনিষ্ঠ প্রজাতি বোলতা ও মৌমাছি। সকলে একই বর্গ হাইমেনপ্‌টেরার (Hymenoptera) অন্তর্গত। পিঁপড়া, বোলতা বা মৌমাছি সবসময় দলে থাকে। দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা বা ওড়াওড়ি করে। তাদের মধ্যে কাজের সম্বন্ধ ও সহযোগিতাও আছে; নিজেরা পতঙ্গ না হলেও পিঁপড়াদের বোলতা ও মৌমাছির মতো পিঁপড়ার দললীয় জীবন যাপনের বৈশিষ্ট্য আমরা বুঝতে পারি। দলে থেকে খাদ্য সংগ্রহের জন্য কাজ না করলে এবং নিজেদের প্রজাতি উৎপাদনে তৎপর না থাকলে তারা প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারত না। দলে থাকা এবং কাজের (আরো পড়ূন)

তরুণ মার্কসের হেগেল 'ক্রিটিক'

হেগেলের রাষ্ট্রতত্ত্ব নিয়ে তরুন বয়সের মার্কসের পর্যালোচনামূলক রচনা (Kritik des Hegelschen Staatsrechts (§§ 261-313)) নানান ভাবে পড়া সম্ভব এবং তার গুরুত্বকে নানান দিক থেকে পর্যালোচনা করা যায়। এই লেখাটির দুটো ইংরেজি অনুবাদ সহজ লভ্য। একটি রদনি লিভিংস্টোনের অনুবাদ (Marx 1975)। লুসিও কোলেত্তির সম্পাদিত Early Writings'-এ অন্তর্ভূক্ত: Critique of Hegel' Doctrine of the State ((§§ 261-313)) । আরেকটি হচ্ছে, এনেট জোলিন ও জোসেফ ও'মালের অনুবাদ Critique of Hegel's Philosophy of Rights'; এই অনুবাদ সম্পাদনা করেছেন জোসেফ ও'মালে এবং তিনি একটি ভূমিকাও লিখেছেন (Marx, Critique of Hegel's 'Philosophy of Right'; tr. Annette Jolin & Jose (আরো পড়ূন)

সাম্রাজ্যবাদী পানীয় কোক-পেপসি

কোকাকোলা কোম্পানি নিয়ে এই লেখাটি পাক্ষিক চিন্তা পত্রিকার 'সাম্রাজ্যবাদঃ যুদ্ধ ও বাণিজ্য' সংখ্যায় (বছর ১৪, সংখ্যা ২; কার্তিক ১৪১৩/নভেম্বর) প্রকাশিত হয়েছিল। এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে চিন্তা অনলাইনে ২৬ মে ২০১০ সালে আমরা আরেকবার ছেপেছিলাম। সম্প্রতি ভাষার মাসে কোকাকোলার 'নিখোঁজ' বাংলা শব্দ প্রকল্প আমাদের আবার হুঁশে এনেছে। কর্পোরেট বাণিজ্যের সাংস্কৃতিক রাজনীতির বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করবার জন্য লেখাটি আবার পেশ করছি।

এই প্রসঙ্গে বলা জরুরি যে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ও আদর্শিক রাজনৈতিক লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বহুজাতিক কর্পোরেট বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো গভীর ভাবে জড়িত। আমরা আগেও অনেকবার বলেছি, পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার কোন সংস্কৃতি নাই, পুঁজির আছে শুধু এডভারটাইজ (আরো পড়ূন)

মোদী, আসাম ও মমতা ব্যানার্জি

'বঙ্গাল খেদা' থেকে 'মুসলমান বিতাড়ন'

ন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন অব সিটিজেন ১৯৫১ আসামে একটি আইনী হাতিয়ার; যার দ্বারা কারা আসামের নাগরিক তা নির্ণয় করা হচ্ছে। নাগরিকপঞ্জির ভিত্তিতে কে আসামে থাকত পারবে আর কে পারবে না সেটাই নির্ণয় করা হচ্ছে। যারা নিবন্ধিত হতে ব্যর্থ হবে তাদের বিতাড়ন করা হবে। এই নিবন্ধন শুধু আসামেই, অন্য কোন রাজ্যে নয়। রাষ্ট্রের আইন মানুষের জন্মগত অধিকারও হরণ করতে পারে এবং অনায়াসে লক্ষ লক্ষ লোককে 'রাষ্ট্রহীন' বানিয়ে আইনী সুরক্ষা ও অধিকারের বাইরে ছুঁড়ে ফেলতে পারে। আসামের আইনী পরীক্ষা জাতিবাদ ও আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার ব্যারাম, পুরা দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তাপ ছড়িয়ে এই অসুখ নিজেকে (আরো পড়ূন)

কলা আর ছাগল, ধর্ম নয়: গ্রামে জীবিকার দ্বন্দ্ব

পদ্মার চর সংলগ্ন কল্যাণপুর গ্রামে গরিব নারীদের প্রধান আয়ের উৎস ছাগল পালন। এই গ্রামে ২৫ থেকে ৩০ টি পরিবার ছাগল পালন করেই সংসার চালান। এদের জায়গা জমি নেই। এই সব পরিবারের পুরুষরা ইটের ভাটায় অথবা ভ্যান চালানোর কাজ করে। গ্রামটি কুষ্টিয়া জেলায় কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নে অবস্থিত। ইতিমধ্যে গ্রামটি মিডিয়াতে পরিচিত হয়ে গেছে ‘ফসলের ক্ষেতে নারীদের যাওয়া নিষেধ’ এই শিরোনামে। এদিকে এই গ্রামের কৃষকের প্রধান ফসল কলার আবাদ। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কৃষকেরা কলার আবাদ করে। বাণিজ্যিক চাষে কৃষকদের কলা চাষে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করতে হয়। কাজেই কলার বাগানে কোন প্রকার সমস্যা হলে তাদের বড় লোকসান গুনতে হয়।

ছাগল পালনের জন্য আলাদা কোন তৈরী খাদ্যের জন্য (আরো পড়ূন)

রাজনৈতিক রূহানিয়াত ও মিশেল ফুকো

‘রাজনৈতিক রূহানিয়াত’ (spiritualite politique) ধারণাটি ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো (১৯২৬-১৯৮৪) ব্যবহার করেছেন। মার্কসের ব্যবহারিক সম্বন্ধ চর্চার পরিপ্রেক্ষিতে ফুকোর 'রাজনৈতিক রূহানিয়াত' নিয়ে এখানে আলোচনা করব।

ইরানে গত শতাব্দির সত্তর দশকের শেষে বৈপ্লবিক উত্থান পতনের সময় ফুকো ১৯৭৮ সালে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে একবার এবং দ্বিতীয়বার নভেম্বরের শুরুতে ইরানে গিয়েছিলেন। ইটালির সংবাদপত্র ‘করিয়েলে দেরা সেরা’ (Corriere Derra Sera) আন্তর্জাতিক ঘটনা নিয়ে ফুকোকে লিখবার অনুরোধ করায় ফুকো লিখতে রাজি হন। সেই প্রতিশ্রুতির কারণে তিনি ইরানে যান। ইটালির সংবাদপত্রের সম্পাদক অবশ্য খুবই উৎসাহী ছিলেন। কিন্তু এর আগে ইরানের শাহের শাসনের বি (আরো পড়ূন)

ব্যবহারিক সম্বন্ধ ও রূহানিয়াত

এর আগের আলোচনায় আমরা দেখিয়েছি মানুষ ও জগতের সম্বন্ধ বিচারই মার্কসের দার্শনিক পর্যালোচনার প্রধান ভরকেন্দ্র। বিমূর্ত দর্শনের পরিমণ্ডল বাদ দিয়ে অর্থশাস্ত্রের পর্যালোচনা দার্শনিক জিজ্ঞাসারই অনিবার্য পরিণতি। অর্থশাস্ত্রীয় বিচার মানুষ ও জগতের সম্বন্ধ বিচার, সেকারণে মার্কসের অর্থশাস্ত্র দর্শনেরই বিষয়।

দুটো শব্দ সাধারণত অদল বদল করে প্রায় একই অর্থে অনেক সময় আমরা ব্যবহার করি: জগত এবং প্রকৃতি। যেন গোলমাল না হয় তার জন্য বলে রাখা দরকার মানুষের সঙ্গে জগতের সম্বন্ধ কথাটাকেই আমরা আরও সংকীর্ণ অর্থে সাধারনত বলি, মানুষ ও প্রকৃতির সম্বন্ধ বিচার। যা কিছুই মানুষের বাইরে মানুষের ইন্দ্রিয়, বুদ্ধি, কল্পনা বা ইচ্ছা-অভিপ্রায়ের বিষয় হিসাবে মানুষ হাজির দেখতে পা (আরো পড়ূন)

অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক চাবি: ‘ব্যবহারিক সম্বন্ধ’

মার্কস পাঠের ক্ষেত্রে এই সাধারণ ভুলটা মার্কস অনুসারী কিম্বা মার্কস বিরোধী প্রায় সকলেই করে থাকেন যে মার্কস দর্শন থেকে প্রস্থান করেছেন। বাংলাদেশে এর অতিশয় স্থূল মানেও আছে। সেটা অনেকটা এরকম যে মার্কস বলেছেন, চিন্তাভাবনা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ যা করবার সেটা এ যাবতকাল দার্শনিকরা করেছেন। দর্শনচর্চা বা তত্ত্ব গিরি করা বিপ্লবীর কাজ নয়। এখন কাজ হচ্ছে দর্শন বা চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে শুধু বিপ্লব করা। মার্কস সম্পর্কে এই ধারণা যে একদমই ভুল সেটাই আমরা এখানে আলোচনা করব।

এরপর মার্কসের অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারণার সঙ্গে আমরা পরিচিত হব। সেটা হচ্ছে মানুষ ও জগতের ‘ইন্দ্রিয়পরায়ন মানবিক ব্যবহারিক চর্চা’ (practical, human sensuous ativity) বা সংক্ষ (আরো পড়ূন)

‘জর্মান ভাবাদর্শ’: পাঠ প্রস্তুতি

মার্কস আর এঙ্গেলস-এর তরুণ বয়সের যৌথ রচনার খসড়া ‘জর্মান ভাবাদর্শ’। তাঁদের জীবদ্দশায় এই খসড়া ছাপা হয় নি। কমিউনিজম সম্পর্কে কমিউনিস্ট পার্টির সরকারি ভাষ্যের সঙ্গে এর মর্ম পুরাপুরি মেলানো কঠিন। ফলে ছাপা হবার পরে এর যে সারকথা ও ব্যাখ্যা সরকারি ভাবে হাজির করা হয়েছিলো তার সীমাবদ্ধতা ধরা পড়তে দেরি হয় নি। আমরা অধিকাংশই জানিনা যে ‘মার্কসবাদ’ নামে যা আমাদের কাছে পরিচিত তার নির্ধারক  ভাষা,পরিভাষা বা বর্গ-- যেমন, ‘ঐতিহাসিক বস্তুবাদ’, ‘দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ’, ‘ইতিহাসের বস্তুবাদী ব্যাখ্যা’, ইত্যাদি মার্কসের নয়, এঙ্গেলসের। মার্কসকে এঙ্গেলস যেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন এবং কমিউনিস্ট পার্টি যে ভাষ্য (আরো পড়ূন)

মার্কস-এঙ্গেলস বনাম মার্কস এবং এঙ্গেলস

আমরা মার্কস ও এঙ্গেলসের নাম এক নিঃশ্বাসে নিতে অভ্যস্ত। অনুমান করি তাঁদের চিন্তা অবিভাজ্য। কিন্তু ব্যক্তি হিসাবে তাঁরা আলাদা এবং তাঁদের চিন্তাও গড়ে উঠেছে ভিন্ন প্রক্রিয়ায়। এই ভিন্নতার কথা মনে রেখে উভয়কে তাঁদের নিজ নিজ চিন্তার জায়গা থেকে বোঝা দরকার। দুজনে নামের মাঝখানে হাইফেন দিয়ে যুক্ত করে এক না ভবে বরং তাঁদের স্বতন্ত্র সত্তাকে 'এবং' দিয়ে যুক্ত রাখাই যুক্তি সঙ্গত সেটাই এই লেখায় ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।

আমাদের আগ্রহ বিশেষ ভাবে মার্কস সম্পর্কে। পাশ্চাত্য দর্শনের ভেতর থেকে গড়ে ওঠা মার্কসের দার্শনিক প্রকল্প নতুন ভাবে পর্যালোচনা এবং একালে তার উপযোগিতা নির্ণয় আমাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্যে কিছু বদ্ধমূল অনুমানকে প্রশ্ন করা জরুরী হয়ে (আরো পড়ূন)

রুশ বিপ্লবের একশ বছর

রুশ বিপ্লবের একশ বছর পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বামপন্থিরা বিপ্লবের শতবর্ষ পালনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই উদ্যোগ অবশ্যই দরকারি, তবে তখনই অর্থপূর্ণ হবে যদি রুশ বিপ্লব নিয়ে ‘উচ্ছ্বসিত’ না হয়ে একে বাস্তব ইতিহাস এবং বৈপ্লবিক রাজনীতি পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহন করা হয়। বাংলাদেশে বাস্তব পরিস্থিতি রাজনীতি নিয়ে নতুন ভাবে ভাববার দায় তৈরি করেছে। এই দায় আমাদের এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবে না।

উদযাপনের জন্য সময়টা খুবই উপযোগী। ইউরোপে ১৯৯০ সালে বার্লিনের দেয়াল ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে; সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয় ১৯৯১ সালে; সমাজতন্ত্র ও পুঁজিতন্ত্র নামক দুই শিবিরে বিভক্ত দুনিয়া এবং উভয়ের মধ্যে চলতে থাকা ‘স্নায়ু যুদ্ধ’ নব্বইয়ে শেষ হয়, (আরো পড়ূন)

রুশ বিপ্লবে নারী

“নারী শ্রমিকরা বিপ্লবের সময় দারুন ভূমিকা রেখেছে। তারা না হলে আমরা জয়ী হতে পারতাম না”
-- ১৯২০ সালে ক্লারা জেটকিনের সাথে আলাপকালে লেনিন

রুশ বিপ্লবের শত বার্ষিকী পালন হচ্ছে। এই বিপ্লবের সঙ্গে আমাদের অনেক আবেগ, কল্পনা ও আশা জড়িয়ে ছিল। আমরা বিপ্লব দেখি নি, তার গল্প শুনে বড় হয়েছি। স্বপ্ন দেখেছি আমরাও পুরানা সমাজ ভেঙে নতুন ধরনের সমাজ বানাবো, যেখানে পুরুষতন্ত্র আমাদের টুঁটি টিপে ধরে রাখবে না। সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে পড়ার পর সেই কল্পনার জগতও ভেঙে পড়েছে। আশাভঙ্গ গত শতাব্দির সবচেয়ে বেদনাজনক দিক। আজ যে বিশ্বব্যবস্থার মধ্যে আমরা খাবি খাচ্ছি তা যতোটা আমাদের কাবু করে তার চ (আরো পড়ূন)

লেনিনের স্বাস্থ্য ভাবনা থেকে মুক্তিযুদ্ধের ফিল্ড হাসপাতাল

ঈশ্বর বাস করেন বহু উঁচুতে স্বর্গে
জার থাকেন বহুদূরে মস্কোতে’
-- বিপ্লব-পূর্ব রাশিয়ার কৃষকদের লোকগীতি

পূর্বকথা

বহু মনীষী পৃথিবীকে স্বর্গে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেছেন যুগে যুগে। লেনিন নামে খ্যাত ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ (Vladimir Ilyich Ulyanov: ১৮৭০ – ১৯২৪) তাদের অন্যতম।

পুঁজিবাদী বিশ্বে ১৮৯৫ একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। এই বছর বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও কবি সাহিত্যিকদের সম্মানিত করার জন্য আলফ্রেড নোবেল পুরষ্কার তহবিল সৃষ্টি করেছিলেন । এই একই বছর রাশিয়ান ফার্মেসী সোসাইটি স্থাপিত হয়।

১৮৯৫ সন পৃথিবীর পরিবর্তনের সূচনার বছর। সেন্ট পিটার্ (আরো পড়ূন)

'দুর্ঘটনা' নয়, নিয়মিত মৃত্যু

দুর্ঘটনা এখন ‘নিয়মিত’ ঘটনা

পাহাড় ধসের কারনে মানুষ মরছে। এটা এখন আর দুর্ঘটনা নয়, নিয়মিত ঘটনা। বর্ষা এলেই কোন কোন উপজেলায় পাহাড় ধসে মানুষ জ্যান্ত কবর হয়ে যাচ্ছে। এবার একটু আগাম ও টানা বর্ষণ নামতে না নামতেই চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে ১৫০ জনের বেশী মানুষ মরেছে বলে কিছু পত্রিকা দাবি করেছে। দৈনিক যুগান্তরের ১৪ জুনের সংবাদ বলছে, ‘পাহাড় ধসে নিহত বেড়ে ১৪১’; একই তারিখে দৈনিক প্রথম আলোর হিসাব ১২৬ (‘পাহাড় ধসে নিহত ১২৬’)। এর আগে ২০০৭ সালে ১২৭ জন মারা যায়। এবার মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লো। গত ১০ বছরে (২০০৭-১৬) ২০১ জন নিহত হয় প্রথম আলো ১৪.০৬. ১৭) (আরো পড়ূন)

‘বিপ্লব’

‘বিপ্লব’ নিয়ে কেন?

‘বিপ্লব’, ‘বৈপ্লবিক’, ‘বৈপ্লবিকতা’ ইত্যাদি শব্দ হামেশা ব্যবহারের ফলে শব্দগুলো ক্লিশে হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ব্যবহারে ব্যবহারে জীর্ণ; অনেকটা ছেঁড়া টাকার মতো। বিধিবদ্ধ, প্রচলিত বা আগাম কোন নিয়ম না মেনে পুরানা অথচ বিদ্যমান অবস্থা বদলে দেওয়াকে বাংলায় আমরা সাধারণত ‘বিপ্লব’ বলে থাকি।

বিপ্লব নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক রূপান্তর নয়। সে কারণে বিপ্লবের সঙ্গে আমরা সশস্ত্রতা বাসহিংসতার যোগ আছে অনুমান করি। বিপ্লব মানে সশস্ত্র বা সহিংস কায়দায় রাজনৈতিক ক্ষমতায় রূপান্তর ঘটানো।

কিন্তু এর মানে আমাদের আছে পুরাপুরি স (আরো পড়ূন)

‘বুর্জোয়া’

 আমরা ‘বুর্জোয়া’বুঝি কি?

বামপন্থায়, তবে বিশেষ ভাবে কমিউনিস্ট আন্দোলনে, একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা হচ্ছে ‘বুর্জোয়া’। শ্রেণি-রাজনীতি যারা করেন তাদের কাছে এই শব্দটির গুরুত্ব অনস্বীকার্য। আমরা তরুণ বয়সে যখন কমিউনিস্ট রাজনীতিতে দীক্ষা নেই তখন শব্দটার প্রতি আমাদের আকর্ষণ ছিল প্রবল। শব্দটি মনের মধ্যে প্রচণ্ড শত্রু শত্রু ভাব জাগাতো কারন এই শ্রেণির বিরুদ্ধেই শ্রমিক শ্রেণি বা কমিউনিস্ট ভাষায় ‘প্রলিতারিয়েত’কে লড়ে বিপ্লব করতে হবে। এ বছর ২০১৭ সালে রুশ বিপ্লবের একশত বছর উদযাপিত হচ্ছে। সেই উপলক্ষে আমরা বিশেষ ভাবে &lsq (আরো পড়ূন)

‘নো ট্যাক্স উইথাউট রিপ্রেজেন্টেশান’

ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়বেন না
বাজেটের পরিসংখ্যান নিয়ে তর্কাতর্কি পরে করুন। গণিত পরে। ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেবেন না। সহজ করে ভাবুন, যাতে সহজ ভাবে ট্যাক্স ব্যাপারটা কী এবং অর্থমন্ত্রী আবুল আল আব্দুল মোহিত চাইলেই জনগণ রাষ্ট্রকে দিতে বাধ্য কিনা বুঝতে পারেন। রাষ্ট্র আপনার কাছ থেকে নানান ধরনের খাজনা নিচ্ছে। কেন নিচ্ছে? কারন রাষ্ট্রের খর্চাখরচ আছে। যেমন, পুলিশ-র‍্যাব-সেনাবাহিনী-আমলাদের বেতন, জাতীয় সংসদের সদস্যদের বেতন, রাস্তাঘাট তৈরিতে খরচ, বড় বড় প্রকল্পের জন্য খরচ, ইত্যাদি । তো ঠিক আছে। এটা তো মোগল আমলে রাজরাজড়াও নিতো, তাই না? ইংরেজ আমলে নিতো ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি। তারপর নিতেন বিলাতের (আরো পড়ূন)

কমরেড ও প্রগতিশীল ভাইবোনেরা, দৌড়ান!!

এক জায়গা থেকে সরিয়ে শাড়ি পরা দেবি থেমিসকে আবারও আদালত প্রাঙ্গনে পুনর্স্থাপন করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, ‘গ্রিক দেবী থেমিসের এই প্রতীককে চিরতরে পরিত্যাগ করতে হবে”। কারন হিসাবে বলেছেন, শাড়ী পরা দেবি থেমিসকে ‘জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে’ স্থাপন করা হয়েছে। আদালত প্রাঙ্গনে শাড়ি পরা থেমিসের মূর্তি কোন প্রত্নতাত্ত্বিক বা ঐতিহাসিক ভাস্কর্য নয় যে একে রক্ষা করবার কোন প্রত্নতাত্ত্বিক কিম্বা ঐতিহাসিক যুক্তি আছে। আদালত প্রাঙ্গনে এই প্রকার কোন দেবিমূর্তি বসাবার কোন ইচ্ছা বাংলাদেশের জনগণ ব্যক্ত করে নি। জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের বিরোধী এই দেবিকে বাংলাদেশের কোথাও স্থান দেয়া যাবে না। ‘গণমানুষের সকল (আরো পড়ূন)

প্রথম আলোর রাজনীতির একটি ব্যবচ্ছেদ

'গণতন্ত্রমনস্ক অনুভূতিসম্পন্ন' উপলব্ধি মাপার ডাক্তার!

প্রথম আলোর মিজানুর রহমান খান বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া “গণতন্ত্রমনস্ক অনুভূতিপ্রসূত” ব্যক্তি কিনা সেই সন্দেহ রেখেছেন। ‘গণতন্ত্রমনস্ক অনুভূতিপ্রসূত’! কী দুর্দান্ত ভাষা! আর সেই বিশেষ ‘অনুভুতি’ মাপার ডাক্তার হয়েছেন মিজান। বাহ! বাহ! এটা কি রাজনীতি পর্যালোচনার ভাষা নাকি যাকে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা জাতীয় মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ? অথবা ‘ব্যাটলিং বেগামস’ এবং ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার ভিত্তিতে প্রথম-আলো-ডেইলি স্টার গ্রুপের এক এগারোর রাজনীতির নতুন ড্রিল? গত ১১ মে ২০১৭ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো মিজানুর রহমান খানের (আরো পড়ূন)

ঐতিহাসিক ‘সন্ধি’!

কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে শেখ হাসিনার ‘সন্ধি’ বাংলাদেশের রাজনীতির অনেক হিসাব নিকাশ নিমেষে বদলে দিয়েছে। সমাজে বিভিন্ন শক্তির ভারসাম্যের ক্ষেত্রে এই ‘সন্ধি’ গুণগত রূপান্তরের ইঙ্গিত। চরম ইসলাম বিদ্বেষী ‘নাস্তিক’, সেকুলার বা ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীরা আওয়ামি লীগের ঘাড়ে বন্দুক রেখে এই দেশে যেভাবে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা চর্চা করছিল  তাদের উত্তাপ কতোটা কমবে এটা আগাম আন্দাজ করা মুশকিল। কারন এদের শক্তির ভিত্তি বাংলাদেশের জনগণ নয়, বরং দিল্লী ও সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তি। এই 'সন্ধি'তে শেখ হাসিনার হাতে গড়ে ওঠা ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার কোন পরিবর্তন হবে না। দিল্লির কাছ থেকে তিস্তার পানি (আরো পড়ূন)

কঠিন সত্য হোল চুক্তির বাস্তবতা নেই

‘সাবমেরিন কেনা’ ব্যাপারটা আমাদের মিডিয়ায় আস্তে আস্তে যত পেছনে চলে যাচ্ছে, ‘ডিফেন্স প্যাক্ট’ ব্যাপারটা ততই ভাসুরের নাম নেয়ার মতো আকার-ইঙ্গিত হয়ে থাকছে না, ক্রমশ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।

এই বিচারে পয়লা এপ্রিল ছিল ‘ডিফেন্স প্যাক্ট’-এর পক্ষে বড় ও প্রকাশ্য উচ্চারণের দিন। সংবাদ সংস্থা বাসস জানাচ্ছে, সেদিন ‘ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (আইক্ল্যাডস) আয়োজনে রাজধানীতে গোলটেবিল বৈঠক হয়েছে। সেখানে আলোচনার শুরুতে ধারণাপত্র হাজির করেন সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনার (আরো পড়ূন)

মিডিয়াদস্যুতা

গত ২ মার্চ রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় মোটামুটি বড় একটা গণ্ডগোল হয়ে গেল। প্রথমে ঘটনা তুচ্ছই ছিল। গাড়ি পার্কিং করা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় (১ মার্চ দিবাগত রাতে) ওই এলাকার এক নিরাপত্তারক্ষী ও এক ছাত্রের মধ্যে। এর জের ধরে ছাত্রটিকে পিটিয়ে আহত করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বিভিন্ন পত্রিকার খবর অনুযায়ী, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র শাহরিয়ার হাসনাত তপুকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছাত্রদের এবং স্থানীয় অনেকের অভিযোগ হচ্ছে, ওখানকার নিরাপত্তরক্ষীরা প্রায়ই বাড়াবাড়ি করে থাকেন। কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। এ নিয়ে ওই এলাকায় বাস করা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের মধ্যে একটা ক্ষোভ ছিল । আগের ক্ষোভের সাথে সহপাঠিকে পিটিয়ে আহত কর (আরো পড়ূন)

সীমান্ত হত্যাঃ রাষ্ট্রের দায়

প্রেক্ষাপট

ভারত এবং মিয়ানমার বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আঞ্চলিক বৃহৎ শক্তি ভারতের সঙ্গেই বাংলাদশের প্রধান সীমান্ত যার দৈর্ঘ ৪০০০ কিলোমিটারের অধিক। এর মধ্যে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মেঘালয় এবং পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের যথাক্রমে ২৬২, ৮৫৬, ১৮০, ৪৪৩ এবং ২২১৭ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যবর্তী সীমান্তের দৈর্ঘ বিশ্বে পঞ্চম দীর্ঘতম। অপরদিকে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে। দুই দেশের মধ্যকার স্থলসীমান্তের দৈর্ঘ ২০৮ কিলোমিটার। অবশিষ্ট ৬৪ কিলোমিটার সীমান্ত নাফ নদী বরাবর দুই দেশকে পৃথক করেছে।

সীমান্তে পাহারা দেয়ার (আরো পড়ূন)

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বহুজাতিক কর্পোরেশান

মার্কিন নির্বাচনী ব্যবস্থার নিয়মেই ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে বিজয় লাভ করেছেন। তিনি কোন কারচুপি করেন নি। গণতান্ত্রিক ভাবেই, এমনকি বিরূপ গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছেন। বলা হচ্ছে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে যোগ্য ব্যক্তি নন। এমনকি তাকে পাগল প্রমাণ করবারও চেষ্টা চলছে। কয়েকজন সাইকোলজিস্টের বরাতে বলা হয়েছে তাঁর আচরণের মধ্য দিয়ে নাকি প্রমাণিত হচ্ছে তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ। এগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির আভ্যন্তরীণ খেয়োখেয়ির গল্প। দিল্লি কা লাড্ডু। আপনি খেলে পস্তাবেন, না খেলে মজা লস করবেন।

আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নই, এবং আমরা মার্কিন নাগরিকও নই। মার্কিন দেশের রাজনীতির আভ্যন্তরীণ খেয়োখেয়ির প্রতি নজর রাখ (আরো পড়ূন)

রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বনাম ব্যক্তির প্রতিরোধ

কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাবার পর মাহমুদুর রহমান কথা বললেন।

মঙ্গলবার ( ৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে মাহমুদুর রহমান প্রথম সংবাদ সম্মেলন করলেন। দীর্ঘকাল ক্ষমতাসীনদের অন্যায় নির্যাতনের শিকার দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের কথা শুনতে সাংবাদিকরা আগ্রহী ছিলেন। তাঁর কথা কতোটা সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করবে বা করলেও অবিকৃত ভাবে করবে কিনা সে সম্পর্কে মাহমুদুর রহমান নিজেও সন্দিহান ছিলেন। তবে তিনি কী বলতে চান সাংবাদিকদের তা জানার আগ্রহ ছিলো। গণমাধ্যমের বর্তমান ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর কথা বিশেষ প্রচারিত না হওয়াই স্বাভাবিক। তবে উপস্থিত পেশাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে তরুণ সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ মনে (আরো পড়ূন)

সার্চ কমিটি ও ‘সুশীল’ এর সংজ্ঞা

বলা হচ্ছে, ২০১৯ সালে জাতীয় নির্বাচন হবে। নিয়ম অনুযায়ী তেমনটাই হওয়ার কথা। সে উপলক্ষে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের দাবি আছে সর্ব মহলে। নির্বাচনকে ঘিরে, অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আরো নানা দাবি আছে বিভিন্ন পক্ষের। নিরপেক্ষ কমিশন গঠন তার অন্যতম। এ উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ডিসেম্বর মাসজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করেছেন। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ মোট ৩১টি দল তাতে অংশ নেয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নানা দল নিজেদের মতো করে নানা দাবি তার কাছেতুলে ধরে ।

এরপর গত ২৫ জানুয়ারি কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি একটি সার্চ কমিটি করে দেন। অতীতেও ইসি গঠনে এমন সার্চ কমিটি হয়েছে। যেমনটি হয়েছিল ২০১২ সালেও। বিচারপতি সৈয়দ মাহ (আরো পড়ূন)

বাঙালিত্ব ও হিন্দুত্ববাদ: ইতিহাসের ক্ষত ও তার মীমাংসা

[গত ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কবি রওশন আরা মুক্তা এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন। ‘সাম্প্রতিক দেশকাল’-এর জন্য। 'বাঙালি জাতিবোধ ও চেতনার মধ্যে এখনো উচ্চবর্ণের হিন্দুর ধ্যানধারণাই রয়ে গিয়েছে' -- এই শিরোনামে সংক্ষেপে ছাপাও হয়েছিল। এখন পুরাটা অল্পকিছু সংশোধন ও পরিমার্জন করে সাক্ষাৎকারটি আবার এখানে পেশ করা হোল।]

কেমন আছেন? বছর ঘুরে আবার শুরু হলো অমর একুশে বইমেলা, জাতীয় জীবনে এই মেলার তাৎপর্য কী বলে মনে হয় আপনার?

জাতি হিসেবে আমরা কোনো ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী নই, ফলে অমর একুশে বইম (আরো পড়ূন)

রামপাল বন্ধ হোক, কিন্তু রূপপুর? অথবা শেখ হাসিনা আল গোর বিতর্ক

ধরুন, আপনি জানেন আপনি মন্দ কাজ করছেন। তখন কি আপনি ধর্মের কাহিনী শুনবেন? ভাল কাজে স্বর্গবাস, মন্দ কাজে দোজখ – এই সকল কেচ্ছা শুনে আপনার কি লাভ? আপনি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করবেন তো করবেনই, তো এতে বাঘ মরল কি গণ্ডার পুড়ল – আপনি কি শুনবেন? না, শুনবেন না।

দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে ক্লাইমেট চেইঞ্জের ‘পাদ্রি’ আল গোর শেখ হাসিনাকে ধর্মকথা শোনাতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনা শুনলেন না। মুখের ওপর বলে দিলেন, ‘আমি বুঝতে পারি না কয়লা বিদ্যুত প্রকল্প নিয়ে কেন মানুষ কথা বলে ... আমার মনে হয় যারা রামপালে বিরোধিতা করছেন তাদের মানুষের প্রতি দরদ নাই, বরং তারা সুন্দরবন ও রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়েই বেশী উদ্বিগ্ন’। ম (আরো পড়ূন)

পাঠ্যবই বিতর্কঃ সকলের কথা শুনতে হবে

শিক্ষা আইন, শিক্ষা নীতি ও পাঠ্যবই নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত ভাবে। পুরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে মাথায় রেখে সেটা হচ্ছে না। সেটা আশাও করি না। কিন্তু এখন দেখছি জাতিবাদি ও ধর্ম নিরপেক্ষ ওয়ালারা চরম গোস্বা করেছে। কেন? কারন সরকার নাকি হেফাজতের দাবি মেনে নিয়েছে। শিক্ষা কোন ব্যাপার না, পাঠ্যবই সম্পর্কে হেফাজতের আপত্তি সরকার মানলো কেন এই হোল তর্ক। টুপিপরা কোর্তাপরা এইসব বর্বর অশিক্ষিত পশ্চাতপদ মানুষ বুঝি মঙ্গলগ্রহ থেকে এসেছে, তারা এই দেশের কেউ না। এদের ছেলেমেয়ে বালবাচ্চা নাই, শিক্ষা নিয়ে এদের কোন মাথাব্যথা নাই। তো এই টুপিওয়ালাদের আপত্তি শেখ হাসিনা শেষমেষ মেনে নিল? হায় হায়। জাতিবাদী ও সেকুলার হাহাকারে চতুর্দিক দীর্ণবিদীর্ণ হয়ে যাচ্ছে!

(আরো পড়ূন)

নিজের বেলায় দইয়ের হাঁড়ি, পরের বেলায় মাথায় বাড়ি!

তর্কটা ফেইসবুকের, কিন্তু তর্কটা গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবে ফেইসবুকে তর্কটা চলছে সেখান থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি না। তবে তর্কের মর্মটা পেশ করছি।

ধরুন আপনি দাবি করছেন আপনি মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন। ফাইন। তার মানে সেটা শুধু আপনার মতের স্বাধীনতা না, সকলের মত প্রকাশের স্বাধীনতা। আপনি যে মতের সমর্থক শুধু সেই মতের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করলে তো হবে না, আপনাকে ভিন্ন বা বিরোধী মতের স্বাধীনতাতেও বিশ্বাস করতে হবে। যে মতের আপনি বিরোধী সেই মতের ধারকরাও তাদের মত প্রকাশ ও প্রচার করতে পারুক সেটাও আপনাকে চাইতে হবে এবং তাদের মত প্রকাশ ও প্রচারের অধিকার আপনাকে মানতে হবে। আফটার অল, সকলের মত প্রকাশ ও প্রচারের স্বাধীনতাতে আপনি বিশ্বাস করেন। তাই না (আরো পড়ূন)

ঈসায়ী নববর্ষ ও বাংলাদেশ

আওয়ার ইয়ার অব দ্য লর্ড। প্রভুর বছর। ANNO DOMINI (AD) | AD বা আফটার ডেথ : যিশুর মৃত্যুর পরের বছর; BC বা Before Christ, বা যিশুখ্রিষ্টের জন্মের আগে ইত্যাদি। প্রভু যিশুর জন্মকে কেন্দ্র করে বছরের হিসাব রাখা এবং খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডারের হিসাব অনুযায়ী বছর গণনার নিয়মে আরেকটি খ্রিষ্টীয় বছর শেষ হতে চলেছে। সবাইকে -- বিশেষত আমার খ্রিস্টান বন্ধুদের নববর্ষের শুভেচ্ছা।

নতুন খ্রিষ্টীয় বছরে নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্য রোমানদের কাছ থেকে পাওয়া। রোমান ঈশ্বর জানুসকে (Janus) নিবেদন করা খাওয়া-দাওয়ার উৎসব থেকে এই চলের শুরু। জানুসকে রোমানরা কল্পনা করেছে দুই দিকে তাকিয়ে থাকা মুখ হিসেবে। এক মুখ তাকিয়ে আছে অতীতে, আরেক মুখ ভবিষ্যতের দিকে।

ধর্ম, ঐতিহ্য কিম্বা (আরো পড়ূন)

৩. গণতন্ত্র ও শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পর্ক

নাগরিক অধিকার ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা

শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ গণতান্ত্রিক আদর্শ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র সংক্রান্ত ধারণার বিরোধী। এ দিকটি বাংলাদেশে খুবই অস্পষ্ট। যার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ কেন চিন্তা, বিবেক ও মত প্রকাশের বিরোধী, অতএব গণবিরোধী ও ফ্যাসিস্ট, সেটা আমরা সহজে বুঝতে পারি না।  অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থা নানা ভাবে শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করে বা করবার চেষ্টা করে: যেমন ‘একই পদ্ধতি’র শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন, শিক্ষার কারিকুলাম, কিম্বা শিক্ষার্থীরা কি পড়বে বা না পড়বে তা নিয়ন্ত্রণ, পাঠ্য বিষয় নির্ধারণ, ইত (আরো পড়ূন)

২. গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক

কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা: প্রপাগান্ডা, অনুমান ও ধারণা

সিস্টার্স অব দ্য হোলি নেইমস অব জেসাস এন্ড মেরি। কেন নামটি মনে পড়ল তার আগে আরও কিছু কথা বলা দরকার।

শিক্ষা আইন ও শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে কওমি মাদ্রাসার আলেম-ওলেমাদের লড়াই-সংগ্রাম গুরুত্ব না পাবার পেছনে কিছু অনুমান কাজ করে থাকতে পারে। যেমন, ১. মওলানা-মৌলবিরা ‘অনাধুনিক’ ও চিন্তাচেতনায় ‘পশ্চাতপদ’, অতএব তাদের কথাবার্তা তৎপরতাকে গুরুত্ব দেবার কিছু নাই, কওমি আলেম-ওলেমাদের খবর প্রচার না করাই ঠিক কাজ; ২. মাদ্রাসা জঙ্গী তৈরির কারখানা, কওমি মাদ্রাসার খবরাখবরের গুরুত্ব দেওয়ার অর্থ জঙ্গীদের সম (আরো পড়ূন)

১.গণতন্ত্র ও শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পর্ক

ধর্ম, ধর্ম চর্চা ও ধর্ম প্রচারের স্বাধীনতা

সিস্টার্স অব দ্য হোলি নেইমস অফ জেসাস এন্ড মেরি। শিক্ষা ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে লিখতে গিয়ে নামটি মনে পড়ল।

ক্ষমতাসীন সরকারের শিক্ষা আইন ও শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে কওমি মাদ্রাসার আলেমওলেমারা দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করছেন। এই সংগ্রাম কওমি মাদ্রাসার ঐতিহাসিক সত্তা ও মৌলিক বৈশিষ্ট্য বিনষ্ট করবার আইন ও নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। এ লড়াই খুবই গুরুত্বপূর্ণ লড়াই – বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক বিকাশ ও নিজেদের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে জড়িত। ফলে একে আমি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক (আরো পড়ূন)

কর্পোরেট মিডিয়া ও বহুজাতিক কর্পোরেশান

মাইক্রোবিডকে বাংলায় বলা হয় ‘প্লাস্টিক কণা’ বা ‘প্লাস্টিক দানা’। প্রসাধন দ্রব্যে এটির ব্যবহার হয়ে থাকে। যদিও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে পশ্চিমা দেশগুলোতে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রে প্লাস্টিক কণার ব্যবহার নিষিদ্ধের বিলে স্বাক্ষর করেন। ফেব্রুয়ারিতে কানাডা এটিকে ‘বিষাক্ত দ্রব্য’ (টক্সিক সাবস্টেন্স) হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর গত সেপ্টেম্বর মাসে ব্রিটেন সরকারও ঘোষণা দেয় ২০১৭ সাল থেকে দেশটিতে প্লাস্টিক কণার ব্যবহার সম্পুর্ণ বন্ধ করে দেয়া হবে। অন্যান্য দেশও একই পথ অনুসরণ করছে।

মানব শরীর এবং পরিবেশ উভয়ের জন্য প্লাস্টিক কণার মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছ (আরো পড়ূন)

বায়ার কিনছে মনসান্তো: কৃষি  ও খাদ্য ব্যবস্থার হুমকি

বাংলাদেশে মনসান্তো অপরিচিত নয়। বিশেষত বিকৃত বীজ ও ফসলের জন্য এই কোম্পানি সারা দুনিয়াতেই পরিচিত। বিকৃত বীজকে ইংরেজিতে সংক্ষেপে জিএমও (জেনেটিকালি মডিফাইড অরগানিজম) বলা হয়। ‘মডিফাইড’ শুনলে মনে হয় বুঝি বীজের স্বভাবে বিকৃতি না ঘটিয়ে কেবল আরও উন্নত করা হয়েছে। বীজের স্বাভাবিক গঠন অক্ষূণ্ণ রেখে তাকে আরও উন্নত করা, বীজের কাছ থেকে আরও ভালো ফসল আদায় করে নেওয়া খারাপ কিছু নয়। কৃষক সব সময়ই এই কাজটি ভাল বীজ পাবার জন্য জমি থেকে ভালো বীজ নির্বাচন কিম্বা বীজের বিশেষ গুণ আদায় করে নেবার জন্য উন্নত জাতের সঙ্গে সংকরায়ন করে। ফলে জেনেটিক মডিফিকেশান কিম্বা গঠনসংকেতে ( Gene) বীজের স্বাভাবিক প্রকৃতি অক্ষূণ্ণ রেখে সংস্কার মোটেও মন্দ কিছু নয়।

(আরো পড়ূন)

১. ইসলামের কোরবানি, 'মনের পশু' তত্ত্ব ও খ্রিস্ট ধর্ম

‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

যাঁরা ঈদ এলে প্রায়ই নিজেকে মহান পশু দরদী প্রমাণ করবার জন্য পশু কোরবানি না দিয়ে ‘মনের পশু’ কোরবানির তত্ত্ব দিয়ে থাকেন,তাদের কিছু বিষয় বিবেচনার জন্য পেশ করছি। আশা করি তাঁরা ভেবে দেখবেন।

১. প্রায় সব ধর্মেই নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী পরমের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য ‘কোরবানি’র বিধান আছে। বলাবাহুল্য তাকে ‘কোরবানি’ বলা হয় না। বলা হয় ‘বলী’, ‘ঈশ্বরের জন্য রক্তোৎসর্গ’ ইত্যাদি। আরবিতে ‘উদিয়া’ শব্দের অর্থ & (আরো পড়ূন)

‘গো ব্যাক, ইন্ডিয়া’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার আসার খবর পেয়ে তরুণ ছাত্র ছাত্রীরা তৎক্ষণাৎ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। সেটা হোল শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন। সেই তাৎক্ষণিক ও স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভের একটি ভিডিও তাঁরা ইন্টারনেটে প্রচার করেন। বলাবাহুল্য, এই ভিডিওটি বিপুল ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলছে এই স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ একদিকে তারই অংশ, কিন্তু অন্যদিকে তার নিজস্ব তাৎপর্য রয়েছে। প্রথমত এই বিক্ষোভ সুনির্দিষ্ট ভাবে দিল্লীর আগ্রাসী ও ঔপনিবেশিক নীতির বিরুদ্ধে। বিক্ষোভের ভিডিওটি জনপ্রিয় হবার প্রধান কারন হচ্ছে দুটো স্বতঃস্ফূর্ত শ্লোগান: ‘গো ব্যাক, ইন্ডিয়া’ এবং ‘গো ব্যাক, এনটিপিসি&rsq (আরো পড়ূন)

'শাহাদাত বার্ষিকী'তে 'সাধুসঙ্গ'!

অগাস্ট মাসে শেখ মুজিবর রহমানের সপরিবার নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘মৃত্যুবার্ষিকী’ হিসাবেই পালন করা হোত। আজকাল ‘শাহাদাৎ বার্ষিকী’ হিসাবে উদযাপন করা হচ্ছে। এটা নতুন। এবারের নতুন আরেকটি দিক হোল ‘শাহাদাৎ বার্ষিকী’ উদযাপনের জন্য সারাদেশ থেকে বেশ কিছু বাউলদের নিয়ে এসে শিল্পকলা একাডেমি ‘সাধুসঙ্গ’ আয়োজন করেছে। খবরে তাই দেখেছি। ‘সাধুসঙ্গ’ ব্যাপারটা আসলে কি এটা অনেকেই জানেন না। বাউল গান নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি অনুষ্ঠান করতেই পারে। তবে শেখ মুজিবর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপনের জন্য ‘সাধুসঙ্গ’ আয়োজন করবার দাবি বেশ কৌতুহলের জন্ম দেয়।

এতোকাল আওয়ামি লীগ অগাস্ট মাসকে শোকের মাস হিসাবেই (আরো পড়ূন)

আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ

সংঘাতের চরিত্র যাই হোক, দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রতিটি সমাজেই থাকে। দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চরিত্র বোঝা এবং সমাজ কিভাবে তা সমাধান করছে, কিম্বা করতে ব্যর্থ হচ্ছে তার দ্বারা একটি সমাজের টিকে থাকা না থাকা সম্পর্কে আগাম অনেক কিছু অনুমান করা যায়। সংঘাত আর্থ-সামাজিক সম্পর্কের দ্বন্দ্ব বা বিরোধ থেকে হতে পারে; কিম্বা বোঝাবুঝি, চিন্তাচেতনার ফারাক অথবা সাংস্কৃতিক-আদর্শিক বিরোধ থেকেও হতে পারে। দ্বন্দ্ব-সংঘাত হতে পারে মীমাংসার অতীত, আবার নাও হতে পারে -- এই ধরনের তর্ক বাম মহলের প্রাচীন একটি তর্ক। যেমন বিরোধ কি এন্টাগনিস্টিক নাকি নন-এন্টাগনিস্টিক, ইত্যাদি।

তবে আর্থ-সামাজিক বিরোধের রাজনৈতিক প্রকাশ কিভাবে ঘটে সেটা নির্ণয়ের পদ্ধতি এবং তার সম্ভাব্য পরিণতি আগাম বলা (আরো পড়ূন)

হাতিকে সুঁইয়ের পেছনে ঢুকাবেন না

হোলি আর্টিসান ও তার পরে শোলাকিয়ার ঘটনা বাংলাদেশকে গোড়াসুদ্ধ কাঁপিয়ে দিয়েছে। গুলশানে হামলার ধরণ ও নৃশংসতা সবাইকে আতংকিত করেছে; নিরাপত্তাহীনতা আরও ভারি হয়েছে।

মাত্র পাঁচ জনকে মোকাবিলা করতে গিয়ে পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, সোয়াত টিম, গোয়েন্দা বাহিনীর বিভিন্ন দল এবং বিশেষ কমান্ডোদের ব্যবহার করতে হয়েছে। অর্থাৎ বিমান বাহিনী ছাড়া রাষ্ট্রের আইন শৃংখলা ও জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে নিয়োজিত হতে হয়েছে। কমান্ডোর জন্য সকাল অবধি অপেক্ষা করতে হয়েছে। এই ধরণের পরিস্থিতি বিচক্ষণতা, ক্ষিপ্রতা ও দ্রুততম সময়ে মোকাবিলা করবার যে দক্ষতা আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে জনগণ প্রত্যাশা করে সেখানে একটা আস্থার (আরো পড়ূন)

ক্ল্যাপারের প্রতিবেদন ও হোলি আর্টিসান

মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টর জেমস ক্ল্যাপার এ বছর ফেব্রুয়ারির নয় তারিখে ইউএস আর্মড সার্ভিসেস কমিটি ও সিনেট সিলেক্ট কমিটির কাছে একটি লিখিত প্রতিবেদন পেশ করেছিলেন। এ ধরনের প্রতিবেদনকে বলা হয় ‘Statement for the Record’। অনেকটা ভবিষ্যতে রেফারেন্সের জন্য নথি করে রাখার মতো ব্যাপার। হোলি আর্টিসানের রক্তপাতের পরে এখন তা রেফারেন্স হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁর লিখিত মন্তব্য ছিল ছোট এবং খুবই সংক্ষিপ্ত। পুরাটাই এখানে তুলে দিচ্ছি:

“Prime Minister Sheikh Hasina’s continuing efforts to undermine the political opposition in Bangladesh will probably provide openin (আরো পড়ূন)

ব্রেক্সিট ২: কার বিরুদ্ধে অসন্তোষ কার পাতে!

ব্রেক্সিট গণভোটের ফলাফল শেষ পর্যন্ত ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করে যাওয়ার পক্ষে হয়েছে। ব্রেক্সিট ইস্যুতে ভোটের ফলাফলে ত্যাগের পক্ষ জয়ী হয়েছে শতকরা ৫২-৪৮ অনুপাতে। এতে গণভোট-উত্তর পরিস্থিতি যা হতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছিল তা একের পর এক ঘটা শুরু হয়েছে। সারা বিশ্বে ফলাফলের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সর্বব্যাপী। এটা বোঝা কঠিন ন যে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরও এর প্রভাব পড়বে। গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সংসদকে জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের “পোশাক খাত চ্যালেঞ্জের মুখে” পড়েছে। ওদিকে ইতোমধ্যে প্রতি বৃটিশ পাউন্ড গণভোটের আগের তুলনায় দশ টাকা করে মূল্য হারিয়েছে। পরিস্থিতি আরো কতটা খারাপের দিকে যাবে তা নিয়ে অনুমান চলছে।

এ নিয়ে গভীরে (আরো পড়ূন)

ব্রেক্সিট ১ : ভাঙাগড়ার শুরু

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্র বৃটেন এক গণভোটে ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত এখনও আভ্যন্তরীণ। অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ কে এখনও এই সিদ্ধান্ত জানানো হয় নি। ইতোমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে এর উল্টাপাল্টা প্রভাব পড়া শুরু করেছে। বৃটেনের গণভোটের এই সিদ্ধান্তে বিশ্বের প্রভাবশালী শেয়ার বাজারগুলোর অবস্থা টালমাটাল হতে শুরু করেছে।

ব্রেক্সিট, নতুন পরিস্থিতির মধ্যে জন্ম নেওয়া একটা নতুন শব্দ -- ব্রিটেন আর এক্সিট, এ দুইয়ের সংমিশ্রণে তৈরী। পুরনো শব্দ দু’টি মিলিয়ে পয়দা করা হয়ে হয়েছে নতুন শব্দ ব্রেক্সিট। কেন? বিগত ১৯৭৩ সাল থেকে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য। ব্রিটেন ইইউ ছেড়ে যাবে কি না তা জানতে গণভোট (আরো পড়ূন)

বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন

কেন হিন্দু প্রশ্ন?

বদরুদ্দিন উমর সম্প্রতি বেশ কয়েকটি লেখায় বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্ন ও সাম্প্রদায়িকতার প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাঁর সাম্প্রতিক দুটো লেখা গুরুত্বপূর্ণ। ‘এটা কি সাম্প্রদায়িকতা?', লিখেছেন ২৫ মে ২০১৪ সালে, যুগান্তরে; দ্বিতীয় লেখাটি হচ্ছে, ‘ (আরো পড়ূন)

সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? আদৌ কি পুলিশী সমস্যা?

ছয়দফায় করা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মানুষ মরেছে। কতজন? সংখ্যা এখন খুব ধর্তব্য নয়। শুধু সংখ্যা রাজনৈতিক বাস্তবতার ইঙ্গিত হতে পারে কিন্তু সংকটের পরিসর ও গভীরতার নির্দেশক না। তাছাড়া কয়জন মরেছে, কতজন পঙ্গু হয়েছে, কতজন নিখোঁজ আর কতজন পুলিশের ভয়ে গ্রাম ছাড়া সেইসব সুনির্দিষ্ট করে নির্ণয়ের উপায় নাই। দ্বিতীয়ত ব্যাপক প্রাণহানির যে ধারা তৈরি হোল তা গ্রামাঞ্চলকে মূলত আরও রক্তপাতের দিকেই ঠেলে দিল। দ্বন্দ্ব ও বিভাজন জাতীয় পর্যায়ে কমবেশী সীমাবদ্ধ ছিল; প্রবল দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে এখন তাকে গ্রামীন সামাজিক ও পারিবারিক সংঘাতে পরিণত করা হোল। বপন করা হোল দীর্ঘস্থায়ী সন্ত্রাসের বিষ । হিংসা ও হানাহানির এটা নতুন গুণগত পর্ব।

অল্পদিনের ব্যবধানে পুলিশ সুপার (আরো পড়ূন)

সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি

ঠাট্টা করে নয়, বাংলাদেশের সমাজকে আপনি সিরিয়াসলি ‘সত্যবাদীদের সমাজ’ বলতে পারেন। এই সমাজে বিবাদমান সকল পক্ষই 'সত্যবাদী'। অর্থাৎ তারা মনে করে তারা নিজেরা যা বলে ও প্রচার করে এটাই চরম সত্য। রাজনীতিও এখানে অতএব সত্য কায়েমের রাজনীতি। অর্থাৎ প্রতিটি পক্ষই মনে করে সত্যে শুধু তাদেরই একচেটিয়া। একমাত্র তারাই সত্যবাদী, আর মিথ্যা শুধু অন্য পক্ষে। সত্যবাদীদের সমাজে বিবাদমান পক্ষ অপর পক্ষে কোন সত্য থাকতে পারে মনে করে না। প্রতিপক্ষ মানেই সত্যের দুষমন। অতএব সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য অপর পক্ষকে ধ্বংসই একমাত্র কর্তব্য। এই ধরনের সমাজে নির্মূল আর কতলের কারবার ছাড়া অন্য কোন রাজনীতি গড়ে ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই একদিকে আমরা দেখি বাংলাদেশে তথাকথিত প্রগতিশ (আরো পড়ূন)

নূরজাহান বেগম নাই, ‘বেগম’ থাকবে তো?

আজ ২৩ মে সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে সবার শ্রদ্ধেয় ‘নূরজাহান আপা’ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।

সকল বয়সের নারীদের কাছেই তিনি ছিলেন নূরজাহান আপা। বাইরে তাঁর পরিচয় উপমহাদেশে প্রথম নারীদের পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে। পত্রিকার নাম ‘বেগম’। এই পত্রিকাটিকে বলা যায়, প্রথম ও একমাত্র সচিত্র নারী সাপ্তাহিক। তাঁর বাবা মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন সওগাত পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, মেয়েকে দিয়ে শুরু করেছিলেন নারীদের সাহিত্য ক্ষেত্রে এগিয়ে নেয়ার জন্যে পত্রিকাটি। বেগম পত্রিকাটি ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই কলকাতা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় বেগম। ১৯৫০ সাল থেকে ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। বলা যায়,এখন নারীদের অনেক পত্রিকা প্রকাশিত হলেও শুধু নারীদের জন্য এবং ন (আরো পড়ূন)

মরণবাঁধ ফারাক্কা ও ভাসানীর রবুবিয়াত

খুব নিঃশব্দেই ষোল মে চলে গেল। তারপরও ফারাক্কা লং মার্চ উদযাপন কমিটিকে অশেষ ধন্যবাদ জানাতে হয়। তাঁরা দিনটি বিস্মৃত হতে দেন নি। ষোলই মে তারিখে তারা রাজশাহীতে এক বিশাল গণ জমায়েতের আয়োজন করেছেন। আমার সৌভাগ্য হয়েছে সেখানে আরও অনেকের সঙ্গে অংশ গ্রহণ করার। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর অসুস্থ শরীরে ছুটে এসেছিলেন। এসেছিলেন ড. এস আই খান, প্রকৌশলী এম ইনামুল হক, সৈয়দ ইরফানুল বারী, হাসনাত কাইয়ুম, সাংবাদিক ও সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার ও আরো অনেকে। রাজশাহীর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সঙ্গ পাওয়া সৌভাগ্য বটে। ধন্যবাদ মাহবুব সিদ্দিকী ও এডভোকেট মো. এনামুল হক কে অনেক ধন্যবাদ। তাঁরা বারবার তাগাদা দিয়ে আমার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন।

অবাক লাগে। যেখানে (আরো পড়ূন)

আসুন, নতুন করে ভাবি

বাস্তবকে জানুন, জেগে উঠুন

সরলীকরণের দোষ স্বীকার করেও সহজে পাঠকদের বোঝাবার জন্য উপমা দিয়ে বলিঃ ধরুন আপনি জানেন আপনি যে গাড়িতে উঠতে চাইছেন তা ভাঙা গাড়ি। চলে না। তদুপরি মোটেও নিরাপদ না, ভেঙে পড়তে পারে। আপনাকে নিরাপদে পৌঁছানোর পরিবর্তে আপনাকে এমন এক জায়গায় এসে এই গাড়ি নামিয়ে দিতে পারে যা বিপদ সংকুল। দেখলেন, আপনি হাজির হয়েছেন একটি ভয়ংকর যুদ্ধক্ষেত্রে। ধরুন সিরিয়ায় কিম্বা ইরাকে? ফিরে যাবার আর উপায় নাই? আপনি কী করবেন?

আপনাকে নতুন বাহনের কথা ভাবতে হবে। ভাবতেই হবে। আপনার পুরানা বাহন সংস্কারের সুযোগ বা সুবিধাও নাই। একদমই। পুরানা ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। আসলে নতুন বাহ (আরো পড়ূন)

২. তবু কমিউনিজমের কথাই বলতে হবে

নাস্তিকতা আল্লাহ আছে এই সত্য অস্বীকার করে, যে অস্বীকৃতির মধ্য দিয়ে মানুষই শুধু আছে সেই সত্য জাহির করা হয়। কিন্তু কমিউনিজমের জন্য এ ধরনের ঘোরাপথের দরকার পড়ে না।’ (কার্ল মার্কস)

‘যে নৈরাজ্যবাদী খেয়ে না খেয়ে আল্লাহখোদার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ওয়াজ করে বেড়ায় সে আসলে মোল্লা-মৌলবি-পুরোহিত আর বুর্জোয়াদের স্বার্থই রক্ষা করে।’ (ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন)

(আরো পড়ূন)

১. তবু কমিউনিজমের কথাই বলতে হবে...

কেন?

কারণ বিশ্ব ইতিহাসে অবদান রাখবার হিম্মত ও সম্ভাবনা কমিউনিজমের এখনও ফুরিয়ে যায় নি। আছে।

মানুষ সামাজিক এবং নিজেকে সে কোন না কোন সমাজ বা কমিউনিটির মধ্যেই আবিষ্কার করে। ফলে সামাজিকতার বা সামাজিক বন্ধনের যে কোন অভাবই তাকে পীড়া দিতে বাধ্য। পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যখন পরিবার ও সমাজের বন্ধনগুলি ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যায় তখন 'উম্মাহ' বা সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে একই মানব্জাতির অন্তর্ভূক্তিকরণ ও পুনর্গঠনের তাগিদ বাড়ে বৈ কমে না। কমিউনিজম কোন আজগবি বা আসমানি ধারণা নয় এবং এই ধারণার উৎপত্তি, ইতিহাস ও বিকাশের ওপর কমিউনিস্টদের কোন একচেটিয়া নাই।  নিজেকে অপরাপর মানুষের সঙ্গে স্রেফ মানুষ হিসাবে সম্পর্কিত হবার ও সম্বন্ধ রচনার ধারণা গুরুত (আরো পড়ূন)

তৃণমূল না বামফ্রন্ট: পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন

আবার এক ঝলকে ভারতের কিছু রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ভারতের প্রাদেশিক সরকারের নির্বাচনকে রাজ্যের (রাজ্যসভা নয়) নির্বাচন বা বিধানসভা নির্বাচন বলা হয়। আগামী ৪ এপ্রিল থেকে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের চার রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এভাবে মোট পাঁচ বিধানসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জইদি জানিয়েছেন, আসামে ২ দফা এবং কেরালা, তামিলনাডু ও পণ্ডিচেরিতে এক দফা করে ভোট নেয়া হলেও পশ্চিমবঙ্গে তা নেয়া হবে ৬ দফায়। এমনকি দিনের হিসাবে সাত দফায় ভোট হবে পশ্চিমবঙ্গে। ফলে প্রায় এক মাস ধরে চলবে এই ভোট পর্ব। পশ্চিমবঙ্গে ২৯৪টি আসনে মোট ৭৭ হাজার ২৪৭টি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ভোট নেয়া হ (আরো পড়ূন)

গ্রামে সম্পর্ক ক্ষয়ের একটি নজির

ভাবছিলাম কোন ঘটনা কিম্বা ছোটখাট লক্ষণ দেখে সমাজে চিন্তাভাবনার গতি প্রকৃতি সম্পর্কে কমবেশী নিশ্চিত কোন ধারণা করা সম্ভব কিনা। যার ভিত্তিতে সমাজের সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে আগাম কিছু বলে দেওয়া হয়তো সম্ভব।

এভাবে কল্পনা করুন। চৈত্রের দাবদাহ, খাঁ খাঁ রোদ। আপনি গ্রামে। দেখছেন গ্রামের একজন অসহায় অভাবী মহিলা একটি পুকুরের প্রশস্ত পাড়ের পাশে এসে অঝোরে কাঁদছে। এটা ছোটখাট পুকুর নয়। গ্রামের মোটামুটি ধনির পুকুর। মহিলার হাতে তার ছাগলের দড়ি্র একটি প্রান্ত। হয়তো এই পশুটিই তার জীবনের একমাত্র সম্বল। একটি পুকুরের পাড়ে ছাগলকে ঘাস খাওয়াবার জন্য চরাতে এসেছিল। কিন্তু এসে দেখছে পুকুরের মালিক আগাছানাশক দিয়ে সবগুলো ঘাস মেরে ফেলেছে। ঘাসগুলো যেন কেউ আগুনে পুড়ে দ (আরো পড়ূন)

আসুন গোড়ার সংকট নিয়ে ভাবি

জাতীয় ক্ষেত্রে বেশ কিছু বড় বড় ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কেলেংকারি, নিরাপত্তা বিশ্লেষকের গুম হয়ে যাওয়া, ব্যাংকের ভেতর থেকেই টাকা পাচারের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি এবং গভর্নরের পদত্যাগ; ধর্ষণ, নির্যাতন ও মেয়েদের খুন করে ফেলার ভীতিকর প্রবণতা বৃদ্ধি ও তনু ধর্ষণ ও হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা, যার প্রতিবাদ সারা দেশে হচ্ছে। কিন্তু একই সাথে লক্ষণীয় সামগ্রিক ভাবে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদের চেয়েও যা ঘটেছে তা হোল বিষয়টিকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচারণার বিষয়ে পরিণত করার চেষ্টা এবং শেষমেষ তার কোন কুল কিনারা না পাওয়া। ইতোমধ্যে তনুর এক বন্ধুও নিখোঁজ। চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের প্রতিবাদ ও তাদের গুলি করে হত্যা; (আরো পড়ূন)

মাহফুজ আনামের উপলব্ধি, অতঃপর...

এক এগারোর সময় পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে নিজের ভূমিকার ভুলের কথা মাহফুজ আনাম একটি টেলিভিশান টক শোতে স্বীকার করেছেন। তাঁর এই উপলব্ধিকে আন্তরিক মনে না করার কোন যুক্তি নাই। সরকারপক্ষের টেলিভিশান চ্যানেলটি তাঁকে কথার ফাঁদে ফেলবার জন্যই তাদের অনুষ্ঠানে নিয়েছিল কিনা সেটাও আমরা ভাবতে পারি। কিন্তু যে উপলব্ধির জায়গা থেকে মাহফুজ আনাম সম্প্রতি ভুল স্বীকার করেছেন তাকে স্বাগত জানাবার জন্যই এই লেখাটি ফেব্রুয়ারির বারো তারিখে লিখেছিলাম। কিন্তু যে পত্রিকায় দিয়েছি তাঁরা তা ছাপান নি। কেন তাঁরা তা ছাপান নি তার কোন ব্যাখ্যাও আমাকে দেন নি। একই লেখা কিছুটা এদিক ওদিক করে এখন পেশ করছি।

মাহফুজ আনামের উপলব্ধি ও স্বীকারোক্তি হচ্ছে এজেন্সির চাপের কাছে একটি পত্রিক (আরো পড়ূন)

আমেরিকার মুক্তবাণিজ্য চুক্তি ও মানবাধিকার

আধুনিক জমানায় বাণিজ্য চুক্তি করার রেওয়াজ উঠেছিল আশির দশকের শুরু থেকে। অর্থাৎ যাদের গরিব দেশ কিম্বা ছোট অর্থনীতির রাষ্ট্র বলা হয়, তাদের সাথেও বাণিজ্য চুক্তি করার দরকার বোধ করবার শুরু এখান থেকে। বাণিজ্য চুক্তি বলে এটিকে বাড়িয়ে বলার অর্থ হয় না। সার কথা বললে আমেরিকা তার নিজের বাজারে তার নিজের নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার অধীনে গরিব দেশগুলোকে পণ্য রফতানি করতে দেয়া শুরু করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক পর মূলত ইউরোপের বাজার বিনিয়োগ পুঁজিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেলে উন্নত অর্থনীতির রাষ্ট্রগুলোকে পুঁজি বুনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র নিয়ে ভাবতে হয়েছে। তারা এতদিন গরিব দেশে পণ্য রফতানিকারক হিসাবে ভূমিকা রাখছিলো। তারা তখন ভাবতে শুরু করল  গরিব দেশে কেবল  নিজ পণ্য র (আরো পড়ূন)

প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক

বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার দুর্দশা নতুন কোন খবর নয়, তবে সম্প্রতি বিচারকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব যেভাবে প্রকাশ হয়েছে তাতে বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট আরও তীব্র হতে পারে। কিছুদিন আগে অবসর নেওয়া সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী যেভাবে প্রধান বিচারপতিকে ঘায়েল করবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন পৃথিবীর আর কোথাও এই প্রকার আচরণের কোন নজির আছে কিনা আমার জানা নাই। সাবেক এই বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক নামে পরিচিত। ব্যক্তিগত ও সংকীর্ণ পেশাগত দ্বন্দ্বকে তিনি প্রকাশ্য করে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে যেখানে নামিয়ে এনেছেন তাকে অবিশ্বাস্যই বলতে হবে। বিষয়টি স্রেফ বিস্ময়ের বিষয় হলে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু সাবেক এই বিচারপতির আচরণ, উচ্চারণ (আরো পড়ূন)

জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা ও ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ

ঘটনা হচ্ছে ব্যবসায়ী ও ছাত্রদের বিরোধ। এটা ঘটনার বাইরের দিক। হয়তো একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যা নিত্যদিনের একটি ক্ষুদ্র বিচ্ছিন্ন সংঘাত হিসেবেই শেষ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু সেটা যখন আরও বড় সংঘর্ষের রূপ নিল, দেখা গেল তার মধ্যে শ্রেণীর প্রশ্ন আপনাতেই সামাজিক বাস্তবতার কারণেই এসে পড়েছে। বের হয়ে পড়ছে আগের বিরোধ ও সমাজের সুপ্ত আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। বিশেষত ঘটনার কয়েকদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ধানতলা গ্রামের শাহজালাল (রহঃ) মসজিদ কমপ্লেক্স ও হযরত আবুবকর সিদ্দিকী (রাঃ) কওমী মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রশাসন মাদ্রাসার বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে, এই অভিযোগ রয়েছে।

একদিকে ব্যবসায়ী আর তাদের সমর্থক ছাত্রলীগ কর্মী; অন্য (আরো পড়ূন)

সহিংসতার পর্যালোচনাঃ প্রসঙ্গ ব্রাহ্মণবাড়িয়া

গত সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্র হত্যার ঘটনার জের ধরে পরদিন ঐ শহরের বেশ কিছু জায়গায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের ধরণকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন যাবত দেশজুড়ে কথাবার্তা চলছে। পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই কথাবার্তার উপর নজর দিলে দেখা যাবে বেশ কয়েকটা বিশেষ বয়ান থেকে কথাবার্তা চলছে। এক ঘরানার দাবী হচ্ছে তারা মাদ্রাসার ছাত্র বলেই এমন সহিংসতা । অর্থাৎ এটা জঙ্গি কার্যক্রমেরই সমার্থক। আর এরূপ জঙ্গি কার্যক্রম মাদ্রাসা থেকেই উৎপন্ন হয়। আরেকপক্ষ মনে করছেন মাদ্রাসার ছাত্ররা এটা এ জন্যই করতে পেরেছে যে তারা সংস্কৃতমনা নন। ফলে আবার একটি পক্ষ এই ঘটনাকে ছাত্র হত্যার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিশেবেই দেখছেন।

লেখাটার শুরুতেই পত্রপত্রিকায় এখন পর্যন্ত এই ঘটনা (আরো পড়ূন)

নতুন বছর, নতুন চিন্তার আহ্বান

নতুন ঈসায়ী নববর্ষে সবাইকে ভালবাসা

আজ ২০১৫ সালের শেষ দিন। আর একটি ঈসায়ী সাল চলে যাচ্ছে। আরেকটি ঈসায়ী সাল সামনে। ইসলামের নবী-রসুলদের মধ্যে যিনি ঘৃণা ও হিংসার বিপরীতে প্রেমের অভূতপূর্ব নজির স্থাপন করে অমর হয়ে আছেন তিনি হজরত ঈসা (আ:)। তিনি রুহুল্লা। প্রেমের প্রতীক। ইসলামে তাঁর মর্যাদা অসামান্য। তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে বলে ইসলাম মনে করে না। তিনি আবার প্রত্যাবর্তন করবেন কি করবেন না তা নিয়ে নানান তর্ক ও ব্যাখ্যা থাকলেও হজরত ঈসার (আ:) প্রতীকী তাৎপর্য হচ্ছে প্রেম বা আশেকানিকে ক্রুশবিদ্ধ করা অসম্ভব। একই সঙ্গে হজরত ঈসার (আ:) প্রত্যাবর্তনের প্রতিশ্রুতির মধ্যে এই সত্যের ওপরই জোর দেওয়া হয় যে যুদ্ধ, হানাহানি, হত্যা ও রক্তপাতে (আরো পড়ূন)

নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করবার বছর

সবাইকে ঈসায়ী নববর্ষের শুভেচ্ছা। নতুন বছরের শুরুতে অল্প কিছু কথা বলব। বরং সবাইকে বলব, ভাবুন, আমরা কোন্‌দিকে যাচ্ছি।

চরম দুর্নীতি, লুটপাট, নাগরিক ও মানবিক অধিকার লংঘন এবং ভোটের তামাশা সত্ত্বেও আমি মনে করি না বাংলাদেশের জনগণ ভুল পথে যাচ্ছে। গত বছরের (২০১৫) শেষে পৌর সভার নির্বাচন গিয়েছে। নির্বাচনের কারচুপি ঘটেছে, একে কোন অর্থেই নির্বাচন বলা যায় না। ইসির ভূমিকা নিন্দনীয়। বিএনপি যথারীতি তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

পৌর নির্বাচনের ফলাফল দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির চরিত্রে বদল ঘটল কিনা অনেকে সেই প্রশ্ন তুলছেন। আদৌ কোন বদল হয়েছে কিনা বুঝতে পারব কি? আমার ধারণা, বুঝব। কিন্তু সবার আগে বুঝতে হবে শেখ হাসিনার অধীনে বিরোধী রাজনৈতিক জোটের নির্ (আরো পড়ূন)

রওনক জাহানের গণতান্ত্রিক উত্তরণ (!)

সকালে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ২২ তারিখের ‘দৈনিক প্রথম আলো’য় চোখ বুলাচ্ছিলাম। উপসম্পাদকীয়র পাতায় রওনক জাহানের একটা লেখা চোখে পড়ল। লেখার শিরোনাম 'গণতান্ত্রিক উত্তরণের ২৫ বছর’। রওনক জাহান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওপর তাঁর ভাল কাজ আছে বলে শুনেছি। তিনি ‘সেন্টা (আরো পড়ূন)

ক্ষমতার নিষ্ঠুর বৈশিষ্ট্য ও রাজনীতি

নীতিবাগীশতা ও ক্ষমতার বিচার

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সমাজের ক্ষমতাসীনদের জন্য আরামের কিনা বলা মুশকিল তবে তারা তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মতাদর্শিক স্বার্থ উসুল করে নিতে পারছে, এটাই বাস্তবতা। স্বার্থ উসুল করা কথাটা বোঝা আশা করি কঠিন কিছু নয়। তারা ক্ষমতার সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লুট করছে ও বিদেশে টাকা পাচার করতে পারছে। বড় কোন প্রকল্পের জন্য এখন টেন্ডার দিতে হয় না, এর বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আইন করেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সরকার টেণ্ডার ছাড়া যে কাউকেই তাদের ইচ্ছা মতো মতো দরদামে কাজ বা ঠিকাদারী দিতে পারে এবং দিচ্ছেও। ক্ষমতাসীন থাকার কারনে অপরাধ করেও ক্ষমতাসীনদ (আরো পড়ূন)

ভাসানী আছেন, আমাদের ভয় নাই

আজ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর (১২ ডিসেম্বর ১৮৮০ – ১৭ নভেম্বর ১৯৭৬) জন্ম দিন। বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স আজ ১৩৫ বছর হোত। তাঁর মৃত্যু আর জন্মের দিনটি আমি সাধারণত মনে রাখার চেষ্টা করি। গত বছরও এই দিনে তাঁকে নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলাম। একটা সময় গিয়েছে যখন তাকে বিদ্রোহ ও বিপ্লবের খুব সরল ফ্রেমে বেঁধে রেখে ভাবতাম তাঁকে বোধহয় আমার বোঝা হয়ে গিয়েছে, কিন্তু সেই বাঁধানো ফ্রেম ভেঙ্গে যেতে খুব সময় লাগে নি। আমরা যখন বাংলাদেশে বড় হচ্ছিলাম তখন আসামের ভাসান চরের মওলানা সম্পর্কে আমরা খুব একটা জানতাম না। সেটা জেনেছি পরে, তাঁকে আরও ভালোভাবে বোঝার তাগিদে। বাংলাদেশের তরুণরা তাঁর সম্পর্কে কতোটা জানে তা এখন আমি আর নিশ্চিত নই। কিন্তু তাঁকে না জেনে বাংলাদেশের প (আরো পড়ূন)

টেকনলজির বাহাদুরি বনাম শহিদ হবার সামর্থ্য

জিহ্বা কাটা পড়বেই...

ফেইসবুকে মাঝে মধ্যে চলমান বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করবার সুযোগ নিতাম। কিন্তু ফেইসবুক গণতন্ত্রের মানসকন্যা বন্ধ করে দিয়েছেন। ইন্টারনেটে যেতে পারি, কিন্তু ফেইসবুক খুলতে পারি না। এতে আমার বিশেষ ক্ষোভ আছে বলব না। তথাকথিত ‘গণতন্ত্র’ নামক ব্যবস্থায় চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া, কিম্বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার গীত গাওয়া যে আসলে উলুবনে হনুমানের চিৎকার সেটা এখন থিওরি কপচিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে না। তাই কি?

তথাকথিত আধুনিক বা উদার গণতন্ত্রে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ইত্যাদি বিস্তর হাবিজাবি কথা বলা হয় কিন্তু এই প্রকার কথা ডু (আরো পড়ূন)

জলবায়ু সম্মেলন কপ ২১: আর কতো!

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে শুরু হয়েছে বিশ্ব জলবায়ু কপ-২১ (বা কনফারেন্স অব দ্য পার্টি) সম্মেলন। টানা ১২ দিন চলবে দেনদরবারের নাটক; গাওয়া হবে নানান গীত ও কেচ্ছা। বিশ্বধরিত্রী সম্মেলন হয়েছে ২০১৩ সালে। এর পর ১৯৯৭ সালে এলো কিয়োটো প্রটোকল বা সমঝোতা। প্রটকলকে বাংলায় অনেক সময় চুক্তি বললেও সেখানে ফাঁক আছে। জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত কনভেনশান হয়েছিল ১৯৯২ সালে। সেই কনভেনশানে  জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাবার জন্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাবার কথা উঠেছিল কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমানোর জন্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো নিজ নিজ দেশের পক্ষ থেকে Common but Differentiated Responsibilities অর্থাৎ একই লক্ষ্যে ভিন্ন দায়িত্ব চুক্তি করার চেষ্ট (আরো পড়ূন)

তুরস্ক ও রাশিয়ার বিবাদ

আজকের দুনিয়ার আইএস বা ইসলামী স্টেট ইস্যুটি দিনকে দিন বিশ্বরাজনীতিকে জটিল থেকে জটিলতর করে তুলছে। ব্যাপারটি অনেকটা ‘কুইনাইন সারাবে কে’ অবস্থার মতো। ম্যালেরিয়া তাড়ানোর জন্য রোগীকে কুইনাইন খাওয়ানো হয়েছিল। এতে কুইনাইন ম্যালেরিয়া তাড়ানো গিয়েছিল কিনা, সেকথা চাপা পড়ে গিয়ে এর চেয়েও বড় ঘটনা হয়ে গিয়েছিল নতুন রোগ সৃষ্টি। কুইনাইন এ নতুন রোগ ডেকে এনেছে। তা থেকে আবার আরও অনেক নতুন নতুন রোগের বিস্তার ঘটেছে।

একই ভাবে সর্বশেষ জটিল ঘটনাটি হলো, তুরস্কের বোমারু বিমান এক রাশিয়ান বোমারু বিমানকে গোলা মেরে ভূপাতিত করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলেও কমিউনিস্ট প্রগতিশীলদের চোখে রাশিয়া এখন নতুন সহানুভূতির রাষ্ট্র হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। সিরিয়াতে রাশ (আরো পড়ূন)

প্রক্সি যুদ্ধের টানাপড়েন

তুর্কিরা মার্কিনীদের দেয়া এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান দিয়ে সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে তুরস্কের আকাশ সীমায় মাত্র সতেরো সেকেন্ডের জন্য ঢুকে পড়া একটি ‘সুখয় এস ইউ ২৪’ রুশ যুদ্ধ বিমান ২৪ নভেম্বর গুলি করে ফেলে দিয়েছে। পাইলটরা যখন প্যারাসুট দিয়ে আকাশ থেকে নামছিলেন তখন সিরিয়া সীমান্তের ওপারে তুরস্ক সমর্থিত তুর্কমেন যোদ্ধারা তাদের গুলি করে। আকাশে গুলি করেই একজনকে হত্যা করা হয়, অন্য জন রাশিয়ায় ফিরতে পেরেছে।

রুশরা এতে ভয়ানক ক্ষিপ্ত হয়েছে। ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন: “সন্ত্রাসীদের সহযোগীরা আমাদের পিঠে ছুরি মেরে দিল, এছাড়া একে আর অন্য কোন ভাবেই ব্যাখ্যা করে বোঝানো যায় না”। খুবই কড়া কথা। পুতিন আরো বলেছেন, রাশিয়া আগেই প্রমাণ করে দেখিয়েছে কি (আরো পড়ূন)

‘কয়টা লাশ পড়ল আমরা গুনে দেখি না’

‘We don’t do body counting’ - Gen. Tommy R. Franks, US Army

চিন্তার আলস্য এমন এক স্বোপার্জিত অসুখ যা সারিয়ে তোলা মুশকিল। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হচ্ছে তেমনি স্বেচ্ছায় চিন্তা করতে অক্ষম হবার সাধনা: যখন কোন ঘটনা বা বিষয় নিয়ে আমরা আর চিন্তা করতে চাই না। অলস হয়ে যাই। তখন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়ে আমরা আমাদের চিন্তার অক্ষমতা ঢাকতে চেষ্টা করি।

যেমন, আইসিস। আইসিস নিয়ে বাংলাদেশে যা কিছু পড়েছি তার সারকথা দুটা:

এক. আইসিস হচ্ছে সিআইএ আর মোসাদের ষড়যন্ত্র বা মার্কিন ও ইসরায়েলি কাণ্ড, তাদেরই সৃষ্টি। বাকি ব্যাখা সহজ। সিআইএ ও মোসাদ কোথায় কিভাবে ষড়যন্ত্র করেছে তার প্রমাণ দাখিল (আরো পড়ূন)

ভাসানীঃ যেন তিনি থাকেন

আজ ১২ ডিসেম্বর। গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলাম। দুই-একটি পত্রিকা কানাকুঞ্চিতে ক্ষুদ্রভাবে মনে করিয়ে দিয়েছে। তবুও বলি, শুকরিয়া।

মরিজন বিবি এই তারিখে ১৮৮০ সালে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। হাজী শরাফত আলী খানের পুত্র। সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রাম ব্রিটিশ আমলে কেমন ছিল, এখন অনুমান করার উপায় নাই। বুঝতে পারি, যাকে আমরা অতি পশ্চাৎপদ গ্রাম হিসেবে ট্যাগ মারতে পছন্দ করি, ধানগড়া সেই রকমই ছিল। শরাফত আলী খান ছেলেকে মক্তবেই পড়িয়েছিলেন। ছেলে মক্তবে কিছুদিন শিক্ষকতাও করেছিলেন। ১৮৯৭ সালে পীর সৈয়দ নাসীরুদ্দীনের সঙ্গে আসাম চলে যান। তারপরের ইতিহাস উপমহাদেশে ব্রিটিশবিরোধী লড়াই ও জমিদার-মহাজনদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি যুক্ত। এ লড়াইয়ের নায়ক হচ্ছে এ (আরো পড়ূন)

ইঁচা ও পুঁটি মাছে্র সমাজ

আসলেই, ‘সমাজ বদল’ কথাটার অর্থ কী?

বাংলা ভাষায় ‘সমাজ’ নামে একটি শব্দ আছে। কিন্তু শব্দটি এখন কী বোঝায় সে সম্পর্কে আমরা আর একদমই অবহিত নই। আগেও খুব সজ্ঞান ছিলাম বলা যাবে না। যদি থাকতাম তাহলে সমাজ বদল, পরিবর্তন বা রূপান্তর ইত্যাদি ধারণার একটা মানে আমরা দাঁড় করাতে পারতাম এবং আমাদের বর্তমান অবস্থা বিচার করবার মানদণ্ড হিসাবে তা ব্যবহারও করা যেতো। সেই সুবিধাটুকু পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও প্রাচীন অভ্যাস বশত সমাজ বদলাবার কিম্বা সমাজ পরিবর্তনের কথা আমরা শুনে এসেছি। শুনতাম। আজকাল তাও শুনি না। কিম্বা শুনলেও সেটা কোন বিশেষ অর্থ জ্ঞাপন করে না। সমাজ যদি বর্ণনাত্মক অর্থে কি (আরো পড়ূন)

ঐক্য চাই, তবে কেমন ঐক্য?

যখন বুঝতে পারি দেশের মানুষ ভয়ংকর বিপদের দিকে ধেয়ে চলেছে তখন লিখতে গিয়ে সবকিছু গুছিয়ে লিখতে পারছি কিনা বারবার সেই দিকে সতর্ক থাকতে হয়। এই কাণ্ডজ্ঞানটুকু বজায় রাখা জরুরী যে যদি সমাজের রাজনৈতিক ও আদর্শিক বিভক্তি আমাদের বিপদ ও বিপর্যয়ের গোড়া হয় তাহলে সেই বিভক্তির গোড়ায় পানি ঢালা এখনকার কাজ নয়। এটা খুশির কথা যে অনেকেই ঐক্যবদ্ধ হবার কথা বলছেন। আমি কাতর ভাবে বুঝতে চাইছি তাঁরা কাদের মধ্যে ঐক্যের কথা বলছেন? সেই ঐক্যের উদ্দেশ্য কি? কার বিরুদ্ধে কার ঐক্য?

ঐক্যের ডাক  সফল হতে হলে স্বঘোষিত মুক্তিবুদ্ধিওয়ালাদের ঐক্য হলে হবে না। স্বঘোষিত ইসলামের রক্ষাকর্তাদের ঐক্যেও চলবে না। কারো সংলাপের আহ্বানেও কাজ হবে না। এটা হতে হবে জনগণের ঐক্য। এই মুহূর (আরো পড়ূন)

৩. জাতীয়তাবাদী বিকারঃ ‘রাজনৈতিক পরিসর’ নির্মানের গুরুত্ব

‘রাজনৈতিক পরিসর’ কথাটা বেশ কিছুকাল ধরে আমি ব্যবহার করছি। সুবিধা হচ্ছে আধুনিক রাষ্ট্র বিজ্ঞানে গ্রিক ‘পলিস’ (polis) থেকে ‘পলিটিক্‌স’-এর যে ধারণা গড়ে উঠেছে তার সঙ্গে ‘রাজনৈতিক পরিসর’ কথাটার যোগসূত্র আছে। ফলে যারা গ্রিক-খ্রিস্টিয় চিন্তা বা পাশ্চাত্যের ইতিহাসকে নির্বিচারে গ্রহণ করে নিজেদের ‘আধুনিক’ ও ‘প্রগতিশীল’ মনে করেন তাদের সঙ্গে আমার কথা বলতে সুবিধা হতে পারে।

গ্রিক ‘পলিস’ কথাটার আক্ষরিক মানে হচ্ছে ‘নগর’। এর আরেক আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে নাগরিকতা কিম্বা নাগরিক সমাজ। যারা ‘পলিস’ বা ‘নগর’-এর অন্তর্গত তারা নাগরিক। আধুনি (আরো পড়ূন)

২. জাতীয়তাবাদী বিকার: খুনের রাজনীতিকরণ

ছেলে হত্যার বিচার চাননা কেন এই প্রশ্নের উত্তরে একটি দৈনিক পত্রিকার সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেছেন, আমরা ‘শূন্যের মধ্যে ভালো জিনিস খুঁজছি’। শূন্যতা বোঝাতে তিনি রাজনৈতিক সমাধানের অনুপস্থিতি বুঝিয়েছেন। বলেছেন, ‘এদেশে রাজনৈতিক সমাধান যতক্ষণ না হচ্ছে ততক্ষণ আইনগত কোনো সমাধান সম্ভব না’। এর নিহিতার্থ হচ্ছে সংবিধান, আইন, বিচার ব্যবস্থা ইত্যাদি কোন কিছুই শূন্যতার মধ্যে কাজ করে না রাজনীতি বা রাজনৈতিক পরিসরের মধ্যেই তারা কাজ করে। কিন্তু সমাধানের জন্য যদি কোন ‘পরিসর’ না থাকে তাহলে তার সমাধান কিভাবে সম্ভব? সেই পরিসর নাই বা শূন্য। আমি প্রাথমিক ভাবে এটাই বুঝেছি।  আবুল কাশেম ফজলুল হক ভবিষ্যতে আরও ব (আরো পড়ূন)

১. জাতীয়তাবাদী বিকারের বিপদ

স্বীকার করতে বাধা নাই, তরুণ বয়স  থেকে কবিতা লিখবার দোষ থাকবার কারণে ফকির লালন শাহের প্রতি আমার আগ্রহের কারণ ছিল তাঁর গান। তার জন্য আবদুল আলিমকে আমি আজ অবধি ‘দোষী’ করি। এই এক অনুযোগ যার মধ্য দিয়ে তাঁর প্রতি অগাধ ভালবাসাটুকু আমি বাঁচিয়ে রাখি। তাঁর গান শিক্ষিত মধ্যবিত্তের পরিসরে বড় হওয়া আমাকে বিচলিত করতো, আমার চিন্তার খাঁচাটাকে ঝাঁকি দিত। ‘আধুনিক’ গান ও আধুনিকদের গানের  বাইরে ‘পল্লী’ নামক একটা ভিন্ন জগত আছে, সেখানে মানুষ বাস করে এবং বিস্ময় যে তারাও গভীর বিষয় নিয়ে ভাবতে সক্ষম -- এই বোধটুকু আবদুল আলীমের বেশ কিছু তথাকথিত ‘পল্লীগীতি’ শুনে কিশোর ও যৌবন কালের সন্ধিক্ষণে আমার মনে দৃঢ় ভাবে গেঁ (আরো পড়ূন)

আইএস এসেছে (!), আইএস আসে নাই (?)

সাধারণত আমি লেখা শেষ করার পর লেখার শিরোনাম দিয়ে থাকি। কিন্তু আজ ব্যতিক্রম করেছি। আগে শিরোনাম লিখলাম। উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে একবার বিস্ময় চিহ্ন আর আরেকবার প্রশ্নচিহ্ন দেয়ায় পাঠকের একটু মিস্টেরিয়াস মনে হতে পারে। আসলে রহস্যের কিছু নাই। ব্যখ্যা করে বলি।

শেখ হাসিনার সরকার এতদিন আমাদের বুঝিয়েছিল,বাংলাদেশ ইসলামী সন্ত্রাসীতে ভরে গিয়েছে। তিনি দাবী করতেন, তার সরকারের আমলে কোনো বিরোধী দল নাই। যারা তার সরকারের বিরোধী, তারা ইসলামী সন্ত্রাসী। আর তাই বলতেন তিনি বিরোধী দল দমন করছেন না, ইসলামী সন্ত্রাসীদের দমন করছেন। কারণ, বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর ছত্রছায়ায় বাংলাদেশে ইসলামী সন্ত্রাস চর্চা হয়েছে। দল বা জোট হিসেবে তারা যেমন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুক্ত ছিল, (আরো পড়ূন)

র‍্যাব বিতর্ক

'র‍্যাব' বা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে আমাদের সমাজে। নাগরিকদের মধ্যে সম্মানিত অনেকে আছেন যারা বলছেন- ‘র‌্যাব’ এর ভূমিকা আমাদের প্রশংসা কারা উচিত, সন্ত্রাস দমনে র‌্যাব ইতিমধ্যেই ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে ‘মানবাধিকার’- এর কথা তুলে তীব্র সমালোচনা চলছে যে, ‘ক্রসফায়ারে’ র‌্যাবেরই হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত অপরাধী মারা যাওয়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

আমি র‌্যাব বা ইংরেজি Rapid Action Battalion- এর বাংলা করেছি ‘জলদি কাম খতম করার সংঘ বা বাহিনী’ (দেখুন প্রথম আলো, ১ নভেম্বর, ২০০৪)। আমি র‌্যাবের সমালোচনা করি এবং নাগরিক হিসেবে নিজের কথা স্পষ্টভ (আরো পড়ূন)

র‍্যাব ও আমাদের অসুখ

‘র‌্যাব’ হচ্ছে ইংরেজি 'র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন' কথাটির সংক্ষিপ্ত রূপ। এর বাংলা করলে দাঁড়ায় জলদি কাম খতম করার সংঘ। ব্যাটালিয়ন কথাটা সামরিক। ‘সামরিক’ কথাটি বাংলা ‘সমর’ বা যুদ্ধ থেকে তৈরি। অর্থাৎ যা যুদ্ধ সম্পকির্ত। র‌্যাব সেই দিক থেকে যুদ্ধ সম্পর্কিত ধারণা বলা যায়। রাষ্ট্রের এই ধরণের সশস্ত্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পেছনে অনুমান হচ্ছে সমাজে এমন এক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে যার সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতি তুলনীয়। প্রথাগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব নয়। অতএব র‌্যাপিড একশান ব্যাটেলিয়ন দরকার।

কিন্তু যুদ্ধ তো আমরা করি শত্রুর বিরুদ্ধে। দুষমনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জ (আরো পড়ূন)

দ্বিখণ্ডিত দেশ, ব্যর্থ রাজনীতি

শেখ হাসিনা সফল ভাবে বিরোধী দলকে নাস্তানাবুদ করে দিতে পেরেছেন। খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। তাঁর ফিরে আসার কথা থাকলেও এখন শোনা যাচ্ছে চিকিৎসার জন্য দেরি হবে। তাঁর প্রত্যাবর্তনের তারিখ এখনও অনিশ্চিত। এতে ক্ষমতাসীনদের পুলকিত থাকবার যথেষ্ট কারন রয়েছে। কিন্তু সাধারণ নাগরিকদের জন্য আনন্দিত হবার কিছু নাই। অন্যদিকে আমরা বারবারই আমাদের লেখায় বলেছি, বিরোধী দলের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার একটাই পথ: তাদের রাজনীতি স্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট ও পরিচ্ছন্ন করা। তারা বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভাবে কি অবদান রাখতে চান সেটা সাধারণ মানুষকে স্পষ্ট করে কিছুই বলেন নি। নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি চাইবার অর্থ বিএনপি শুধু ক্ষমতায় যেতে চায়, কিন্তু জনগণ ভোট দিয়ে তাঁদের আবার ক্ষম (আরো পড়ূন)

১. নতুন রাজনৈতিকতার বিনির্মানে ‘শরিয়াহ’

[ বর্তমান পৃথিবীতে যেসব প্রশ্ন আমাদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে এবং নতুন রাজনীতি নির্মাণে প্রধান প্রশ্ন আকারে সামনে এসেছে এর মধ্যে ‘শরিয়াহ’ অন্যতম। কিন্তু শরিয়া নিয়ে আলোচনা সহজ নয়। এর বাস্তব প্রয়োগ যেমন বিতর্ক তৈরি করে তেমনি ইসলামকে দানবীয় বর্বর ধর্ম হিসাবে হাজির করবার জন্য পাশ্চাত্য শরিয়ার বিরুদ্ধে  ব্যাপক প্রপাগাণ্ডা চালায়। ঐতিহাসিক ভাবে শরিয়ার উৎপত্তি ও বিবর্তন বোঝা এবং শরিয়াকে কেন্দ্র করে ইসলামে আইন, রাষ্ট্র, শাসন ব্যবস্থা, ক্ষমতা ইত্যাদি ধারণার উৎপত্তি ও বিবর্তন কিভাবে ঘটেছে সে সম্পর্কে বুদ্ধিবৃত্তিক নিষ্ঠার সঙ্গে শরিয়া পাঠ ও বিশ্লেষন ছাড়া গত্যন্তর নাই। সেই পাঠ একই সঙ্গে আধুনিক রাষত্রের পর্যালোচনাতেও সহায়ক হতে পারে।  (আরো পড়ূন)

সুন্দরবন রক্ষা না হলে ভাবমূর্তিও রক্ষা পাবে না

দেশে যখন দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকে কেন্দ্র করে নানা রঙের (তার মধ্যে লাল অন্যতম) অ্যালার্ট বা সতর্কবার্তা জারি হচ্ছে, তখন সরকার নিজেই জনগণের একটি ন্যায্য দাবিতে পুলিশ দিয়ে লাঠিচার্জ ও হামলা করে নিজেদের ভাবমূর্তি নিজেরাই ক্ষুণ্ণ করছে। পরপর দুই বিদেশি হত্যার ঘটনা (একটি ঢাকায় এবং অন্যটি রংপুরে) বিদেশিদের মধ্যে একটা আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, এতে কোনো সন্দেহ নাই। পাশাপাশি কিছু হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের মানুষ নিয়েও ঘটেছে সে ব্যাপারে কোনো অ্যালার্ট জারি হয়নি বটে, কিন্তু সবার মধ্যে কেমন একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কী হচ্ছে দেশে? কেউ বলতে পারছে না। দেশের মধ্যেও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। মানুষ নিরাপত্তা চায়। তাই সরকার এখন রাজন হত্যাকারী কামরুল, সৌরভকে গুলি মা (আরো পড়ূন)

নদিয়ার ভাব ও লালন শাহ

এক

ফকির লালন শাহ তিরোধান করেছিলেন পহেলা কার্তিকে। বাংলা বছর ১২৯৭ আর ইংরেজি ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর। এই বছর পহেলা কার্তিক ১৪২২ (১৬ অক্টোবর ২০১৫), ফকির লালন শাহের ১২৫তম তিরোধান দিবস। 

তিরোধান দিবস হবার কারনে দিনটি শোকের দিন হিশাবে তাঁর অনুরাগী ও অনুসারীরা পালন করে থাকেন। তাদের জন্য এটা কান্নাকাটির দিন। কিন্তু এখন এই দিনটিকে একধরণের উৎসবে পরিণত করা হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে দেখছি পহেলা কার্তিকে ছেঁউড়িয়াকে একটা মেলায় পরিণত করা হয়। এর নানা কারন আছে।  লালন ফকিরের ধাম যাদের 'টাঁকশাল' সেই সাধকরা কার্যত তাদের নিজেদের ধাম থেকেই বিতাড়িত। তাঁরা ধামের রক্ষা বা ব্যবস্থাপনায় নাই। (আরো পড়ূন)

নেপালের নতুন গঠ্নতন্ত্র, নারী অধিকার ও ভারতের কাণ্ড

নেপাল আমাদের একটি অতি ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। প্রাকৃতিকভাবেও আমাদের সম্পর্ক অনেক গভীরে - হিমালয় থেকে বরফ গলে পানি আমাদের নদ নদী পার হয়ে গড়িয়ে বঙ্গোপসাগরে যাচ্ছে। কাজেই এখানকার যে কোন পরিস্থিতি আমাদের ভাবায়, আমাদের আন্দোলিত করে। নেপালে যখন ভুমিকম্প হয়েছিল তখন বাংলাদেশও কেঁপে উঠেছিল কয়েকবার। অন্যদিকে আমাদের আর একটি প্রতিবেশী দেশ হচ্ছে ভারত; যা আমাদের তিনপাশ ঘিরে আছে। সম্পর্ক ভাল কি মন্দ যাই হোক, সীমান্তে কাঁটা তার আছে আর যখন তখন নানা অজুহাতে সীমান্ত রক্ষীবাহিনী আমাদের মানুষ মারছে। এখানেও পানির সম্পর্ক আছে, ৫৪টি নদীর সাথে আমাদের সম্পর্ক। পানি নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই। কাজেই আমাদের জনগণ ভারতের ব্যাপারে সবসময় নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন না, যদিও এপারে (আরো পড়ূন)

২. নেপালি মাওবাদ ও গণরাজনৈতিক পরিসর নির্মানের চ্যালেঞ্জ

নেপালে রাজতন্ত্রের পতন ও উৎখাতের ঘটনা ২০০৬ সালের এপ্রিল মাস থেকে শুরু। প্রথম চোটে রাষ্ট্রের  সেনাবাহিনী ও পুলিশকে রাজার অধীনস্থতা ও নির্দেশে পরিচালিত হবার আইন বাতিল করে তাদেরকে জাতীয় সংসদ, অর্থাৎ জনগণের অধীনে আনা হয়। এটা ছিল এর আগে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চলা ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (UCPN) বা যারা পপুলারলি মাওবাদী (Maoist) বলে পরিচিত তাদের সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগ্রামের ফসল।

নেপালের মাওবাদীরা  ১৯৯৬ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে নেপালের তৎকালীন সরকারের কাছে ৪০ দফা দাবীনামা পেশ করে। সরকারকে তারা জানিয়েছিল, যদি এই দাবি মেনে না নেওয়া হয়, অর্থাৎ  আগামি দুসপ্তাহের মধ্যে  দাবি না মেনে নেবার  ইঙ্গিত দেখলে  সেক্ষেত্র (আরো পড়ূন)

১. ল্যাণ্ড-লকড নেপালঃ অতীত ও বর্তমানের ঔপনিবেশিক ধারাবাহিকতা

নেপালি জনগণের নতুন গঠতন্ত্র প্রণয়ন এবং গঠনতান্ত্রিক সভায় তা অনুমোদন ও গ্রহণ নেপালের প্রতি বাংলাদেশে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। নেপালের জনগণ সম্পর্কে জানা এবং বোঝা বাংলাদেশের জন্য জরুরী। লেখা কোথা থেকে শুরু করতে হবে সে এক জটিল বিষয়। নেপাল প্রসঙ্গের ডাইমেনশন অনেক। অনেক দিক থেকে প্রসঙ্গ তুলে কথা বলতে হবে। আবার সব মিলিয়ে এক সামগ্রিক অর্থপুর্ণ চিত্র সাজিয়ে তোলা দরকার। কোন বিষয়ের পরে কোন বিষয় কতোটুকু আসবে সেটাও গুরুত্বপুর্ণ। সেসব নিয়ে তথ্য জোগাড় করা, চিন্তাভাবনা ও সিদ্ধান্তে আসা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সর্বোপরি কিভাবে আনলে তা সহজে বাংলাদেশের পাঠকের বোধগম্যতায় আনা যাবে সেই বিষয়েও ভাবনার দরকার আছে। নেপাল নিয়ে বিভিন্ন বিষয় ধরে ধরে আলোচনা এখানে আলাদা আলাদা (আরো পড়ূন)

অভিনন্দন নেপাল

কিছুদিন আগে সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে নেপালের প্রেসিডেন্ট রাম বরণ যাদব একটি ঘোষণা দিয়েছিলেন যার তাৎপর্য অসামান্য। তিনি জানিয়েছেন গণপরিষদে নেপালের দুই কোটি ৮০ লাখ মানুষের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা নেপালে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করেছেন এবং রাষ্ট্র গঠন পরিষদ (Constituting Assembly) বা গণপরিষদ ৫৯৮ গঠনতন্ত্র প্রণেতার মধ্যে ৫০৭ জনের সম্মতির মধ্য দিয়ে নতুন নেপালি গঠনতন্ত্র গ্রহণ করেছেন।

এই গঠনতন্ত্র প্রণয়ন একদিনে হয় নি। বাংলাদেশের মতো নেপালি জনগণ কোন উকিল মোক্তার দিয়ে তাদের সংবিধান মুসাবিদা করেন নি, কোন একটি রাজনৈতিক দল তাদের দলের দলীয় কর্মসূচি পুরা জনগোষ্ঠির ওপর চাপিয়ে দেয় নি। রাষ্ট্র গঠনের নৈতিক বা আদর্শগত ভিত্তি নিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে তীব্র (আরো পড়ূন)

ইতালিয়ান নাগরিক হত্যা ও তিনটি অর্থপূর্ণ ইঙ্গিত

মনে হচ্ছে পাশ্চাত্য দেশগুলো ইতালির নাগরিক সিজার তাভেল্লার হত্যাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসাবে মানতে নারাজ। ঘটনা হোল, সিজার গত সোমবার ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান-২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়কের গভর্নর হাউসের দক্ষিণ পাশের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষা ফুটপাতে খুন হন। দুই অস্ত্রধারি রিভলবার দিয়ে পর পর তিনটি গুলি করে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা একজনের মোটরসাইকেলে চড়ে ৮৩ নম্বর সড়ক ধরে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে সিজারের মৃত্যু হয়। তিনি নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আইসিসিও কো-অপারেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মী। প্রুফ নামে ওলন্দাজ সরকারের উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অর্থ সহায়তায় পরিচালিত একটি বড়সড় প্রকল্পে সিজার কাজ করতেন। ইকো করপরেশানের (আরো পড়ূন)

বেগম রোকেয়া, ‘জেণ্ডার মেইনস্ট্রিমিং' ও নারী পুলিশ

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দাবি সমর্থন করি

প্রথমেই বলে রাখি মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবি আমি সমর্থন করি। এমন দাবীর সাথে দেশের মেডিকেল শিক্ষার পুরো ভবিষ্যত জড়িত। একটা পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনা করা হয়ে গেছে বলে আবার পরীক্ষা নেয়া যাবে না এমন কথা যারা বলছেন আমি তাদে্র সাথে একমত নই। শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীরা ঢুকলে পরবর্তী সময়ে পুরো পেশার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে’’। কথাটি অযৌক্তিক নয়, কাজেই এখন এই ভর্তি পরীক্ষা বাতিল না করলে এই  অ-নিয়ম বন্ধ হবে না কোন দিনই।

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি বড় অংশ হচ্ছে নারী শিক্ষার্থী। এই (আরো পড়ূন)

শিক্ষায় ভ্যাট আরোপ ভুলঃ অবকাঠামো নির্মান ধারণার বিরোধী

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন সফলতা পাবার পাশাপাশি বাংলাদেশের জনপরিসরে ভাবনার জায়গায় কিছু প্রশ্ন উঠেছে। যাদের হাতে আন্দোলনের সফলতা আসলো তারা দেশের জনপরিসরে একদমই নতুন ভাগীদার। এই দিক থেকে ভবিষ্যতে জনপরিসরে এদের অবস্থান কি হবে তা দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে আন্দোলনে জনগনের সমর্থন, শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, আন্দোলনের নতুন ভাষা ও ব্যাপ্তি সব মিলিয়ে একটা ভিন্ন আমেজ তৈরি করেছে। বিগত কয়েকদিন যাবত চায়ের আড্ডা, বাসে, পত্রিকার পাতা, টেলিভিশনের স্ক্রিন জুড়ে ছিল এই আন্দোলন। যদিও, এসব আলোচনার কেন্দ্রে ছিল সরকার কর্তৃক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতনের উপর আরোপিত ভ্যাটের বিরোধ (আরো পড়ূন)

দুই হাতেই তালি বাজুক

পশ্চিম বাংলার সাহিত্যিকদের প্রধান বাজার বাংলাদেশ। সেই দিক থেকে বাংলাদেশের বাজার রক্ষার খাতিরে বাংলাদেশের তোষামোদ করা তাদের জন্য জরুরী। এটা কোন খারাপ অর্থে বলছি না, ভাল অর্থেই বলতে চাইছি। বাজার ব্যবস্থার চরিত্রের কারণেই তোষামোদি দরকার হয়ে পড়ে। বাজার ব্যবস্থার ‘অদৃশ্য হাত’ তার প্রণোদনা। বাংলাদেশের পাঠক বা বই ভোক্তাদের নিজের প্রতি আগ্রহী করে রাখার ওপর পশ্চিম বাংলার লেখকদের বইয়ের বেচাবিক্রি অনেকাংশেই নির্ভর করে। তোষামোদির দরকার সেই কারণেই। বাংলাদেশে পশ্চিম বাংলার লেখকদের গ্রহণযোগ্যতার সঙ্গে নিজের বইয়ের বাজার সুরক্ষার প্রশ্ন জড়িত। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়সহ অনেকেই বাংলাদেশের প্রতি সে কারণে অনেক সদয় মন্তব্য করেছেন। বাজার ব্যবস্থায় তোষামোদি (আরো পড়ূন)

‘গুলি কর, নো ভ্যাট’

আজ ১১ সেপ্টেম্বর বড় বড় দৈনিক পত্রিকার খবর হচ্ছে ঢাকা চট্টগ্রাম সিলেটে যানজট। কারা দায়ী? প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কেন? তারা শিক্ষার ওপর ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো আটকে দিয়েছে। ফলে অসহ্য যানজট। গতকাল অধিকাংশ টেলিভিশানে এই ছিল খবর। আজ অধিকাংশ পত্রিকার কমবেশী একই হাল।

কোন কোন পত্রিকার খবর পড়ে বোঝার উপায় নাই তারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিক্ষোভের খবর দিচ্ছে, নাকি যানজট বা সাধারন মানুষের দুর্ভোগের সংবাদ জানাতে চায়। যানজট হয়েছে সত্য, সাধারণ মানুষের ভোগান্তিরও শেষ নাই। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর বাতাসের আর্দ্রতার কারণে শেষ ভাদ্রের ভ্যাপসা গরম। সাধারণ মানুষের প্রচণ্ড কষ্ট হয়েছে। খবর হিসাব (আরো পড়ূন)

জরিপের রাজনীতি

ইন্টারনেশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট ( বা আই আর আই) বাংলাদেশে অফিস খুলেছে ২০০৩ সালে। কী চায় তারা বাংলাদেশে? তাদেরই দাবি, তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে চায়। কিভাবে তারা সেটা করবে? আমরা অসভ্য, গণতন্ত্র বুঝি না, গণতান্ত্রিক আচার আচরণ করি না, অতএব তারা আমাদের গণতন্ত্রের ট্রেনিং দেবে। তার জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ দেবে তারা।

সকলকে দেবে কি? যেমন ধরুন আওয়ামি লীগ, বিএনপি কিম্বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলকে? ধরুন তারা খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা কিম্বা এই স্তরের নেতা নেত্রীদের গণতন্ত্রের ট্রনিং দিল। তাতে খারাপ কি? না এটা তাদের উদ্দেশ্য নয়। দিলে খারাপ কি ভালো হোত জানি না, পাঠকগণ নিজেরা নিজেদের বুদ্ধি মোতাবেক ভেবে নেবেন। কিন্তু ইন্টারনেশনাল রিপাবলিক (আরো পড়ূন)

স্বাস্থ্য, চিকিৎসা এবং উপনিবেশবাদ

অনুবাদকের ভূমিকা: ফ্রাঁনৎস ফাঁনোর জন্ম মার্তিনিক (Martinique)-এর রাজধানী ফোর্ট দে ফ্রান্স (Fort-de-France) শহরে, ১৯২৫ সালের ২০ জুলাই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফাঁনো ফরাসি মুক্তিবাহিনীর কালোসেনাদের ইউনিটে যোগ দেন। যুদ্ধের পর লিয়ন (Lyon)-এ ডাক্তারি পড়তে যান ফাঁনো। সেখানেই মনোবিজ্ঞান ও মানসিক রোগ বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেন তিনি। লিয়নেই প্রথম তার সাথে স্ত্রী জোসি (Marie-Josephe Duble´Josie)-এর সাথে পরিচয় হয়। সেখানেই তারা বিয়ে করেন। ১৯৫৩ সালে মনোরোগবিদ্যা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভের পর ফাঁনো আলজেরিয়াতে যান। সেখানে থাকেন তিন বছর। এরপর তিউনিস, ঘানা হয়ে চিকিৎসার জন্য সোভিয়েত রাশিয়ায় যান ১৯৬১ সাল (আরো পড়ূন)

ক্ষমতাসীনদের অভ্যন্তরে চার দ্বন্দ্ব

ক্ষমতাসীনদের প্রতিপক্ষ যেখানে নির্জীব এবং দমন পীড়নে পর্যুদস্ত তখন হঠাৎ রাজনীতি আবার অস্থির হয়ে উঠেছে। বাইরে থেকে দেখেএকে ক্ষমতাসীনদের নিজেদের ভেতরকার বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব বলে পত্রিকায় কেউ কেউ বলেছেন -- এরফকমই সন্তবত দেখেছি। এই মূল্যায়ন অবশ্য সস্তা, কারণ একথা ক্লাস সেভেনে পড়া ছেলেটিও বলতে পারে। বিরোধী দলের সাড়াশব্দ নাই, এই ফাঁকে নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে -- এই সস্তা ব্যাখ্যায় আমাদের বিশেষ আগ্রহ নাই। কীসে আগ্রহ সেই প্রশ্নে যাবার আগে ক্ষমতাসীনদের অন্তর্দ্বন্দ্ব কিভাবে প্রকাশিত হচ্ছে আমরা তার একটা তালিকা করবার চেষ্টা করি।

প্রথমে হাজারীবাগের ছাত্রলীগ নেতা আরজু ও মাগুরায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজিবরের ‘ক (আরো পড়ূন)

আসুন গোড়ার কথা বলি

এক

দৈনিক যুগান্তরে গত সপ্তাহে ‘আয়নায় মুখ দেখা’ লেখাটি ছাপা হবার পর একজন পাঠক আমাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন (এই লিঙ্কেও লেখাটি পড়তে পারেন)। তাঁকে ধন্যবাদ। চিঠিতে তিনি নাম উল্লেখ না করে ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর প্রকাশিত একটি লেখার অংশ উদ্ধৃত করে আমাকে প্রশ্ন করেছেন, আমি এই লেখকক (আরো পড়ূন)

আয়নায় মুখ দেখা

‘নির্বাচনই গণতন্ত্র’ – এই ধরণের একটি ধারণার প্রকট প্রাবল্য বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে আমরা দেখেছি। তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদে নির্বাচন নিয়ে যে তামাশা জনগণ দেখেছে সে কারণে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের সম্পর্ক নিয়ে কিছু কিছু ভাবনা শুরু হয়েছে বটে, কিন্তু আমার অনুমান সেটা খুবই ক্ষীণ। রাষ্ট্র নামক ব্যাপারটা আসলে কী, তা নিয়ে আমাদের সমাজে আলোচনা নাই বললেই চলে। একটি সর্বগ্রাসী প্রতিষ্ঠানের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়ে যাওয়া এবং তা একজন ব্যাক্তির কুক্ষিগত হওয়া  বিপজ্জনক। একদিকে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার প্রতিষ্ঠান আর অপরদিকে ক্ষমতাহীন সাধারণ মানুষ -- তাদের জীবন ও জীবিকার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সামাজিক সুযোগগুলোও নষ্ট ও নস্যাৎ করে দেওয় (আরো পড়ূন)

রাষ্ট্রের নজরদারির বিরুদ্ধে সাহস: ডেভিড ডরমিনোর ভাস্কর্য

বাংলাদেশে আমরা খালি খারাপ রাজনৈতিক দশার ফেরে পড়ি নি, মন্দ শিল্প ভাবনার রাহু গ্রাসেও পড়েছি, ফলে শিল্পকলা কিভাবে ক্ষমতা ও রাজনীতির কেন্দ্রীয় প্রশ্নকে নিজের বিষয়ে পরিণত করে সে সম্পর্কে এখন আর খোঁজ খবরও বিশেষ রাখি না। এমন কিছু ঘটলে তার অর্থ বুঝে ওঠাও কঠিন হয়।

সম্পতি বার্লিনে ইতালীয় ভাস্কর ডেভিড ডরমিনোর একটি ব্রোঞ্জ ভাস্কর্যের উন্মোচন হোল। সিম্পল কিন্তু দারুন। তিনজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে চেয়ারের ওপর, চার নম্বর চেয়ারটি ফাঁকা। ওর ওপর দাঁড়িয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে বলবেন। দাঁড়ি (আরো পড়ূন)

রাজন আমাদের কাউকে ক্ষমা করবে না

আর ক’দিন পরেই ঈদ। পুরো এক মাস সিয়াম সাধনার পর সব মানুষের জন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঈদ খুশি বয়ে আনে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই ঢাকা শহরে ঈদের বাজারের জন্য রাস্তায় বের হওয়া যায় না, ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকা লাগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, টেলিভিশনে ইফতারের আয়োজনে নানা সু-স্বাদু খাবারের ছড়াছড়ি দেখানো হয়, ঈদের বাজারের দামি দামি কাপড় কেনাবেচার প্রতিবেদন দেখানো হয়। তখন বোঝা যায়, রমজান মাস চলছে। সামনে ঈদ। এদেশে আনন্দের সীমা নেই। তার ওপর বিশ্বব্যাংক বলে দিয়েছে, বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেছে, শিগগিরই মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে যাবে। সবাই সুখে আছে! সুখে থাকবে। ক্রিকেট খেলার জয়ে উল্লসিত বাংলাদেশের তরুণরা, মিরপুর স্টেডিয়ামে তাদের ভিড় লক্ষণীয়। আমরা তো তাই চা (আরো পড়ূন)

আদালতের মর্যাদা রক্ষা করুন

কর্তৃত্ব থাকলেই ব্যবহার ঠিক না

‘আদালত অবমাননা সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ ও আদালতের রায়ে ‘আদালতের কর্তৃত্ব’ (authority) নিয়ে একটা কথা উঠেছে। এর অর্থ কী আসলে? এই প্রসঙ্গে ‘আদালতের কর্তৃত্ব ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে একটি লেখা লিখেছিলাম। চিন্তা ওয়েবে তা খানিক সংস্কার করে তোলা আছে।

সেখানে দেখিয়েছিলাম জনগণকে বাদ দিয়ে কিম্বা জনগণের উর্ধে ‘আদালতের কর্তৃত্ব’ নামক বিমূর্ত বা ঐশ্বরিক কোন ক্ষমতা নাই। আদালত জনগণের অভিপ্রায়ের অধীন আর সেই অভি (আরো পড়ূন)

আদালতের কর্তৃত্ব ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা

'আপনারা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন' --- আদালতকে ডা. জাফরুল্লাহ্‌  চৌধুরী

বাংলাদেশের সংবিধান ঘোষণা করে যে 'চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হইল' [গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুচ্ছেদ ৩৯ (১)]। প্রশ্ন হচ্ছে, আদালত কি নাগরিকদের এই সাংবিধানিক অধিকার হরণ করতে পারে? উত্তর হচ্ছে, না। যদি তা করে তাহলে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করবার কারণে আদালত নিজেই নিজের সাংবিধানিক কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ণ করে ফেলে।

আদালত পুলিশও নয়, মিলিটারিও নয়, কিম্বা নির্বাহী প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক দলও নয় – তাহলে ‘আদালতের কর্তৃত্ব’ (আরো পড়ূন)

রাজনীতি, সংবিধান ও সেনাবাহিনী

বিরোধী জোটের রাজনৈতিক কৌশলের ব্যর্থতা ও দুর্দশা নিয়ে প্রায়ই অনেককে কথা বলতে শুনি। নানান জনে নানান কারনের কথা বলেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেইসকল মন্তব্য অকাজের। অর্থাৎ বিশ্লেষণ বলি কিম্বা ভবিষ্যতে বিরোধী দলের কি করা উচিত সেই ঔচিত্যের ক্ষেত্র থেকে বলি – লক্ষ্যহীন বাগাড়ম্বর কোন কাজে আসে না।

তাহলে এক কথায় বিরোধী রাজনীতির কৌশলগত ব্যর্থতার সারমর্ম কিভাবে করা যায়! এর উত্তর মিলবে যদি প্রশ্ন করি বিরোধী দল আসলে কি চেয়েছিল? তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়েছিল। ভাল কথা। কিন্তু পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেবার কোন ইচ্ছা তার নাই। অতএব তার কোন সম্ভাবনাও নাই। বি (আরো পড়ূন)

মোদির বাংলাদেশ নীতি: প্রণববাবুর আলখাল্লা গায়ে সফর

মোদির সফর শেষ হয়েছে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে। মোদি নিজে আগাম অনুমান করে বলেছিলেন তাঁর ফেরত যাবার পরে এই সফর নিয়ে চর্চা শুরু হবে। তা তো অবশ্যই হবে, হচ্ছেও। এগুলোর সার কথা হচ্ছ্‌ দেনা পাওনার দিক থেকে। “হিসাব কিতাবে মোদির দিকেই পাল্লাই ভারি”-- এই সফর শেষে এটাই আমরা শুনছি। এটা না হবার কোন কারণ নাই। সাত তারিখ দিন শেষে রাত বারোটায় (আইনত আট তারিখের শুরুতে )সংবাদ পর্যালোচনায় চ্যানেল আই টিভিতে এসেছিলেন ভারতের দৈনিক টেলিগ্রাফ পত্রিকার এক বাঙলি সাংবাদিক, দেবদ্বীপ পুরোহিত। তিনিও বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছিলেন বাংলাদেশ সবকিছুই দিচ্ছে, এটা একপক্ষীয় লেগেছে তাঁর কাছেও। তিনি বলছিলেন বাণিজ্যিক স্বার্থের দিক থেকে কিছু দেয়া আর বিনিময়ে কিছু পাও (আরো পড়ূন)

গোরস্থানে মৃতদের দেশে আছি !

এই লেখাটি যেদিন ছাপা হবে সেইদিন ২৬ তারিখ। আমার মনে হয় না এই দিনটির কোন গুরুত্ব আমাদের কাছে আছে। মনে হয় কবরস্থানে আছি। নিজের নিঃশ্বাসকেও নিঃসাড় মনে হয়। অথচ বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই দিনটির গুরুত্ব অসামান্য। ব্যবহারিক রাজনীতি ও নৈতিক অবস্থান দুই দিক থেকেই।

২৬ জুন নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস। বিভিন্ন দেশে যাঁরা নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাঁদের প্রতি সংহতি জানাবার জন্য প্রতিবছর সারা বিশ্বে এটা পালন করা হয়। শুধু মানবাধিকার সগঠন এই দিনটি পালন করে তা নয়, আদর্শ ও কর্মসূচির কারনে যে সকল রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও নির্যাতনের শিকার হয় তারাও সেটা পালন করে। এমনকি ক্ষমতাসীন দলগুলোও তাদের ভাবমূর্তি অক্ষূণ্ণ রাখবা (আরো পড়ূন)

ভবে মানুষগুরু নিষ্ঠা যার সর্বসাধন সিদ্ধ হয় তার

ভবে মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার
সর্ব সাধন সিদ্ধ হয় তার
  –  ফকির লালন শাহ

মুক্তচিন্তা, বিজ্ঞানমনস্কতা, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বাংলাদেশে যে ‘বিজ্ঞানবাদিতা’ জারি রয়েছে তার সমালোচনা করে দৈনিক যুগান্তরে ‘বিজ্ঞান চাই, বিজ্ঞানবাদিতা চাই না’ শিরোনামে একটি লেখা লিখেছিলাম। এরপর এ ধরনের লেখা লিখবার জন্য অপরিসীম সাড়া পাই। বিশেষত তাদের কাছ থেকে যারা বয়সে কম অথচ চিন্তা করতে ভালবাসে। কোন ‘মত’-কেই যারা বিচার ছাড়া মেনে নিতে রাজি না। স্রেফ মত প্রকাশের অধিকার কিম্বা স্বাধীনতার তর্কের জায়গা থেকে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনত কিম্বা অন্যের কথা বল (আরো পড়ূন)

মোদি বাংলাদেশে আসছেন, তাতে কী!

এক এগারো ও দিল্লী

বাংলাদেশ ভারতের কাছে কী? মুঠোয় থাকা খেলনা? বিড়াল যেমন ইঁদুর নিয়ে খেলে সেই রকম কোন তুলতুলে খেলনা ইদুর? মানে ঠিক প্রাণহীন প্লাস্টিকের খেলনা নয়। বিড়ালের সামনে ইঁদুরের প্রাণে নিয়ে দাঁড়ানো খেলা? তাই কী?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিজেপির নরেন্দ্র দামোদর মোদি বাংলাদেশ সফরে আসছেন আগামি ৬-৭ জুন ২০১৫; তারিখটা এখন সরকারিভাবেও নিশ্চিত করা হয়েছে। কোন পরিপ্রেক্ষিত থেকে এই সফরকে আমরা দেখব সেই তালিকা অনেক লম্বা হবে। কোন একদিক থেকে শুরু করা যাক।

এক এগারোর এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের মাইনাস টু ফর্মুলার কথা সকলে শুনেছি। দুই দলের দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা (আরো পড়ূন)

গুম, সালাহ উদ্দিন ও  দিল্লির দায়

গত পাঁচদিন ধরে বিএনপির মুখপাত্র সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন্দ্র করে  তিনটা শব্দ মিডিয়া ছেয়ে রেখেছে – মেঘালয়, সালাহউদ্দিন আর খোঁজ। যারা সালাহ উদ্দিনকে গুম বা ‘নিখোঁজ’ করে রেখেছিলেন বলা বাহুল্য তারাই এ’বিষয়টায় সবচেয়ে ভাল জানেন ও বলতে পারবেন। ফলে তারাই তো সবার উপরে সালাহ উদ্দিনের খোঁজ প্রসঙ্গে নির্ভরযোগ্য সোর্স। কিন্তু বুঝা যাচ্ছে তাঁরা সেটা চাচ্ছেন না। বলাই বাহুল্য তাদের পক্ষে সোর্স হবার মত পরিস্থিতি নাই, হওয়াটা নতুন বিপদেরও। অথচ সালাহ উদ্দিনের যে “খোঁজ পাওয়া গেছে” এটা তারা রাষ্ট্র করতে চান, করা দরকার বোধ করছেন। তাই আমরা লক্ষ্য করলাম ‘‘খোঁজ’ পাবার পর’ প্রথম দুদিন সালাহ উদ্দিন সম্প (আরো পড়ূন)

নববর্ষ ও নারী নির্যাতন: রাষ্ট্র ও সরকারের দায়

একজন নয়, দুইজন নয় অনেক নারী একত্রে বিবস্ত্র ও শ্লীলতাহানীর শিকার হয়ে এবারে নতুন বছর শুরু হয়েছে। তাও হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে, টিএসসি এলাকায়, রাজু ভাস্কর্যের কাছাকাছি। এখানে পয়লা বৈশাখ উদযাপনের অনেক আয়োজন ছিল, তাই জনগণের ভিড় ছিল। ঢাকাবাসীরা নিরাপত্তা দেয়া আছে জেনে পরিবার নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে নারীদের ওপর যে বর্বর হামলা হয়েছে তার জন্য ঘৃণা প্রকাশের ভাষাও আমরা হারিয়ে ফেলেছি। পুলিশের বেস্টনীর মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটেছে, নির্জন কোন জায়গায় নয় শত শত মানুষের ভিড়ে । এই ধরণের কুৎসিৎ ও নির্লজ্জ ঘটনা ঘটার পরও নীরব দর্শক হয়ে থেকেছেন অনেকেই, যারা বাঁচাতে এসেছেন তাদের ওপরও হামলা হয়েছে। হা (আরো পড়ূন)

পুরুষতান্ত্রিক প্রতীক ও নারী প্রার্থীর অবমাননা  

অনেকদিন পর ঢাকা শহরে নির্বাচন হচ্ছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এতে শুধু মেয়র নয়, প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচনও করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে এখন যে পোস্টার, ব্যানার দেখছি তা শুধু মেয়রদের জন্য নয়, ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মধ্যেও বেশ সাড়া জাগিয়েছে। নারী প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর হওয়ার বিধান আছে, যদিও সাধারণ কাউন্সিলর হিসেবে কোনো নারীর প্রার্থী হবার ক্ষেত্রে আইনগতভাবে কোনো বাধা নেই। নারীদের মধ্যে অনেক যোগ্য প্রার্থী আছেন, যারা নাগরিক সেবা দেয়ার জন্য কাজ করতে চান। কিন্তু নারী প্রার্থীদের এবার প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যে পশ্চাৎপদ, পুরুষতান্ত্রিক ও নারীর প্রতি অবমাননাকর আচরণের পরিচয় দিয়েছেন তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো (আরো পড়ূন)

চিনের বিশ্বব্যাংক: বিশ্ব অর্থনীতির চৈনিক মোড়

দ্বিতীয় কিস্তি

চলতি শতকের প্রথম দশক (২০০১-১০)থেকেই দুনিয়া জুড়ে নানান ঘটনায় বারবার আলামত ফুটে উঠছিল যে বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে এক মহা-ওলটপালট আসন্ন। দুনিয়া জুড়ে পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্কের বিস্তৃতি ও পুঁজির পুঞ্জিভবন ভবন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যে বিশ্বযজ্ঞ চলেছে তাকে এক কথায় আন্তর্জাতিক পুঁজির তৎপরতার বলা হয়। সেই তৎপরতা পুঁজির নিজস্ব স্বভাবের অধীন। তার কার্যকারণ নৈর্ব্যক্তিক -- মানুষের ইচ্ছাধীন নয় – একথা অনেক রথী মহারথী বলে গিয়েছেন। এদের মধ্যে কার্ল মার্কস অন্যতম। তাঁর লেখালিখির মধ্য দিয়ে মানুষের ইচ্ছার বাইরের পুঁজির এই বিশ্ব ব্যাপী চলন ও বিচলনের কার্যকারণকে ‘পুঁ (আরো পড়ূন)

চিনের বিশ্ব ব্যাংক: বিশ্ব অর্থনীতির চৈনিক মোড়

প্র থ ম  কি স্তি

দুনিয়ার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সাধারণত ‘গ্লোবাল ইকনমিক অর্ডার’ নামে আলোচনা করা হয়, সেই ব্যবস্থার মধ্যে রূপান্তরের চিহ্নগুলো বহুদিন ধরেই ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছিল। গত সাত বছর ধরে সেই ব্যবস্থার মধ্যে একটা ‘মোচড়’-এর কথা বলে আসছিলাম আমরা। এই মোচড়ানি বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ঠিক ভেঙ্গে পড়ার অভিমুখি নয় বরং কাঁধ বদল অথবা আরেক কাঁধে মাথা রেখে পুরা ব্যবস্থার পাশ ফিরে শোয়া বলা যায়। এই পাশ ফিরে শোয়ার পরিণতিও নানান দিক থেকে  বিরাট বদল ঘটাতে পারে। এই প্রসঙ্গে এ বিষয়ে প্রথম কিস্তি পেশ করা হোল।

(আরো পড়ূন)

আধুনিকতা, প্রগতি ও সহিংসতা

বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মানুষের গুম হয়ে যাওয়া, কারো কারো লাশ হয়ে প্রত্যাবর্তন আর অনেকের চিরতরে হারিয়ে যাওয়া, পুলিশি হেফাজতে অহরহ হত্যা ইত্যাদি বাংলাদেশে দৈনন্দিনের চিত্র হয়ে উঠেছে। এই ধরণের পরিস্থিতিতে কিছু লেখালিখি করা বিপজ্জনক। একটি অবস্থান হচ্ছে মানবাধিকার রক্ষার দাবি। এই অবস্থানের অনুমান হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমর্থন ও নিরাপত্তার ছায়ায় দাঁড়িয়ে এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা। মানবাধিকার ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনমত রয়েছে। মানবাধিকার রক্ষার জন্য বিবিধ আন্তর্জাতিক ঘোষণা, সনদ ও অঙ্গীকারও কম নাই; ফলে মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্ন কমবেশী আন্তর্জাতিক বিধিবিধান হিসাবে স্বীকৃত। মানবাধিকার কর্মীদের জন্য আন্তর্জাতিক (আরো পড়ূন)

বিজ্ঞান চাই, বিজ্ঞানবাদিতা চাই না

আমরা নিত্যদিন পৃথিবীকে সূর্যের চারদিকে ঘুরে আসতে দেখি; সূর্য পূব আকাশে ওঠে, আর বিকালে পশ্চিমে ডুবে যায়। হ্যাঁ, ‘ডুবে’ যায়। বিকালে সুর্যের কি ঘটে তার অভিজ্ঞতাটা কোন কিছু পানিতে ডুবে যাবার মত। লাল হয়ে আছে সন্ধ্যার আকাশ, আর দিগন্ত রেখার নীচে ডুবে যাচ্ছে সূর্য ! ডুবে যাওয়া কথাটা সূর্য সম্পর্কে খাটে কিনা তর্ক হতে পারে। কিন্তু অভিজ্ঞতার জগতে ‘ডোবা’ বা ‘ডুবে যাওয়া’ নামক একটা ব্যাপার আছে যাকে বিকালে পশ্চিমাকাশে সূর্যের নিষ্ক্রান্ত হবার ঘটনাকে উপলব্ধি ও ব্যক্ত করতে ব্যবহার হয়; আমরা ব্যবহার করি।

বিজ্ঞান বলে, এটা ঠিক না। সূর্য 'ডোবে' না। আমরা পশ্চিমের কোন দেশে গেলে দেখব সূর্য ডোবে নি। আরও দূরে গেলে দেখব সূর (আরো পড়ূন)

সংকট পেরুবো কিভাবে?

বিভাজন, বিভক্তি ও নির্মূলের রাজনীতির বিপদ

অন্ধ হয়ে রাজনৈতিক বিভাজন ও বিভক্তি রেখা যেভাবে আমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে টেনে দিচ্ছি এবং ভিন্ন চিন্তাকে দুষমণ গণ্য করে তাকে নির্মূল ও কতল করবার জন্য পরস্পরের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছি তার পরিণতি সহিংস ও আত্মঘাতী হতে বাধ্য। বাংলাদেশের জন্য সেটা ইতোমধ্যেই মারাত্মক হয়ে উঠেছে। শুনতে অনেকের ভাল নাও লাগতে পারে -- এই বিভাজন ও বিভক্তি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে বিলয়ের দিকে নিয়ে যাতে পারে। অবশ্য বিশ্বে আমরা এখন টিকে আছি শুধু সস্তা দাসের দেশ হিসাবে। সেটা একদিকে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জীবনের বিনিময়ে -- তাদের পুড়িয়ে কিম্বা জ্যান্ (আরো পড়ূন)

রাজনৈতিক পরিসরে রাজনৈতিক সমাধানই কাম্য

শেখ হাসিনা ধমক দিয়েছেন!

শেখ হাসিনা ধমক দিয়েছেন। শুনতে মন্দ লাগতে পারে, কিন্তু সংবিধানকে ব্যবহার করবার ইচ্ছা নিয়ে তিনি যেভাবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী করেছেন তাতে এই ধরনের ধমক অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই’। বলছেন, খালেদা জিয়াকে। তাঁর ধারনা উত্তরপাড়া থেকে কেউ এসে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন। এরপর বলেছেন, “ তিনি যাদের নিয়ে ভাবেন, তারাও জানে এভাবে ক্ষমতায় এলে পরিণতি কী হয়। অতীতে যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদেরও খারাপ পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। অনেককে দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছে। সংবিধান লঙ্ঘন করে কেউ ক্ষ (আরো পড়ূন)

জয়শঙ্করের সফর

দুটো ইস্যু

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট কোনদিকে সে অভিমুখের পরের স্তর শুরু হতে যাচ্ছে আগামি দুই মার্চ। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রাহ্মনিয়াম জয়শঙ্কর আগামি দুই মার্চ একদিনের বাংলাদেশ সফরে আসছেন। কুটনৈতিক পাড়ার জোর অনুমানের ওপর তৈরি খবর হল জয়শঙ্কর যা বয়ে আনছেন তা কেবল ভারতের কথা নয় বরং তা একই সাথে আমেরিকা ও ইউরোপের সাথে ভারতের অবস্থান মিলিয়ে সমন্বিত অবস্থান। সে অবস্থানেরই বাহক তিনি। এর মানে হল, জয়শঙ্করের সফরটা ভারত-বাংলাদেশের রুটিন সফর বা অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে কোন আলোচনা নয়। বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে আসার ছলে সাইড টক হিসাবে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে পশ্চি (আরো পড়ূন)

মহামান্য আদালত, বাংলা বলুন, বাংলায় রায় লিখুন

আদালতে বাংলা ভাষা পুরাপুরি প্রবর্তন না হবার অর্থ সাধারন ভাবে আদালত, তবে বিশেষ ভাবে উচ্চ আদালত সংবিধান মানেন না এবং নিজেদের সংবিধান ও প্রজাতন্ত্রের অধীন গণ্য করেন না। উচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে এই আভিযোগ গুরুতর, হাল্কা ভাবে নেবার কোন উপায় নাই।  সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদে ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা’ লিখিত থাকবার পরেও সংবিধান আদালতের জন্য কোন বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি। উচ্চ আদালতে বাংলার প্রচলন হয় নি। আদালত সংবিধান উপেক্ষা, অস্বীকার বা ভঙ্গ করতে পারে এই দৃষ্টান্ত বিচারব্যবস্থা ও রাষ্ট্র উভয়ের জন্য বিপজ্জনক। এর জন্য উচ্চ আদালতকে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় নি বা হয় না। এই বাস্তবতা আমরা কী ধরণের রাষ্ট্র তৈরি করেছি তার একটি ভাল লক্ষণ। (আরো পড়ূন)

মমতা ভাসল পানিতে ইলিশে, বাঙালির বেগুন নাই

পশ্চিম বঙ্গের মূখ্য মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বাংলাদেশে এসে ঘুরে গেছেন। তাঁর ৪০ জনের বেশি সফর সঙ্গীর মধ্যে ছিলেন কবি সুবোধ সরকার,চলচ্চিত্র নির্মাতা গৌতম ঘোষ ও ব্রাত্য বসু,অভিনেত্রী মুনমুন সেন,অভিনেতা প্রসেনজিৎ,দীপক অধিকারী (দেব)ও অরিন্দম শীল,কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা ঘোষ ও ইন্দ্রনীল সেন,কবি কাজী নজরুল ইসলামের পুত্রবধূ কল্যাণী কাজী। এ ছাড়া ছিলেন শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া ও সঞ্জীব গোয়েঙ্কা এবং একদল সাংবাদিক। ভারতীয় সাংবাদিকরা এই সফর নিয়ে কি লিখছেন আমি সে প্রসঙ্গে যাব না। বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় যা উঠেছে এবং টিভি চ্যানেল যেভাবে কভার করার জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তাতে মনে হয়েছে এবার সরকারের একুশে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচিটাই মমতা-কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। সারাদিন মমতা (আরো পড়ূন)

মমতার বাংলাদেশ সফর ও প্রত্যাশা

পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঢাকা সফরে এসেছেন। এমন সময়ে তার আসা যখন আমরা বিরাট রাজনৈতিক সংকট, অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। এই সংকটে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে জানতে আমরা আগ্রহী, বিশেষত দিল্লি আর কলকাতার অবস্থানের ঐক্য ও পার্থক্য আমরা বুঝতে চাই। বলা বাহুল্য, এখানে ভুল করার বিশেষ কোন অবকাশ নাই যে মমতা একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোন প্রতিনিধি নন, প্রতিনিধিত্ব তিনি করছেনও না, করার সুযোগও নাই। তাহলে মমতার এই সফরের প্রয়োজন দেখা দিল কেন?

এর দুটো দিক আছে। এক, হাসিনা সরকার কেন মমতার সফরে আগ্রহ দেখালেন? আর দুই, মমতা এই সফর কেন প্রয়োজন মনে করলেন? এই দুটো বিষয় নিয়ে আমরা এখানে কথা তুলব।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন (আরো পড়ূন)

মওলানা ভাসানী ও নতুন বিপ্লবী রাজনীতি

 ভাসানী আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন বহু বছর হোল। ইতিমধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে পড়েছে, চিন পুঁজিতান্ত্রিক অর্থনীতির পথ ধরেছে এবং পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার যে সকল দোষ আছে সেইসব বহন করবার পরেও অর্থনৈতিক সাফল্য বা বিপুল হারে ‘প্রবৃদ্ধি’দেখিয়ে দুনিয়ায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে।। এই সাফল্য রাজনৈতিকও বটে। এই অর্থে যে চিনের কমিউনিস্ট পার্টিকে উৎখাত করে চিনের পুঁজিতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটে নি। কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় বহাল তবিয়তেই আছে। শুনতে স্ববিরোধী হলেও কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে পুঁজিতান্ত্রিক রূপান্তর বা লেনিনের ভাষায় বলা যায় শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্কের ‘দ্রুত ও ত্বরান্বিত’ বিকাশ ঘটেছে। যারা সরাসরি মার্কস বা লেনিন (আরো পড়ূন)

'সবুজ' ভাসানি ,লাল 'ভাসানি' ?

‘কুকুর চিল্লায়, কিন্তু কাফেলা থামে না, কারন তাকে চলতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে সামনে, সম্মুখের গন্তব্যে।'
- একটি প্রাচীন আরবি প্রবাদ

সতেরো নভেম্বর ১৯৭৬ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তিনি জন্মেছিলেন ১২ ডিসেম্বর ১৮৮০ তারিখে। তাঁর জন্মদিন বা মৃত্যুদিন নিয়ে বাংলাদেশে কখনই বড় কোন আয়োজন চোখে পড়ে নি। এমনকি অনেক সময় দেখেছি তার জন্মদিন ও মৃত্যুদিন খুবই নীরবে পার হয়ে গিয়েছে।

বাঙালি বা বাংলাদেশীদের সম্পর্কে যে অভিযোগ সাধারণত শোনা যায় সেটা সত্য বলেই মনে হয়। যেমন, এরা এমন এক জনগোষ্ঠি যারা প্রবৃত্তি ও আবেগের জগত ত্যাগ করে স্মৃতি, বুদ্ধি, বিচার ও কল্পনার (আরো পড়ূন)

সংবিধান নয়, জনগণের অভিপ্রায়ই শেষ কথা

পাঁচই জানুয়ারির নির্বাচন আদর্শ নির্বাচন ছিল না; এ বিষয়ে সমাজে কোনো বিতর্ক নাই। ক্ষমতাসীনরা শুরুতে বলতেন নির্বাচন ছিল সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, তবে বিরোধী দল অংশগ্রহণ না করায় একে আদর্শ নির্বাচন বলা যায় না। তারা অচিরেই আরেকটি নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটা তারা আর মানেন নি। প্রতিশ্রুতি পালন করার কোন নৈতিক কিম্বা রাজনৈতিক দায়ও বোধ করেন নি। বরং আরও পাঁচ কি দশ বছর পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন বলে অহংকারী হয়েছিলেন। ভাষা, কথা বলার ধরন ও শরীরের ভঙ্গি দিয়ে ক্ষমতাসীনরা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন শেখ হাসিনা বুঝি চিরকালের জন্যই ক্ষমতায় এসেছেন। সমাজে এর প্রতিক্রিয়া হয়েছে মারাত্মক নেতিবাচক। এই বছরের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনযাত্রার অচ (আরো পড়ূন)

বাংলাদেশে গণতন্ত্রঃ দিল্লি-ওয়াশিংটনের নতুন সম্পর্কের আলোকে

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র পরিচালক ফিল রেইনার (Phil Reiner) গত ৩ জানুয়ারি এক প্রেস কনফারেন্স আয়োজন করেছিলেন। বিষয় ছিল সদ্য সমাপ্ত ওবামার ভারত সফর সম্পর্কে প্রেসকে অবহিত করা। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস ২৬ জানুয়ারি। এ বছরের প্রজাতন্ত্র দিবস অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে ওবামা ২৫-২৭ জানুয়ারি ভারত সফরে এসেছিলেন। ফিল রেইনার ওবামার ভারত সফরে সঙ্গী ছিলেন। স্বভাবতই ঐ প্রেস কনফারেন্স ছিল মূলত ভারত সফরে ওবামার তাৎপর্য বিশেষত অর্জনগুলো তুলে ধরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেইটের ওয়েবসাইটে রেইনারের প্রেস কনফারেন্সটিকে সেই ভাবেই পেশ করা হয় (আরো পড়ূন)

অধঃপতন নাকি উল্লম্ফন?

দুই হাজার পনেরো সালের জানুয়ারির ৫ তারিখ বাংলাদেশের ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ কারন এই দিনে দীর্ঘকাল ধরে জমে থাকা সমাজের নানান স্তরের দ্বন্দ্ব-সংঘাত মীমাংসার অতীত রাজনৈতিক বিরোধের রূপ নিয়ে ক্রমে ক্রমে মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশের অতীতের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের তুলনায় এই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নতুন। এর মীমাংসা সহজ নয়।

একদিক থেকে একে বাংলাদেশের গভীর গহ্বরে পতন হিসাবে বিবেচনা করা যায়, অন্যদিক থেকে, গর্ত যতো গভীরই হোক উল্লম্ফনের পথটিও ঐতিহাসিক দূরদৃষ্টির প্রতিভা আমাদের দেখিয়ে দিতে পারে যদি ঐতিহাসিক পর্যালোচনার অভিজ্ঞতা দিয়ে এই গর্ত কিভাবে আমরা একাত্তরের পর থেকে নিজেরাই খনন করে চলেছি বুঝতে পারি (আরো পড়ূন)

বেঁচে থাকো বাংলাদেশ, বেঁচে থাকো, প্লিজ

গতকাল ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে সংসদে আওয়ামি লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার কথা শুনছিলাম। ‘যারপরনাই ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন’-এর মধ্য দিয়ে তিনি ‘প্রধান মন্ত্রী’, তাঁর ক্ষমতার বৈধতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অথচ তিনি তাকে আমলে নিচ্ছেন না। যার কুফল বাংলাদেশকে ভোগ করতে হচ্ছে।

‘যারপরনাই ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন (extremely flawed election) আমার ভাষ্য নয়। বিদেশিদের মূল্যায়ন। যুক্তিসঙ্গত কারনেই আন্তর্জাতিক মহলে ‘যারপর নাই ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন’-এর মধ্য দিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদও  আদৌ বৈধ সংসদ কিনা সে বিষয়ে ঘোর সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে অবৈধ সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, এক শ্রেণির গণমাধ্যমের নির্বিচার (আরো পড়ূন)

‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ বিতর্ক

সম্প্রতি দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়াশান মিলনায়তনে ২৮ জানুয়ারি তারিখে ‘চলমান জাতীয় সংকট: উত্তরণের পথ’ শীর্ষক একটি সভায় 'জাতীয় ঐকমত্যের সরকার' গঠন এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব করেছেন। সেই সভায় বিচারপতি আব্দুর রউফ, খোন্দকার মাহবুব হোসেন, লে: কঃ (অঃ) মোহাম্মদ সেলিম, রুহুল আলম গাজী সহ আরও অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে আমাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তার জন্য তাঁকে ও সভার উদ্যাক্তাদের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। দৈনিক পত্রিকায় এ (আরো পড়ূন)

গণআন্দোলন ও নতুন সরকার

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিত নিয়ে কমবেশী সবাই চিন্তিত, চলমান সংকটের অনিশ্চয়তা থেকে থেকে বেরুবার পথ স্পষ্ট নয়। স্পষ্ট নয় এই অর্থে যে, একেবারে প্রাথমিক উপায় হিসাবে সকলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পরিবর্তনের সম্ভাবনা নাই, কিম্বা দেখা যাচ্ছেনা। রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক চরিত্র ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব যে আকার ধারণ করেছে, তাতে করে একটি নির্বাচন মোটেও কোনো অর্থপূর্ণ পরিবর্তন ঘটাবেনা। যদি ধরেও নেয়া হয়, অন্তত জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে এবং অর্থনীতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে আশু সমাধান নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা। তাও একমাত্র পূরণ হতে পারে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা বাধ্য হলে কিম্বা বিদায় নিলে।

কিন্তু কখন একটা (আরো পড়ূন)

শিষ্টাচারের নসিহত: বাচ্চালোগ তালিয়া বাজাও

বাংলাদেশ বিস্ময়কর দেশ। এই এক দেশ যেখানে পশ্চিমা মিডিয়ার বর্ণবাদী ও পুরুষতান্ত্রিক চিন্তার প্রাবল্যের জন্য পড়াশোনা জানা শিক্ষিত ভদ্রলোকরা বিশ্বাস করে বাংলাদেশের সকল নষ্টের গোড়া দুই বেগম। তাদের ভাষায় ‘ব্যাটলিং বেগামস’। সমাজে যারা শিক্ষিত, অভিজাত ও বুদ্ধিমান বলে পরিচিত তাদের এই বিশ্বাস কি করে এতো বদ্ধমূল হোল সেটা সমাজতাত্ত্বিক গবেষণার বিষয়। অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতির ইতিহাস এই সংকটের জন্য কতোটা দায়ী, কতোটা বাহাত্তরে রাষ্ট্র গঠনের ত্রুটি -- সেই দিকে তাদের কোন ভ্রূক্ষেপ নাই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের একমাত্র কারণ দুইজন মহিলা। ফলে কখন কিভাবে রাষ্ট্র যারপরনাই সন্ত্রাসী হয়ে নাগরিকদের সকল অধিকার হরণ করতে শুরু করেছে তার কোন হদিস নেওয়া ত (আরো পড়ূন)

পরিস্থিতির দায় ক্ষমতাসীনদের

দমন পীড়ন হত্যা, গুম খুন ও যৌথ বাহিনীর নির্মম ও নিষ্ঠুর অপারেশানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলের কর্মসূচি নস্যাৎ করবার যে চেষ্টা চালাচ্ছে, তা ক্ষমতাসীনদের আরও দুর্বল করবে। বিদেশ থেকে পরিচালিত একটি পোর্টালে পুরা পরিকল্পনার সমেত সংবাদ প্রচার হওয়ায় তেইশ তারিখ দুপুর থেকেই শুনছিলাম সরকার নিজেই একটি বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছে। যাতে তার পুরা দায় বিরোধী দলের উপর চাপিয়ে দেওয়া যায়। রাত্রে নয়টার দিকে ডেমরায় পেট্রল বোমা ও ককটেলে ৩৫ জন আরোহীকে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে। বার্ন ইউনিটকে ক্ষমতাসীনদের প্রচার-প্রপাগাণ্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করায় আসলে কারা এই ধরণের নির্মম ও অমানবিক ঘটনা ঘটিয়েছে সেটা জানা যাবে না। যারাই করুক তারা ক্ষমার অযোগ্য। দোষ, বলাবা (আরো পড়ূন)

মোদীর ভারত এবং বিশ্বে শক্তির ভারসাম্যে বদল (২)

পরাশক্তি হওয়ার নির্ণায়ক

কোন রাষ্ট্রের পরাশক্তি (সুপার পাওয়ার অথবা গ্লোবাল পাওয়ার) খেতাব পাবার নির্ণায়ক কি? অনেকের মনে হতে পারে পারমাণবিক বোমা বানানোর ক্ষমতা ও সে বোমা সংগ্রহে থাকলেই তাকে বোধহয় পরাশক্তি বলা যায়। এই ধারণার ভিত্তি নাই। তবু কারও কারও এমন ধারণা তৈরি হবার পিছনে কারণটা হল, কেবল পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা, যা নিঃসন্দেহে সামরিক সক্ষমতার একটা মাত্রা ও সেই মাত্রার প্রকাশ মাত্র, তাকে সামগ্রিক সামরিক সক্ষমতা বলে ভুল করা। মনে রাখতে হবে ভুলটা আদতে কেবল পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতাকে সামগ্রিক সামরিক সক্ষমতা বলে বুঝা। আবার পরাশক্তি ধারণা কেবল সামগ্রিক সামরিক সক্ষমতার প্রশ্ন নয়, সেই (আরো পড়ূন)

দেখলেই গুলি?

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় আমি একটি কবিতা লিখেছিলাম, ‘এরশাদ তোমাকে দেখা মাত্রই গুলি করবে’। সে রকম একটা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেই সময়। তখনই বুঝেছিলাম এটা মরণকামড়ের মতো। শেষ মূহূর্ত হাজির। সামরিক শাসকের হাত থেকে নিস্তার পাওয়া স্রেফ অল্পকিছু সময়ের ব্যপার মাত্র। তাই ঘটেছে। গতকাল দেখছি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, ‘একজন ব্যক্তি যদি বোমা ফাটায়, তাহলে পাঁচজন লোক নিহত হতে পারে। এ দৃশ্য কোনো বিজিবি সদস্যের নজরে এলে ওই বোমা বহনকারীকে ক্যাজুয়ালটি (হতাহত) করা তার দায়িত্ব।’ 

না, এটা তাঁর দায়িত্ব না। তাঁর দায়িত্ব সীমান্ত রক্ষা করা। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে বাং (আরো পড়ূন)

'আমরাও শার্লি'? হায় ইউরোপ !

ফ্রান্সে বেড়ে ওঠা ফরাসি নাগরিক দুই ভাই শরিফ কুয়াচি (Cherif Kouachi) ও সায়িদ কুয়াচি (Said Kouachi) অতর্কিতে শার্লি হেবদো পত্রিকায় হামলা চালিয়ে চারজন নামকরা কার্টুনিস্টসহ প্রায় বারোজন মানুষকে হত্যা করেছে। বিচ্ছিন্ন ভাবে বিচার করলে এটা, বলাবাহুল্য একটি হত্যাকাণ্ড। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে পাশ্চাত্যের পত্রিকাগুলোর খবর হচ্ছে হামলাকারীদের মুখে ‘আল্লাহু আকবর’ শ্লোগান শোনা গিয়েছে এবং এটাও শোনা গিয়েছে যে তারা বলেছে ‘নবীর অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছি’। হত্যাকারীদের ধরবার জন্য ফ্রান্সে রীতিমতো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তিনদিন ব্যাপী পরিচালিত এই অসম ও অস্বাভাবিক পুলিশি অপারেশানে শরিফ কুয়াচি ও সৈয়দ কুয়াচিকে প্রায় আশি হাজার ফরাসি পুলি (আরো পড়ূন)

৫ জানুয়ারির অবরোধঃ নগদ লাভ

৫ জানুয়ারি ২০১৫। নৈতিক ও সাংবিধানিক দিক থেকে অবৈধ সরকারের একবছর শেষ হোল। বিরোধী দলের কাছে দিনটি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’, আর ক্ষমতাসীনদের কাছে ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেউ কেউ ‘বিতর্কিত’ বলে কৌশলে ক্ষমতাসীনদের পক্ষালম্বন করে থাকেন। অথচ ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার যেমন কোন নৈতিক ভিত্তি নাই, তেমনি ‘প্রত্যক্ষ নির্বাচন’ ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনশ সদস্যের মধ্যে ১৫৩ জন অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে জাতীয় সংসদ গঠন অসাংবিধানিক। ক্ষমতাসীনদের নির্লজ্জ দালাল ছাড়া কোন সংবিধান বিশেষষজ্ঞই বলবেন না, শেখ হাসিনা সাংবিধানিক ভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। রফিকুল হক দেরিতে হলেও বলছেন, (আরো পড়ূন)

জিহাদ ও বাংলাদেশ: চাই জীবন্ত উদ্ধার

মাত্র সাড়ে তিন বছরের শিশু জিহাদ সারা দেশে কান্নার রোল তুলতে পেরেছে। সে কান্না এখনো থামে নি। শেষ পর্যন্ত জিহাদকে তোলা হোল, কিন্তু পাওয়া গেছে মৃত অবস্থায়। ছোট্ট ভেজা শরীরটা বিশেষ খাঁচার কারিগরি খাটিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্যোগে ওঠানো হয়েছে। ততক্ষণে ঘোষণা দিয়ে ফায়ার ব্রিগেড তার কাজ স্থগিত ঘোষণা করেছে। একজন মন্ত্রী বলেছেন, কেউ ওয়াসার পাইপের মধ্যে নাই, এটা গুজব। জিহাদকে রেখেই ফায়ারব্রিগেড পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যায়। সাধারন মানুষ তা বিশ্বাস করে নি, নিজেদের উদ্যোগে তারা জিহাদকে উদ্ধারে তৎপর হয়। ঠিকই  তাকে পাওয়া গেলো। কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার পর জানা গেল জিহাদ আর বেঁচে নেই।

সঠিক হোক কি বেঠিক, মানুষের মনে ধারণা জন্মেছে যে জিহাদকে উদ্ধারের নামে ২৩ (আরো পড়ূন)

বৈচিত্র ও পার্থক্য নিয়েও ঐক্য সম্ভব

আরেকটি ঈসায়ী বছর শেষ হচ্ছে। নতুন বছরের জন্য সবাইকে শুভেচ্ছা।

নতুন বছরে আমরা সবাই ভবিষ্যতের কথা ভাবি। গতবছরগুলো যতো মন্দই হোক, সামনের বছরগুলো অতীতের চেয়ে ভালোভাবে কাটবে আশা করি। সেই আশাটা নতুন বছরে প্রকাশ করাই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও প্রায়ই ভাবি, যে-বছর চলে যাচ্ছে সেটা যদি পিছিয়ে পড়া ব্যর্থতার বছর হয় তারপরও তো নতুন বছরের উৎসব করি আমরা। সেটা তো দোষের না। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। সম্ভবত এই সংস্কৃতি আমরা রপ্ত করতে চাইছি যে নতুন বছরে মন্দ কথা বলা ঠিক না। আমিও আজ এখানে ব্যর্থতার কথা বলব না।

দাবি উঠতে পারে আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুমখুন, ক্ষমতাসীনদের দমন-পীড়ন, নির্যাতনসহ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের মধ্যে আমি আবার ভাল কি আবিষ্কার ক (আরো পড়ূন)

মোদির ভারত এবং বিশ্বে শক্তির ভারসাম্যে বদল (১)

পুঁজির গোলকায়ন দুনিয়ার অর্থব্যবস্থায় মৌলিক রূপান্তর ঘটিয়েছে ও ঘটাচ্ছে এ কথা সবসময়ই বলা হচ্ছে। কথাটা সত্যও বটে। প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের দিক থেকে এর তাৎপর্য উপলব্ধির জায়গাগুলো বুঝব কী করে? এই প্রশ্ন মনে রেখে নরেন্দ্র মোদির ভারত নিয়ে এই লেখা। দুনিয়াব্যাপী বিস্তৃত পুঁজিতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় ভারকেন্দ্র এশিয়া – বারাক ওবামার ভাষায় এশিয়ার থিয়েটার বা নবোদ্ভূত এশিয়ার রঙ্গমঞ্চ। এই থিয়েটারে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে যারা জয়ী হবে তারাই বিশ্বের নেতৃত্বের আসনে সমাসীন হবে। এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে ভারতের পরিবর্তনের অভিমুখগুলো ঠিক ঠিক বুঝতে হবে বাংলাদেশের কথা ভেবে। একই সঙ্গে নতুন বাস্তবতায় বাংলাদেশের  চিন, ভারত ও আমেরিকা নীতি কি হতে (আরো পড়ূন)

যুদ্ধের বিবিধ অপচয়

পেশোয়ারে একটি মিলিটারি স্কুলে পাকিস্তানী তালেবানদের হামলা আমাকে স্তম্ভিত ও শোকার্ত করেছে। সেই বিষয়েই কয়েকটি কথা বলব।

দুই হাজার ১০ সালের ১৮ অক্টোবর মার্কিন ড্রোন হামলায় প্রাণঘাতী লোহার টুকরা দশ বছরের বালক নাসিমুল্লার বুক ও শরীর ভেদ করে বেরিয়ে যায়। শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকা মৃত নাসিমুল্লার ছবিটি ইন্টারনেটে দেখেছিলাম। সেটা এখনও আমার মনে গেঁথে আছে। উত্তর ওয়াজিরিস্তানের ফাতিমা। তার বয়সও আট থেকে দশের বেশি হবে না। একুশে মে ২০১০ সালে ড্রোন হামলায় নিহত তার ছবিও মনে আছে। মনে আছে অনেকের ছবি। (আরো পড়ূন)

রোকেয়া পাঠের স্থান কাল পাত্র

[রোকেয়াকে নিয়ে এই লেখাটি ২১ বছর আগে ১৯৯৩ সালে সাপ্তাহিক ‘রোববার’ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। লেখাটি নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা থেকে প্রকাশিত ‘রোকেয়া পাঠের স্থান, কাল পাত্র ও বোরকা’ পুস্তিকাটিতেও অন্তর্ভূক্ত। ডিসেম্বরের নয় তারিখে রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুদিবস পেরিয়ে এসেছি আমরা আবার; সেই  উপলক্ষে লেখাটি এখানে আবার দুই একটি জায়গায় খানিক পরিমার্জনা করে তুলে দেওয়া হোল। - সম্পাদনা বিভাগ]

[এক]

“উন্নতি কি পর্দার বাহিরে থাকে?”

পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদের সঙ্গে যুক্ত রফিকুল (আরো পড়ূন)

সংকট গোড়ায়, উপরে নয়

রাজনীতির উপর তলায় আমরা যে সংকট দেখি তার গোড়ার উপরে না, গোড়াতেই। অতএব গোড়া ধরে কথা না বললে আমাদের সামনে রাজনৈতিক ইস্যুটা ঠিক কী, সেটা বোঝানো কঠিন। কিন্তু আলোচনাটা উপরের ঘটনাঘটন থেকেই শুরু করা দরকার হয়ে পড়ে। নইলে সাধারণ পাঠকরা এ বিষয়ে বিশেষ আগ্রহী হয় না।

রাজনৈতিক তর্কাতর্কির গোড়ায় না গিয়ে সামাজিক আলোচনা-সমালোচনা ভাসাভাসা রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করছে প্রধানত গণমাধ্যমই। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার ক্ষেত্রেও গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রধান। এই পরিস্থিতিতে পত্রিকায় মন্তব্যমূলক লেখা সংকটের চরিত্র ধরতে কিংবা বোঝাতে পারে না। সংকট আরও গাঢ় হতে থাকে।

ধরুন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা। আচ্ছা, আমরা কী দাবি কিংবা কী নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযু (আরো পড়ূন)

আসুন শহীদ মিনারকে একটি মসজিদ অথবা মন্দিরে পরিণত করি !

[ এ লেখাটি দুই হাজার দশ সালে লেখা। চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে এসেছি। ছাপা হয়েছিল অনলাইনে বিডিনিউজ২৪ ডট কমে অগাস্ট মাসের ৮ তারিখে। পিয়াস করিমকে শেষ বিদায় জানাবার আগে নাগরিক শ্রদ্ধা জানাবার জন্য  শহিদ মিনারে নেবার সিদ্ধান্ত নিয়ে যে রাজনৈতিক মেরুকরণ ও তর্ক চলছে এই লেখা সে কারণে এখন আবার প্রাসঙ্গিক হতে পারে ভেবে এখানে তুলে দেওয়া হোল – চিন্তা]

শহীদ মিনার গড়ে উঠেছিল রাজনৈতিক প্রতিবাদের প্রতীক ও হাতিয়ার হিসাবে। প্রতীক, কারণ রাষ্ট্রীয় সহিংসতা নিপীড়ন অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের লড়াই ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একটা বিশেষ ঐত (আরো পড়ূন)

মিসোজিনি: অস্ট্রেলিয়ার জুলিয়া ও বাংলাদেশের দুই নেত্রী

রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে পৃথিবীর অনেক দেশে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে নারী বিরোধিতা বা বিদ্বেষ কমে গেছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ সব পথ পরিস্কার করে দিয়েছে তাই নারী সহজে উচ্চ পদে বসতে পারছেন এমন কোন কারণ নাই। ধনী ও উন্নত দেশ যেখানে নারী স্বাধীনতা অনেক এগিয়ে আছে বলে মনে করা হয় সেখানে এখনো প্রধান মন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি পদে নারীদের পাওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। অথচ দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে ধনীদেশের আগেই তা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে (২০১৪ সালে) ২২টি দেশে নারী প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি রয়েছেন। তার মানে জাতিসংঘ সদস্য ১৯৩ টি দেশের মাত্র ১১.৩% দেশে নারী রাষ্ট্র ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আছেন। বাইশটি দেশের মধ্ (আরো পড়ূন)

রাজনৈতিক অসুখের ‘চিহ্ন’ ও তাৎপর্য

 বাংলাভাষায় ‘লক্ষণ’ কথাটা আমরা ইংরেজি ‘সিম্পটম’ অনুবাদ করতে গিয়ে ব্যবহার করি। গ্রিক symptomat বা symptoma থেকে ল্যাটিন হয়ে  ইংরেজিতে সিম্পটম। এর অর্থ কোন দুর্ঘটনা, দুরবস্থা বা দুর্দশায় পতিত হওয়া – যার ঘটেছে তিনি সেটা উপলব্ধি করেন। এটা সাবজেক্টিভ – অর্থাৎ ব্যাক্তির বোধ, উপলব্ধি অনুভব ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত। ডাক্তারি শাস্ত্রে এটি যখন ব্যবহার শুরু হোল তখন এই সাবজেক্টিভ বা ব্যাক্তির উপলব্ধির দিকটার ওপর জোর রইল। রোগের লক্ষণ মানে রোগটা কি সেটা না জানা থাকলেও রোগী নিজে যা উপলব্ধি করেন সেটাই ‘লক্ষণ’। যদি সিম্পটম অনুবাদের ক্ষেত্রে ‘লক্ষণ’ ব্যবহার করতে না চাই, তাহলে (আরো পড়ূন)

আমাদের এখনকার সংকট

বাংলাদেশ কোন দিকে যাচ্ছে এই প্রশ্ন প্রায় সকলের। রাজনীতি নিয়ে যে সকল আলোচনা দেখি তার অধিকাংশই হচ্ছে যার যার মনের বাসনার প্রতিফলন। সেটা হাজির হয় কোন দিকে যাচ্ছে তাকে নৈর্ব্যক্তিক বা ইচ্ছা অনিচ্ছার বাইরের একটি বাস্তব প্রক্রিয়া হিসাবে দেখবার চেষ্টা না করে ঔচিত্যবোধের জায়গা থেকে দেখবার বাসনা থেকে। অর্থাৎ কোন দিকে যাচ্ছে সেই আলোচনা না করে আমরা কোনদিকে যাওয়া উচিত সেই দিক নিয়ে পরস্পরের সঙ্গে তুমুল তর্ক করতে শুরু করি। এর ওপর রয়েছে সঠিক তথ্যের প্রচণ্ড অভাব। কৃষি, খাদ্য ব্যবস্থা, শিল্পকারখানা, শ্রমিকের হাল হকিকত, বিনিয়োগ পরিস্থিতি, জাতীয় আয় ব্যয়ের সঠিক হিসাব ইত্যাদির তথ্য-পরিসংখ্যানের সঠিকতা নিয়ে সন্দেহ। এই এক অদ্ভূত দেশ যেখানে শাসক শ্রেণী সারাক্ষণই (আরো পড়ূন)

‘সেইম টু সেইম। আমরা আমরাই তো!’

সরকারের সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে বিস্তর তর্ক বিতর্ক হয়েছে এবং হচ্ছে। পত্রিকায় দেখছি সম্পাদক পরিষদও বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁরা আশংকা প্রকাশ করেছেন, সরকার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন। প্রশ্ন হচ্ছে গণমাধ্যম তো পুরোটাই সরকারের নিয়ন্ত্রণে, আর কি নিয়ন্ত্রণ করবে ক্ষমতাসীনরা? সংশয় ও সমালোচনা সত্ত্বেও সম্পাদক পরিষদের এই বিবৃতি আমি সমর্থন করি। সেটা বলার জন্যই এই লেখা।

যাঁরা বিবৃতি দিয়েছেন তাদের মধ্যে এমন সম্পাদকও আছেন যারা অন্যের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে এর আগে অস্বীকার করেছেন। তারা সরকারের দলীয় সমর্থক। নির্বিচারে তারা সরকারের পক্ষাবলম্বন করেছেন। বিরোধী চিন্তা ও মতের বিরুদ্ধে হেন কোন অপপ্রচার বা কুৎসা নাই যা তারা করেন নি বা করেন না। নিজের মত প্রক (আরো পড়ূন)

একালে এগিয়ে যাবার পথ

আমি ‘আধুনিক’ নই। এর মানে এই নয় যে আমি অনাধুনিক। কিম্বা আমি অনাধুনিকতাকে মহিমান্বিত করতে চাই। আধুনিক যুগের আবির্ভাবের আগে প্রাক-আধুনিক যুগ নামক যদি কিছু থাকে সেখানে প্রত্যাবর্তন করার ইচ্ছা বা সংকল্প কোনটিই আমার রাজনীতি না। আমি কোথাও প্রত্যাবর্তন করছি না, ফিরছি না; বরং আধুনিকতা/অনাধুনিকতার বিভাজন অতিক্রমের চেষ্টা করছি। যে কারনে আমি আধুনিকতা বনাম অনাধুনিকতা এই দুইয়ের একটিকে মহিমান্বিত করে অপরটির বিরুদ্ধে দাঁড়াই না। বরং চিন্তা ও চর্চার যে অভ্যাস এই ধরণের বিভাজন তৈরি করে, সেই অভ্যাস থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে চাই। চিন্তা যেন সপ্রাণ ও সজীব থাকার চেষ্টায় বিরতি দিয়ে কোন একটা ‘মত’ বা বদ্ধমূল সিদ্ধান্তে পর্যবসিত না হয় বিভাজনের ফ (আরো পড়ূন)

নারী শ্রমিক ও নারী আন্দোলন

তোবার আন্দোলনকারী ও অনশনরত শ্রমিকদের নির্মম নির্যাতন করে যেভাবে পুলিশ তোবা গার্মেন্ট ফ্যাক্টরী ‘মুক্ত’ করলো তার বিস্তারিত বর্ণনা গণমাধ্যমে এসেছে। নারী আন্দোলনের কর্মীদের তা প্রচণ্ড বিক্ষুব্ধ করেছে, তা বলাই বাহুল্য। নির্যাতনের বর্ণনা বিভিন্ন পত্রিকায় দেয়া আছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাবার সময় আন্দোলনরত শ্রমিকদের নেত্রী মোশরেফা মিশু সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ জলিলের নেতৃত্বে পুলিশ তাদের ভবন থেকে বের করে দিয়েছে। ভবন থেকে বের না হলে অনশনরত নারী শ্রমিকদের ধর্ষণ করার হুমকি দিয়েছেন।”

একই সাথে তোবার আর একজন শ্রমিক হাফসা সাংবাদিকদের বলেন, (আরো পড়ূন)

শ্রমিক আন্দোলন ও শ্রমিক শ্রেণির রাজনীতি (২)

তোবা গার্মেন্টের অভিজ্ঞতা সামনে রেখে শ্রমিক আন্দোলন প্রসঙ্গে সাধারণ ভাবে বাংলাদেশের বামপন্থিদের নীতি ও কৌশল সম্পর্কে এখানে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। বিশেষত শ্রমিক শ্রেণির অর্থনৈতিক স্বার্থ আর শ্রমিক শ্রেণির রাজনীতির পার্থক্য সম্পর্কে। একটি হোল শ্রমিকদের অর্থনৈতিক দাবি দাওয়া আদায়ের লড়াই আর অন্যটি পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে সমাজ ও ইতিহাসের রূপান্তর ঘটানোর রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রকল্প ও তৎপরতা। শেষেরটি কমিউনিস্ট রাজনীতি হিসাবেও পরিচিত। দুইয়ের ক্ষেত্রে ‘শ্রমিক’ কথাটা থাকলেও, দুটো ভিন্ন বিষয়। অর্থনৈতিক শ্রেণি হিসাবে ‘শ্রমিক’ এবং পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ক ও ব্যবস্থা বদলে দিয়ে নতুন ধরণের সম্পর্ক চর্চার বিদ্যা (আরো পড়ূন)

শ্রমিক আন্দোলন ও শ্রমিক শ্রেণির রাজনীতি (১)

তোবা গার্মেন্ট কেন্দ্র করে শ্রমিকদের আন্দোলন ও অনশন কর্মসূচি পূর্ণ সমর্থন করে সম্প্রতি দৈনিক যুগান্তরে একটি লেখা লিখেছিলাম 'দেখুন অভিযুক্ত গার্মেন্ট মালিকের জামিন বনাম শ্রমিক আন্দোলন, ১০ অগাস্ট ২০১৪)।  তোবা গার্মেন্টের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, ওভারটাইম ও বোনাসের অর্থনৈতিক দাবি আদায় করে নেবার জন্য যারা তোবা বিল্ডিং-এ অনশনের কর্মসূচি সফল করেছিলেন, তাদের কৌশল সঠিক কি বেঠিক তা নিয়ে একটি তর্ক উঠেছে। এই ক্ষেত্রে বামপন্থিদলগুলোর মধ্যে ঐক্য বেড়েছে, নাকি অনৈক্যের সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়েও কিছু কথা উঠেছে। আমি মনে করি সুনির্দিষ্ট ভাবে তোবা গার্মেন্টের শ্রমিক (আরো পড়ূন)

কেন হামাস রকেট ছোঁড়ে

আরবদের হত্যা করাই ইসরায়েলি নীতি -- সচেতন ইসরায়য়েলি বুদ্ধিজীবিরাই ইসরায়েলি পত্রিকায় এ কথা  লিখছেন, ইতিহাস ও তথ্য ধরে প্রমাণ করছেন। তারপরও জায়নবাদী রাষ্ট্রের সন্ত্রাস বেমালুম চেপে রেখে শুধু মজলুমের প্রতিরোধকে আগবাড়িয়ে সন্ত্রাস বলার মতো সন্ত্রাসীর অভাব নাই বাংলাদেশে। ফিলিস্তিনীরা ধুঁকে ধুঁকে মরতে চায় না, লড়ে শহিদ হওয়া ছাড়া আর কি বিকল্প আছে তাদের?

ইসরাইল গাজায় স্থল অভিযান ‘অপারেশান প্রটেকটিভ এজ’ শুরু করেছে জুলাই আট তারিখে। এর আগে ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে ইসরাইল গাজার ওপর বোমা হামলা চালিয়েছিল। আট দিন (আরো পড়ূন)

সাব্বাশ হামাস !! সাব্বাশ ফিলিস্তিন!!

ধর্মগ্রন্থের কাহিনী অনুযায়ী ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষে যারা দাঁড়ান, তারা মূলত জায়নবাদেরই সমর্থক। জায়নবাদের যুক্তি মেনে নিলে হিন্দুর জন্য একটি হিন্দু রাষ্ট্র, মুসলমানদের জন্য মুসলমান বা ইসলামি রাষ্ট্র, খ্রিস্টানদের জন্য খ্রিস্টান রাষ্ট্র, বৌদ্ধদের জন্য বৌদ্ধ রাষ্ট্র – -- মায় নাস্তিকদের জন্যও একটি নাস্তিক রাষ্ট্রের পক্ষে একই সঙ্গে দাঁড়ানো হয়। মুখে বলি আর না বলি, ধর্মগ্রন্থে থাকুক বা না থাকুক, জায়নবাদ অন্য সকল ধর্মীয় বা সেকুলার জায়নবাদী দাবিকেই ন্যায্য করে তোলে। একই সঙ্গে একটি ভূখণ্ডের সঙ্গে একটি জাতির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের জাতীয়তাবাদী বয়ানও হয়ে ওঠে আধুনিক ধর্মীয় আখ্যান। (আরো পড়ূন)

জায়নবাদ ও বর্বর পুরুষতন্ত্র: টার্গেট ফিলিস্তিনী শিশু ও নারী

জায়নবাদী বর্বরতার টার্গেট নারী।  হামাস সদস্যদের মা বোনদের ধর্ষণ করার পরামর্শ দিয়েছে ইসরাইলের এক অধ্যাপক মোরদেচাই কেদার। তার দাবি সন্ত্রাসী হামলা নিরুৎসাহিত করার এটাই একমাত্র উপায়। ইসরায়েলি সংসদ সদস্য আয়লেট সাকেদ ঘোষণা দিয়েছে জন্ম দেবার আগেই ফিলিস্তিনীদের ভ্রূণে হত্যা করতে হবে তাদের  মায়েদের মেরে, কারন ফিলিস্তিনী মায়েরা সাপের জন্ম দেয়। হামাসের রকেট নয়, ফিলিস্তিনের নারীই ইসরায়েলের বড় শত্রু। ফিলিস্তিনের ছোট শিশুটি ওদের কাছে ভবিষ্যৎ সন্ত্রাসী।

কিভাবে জায়নবাদ ও পুরুষতন্ত্র হাত ধরাধরি করে চলে বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের সেটা বোঝা জরুরী হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশে ঈদ হয়ে (আরো পড়ূন)

জায়নবাদ, আত্মপরিচয় ও ইতিহাস পাঠ

এ বছর ৮ জুলাই থেকে ২৬ অগাস্ট (২০১৪) গাজার হত্যাযজ্ঞের পরিপ্রেক্ষিতে একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা জরুরী হয়ে পড়েছে। খুবই গোড়ার প্রশ্ন: জায়নবাদ (Zionism) আসলে কী? ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইন নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে এই বর্গটির দরকার কেন? ইজরায়েল আরবদের প্রতি অন্যায় আচরণ করছে এটা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি, একে বিশ্লেষণ বা বোঝার জন্য ধারণা হিসাবে জায়নবাদ কি কাজে লাগে? ইত্যাদি। বলাবাহুল্য জায়নবাদ বুঝলে জায়নবাদি কথাটাও বোঝা হয়। অনুমান করা যায় কেউ জন্মসূত্রে ইহুদি কিম্বা ইহুদি ধর্মে বিশ্বাসী হলেই ‘জায়নবাদি’ হবে তার কোন কারন নাই। কারন ‘জায়নবাদ’ একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শ। ইহুদি ধর্ম এবং ইহুদি ধর্মগ্রন্থের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে বটে (আরো পড়ূন)

জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের ‘সেলফ ডিফেন্স’

অন্যের ভূখণ্ড দখল এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে উৎখাত ও বিতাড়িত করে সাম্রাজ্যবাদী যুগে যে 'সেটলার কলোনিয়াল' রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল সেই ধরণের একটি রাষ্ট্র। রুজভেল্ট ও চার্চিলের আটলান্টিক চার্টার অনুযায়ী এই ধরণের রাষ্ট্রের 'সেলফ ডিফেন্স' দূরের কথা অস্তিত্বের বৈধতা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী থাকবার কথা নয়। অথচ জায়নবাদের পক্ষে গণমাধ্যম সেলফ ডিফেন্সের শঠতাসর্বস্ব যুক্তি ফেরি করে বেড়াচ্ছে, প্রাণ দিচ্ছে গাজার মানুষ।

সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইনের সম্পর্ক যে 'সোনার পিতলা কলস' জাতীয় ব্যাপার সেটাই এই নিবন্ধে আলোচিত হয়েছে। ফিলিস্তিনীদের ভূখণ্ড দখল করে, তাদের বাড়ীঘ (আরো পড়ূন)

বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরাশক্তি: ভারত, চিন, রাশিয়া ও আমেরিকা (১)

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানান বিদেশি ফ্যাক্টর কাজ করে, এটা আমরা জানি। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব, সহাবস্থান ও আঁতাতের বাস্তবতা বিবেচনায় নিলে এই ফ্যাক্টরগুলো কি রূপ নিতে পারে সে বিষয়ে বাস্তবসম্মত আলোচনা খুব একটা চোখে পড়ে নি। এখানে চার কিস্তিতে প্রাথমিক কিছু আলোচনা আমরা হাজির করছি।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দেশের ভিতরের ফ্যাক্টরগুলোর ছাড়াও বাইরে বিদেশিদের ভুমিকাও কেন বিরাট ভুমিকা নেবার সুযোগ পাবে এযুগে এনিয়ে প্রশ্ন তোলা যতোটুকু না রাজনৈতিক তার চেয়ে অধিক নৈতিক। অর্থাৎ আমরা নৈতিক জায়গা থেকেই তর্ক করি যে কোন বিদেশী শক্তি আ (আরো পড়ূন)

সাব্বাশ! আমাদের আর ভয় কি?

এক

প্রথম আলো বলছে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে সাংবাদিকরা ‘অব্যাহতি’ পেয়েছেন (১৩ মার্চ ২০১৪)। অব্যাহতি পেয়েছেন সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার ও প্রকাশক এ কে আজাদ, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন ও প্রকাশক শামসুল হুদা, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বরিশাল বিভাগীয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আবদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি এম এম জসিম ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কাজী মোবারক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এম সুজাউল ইসলাম।

এ বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পা (আরো পড়ূন)

কোথা থেকে কোথায় এসে পড়েছি!

এক

লেখাটি এ বছর চৌদ্দই ফেব্রুয়ারির জন্য তৈরি করেছিলাম, যদি সেদিনই বেরুতো ভাল লাগতো। কিন্তু পাঠাতে পারি নি। আজ পনেরো তারিখে পাঠাচ্ছি। অতএব কাল ষোল ফেব্রুয়ারিতে বেরুবে।

তবে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাইছি, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসে ১৪ ফেব্রুয়ারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। স্বাধীনতার পরে তরুণদের সবচেয়ে গৌরবের তারিখ। কিন্তু এই দিনটি নানান কারনে ম্লান হয়ে গিয়েছে। সামরিকতন্ত্রের বিরুদ্ধে তরুণদের গণতান্ত্রিক লড়াই সংগ্রামের এই কালপর্বটার ইতিহাস ধরে রাখার ও তার তাৎপর্য বিচারের সময় এসেছে । এর ব্যর্থতা ও সাফল্যের একটা খতিয়ান টানা দরকার। এই দিকট (আরো পড়ূন)

জেনসের সন্ত্রাস তালিকা: বাংলাদেশে ভয় দেখানোর রাজনীতি

বাংলাদেশ ইসলামি সন্ত্রাসীতে ভরে গিয়েছে যেভাবেই হোক আন্তর্জাতিক ভাবে এটা প্রমাণের ওপর নির্ভর করছে ক্ষমতাসীনদের রাজত্বের মেয়াদ। অতএব সঙ্গত কারণেই সাধারণ্যে প্রায়ই অপরিচিত জেনস সেন্টার (IHS Jane’s Terrorism and Insurgency Centre ) বলে একটা সংগঠন বাংলাদেশে হঠাৎ পরিচিত হয়ে উঠছে। তাদের তালিকা নিয়ে এই লেখা।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারী তারিখে জামাতের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশের ইসলামি ছাত্র শিবিরকে দুনিয়ার এই মুহূর্তে শীর্ষ দশ অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গ্রুপের তালিকার (Top 10 most active non-state armed groups in 2013) মধ্যে তিন নম্বরে রেখে এই সংগঠনটি একটি তালিকাটি প্রকাশ করেছে। এটা নাকি কেবল গত বছরে (আরো পড়ূন)

আল জাওয়াহিরি: বাংলাদেশের গণমাধ্যম ও ভৌমিকের ‘গাড়ী বোমা’ প্রস্তুতি

 এক

আলজাওয়াহিরি কথিত ভিডিও বার্তা নিয়ে প্রপাগান্ডা চলছে। কিন্তু দেশি বা বিদেশি কেউই নিশ্চিত করে এখনও বলতে পারছে না, এই ভিডিও বার্তা আসলে কার। যারা খবরটি ছেপেছে তারা সবাই খবরের সোর্স পরীক্ষা না করে এবং খবরটা কোন ক্রসচেক না করেই ছেপে দিয়েছে। খবরের কোন সত্যতা নাই জেনেশুনেই খবরটি ছেপে নিজ নিজ পক্ষে প্রপাগান্ডা চালিয়ে গিয়েছে। মুল গলদটা এখানেই। বলা বাহুল্য, এই সময় মিথ্যা হোক বা সত্য, এই ধরণের প্রপাগান্ডার মুল্য আছে; মিডিয়ার পছন্দ ও অনুসরণ করা রাজনীতির লাইনের জন্য ফায়দা তোলারও এটা ভাল রাস্তা -এই বিবেচনাও কাজ করেছে। । ফায়দা তোলার বিবেচনা এতই প্রবলভাবে অনেককে তাড়া করেছেচ যে এ ধরন (আরো পড়ূন)

ইউরোপের পার্লামেন্ট ও বাংলাদেশের রাজনীতি

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে জামায়াত ও হেফাজত সংক্রান্ত প্রস্তাব ছাড়া বাকি সবগুলোই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে।  প্রত্যেকেই এই নির্বাচনকে ' ভূয়া'  বা কূটনৈতিক ভাষায় 'অগ্রহণযোগ্য' বলেছে। আবার দ্রুত নির্বাচন চাইছে তারা।

এক

তথাকথিত ‘নির্বাচন’ নামক তামাশার পরে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর বেশ কিছু প্রস্তাব নেয়। বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম সেই পার্লামেন্টে গৃহীত অনেকগুলো প্রস্তাবের মধ্যে সব বা (আরো পড়ূন)

ভড়কে গিয়ে ভুল করা যাবে না

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবের সার কথা বিকৃত করে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীনরা আঠারো দলীয় জোটে ভাঙন ধরাবার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের দাবি ইউরোপ চায় বিএনপি জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গ ত্যাগ করুক। বিএনপির অভ্যন্তরেও এই মতের সমর্থক রয়েছে। এর সঙ্গে তারা ক্ষমতাসীনদের আরেকটি প্রপাগাণ্ডা যোগ করে; সেটা হোল, খালেদ জিয়া দিল্লীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখেন নি বলে ক্ষমতায় যেতে পারলেন না। 

একঃ ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাব

গত ১৬ জানুয়ারি তারিখে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। প্রথম (আরো পড়ূন)

হেফাজতের ১৩ দফা এবং মধ্যযুগ বিতর্ক

এক

হেফাজতে ইসলাম এপ্রিলের ৬ তারিখে ঢাকা শহরে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে প্রশাসনের সঙ্গে ওয়াদা অনুযায়ী ঠিক ঠিক পাঁচটার সময় শেষ করে ফিরে গেছেন। ঢাকা শহরের মানুষ শাপলা চত্বরে এতো আলেম ওলামাদের একসাথে কখনো দেখে নি, তারা বিস্মিত। কত মানুষ জড়ো হয়েছিলেন তা নিয়ে সঠিকভাবে কোন পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও সংখ্যাটা তাক লাগিয়ে দেয়ার মতোই ছিল। হেফাজতের এই লং মার্চ যেন না হতে পারে তার জন্য সরকার নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল; ঢাকাগামী সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ করার পরও এতো মানুষ কি করে ঢাকায় এলো তা বিস্ময়ের ব্যাপার বটে।

হেফাজতের এই কর্মসুচী শেষ হয়েছে, তাঁরা নিজ নি (আরো পড়ূন)

খালেদার জয়-পরাজয়

এক

আগের লেখায় আন্দোলনের ধরণ নিয়ে আলোচনা করেছি (দেখুন, ‘হাসিনার নয় দফা ও আন্দোলনের ধরণ’ - নয়াদিগন্ত, ১৯ জানুয়ারি ২০১৪)। সেই প্রসঙ্গে ছিয়ানব্বইয়ের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন সম্পন্ন হবার পর তখনকার বর্জনের নেত্রী শেখ হাসিনার বিখ্যাত ‘নয় দফা’র কথাও সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছি। বেগম খালেদা জিয়া ১৫ জানুয়ারিতে যে কর্মসূচী ও বক্তব্য দিয়েছেন তার সঙ্গে শেখ হাসিনার নয় দফা তুলনা করলে মনে হয় বিএনপি আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট অর্জন সম্পর্কে অস্পষ্ (আরো পড়ূন)

হাসিনার নয় দফা ও আন্দোলনের ধরণ

বোঝা যাচ্ছে আন্দোলনের একটা বিরতি ঘটেছে। খালেদা জিয়া ১৫ তারিখে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ২০ জানুয়ারি গণ সমাবেশ ও ২৯ তারিখে কালোপতাকা মিছিল। অন্যদিকে খবর খুব দ্রুত ঘটছে। অনেক খবর তাদের প্রিন্টিং প্রেস সমেত সিল গালাও হয়ে যাচ্ছে। তিনটি বিষয় খবর হিসাবে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমটি বিরতির ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়ার সাংবাদিক সম্মেলন; এখান থেকে আন্দোলনের সাম্প্রতিক গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে একটা ধারণা আমরা করতে পারি, আন্দোলনের ধরণ সম্পর্কে একটা নির্মোহ বিচার দরকার। দ্বিতীয় খবর হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্স এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্টে বাংলাদেশ নিয়ে বিতর্ক; এ সকল বিতর্ক সম্পর্কে গণআন্দোলন-বিদ্বেষী গণ মাধ্যমগুলোর (আরো পড়ূন)

বৃহত্তর ঐক্য জরুরী

দুই হাজার চৌদ্দ সালের ৫ জানুয়ারী রোববার; বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কালো দিন। দিল্লীর সাধের নির্বাচনের দিন। রঙতামাশার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে পুনর্বার ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া হবে। এ লেখা যখন লিখছি তখন শেখ হাসিনার রক্তপাতে সিক্ত নির্বাচনে ১৮ জন মানুষ শহিদ হয়েছেন। সংবাদ নিয়ে জেনেছি ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোট দিতে কম ভোটারই হাজির হয়েছেন। মিথ্যুক ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সহযোগী মিডিয়াগুলোর পক্ষেও ভোটকেন্দ্রগুলোতে মানুষ যাচ্ছে প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। সরকারী চাপে থাকা মিডিয়াগুলো তাদের সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে যে খবর দিচ্ছে তাতে পরিষ্কার, সরকারী দলের অন্ধ সমর্থকদের ক্ষুদ্র একটি অংশ ছাড়া ভোট দিতে যায়নি কেউই। আওয়ামি লীগের সমর্থক, কিন্তু নিজ (আরো পড়ূন)

অবৈধ ব্যবস্থায় অবৈধ নির্বাচন

প্রথম আলোয় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের লেখা ‘প্লিজ নির্বাচন করবেন না’ (৩ জানুয়ারি ২০১৩) আমার জন্য ছিল সবচেয়ে বিব্রতকর ও লজ্জাজনক পাঠ। তিনি চান না ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন হোক। নির্বাচন না হলে, তাঁর আশা, সংবিধানের মধ্যে একটা সমাধানের পথ বের করা যাবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা সমঝোতাও নাকি করা সম্ভব। যদিও সংবিধানের মধ্যে সমাধানের যে-পরামর্শের ইঙ্গিত তিনি দিচ্ছেন তা একদমই অনিশ্চিত প্রস্তাব; তাঁর দাবি নির্বাচন স্থগিত রেখে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করবার ‘আইনগত ভিত্তি’ নাকি ‘খুঁজে পাওয়া যেতে পারে’। আদৌ কোন আইনগত ভিত্তি আছে কিনা সে সম্পর্কে তিনি নিজেও নিশ্চিত নন, থাকলে নিজেই তিনি সুনির্দিষ্ট ভাবে বলতেন।

(আরো পড়ূন)

পোড়ালে পোড়ে গুলিতে মরে...

দুই হাজার তেরো ঈসায়ী সাল শেষ হচ্ছে আজ। বছরকে বিদায় জানাবার রীতি পাশ্চাত্যের; বরণ করবার সংস্কৃতিও। সময়কে সরল রেখা গণ্য করার চিন্তাও ‘আধুনিক’। তাই সরল রেখার যে বিন্দুতে আমরা দাঁড়াই তাকে বলি ‘বর্তমান’, পেছনকে ‘অতীত’ আর সামনে ‘ভবিষ্যৎ’। সময় আসলে সরলরেখার মতো একদিক থেকে অন্যদিকে আদৌ ছুটে চলেছে, নাকি বৃত্তের মতো ফিরে ফিরে আসছে, এই তর্ক দীর্ঘ দিনের। সময় যদি সরল রেখা হয় তাহলে যা চলে গিয়েছে তা আর ফিরে আসে না। তাই কি? ইতিহাস তো অতীতকে বর্তমানে বহন করেই ইতিহাস হয়, নইলে ভবিষ্যৎ নির্মাণ অসম্ভব হয়ে ওঠে। যদি সময়কে বৃত্ত গণ্য করি তো প্রতিটি বিন্দুই তো একই সঙ্গে বৃত্তের শেষ ও আরম্ভ।

না। আমরা কে কিভাবে (আরো পড়ূন)

লিবারেলিজম বা উদারবাদ

এক

সম্প্রতি দৈনিক পত্রিকায় কয়েকটি লেখায় আমি বেশ কয়েকবার জোর দিয়ে বলেছিলাম পুঁজির প্রান্তের দেশগুলোতে ‘লিবারেল’ বা উদার রাজনীতির ভূমিকা রয়েছে। এই দাবির পক্ষে দুই একটি কথা বললেও কোন্‌ অর্থে কথাগুলো বলেছি তা যথেষ্ট ব্যখ্যা করতে পারি নি। এখানে লিবারেলিজম নিয়ে কিছু প্রাথমিক তত্ত্বকথা বলব। আশা, এতে কিছু কথা পরিষ্কার হবে। লিবারেলিজমের ভালো বাংলা নাই বলে খোদ ইংরাজি শব্দটি জায়গায় জায়গায় ব্যবহার করব, তবে বাংলায় ‘উদারবাদ’, ‘উদার রাজনীতি’ কিম্বা ‘ উদার রাজনৈতিক মতাদর্শ’ ইত্যাদি ধারণাও সুযোগ বুঝে খাটিয়ে নেবো।

বাংলাদেশে (আরো পড়ূন)

‘এক এগারোর কুশীলবরা আবার সক্রিয়’ - শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা দারুন! তাঁর দলের সন্ত্রাসীরা পুলিশের সহায়তায় যখন লাঠি হাতে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও কিম্বা সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে পুলিশের প্রশ্রয়ে গেইট ভেঙে ঢুকে আইনজীবীদের নির্দয় ভাবে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে, আর পেটাচ্ছে নারী আইনজীবীদের -- শেখ হাসিনা তখন বলছেন, “এক এগারোর কুশীলবরা আবার সক্রিয়। এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চান”। তখন তাঁকে বেশ গুরুগম্ভীর বুদ্ধিজীবীর মতোই মনে হচ্ছিল।

দারুন যে খালেদা জিয়াকে কোন কর্মসূচীই পালন করতে হয় নি। তিনি ‘সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র’ রক্ষার জন্য অভিযাত্রার ডাক দিয়ে যে রাজনৈতিক ফল পাবার আশা করেছিলেন তারচেয়ে দশগুন বেশী ফল পেয়ে গিয়েছেন ক্ষমতাসীনদের কারনে। (আরো পড়ূন)

জানুয়ারির ৫ তারিখঃ ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার কালো দিবস !

আমি একজন নাগরিক এবং ভোটার। নাগরিক হিশেবে এই লেখাটি লিখছি। নির্বাচন শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়, সরাসরি নাগরিকদেরও বিষয়। ভোটার হিসাবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নাগরিকরা রায় দিয়ে থাকেন। এই কথা সবাই জানেন। গণতান্ত্রিক সরকার – অর্থাৎ শাসিতের সম্মতি ছাড়া শাসন করবার অধিকার অর্জন করবার এই প্রক্রিয়া পালন না করলে কোন সরকারই নিজেকে বৈধ বলে দাবি করতে পারে না। আমি নিজে বুঝতে পারছি আমার ভোট দেয়ার অধিকার থাকছে না। একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচন হলেও সব ভোটাররা উৎসাহিত হয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থিকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করতে চান। জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচন সে কারণে আরও বেশি গুরুত্বপুর্ণ; কারণ এর মাধ্যমে ভাল হোক মন্দ হোক জনগণ বলতে পারে আমাদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ (আরো পড়ূন)

সুশীলদের তামাশা

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সমঝোতা হলে দশম সংসদ ভেঙে তিনি একাদশ সংসদের নির্বাচন দেবেন। এই প্রস্তাবের পেছনে পরাজয়ের সুর আছে। কিন্তু এটা কি পিছু হটা? মোটেও নয়। তাঁর এই প্রস্তাব কি তথাকথিত সমঝোতার ইঙ্গিত? তাও নয়। তিনি যা বলছেন আসলেই কি তা করবেন? না, করবেন না। এটা অসম্ভব। এর কারন, সিদ্ধান্ত তিনি নিজে নেবেন না, সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লী। যদি তার নিজের সিদ্ধান্ত নেবার জায়গাগুলো অবশিষ্ট থাকতো তাহলে তাঁর এই ঘোষণাকে ভিন্ন ভাবে বিচার করবার সুযোগ থাকতো। তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত নেবার যে জায়গাগুলো ছিল তিনি তা অপচয় করেছেন। নির্বাচনের নামে যে কাণ্ড করলেন তাতে শুধু তাঁর নিজের নয়, বিশ্বে বাংলাদেশের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। এখন তিনি সমঝোতার কথা বলছেন না। বরং তাঁর লজ (আরো পড়ূন)

দুই নেত্রীর ক্ষমতার লড়াইয়ে যোগ হয়েছেন রাজনীতির ‘অবলা’

দেশের মধ্যে হানাহানি, সহিংসতা, অরাজকতা, হিংসা-বিদ্বেষ চলছে আগামি দশম সংসদীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে। সবাই দোষারোপ করছেন দুইটি প্রধান দলের দুই নেত্রীকে। তাঁরা হলেন শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়া। বলা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে যে বিরোধ তারই প্রতিফলন ঘটছে সারা দেশে। এই কথা আমার নয়, নিরানব্বই দশমিক নয় ভাগ পুরুষ এই কথাই বলে। মেয়েদের কথা ভিন্ন। সমাজ অনেক বড় ব্যাপার। সেখানে সমাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ধর্ম, চিন্তা চেতনা, শিল্প সাহিত্য বহু কিছু নানান ভাবে নানান দিক থেকে কাজ করে। বিরোধ সমাজের মধ্যে, সেই বিরোধই রাজনৈতিক বিরোধ হয়ে বিষফোঁড়ার মতো পেকে ফেটে বেরুচ্ছে। মেয়েদের জন্য দুর্ভাগ্য হোল সেই বিরোধ হাজির হয়েছে দুই নেত্রীর বিরোধ হয়ে। রাজনীতি মীমাংসার অতীত হয়ে (আরো পড়ূন)

পানির ‘হক’ আদায়, পরিবেশ কিংবা এক জলদেবতার গল্প

বন্ধু আহমদ ছফা প্রচণ্ড খরা, উত্তরবঙ্গের মরুকরণ এবং ভয়াবহ পানি সঙ্কটের কথা উঠলেই কমপক্ষে পাক্কা আধাঘণ্টা ধরে দুটো বিষয়ে কথা বলে যায়। এক নম্বর হলো, মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক ফারাক্কা মিছিল। দুই নম্বর, শেখ মুজিবুর রহমানের ভারতনীতি। আমি জানি আমার মতো আরো অনেকে এই দুই বিষয় নিয়ে কথা বহুবার শুনেছে কিংবা শুনতে বাধ্য হয়েছে। কারণ, ছফা যখন কোনো বিষয়ে তার মতামত নির্ধারণ করে ফেলে তখন তার বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে সেই সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য এমন কোনো কাজ নাই যা সে করে না। এক কথা হাজার বার বলার ‘কৌশল’ টা এই নিষ্ঠার অংশ। তবুও তার কথা বার বার শুনতে কেউ বিরক্ত হয়েছে সেই খবর কখনো কানে আসে নাই। কারণ হলো, বাংলাদেশের রাজনীতি এবং সংস্কৃতির অত্যন্ত মৌলিক প্রশ্ন (আরো পড়ূন)

বদ্ধচিন্তার খাপ থেকে মুক্তি দরকার

এ লেখাটি লিখছি শহরে, গ্রামে ও প্রবাসে সেইসব বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য যারা বয়সে তরুণ। যাঁরা ‘তরুণ প্রজন্ম’ অবশ্যই, কিন্তু শুধু ঢাকা শহরের নয়। মফস্বল ও গ্রামেরও। গ্রামে আছে তরুণ প্রজন্মের বিশাল একটি অংশ যারা কৃষি সহ বিভিন্ন উৎপাদনমূলক কাজে জড়িত। কলকারখানায় মেহনত দিয়ে অর্থনীতির চাকা যাঁরা সচল রাখছেন তাঁরাও তরুণ প্রজন্ম; প্রায় পুরানা দাস ব্যবস্থার মতো ‘তরুন প্রজন্ম’ তরতাজা শ্রমশক্তি হয়ে চালান হয়ে যাচ্ছেন বিদেশে, বিশাল একটি অংশ চলে যাচ্ছেন নিজের দেশ থেকেই, অথচ মন পড়ে থাকে দেশে – মা বাবা ভাইবোন পাড়া প্রতিবেশীর জন্য; মাসে মাসে ঘামে-রক্তে কামাই করা আয় দেশে পাঠান, দেশের অর্থনীতি প্রবাসীদের সেই আয়ের ওপর নির্ভরশীল। জাতী (আরো পড়ূন)

রাষ্ট্রপ্রধান ও উচ্চ আদালত নিয়ে রাজনীতি

এক

ডক্টর কামাল হোসেন, শুধু গণতন্ত্রে আর সন্তুষ্ট নন, তিনি ‘কার্যকর গণতন্ত্র’ চান (দেখুন,‘Quest for a working democracy: Consensus on neutral election period government’ , দৈনিক ডেইলি স্টার ৬ ডিসেম্বর ২০১৩; একই নিবন্ধের অনুবাদ দেখুন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার ঐক্যমত্যের সন্ধানে’, দৈনিক প্রথম আলো, ৬ ডিসেম্বর ২০১৩)। তিনি আইনজীবী। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার চূড়ান্ত দলীয়করণ ঘটেছে, তারপরও তিনি বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে তোলার জন্য আইনের মধ্যে থেকে একটা সমঝোতা চান। সেই পথ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা। এর জন্য সুপ্রিম কোর্টের শরণাপ (আরো পড়ূন)

আর যাবার জায়গা নাই

এক

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং ঝড়ের মতোই এসেছিলেন, ঝড়ের মতোই গেলেন। পাঁচ তারিখ খুব সকালে যখন তিনি দিল্লী ফিরে যাচ্ছেন তখন থেকেই ভাবছি তাঁর এই আসার আদৌ নতুন কোন তাৎপর্য আছে কিনা। দিল্লী ঢাকাকে যেটা জানাতে চেয়েছে সেটা ভারতীয় পত্রপত্রিকা ও তাদের থিংক ট্যাংকগুলোর সুবাদে আমরা জানি। সেটা হোল, শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচনের নীতি সমর্থন করছে দিল্লী। নিজের হাতে একনায়কী ক্ষমতা রেখে অসম রাজনৈতিক পরিবিশ বহাল রেখেই নির্বাচন করতে চাইছেন হাসিনা, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংসতা ও রক্তপাত ঘটছে এর জন্যই। কিন্তু দিল্লী তাতে বিচলিত নয়। দিল্লী চায় যেভাবেই হোক শেখ হাসিনাই আবার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন (আরো পড়ূন)

সুজাতা সিং পুরানা চিন্তাই ফেরি করলেন

এক

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশে এসে শেখ হাসিনার এক তরফা নির্বাচনের পথকেই সম্মতি জানিয়ে গেলেন; দিল্লী ঢাকাকে যেটা জানাতে চেয়েছে সেটা ভারতীয় পত্রপত্রিকা ও তাদের থিংক ট্যাংকগুলোর সুবাদে আমরা জানি। সুজাতা সিং নেপালের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, সেখানেও একটি দল নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিয়েছিল, কিন্তু শেষাবধি সেখানে নির্বাচন হয়েছে। অতএব নির্বাচন বর্জনের পরোয়া না করে শেখ হাসিনাকে ‘গণতন্ত্রের স্বার্থেই’ নির্বাচন করতে হবে, এটাই উচিত কাজ। (দেখুন প্রথম আলো, ‘গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন হওয়া উচিত’, ৬ ডিসেম্বর ২০১৩)। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় দিল্লী সবার অংশ গ্রহণে নির্বাচন (আরো পড়ূন)

পিল্লাই সতর্ক করলেন...

এক

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনারের অফিসের (Office of the United Nations High Commissioner for Human Rights) কার্যক্রম, এখতিয়ার ও ভূমিকা সম্পর্কে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা কতোটা জানেন বলা মুশকিল। রাজনীতিবিদরা তাদের কর্মকাণ্ডের দায় বহন করতে না চাইলেও নিজের দেশের নাগরিকদের মানবাধিকার লংঘন করলে তার দায় আন্তর্জাতিক ভাবে এড়িয়ে যাবার সুযোগ নাই বললেই চলে। পার পেয়ে যাবার সম্ভাবনা কম। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাই কমশনার নাভি পিল্লাই সেটাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে করিয়ে দিয়েছেন। এভাবে বলেন নি যে আপনারা ভাল ভাবে চলুন, হিংসা বিবাদ কম করুন। বরং সুনির্দিষ্ট ভাবে ধরিয়ে দি (আরো পড়ূন)

রাজনীতির বিকল্প নাই

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল !

আবার ইংরেজি দুই হাজার তেরো সালের ১৬ ডিসেম্বর আসছে। সামনে বিজয় দিবস। যে ‘বিজয়’ একাত্তরে আমরা অর্জন করেছি তার তাৎপর্য যদি আমরা উপলব্ধি করি তাহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি যাই হোক এই দিনটি ঠিক ভাবে উদযাপন করা দরকার। সেটা সম্ভব হবে কিনা তার আশংকা দেখা দিয়েছে। একটি নিউজপোর্টালের খবরে দেখেছি চলতি বছরের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ বাতিল করা হয়েছে। অথচ এই দিনটি জনগণের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক রচনার দিন – মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর ভুমিকা স্মরণ করা ও সৈনিকতার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। খবর অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই অনুষ্ঠা (আরো পড়ূন)

সংগ্রাম কমিটি শক্তিশালী করা দরকার

বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনের তপসিল ঘোষণা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের গতি ও চরিত্রে গুণগত রূপান্তর ঘটিয়ে দিয়েছে। আন্দোলন ক্রমশ তীব্র হবে। তীব্র হচ্ছে। শুরুতেই জনগণের লড়াই-সংগ্রামকে বানচাল করে দেবার জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ীঘরে আগুন দেওয়া ও দাঙ্গা লাগিয়ে সেটা ইসলামপন্থিদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেবার চেষ্টা চলেছে। বিশেষত গরিব ও অসহার মানুষদের। জনগণের সতর্কতার ফলে এই অন্তর্ঘাত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় নি। কিন্তু বিপদ কাটে নি। কারন এই আন্দোলনকে বিনাশ করার জন্য এই ইস্যুটাই যথেষ্ট। অতএব সতর্ক নজর রাখতে হবে। জনগণকে বোঝাতে হবে, কিভাবে এই ধরণের ঘটনা নিজেরা ঘটিয়ে ইসলামের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। তারপর দুনিয়াব্যাপী প্রচার চলে ইসলাম কতো বর্বর ধর্ম। মুসলমানরা কতো নি (আরো পড়ূন)

মার্কিন শুনানি, নিরপেক্ষতার রাজনীতি ও পরাশক্তির ভূমিকা

এক

মার্কিন কংগ্রেসে গত বৃহস্পতিবার (বাংলাদেশ সময় ২১ নভেম্বর ২০১৩)বাংলাদেশের ওপর একটি শুনানি হয়েছে। এর প্রতি বাংলাদেশে আগ্রহ রয়েছে প্রচুর। বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা ছাড়াই একপক্ষীয় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি নির্বাচনের পথে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জনগণ উদ্বিগ্ন ও উৎকন্ঠিত। বাংলাদেশে তো বটেই, আন্তর্জাতিক ভাবে এই নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য হবে।

তবে দিল্লী ব্যাতিক্রম। শেখ হাসিনাকে দিল্লী সমর্থন করছে ও করবে। ভারতের প্রভাবশালী সাংবাদিকদের লেখালিখি থেকে স্পষ্ট বাংলাদেশে সংঘাত ও রক্তপাতের জন্য দিল্লী তৈরী। শেখ হাসিনাকে যে ভাবেই হোক ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে হবে। নইলে বাংলাদেশ (আরো পড়ূন)

সুবীর ভৌমিক কি দক্ষিণ এশিয়ায় আগুন লাগিয়ে দেবেন!

এক

টাইমস অব ইন্ডিয়ায় নভেম্বরের ১ তারিখে সুবীর ভৌমিক সম্প্রতি যে লেখা লিখেছেন তার শিরোনামে দুটি অংশ ছিল। প্রথমাংশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ একটি সহিংস পর্বের মধ্যে রয়েছে’; দ্বিতীয়াংশ, ‘বাংলাদেশে যেন বন্ধু সরকার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করতে পারে সেটা দেখার জন্য ভারতের অবশ্যই যা কিছু দরকার তার সবই করা উচিত’ (Bangladesh is in a violent phase and Ind (আরো পড়ূন)

নতুন রাষ্ট্র গঠনের পাঁচটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু মৌলিক দাবি

এ লেখা যখন লিখছি তখন আঠারো দলের হরতাল ও সমাবেশের প্রথম পর্যায় শেষ হয়েছে। বিরোধী দলের ওপর নতুন করে দমন পীড়ন শুরু হয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গভীর রাতে খালেদা জিয়ার বাসা থেকে বেরিয়ে যাবার সময় গ্রেফতার হয়েছেন ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমূল বিশ্বাস। বেগম জিয়ার গুলশানের বাসা ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য।

অন্যদিকে শেখ হাসিনা তার ভাষা বদলান নি। একদিকে বিরোধী দলের ওপর দমন পীড়ন জেল জুলুম আর অন্যদিকে তাদের সংলাপে ডাকা – এ এক পরাবাস্তব পরিস্থিতি। সরকার পক্ষীয় গণমাধ্যমগুলো নির্লজ্জ ভ (আরো পড়ূন)

বাংলাদেশের প্রতি ভারত ও মার্কিন অবস্থানের ভিন্নতা

প্রসঙ্গ একঃ আমেরিকা ভারতের কথা শুনল না

ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে স্থানীয় মিডিয়ার জন্য একটা প্রেস রিলিজ পাঠানো হয়েছে ০৯ নভেম্বর সন্ধ্যায়। ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ইংরাজীর সাথে বাংলাতেও বিবৃতিটি দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি নিউজপোর্টালে খবরটি ছাপা হয়েছে, প্রিন্ট পত্রিকাতেও এসেছে। প্রথম আলোর ১০ নভেম্বর প্রিন্ট কিম্বা অনলাইন সংস্করণেও তাদের নিজেদের করা বাংলা অনুবাদ দেয়া আছে। আমি সেটাই এখানে ব্যবহার করব। ওর কিছু অংশ এরকমঃ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র “গত কয়েক দিনের ঘটনাবলি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পথ খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। আম (আরো পড়ূন)

কী করবেন খালেদা জিয়া?

এ লেখা যখন লিখছি তখন বিরোধী দলের ওপর নতুন করে দমন পীড়ন শুরু হয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গভীর রাতে খালেদা জিয়ার বাসা থেকে বেরিয়ে যাবার সময় গ্রেফতার হয়েছেন ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমূল বিশ্বাস। কী অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করা হোল পুলিশ তৎক্ষণাৎ জানায় নি। বোঝা যাচ্ছে পরে তাদের বিরুদ্ধে যথারীতি মিথ্যা মামলা সাজানো হবে। বেগম জিয়ার গুলশান বাসভবন পুলিশ ঘিতে রেখেছে।

এছাড়া রাতে সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও বিরোধীদলীয় চিফ হুই (আরো পড়ূন)

সুশীল রাজনীতি ও ভারতের তিন চাহিদা

সুশীল রাজনীতি গণতন্ত্রের দুষমন

নির্বাচন মানে গণতন্ত্র এমন একটা ধারণা বাংলাদেশের সুশীলগণ জোরেশোরে প্রচার করে থাকে। তারা ধরে নেয় বাংলাদেশে গণতন্ত্র অলরেডি কায়েম আছে, এখন কাজ শুধু নির্বাচন করা। অথচ নির্বাচনকে যদি গণতান্ত্রিক চর্চা হতে হয় তাহলে তার আগে তো একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠিত থাকা দরকার। কিন্তু সুশীলদের কোলাহল নিরন্তর এই ধারণাই কায়েম করে যে রাষ্ট্রকে আগে থেকেই গণতান্ত্রিক চরিত্র নিয়ে গঠিত থাকার দরকার নাই; গণতান্ত্রিক বিধিবিধান বা আইনকানুন -- এমনকি নিদেনপক্ষে একটা লিবারেল কনষ্টিটিউশন --ইতাদি কোন কিছুরই দরকার নাই – নির্বাচন হলেই সেটা ‘গণতন্ত্র’। বাংলাদেশের (আরো পড়ূন)

হুঁশিয়ার বাংলাদেশ

এ লেখা যখন লিখছি, তখন আঠারো দলীয় জোটের ডাকা হরতাল চলছে। হেফাজতে ইসলামও তাদের দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য কর্মসূচী দিয়েছে। সংলাপের মাধ্যমে – অর্থাৎ উদার বা লিবারেল রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের কোন সুযোগ আদৌ ছিল কিনা তা নিয়ে এখন কূটতর্ক হতে পারে, কিন্তু তার কোন উপযোগিতা আর নাই। হরতালের মতো কর্মসুচী দেয়া শুরু হয়ে যাবার পর রাজনীতির গতিমুখ বোঝা যাবে আগামি কয়েক দিনেই। আগামি ৭ তারিখের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে একটি পর্ব শেষ হবার পর আরও অনেক কিছু স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ওদিকে সাত তারিখ থেকে হেফাজতে ইসলামের ১৫ তারিখের সমাবেশ অবধি কী ঘটে তার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ লেখা হয়ে যাবে। তাতে কোন সন্দেহ নাই।

আমি এই লেখা লিখছি চরম উদ (আরো পড়ূন)

জেলজুলুমের পরোয়া করি না

এক

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে।এতে আমি দুঃখিত ও মর্মাহতই শুধু নই,একই ভাবে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। গণমাধ্যম আইনশৃংখলা বাহিনী নয়, তবুও কারা এই ধরণের বোমাবাজি করছে সেটা গণমাধ্যম কর্মীদের নিজ নিজ পেশাদারি দক্ষতা ও অনুসন্ধানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। শুধু তাই নয়, চাইলে কেন এধরণের বোমাবাজি ঘটছে সেটার কারণও খোঁজ করা পর্যন্ত যেতে পারেন। অন্যদিকে, কেবল গণমাধ্যম নয়, বিরোধী দল ও সরকারী দলের নেতাদের বাসাতেও বোমা হামলা হয়েছে। কারা এইসব করছে অবশ্যই খুঁজে বের করা উচিত। গণমাধ্যমের কর্মীদের মধ্যে যারা আহত হয়েছেন, তাদের প্রতি আমার গভীর (আরো পড়ূন)

গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবিতা: এখনকার রাজনৈতিক কর্তব্য

রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে যে কোন নাগরিকই দুঃখিত ও মর্মাহতই হবেন। আমি ব্যতিক্রম নই। শুধু তা নয়,একই ভাবে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত।

এই পরিস্থিতিতে গত ২৮ অক্টোবর রাতে ইটিভির ‘একুশের রাত’ অনুষ্ঠানে আমি গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে নিজ দায়িত্বে কিছু কথা বলেছি। আর,আমি দায়িত্ব নিয়েই কথা বলি। সাংবাদিক মনির হায়দার অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন। এতে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে আমার বিশ্লেষণ ও মন্তব্য নিয়ে তর্ক তৈরী হয়েছে। তার কিছু উত্তর আরেকটি দৈনিকে আমি দিয়েছি। এই তর্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভিন্ন কিছু প্রসঙ্গ নিয়ে এখানে আলোচনা কর (আরো পড়ূন)

সুশীল রাজনীতি, সংলাপ ও সহিংসতা

এক

দুই নেত্রী সংলাপ করলে ও আগামি নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে একটি আপোষ রফা হয়ে গেলেই বাংলাদেশের সংঘাত-সংকুল রাজনীতি শান্ত হয়ে যাবে এই অনুমান নিয়ে পত্রপত্রিকা ও গণমাধ্যমে অনেকের নিরর্থক কথাবার্তা এখন বিরক্তিকর কোলাহলে পরিণত হয়েছে। পত্রপত্রিকা, টেলিভিশান ও ওয়েবপোর্টাল এমন সব অন্তঃসারশূন্য তর্ক করছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোন সম্পর্ক নাই।

‘সুশীল’ কথাটা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিন্দার্থে ব্যবহার শুরু হয়েছে এক এগারোর পর থেকে। কিন্তু আমরা প্রশ্ন করতে পারি বাংলাদেশে সুশীল রাজনীতির কি কোনই ইতিবাচক ভূমিকা নাই? সুশীল রাজনীতি বলতে আমি সেই রাজনীতির কথাই বলছি যা সাধারণত ‘ল (আরো পড়ূন)

নির্বাচন, পরাশক্তির হস্তক্ষেপ এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ

পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বকাঠামোতে গণতান্ত্রিক চর্চা মানেই সাম্রাজ্যবাদীদের কর্পোরেট আধিপত্য মেনে নিয়েই রাজনীতি করা, বাংলাদেশে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো তাই করে কিন্তু তারপরও এই সাম্রাজ্যিক হেজিমনির যুগেও আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নিজস্ব কিছু স্বকীয়তা, সীমিত স্বাধীনতা রয়েছে তার ভিত্তিতে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের অধিকার আদায়ের বন্দোবস্ত করে। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রেরএই সীমিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বও পুরাপুরি নস্যাৎ হয়ে যাবে যদি বাংলাদেশ সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের নতুন ফ্রন্ট হয়ে উঠে। বাংলাদেশের বুর্জোয়া শাসক শ্রেণীর সেবাদাসসুলভ মনোভাবের কারনে আগামী নির্বাচনে পরাশক্তির সমর্থন লাভ ক্ষমতার রাজনীতিতে খুবই গুরুত্ব (আরো পড়ূন)

টেলিফোনের রাজনীতি বনাম আন্দোলন

বেগম জিয়া ২৫ অক্টোবরের মহাসমাবেশে ঘোষণা করেছেন, আন্দোলন এবং সংলাপ দুই পথ ধরেই তিনি অগ্রসর হবেন। রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে এটা সঠিক অবস্থান। কিন্তু তিনি কী অর্জন করতে চাইছেন সেটা এখনও সাধারণ জনগণের কাছে অস্পষ্ট। তাঁর রাজনীতির এই দিকটি সবচেয়ে দুর্বল। যখন লিখছি তখন শোনা যাছিল তাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করবেন। শেষমেষ ফোন করেছেন হরতাল প্রত্যাহার করবার জন্য, আন্দোলন থেকে তাঁকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীনরা। তাঁকে গণভবনে নৈশ ভোজেও দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আরেকটি দারুন খবর তাঁর লালফোন নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী তা ঠিক করে দেবেন বলেছেন। খুব সুন্দর! সংলাপ শুরু হয়েছে!!

শেখ হাসিনা করেছেন আন্তর্জাতিক চাপে, বেগম জিয়াকেও (আরো পড়ূন)

খালেদা জিয়ার রাজনীতি, এখন...

শেষাবধি ২৫ অক্টোবর...

এই লেখা লিখছি বহু প্রতিক্ষার ২৫ অক্টোবর, শুক্রবারে। বাংলাদেশের রাজনীতি কোনদিকে যেতে চাইছে তার কিছুটা আন্দাজ আমরা আজ ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে করতে পারব। যেহেতু গতকাল অবধি দুইপক্ষের মধ্যে তথাকথিত ‘সমঝোতা’ বা ‘আপোষ’ হয় নি, অতএব রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মীমাংসা বলপ্রয়োগের মধ্য দিয়েই সম্ভবত নিষ্পন্ন হতে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা আইন-আদালত, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবিসহ রাষ্ট্রের সকল শক্তি প্রয়োগের প্রতিষ্ঠানকে বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কৌশল ও প্রতিরোধের প্রস্তুতি কেমন সেটা আমরা সম্ভবত এখন দেখত (আরো পড়ূন)

'প্রচলিত গণতন্ত্রে সত্য লুকানো হয় বলেই একে 'কুফরি' বলা হয়'

এ সাক্ষাৎকারটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে 'মাসিক রহমত' পত্রিকার আগস্ট ২০১৩, বর্ষ ২১, সংখ্যা ২৪৮। বাংলাদেশে ইসলামপন্থী রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে ইসলাম ও গণতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্ক। সাক্ষাৎকারে দর্শন ও ইতিহাসের দিক থেকে এই প্রশ্নটি ইসলামি রাজনীতি কিভাবে মোকাবিলা করতে পারে সে সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় গণশক্তি বিকাশের বাস্তব ও ব্যবহারিক দিকগুলোও আলোচনায় এসেছে। রাজনীতির তিনটি প্রধান 'স্তর' শনাক্ত করা হয়েছে যাতে জনগণের দিক থেকে এখনকার বাস্তব কাজের ধরণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা নির্ণয় সহজ হয়। সে তিনটি স্তর হচ্ছে (ক)  ইমান-আকিদার লড়াই, (খ)  বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে ইসলামের দ্বন্দ্ব টিকিয়ে (আরো পড়ূন)

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতেই কি কাঁদবে?

এক

বিচারকরা সমাজের বাইরের কেউ নন, সমাজের উর্ধেও নন। সমাজের দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মতাদর্শিক ও রাজনৈতিক মেরুকরণ সমাজের আর দশজনের মতো তাদেরকেও স্পর্শ করে। এই সীমাবদ্ধতা জেনেও কাকে ‘বিচার’ বলা যায় আর কাকে ‘বিচার’ বলা যায় না সে ব্যাপারে বিচারশাস্ত্রের আইনী ও ব্যবহারিক দিক থেকে কিছু ‘মানদণ্ড’ ঐতিহাসিক ভাবে গড়ে উঠেছে, যাকে আজকাল ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ড’ বলা হয়।

ঐতিহাসিক ভাবে গড়ে ওঠা কথাটার তাৎপর্য বোঝা দরকার। এই অর্থেই বিচারের মানদণ্ড ঐতিহাসিক যে কাকে ‘বিচার’ বলা হবে আর কাকে বিচার বলা হবে না সেটা কেউ ওয়াশিংটনে, জেনিভায় বা ইংলণ্ (আরো পড়ূন)

সুন্দরবন ও জীবনযাপন: আরও কথা

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধিতার পক্ষে সমাজে একটা গণসমর্থন গড়ে উঠেছে। যেহেতু রামপাল প্রকল্পের স্থান ঠিক হয়েছে সুন্দরবন অতএব এই প্রকল্পের বিরোধিতা সুন্দরবন রক্ষার জন্য জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির সুযোগও তৈরী করেছ। কিছু কথা ‘বাঘ, সুন্দরবন ও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প’ শিরোনামের লেখায় বলেছি। এখন কিছু বাড়তি কথা বলার সুযোগ নেব। কেউ কেউ বলছেন, ‘সুন্দরবন ছাড়া বাংলাদেশ টিকবে না’ – এই কথাটা ঠিক কি (আরো পড়ূন)

বাঘ, সুন্দরবন আর রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প

 এক

দৈনিক যুগান্তর ও চিন্তার ওয়েবপাতায় ‘গণতান্ত্রিক বিপ্লবের তিন লক্ষ্য’ ( ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৩)  প্রকাশের পর সাড়া পেয়েছি বিস্তর। এতে অবাক হয়েছি, কিছুটা। সমাজ যেভাবে বিভক্ত তাতে যে কথা বলতে চেয়েছি তা পাঠকদের কাছে পোঁছানো কঠিন ভেবেছিলাম। কিন্তু মনে হয় তাঁরা বুঝেছেন।

শাপলা/ শাহবাগ বিভাজনের রাজনৈতিক মুহূর্ত বাংলাদেশে ঘটে যাবার ফলে আমাদের প্রথাগত চিন্তার ছক খানিক নড়বড়ে হয়েছে। অনেকের সঙ্গে দূরত্ব তৈরী হয়েছে, অনেকের সঙ্গে বাধ্য হয়েই দূরত্ব তৈরী করতে হয়েছে। ফেইসবুক নাম (আরো পড়ূন)

গণতান্ত্রিক বিপ্লবের তিন লক্ষ্য

বাম ঘেঁষা সমাজবিজ্ঞানীরা কমবেশী সকলেই মানেন যে একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্কের উদ্ভব ও বিস্তার একটি মাত্রা অতিক্রম করলে পুরানা প্রাক-পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্কগুলো ভেঙ্গে পড়তে থাকে, সমাজের রূপান্তর ঘটা শুরু হয়। এই অবস্থাতেই গণতান্ত্রিক বিপ্লবের সূচনা ঘটে। এই ফর্মুলা মাথায় রেখেই তথাকথিত প্রগতিশীল ঘরানার রাজনীতির নিজেদের রাজনৈতিক কর্তব্য নির্ণয় করবার কথা। এই প্রাক-পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ক উৎখাত করে একটি জনগোষ্ঠি ঐতিহাসিক উল্লম্ফনের মধ্য দিয়ে নতুনভাবে তাদের যাত্রা শুরু করে। গণতান্ত্রিক বিপ্লবের এটাই সারকথা।

তবে ইউরোপের ইতিহাসকে সকল জনগোষ্ঠির ইতিহাস অনুমান করে এই সাক্ষ্য দেওয়া হয়। মোটাদাগে এই বিপ্লবের লক্ষ্য থাকে তিনটি। এক. (আরো পড়ূন)

পাকা ফল বাদুড়ে খায়

 এক

সমাজে অর্থনীতিতে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কিম্বা রাজনীতিতে যে সকল সম্পর্ক আমাদের জাপটে ধরে রাখে, মুক্ত হতে দেয় না, আমি তা উপড়ে ফেলার পক্ষপাতি। কেবল তখনই নতুন কিছুর নির্মাণ সম্ভব। সে নতুনের রূপ কেমন হবে সেটা বর্তমানের ভেতরে থেকেই অনুমান ও চিহ্নিত করা সম্ভব। বর্তমানের মধ্যে কাজ করেই তাকে ‘বর্তমান’ করে তোলা যায়, বাস্তবায়নও সম্ভব।

এক সময় দাবি করা হোত ইতিহাস সরল রেখার মতো। পেছনের যা কিছু সবই বাতিল করে দিয়ে আমরা শুধু সামনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। সামনে এগিয়ে যাওয়া মানেই ‘আধুনিক’ হওয়া, তথাকথিত 'প্রগতি'র অর্থও তাই। ইতিহাসের গতি রৈখিক, অর্থাৎ সরল রেখার (আরো পড়ূন)

৩. যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভেজাব না'

আন্দোলনে বিএনপির সাময়িক ইস্তফা

গত কিস্তি ছাপা হবার আগেই বোঝা গিয়েছে আন্দোলনের প্রশ্নে দোদুল্যমানতা ও পরাশক্তির ফাঁদে খাবি খাবার দুর্দশাই বিএনপি বেছে নিয়েছে। বিএনপি বাংলাদেশের জনগণের ওপর নয়, নির্ভর করতে চাইছে জাতিসংঘের ওপর। আন্দোলন থেকে পিছু হটে জাতিসংঘের সহায়তায় ক্ষমতায় আসতে চাইছে। বিএনপি হরতাল-অবরোধ বা কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে যাবে না। গরম ভাব ত্যাগ করে বিএনপি নরম হয়েছে। এর পরিণতি বিএনপির নেতানেত্রী বিশেষ ভাবে খালেদা জিয়া যথেষ্ট ভেবেছেন মনে হয় না। কিন্তু জাতিসংঘকে ডাকাডাকি শুধু বিএনপির জন্য নয়, বাংলাদেশের জন্যও আত্মঘাতী পথ। বিএনপির অবিলম্বে এই পথ থেকে সরে আসা উচিত। এই বিপজ (আরো পড়ূন)

২. যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না!!

কূটনৈতিক মহলের তৎপরতা

‘যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভেজাবো না’ শিরোনামে কিছু কথা বলা শুরু করেছিলাম। এ লেখা তারই ধারাবাহিকতা।

ইতোমধ্যে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার কূটনৈতিক মহল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা সুষ্ঠ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। তারা চাইছেন বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেমন আছে তেমনি থাকুক; বড় কিসিমের গড়বড় কিম্বা দেশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আলগা হয়ে যাক তারা চান না। তারা চাইছেন, রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থার কোন বদল না ঘটিয়ে ক্ষমতার হাতবদল কোন প্রকার সংঘর্ষ ছাড়া ঘটুক। তারা এমন একটা পরিস্থিতি তৈরী করতে চান যাতে প্রধান প্রধ (আরো পড়ূন)

১. যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভেজাবো না !!

‘এক চুলও নড়বো না’

শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি ‘একচুলও নড়বেন না’। তিনি যেভাবে তাঁর অধীনে নির্বাচন করতে চান, সেভাবেই নির্বাচন হবে। তাঁর ইচ্ছাই শেষ কথা। বলেছেন, কিভাবে হবে সেটা সংবিধানেই লেখা আছে। এরও সুনির্দিষ্ট অর্থ আছে। অর্থ হোল, তিনি যেভাবে সংবিধান সংশোধন করে রেখেছেন, সেইভাবেই নির্বাচন হতে হবে: তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, সংসদ জারি থাকবে; থানা-পুলিশ-প্রশাসন তার আজ্ঞাবহ থাকবে, তাদের সহযোগিতা করবে যুবলীগ-ছাত্রলীগের কর্মীরা; এই পরিস্থিতি মেনে নিয়েই বিরোধী দলকে নির্বাচনে আসতে হবে। শুধু তাই নয়, নির্বাচন কমিশনের এখন যতোটুকু এখতিয়ার তাকে সংকুচিত করা হবে, যতটুকু ক্ষমতা (আরো পড়ূন)

সিরিয়ার জটিল অংক

বারাক ওবামা যা আশা করেছিলেন সেটা হয় নি। বিলাতের পার্লামেন্ট সিরিয়ায় সামরিক হামলার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে নি। তিরিশে অগাস্ট বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে তর্ক হয়েছে পার্লামেন্টে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ব্রিটেন যুদ্ধে জড়াবে না। ওবামার প্লান এতে কিছুটা এলোমেলো হয়ে গেল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ কারনে একা হয়ে যাবে সেটা ভাবার অবশ্য কোন কারন নাই। এরপরও সিরিয়ার হামলায় অনেক দেশের সমর্থন পাওয়া যাবে। তবুও, মানতে হবে, ওবামার সামরিক বাসনা এতে কিছুটা দমিত হতে পারে। সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক হামলার চালাবার যুক্তি খাড়া করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে যাবে।

বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছেন। কিন্তু তার কোন সুস্পষ্ট বা অকাট্য (আরো পড়ূন)

কালোআইন ও মতের স্বাধীনতা

মাহমুদুর রহমান একবার আদালত অবমাননার দায়ে জেল খেটেছেন, নির্যাতীত হয়েছেন। দ্বিতীয়বারও তিনি গ্রেফতার হয়েছে, রিমান্ডে নিয়ে তাঁর ওপর নির্যাতন হয়েছে। তার মতাদর্শ ও রাজনীতির বিরোধীরা এতে পুলকিত হয়েছে, তাঁর সমর্থকরা তাঁর পক্ষে লড়ে গিয়েছেন। এই দুই পক্ষের বাইরেও অনেকে রয়েছেন যারা শুধু মাহমুদুর রহমান কেন, যে কোন ব্যক্তির নাগরিক ও মানবিক অধিকার রক্ষার নীতি অলংঘনীয় গণ্য করেন। তারা মাহমুদুর রহমানের মতাদর্শ ও রাজনীতির বিরোধী, সেটা তারা বলেছেনও, কিন্তু তাঁর অধিকার রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ গণ্য করেছেন। তাঁরা সেই নীতির জায়গার দাঁড়িয়েই গ্রেফতার ও দমন-পীড়নের নিন্দা করেছেন। যদি তা না করা হয় তাহলে রাষ্ট্র একটি ভীতিকর নিপীড়নের যন্ত্র হয়ে ওঠে; আর, ক্ষমতাসীনরা সেই যন্ (আরো পড়ূন)

গণমাধ্যম ও মানবাধিকার

আদিলুর রহমান খান শুভ্রকে প্রথমে অপহরণ করা হয়েছিল, তাঁর বাসার সামনে থেকে। আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, অপহরণ ও গুমের যে রেকর্ড বর্তমান সরকারের রয়েছে তা বিবেচনা করে এই অপহরণকে দেশে ও বিদেশে মানবাধিকার কর্মীরা সহজ ভাবে নেয় নি। তার পরদিন তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে তার কোন নিশ্চয়তা ছিল না। সরকার তাঁকে হাজির করেছে বাধ্য হয়ে। কারন তাঁকে অপহরণের খবর দেশে বিদেশে বেশ দ্রুততার সঙ্গেই জানাজানি হয়ে গিয়েছিল। উৎকন্ঠা ও উদ্বিগ্নতা ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। কেন তাঁকে কোন আগাম অভিযোগ ছাড়া গ্রেফতার করা হোল তার কোন ব্যাখ্যা সরকার দিতে পারে নি। গ্রেফতারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমে জানিয়েছেন আদিলুরের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। প্রশ্ন উঠল, যদি তাই হয়ে থাকে তা (আরো পড়ূন)

নির্বাচন নাকি গণতন্ত্র?

বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবার আগে আদৌ কোন নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় নতুন নয়। হয়তো হবে না, হয়তো হবে। ভদ্রলোক সমাজে যে উদ্বিগ্নতা আমরা দেখছি তাকে মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এক পক্ষে রয়েছে আইনী উদ্বিগ্নতা। যেমন, এই সরকারের মেয়াদ শেষ হলে যে সাংবিধানিক জটিলতা তৈরী হবে তার মীমাংসা কিভাবে হবে? আরেক ধরণের উদ্বিগ্নতা হচ্ছে সামাজিক। সেটা হোল নির্বাচন যদি না হয়, ক্ষমতাসীনরা যদি একতরফা নির্বাচন করে, তাহলে দেশে একটা সংঘাতময় পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটবে। সেটা সামাল দেওয়ার উপায় কি? বড়লোকদের জানমাল রক্ষার ব্যবস্থা কিভাবে হবে? পাহারাদারি কে করবে? পুলিশ? সরকারের মেয়াদ শেষ হলে পুলিশও নাকি চোখ উল্টিয়ে ফেলে, আর হাওয়া যদি ভিন্ন ভাবে বইতে শুরু করে তাহলে ত (আরো পড়ূন)

নাগরিক ও মানবিক অধিকারের রাজনীতি

আজকাল কোন সভাসমিতিতে যেতে ইচ্ছা করে না। এটা পছন্দ অপছন্দের ব্যাপার নয়। প্রায় সবসময়ই দেখি, যে কথা বলি কোন সময়ই সেটা ঠিক ভাবে গণমাধ্যমে আসে না। প্রতিটি পত্রিকা তাদের নিজেদের মতো করেই তাদের যে-বাক্য পছন্দের সেটাই সারকথা হিসাবে হাজির করে। এতে অসুবিধা নাই। যদি উদ্ধৃতি সঠিক হয়। যে-প্রসঙ্গে বাক্যটি বলা বা যুক্তির যে ধারাবাহিকতায় কথাটি উঠেছিল তা না হয় উহ্যই থাকল। কিন্তু বিপদ হয়ে দাঁড়ায় যা বলেছি ঠিক তার উলটা যদি পত্রিকায় ছাপা হয়। এর ফলে বন্ধু ও শুভার্থী মহলে জবাবদিহি করতে করতে জান বেরিয়ে যাবার হাল হয়। ভাগ্য ভালো যে আমি লেখালিখি করি। ফলে অন্য লেখালিখির মধ্যে বিভ্রান্তি কাটিয়ে ওঠা কিছুটা সম্ভব হয়। ক্ষতি যা হবার তাতো হয়ই।

অগাস্টের তিন তারিখে না (আরো পড়ূন)

ভালোই তো, ভালো না !

তথ্য মন্ত্রণালয় তথ্য চায়। তাদের কাছে তথ্য নাই যে তা না, তবু তারা তথ্য চায়। আজব ব্যাপার! তথ্য মন্ত্রণালয় তথ্য চেয়েছে ‘অধিকার’ ও ‘টি আই বি’র কাছে। দৈনিক জনকন্ঠে বিভাষ বাড়ৈ রিপোর্ট করেছেন, “শাপলা চত্বরের মৃত্যুর বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বিপাকে ‘অধিকার’ (১৪ জুলাই ২০১৩)”। ভালো তো, ভালো না?

পড়ুক অধিকার বিপাকে। আসলে কেউই মারা যায় নি। জাতীয় সংসদেও সরকারদলীয় নেতৃস্থানীয় সংসদ সদস্যরা বলেছেন ৫ মে রাতে হেফাজতের সমাবেশে কোন প্রাণহানির ঘটনাই ঘটেনি। আর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী গত ১৯ জুন জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তৃতায় বলেন, “৫ মে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর কোনো গুলিবর্ষণ করা হয়নি বরং হেফ (আরো পড়ূন)

কাউকে না কাউকে বলে যেতেই হবে

শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেবেন না, তিনি পণ করেছেন তাঁর অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। এর পক্ষে তিনি আদালতের বরাত দিচ্ছেন। আদালত রায় দিয়েছে, তিনি আদালতের কথা মতোই চলবেন। আদালত ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বাইরে স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেই সত্য আদালত কিম্বা আওয়ামি লীগ দুইয়ের কেউই প্রতিষ্ঠিত করতে পারে নি। বলাবাহুল্য, বেগম খালেদা জিয়া জানেন এর অর্থ হচ্ছে নির্বাচনে কারচুপি করে বিরোধী দলকে হারিয়ে দেবার পন্থা হিশাবেই শেখ হাসিনা নিজের অধীনে নির্বাচন চাইছেন। অতএব খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করবেন না। তাঁর তত্ত্বাবধায়ক চাই। আওয়ামি পন্থিরা বলছে, ক্ষমতাসীনদের অধীনে সিটি কর্পোরেশানগুলোর নির্বাচন হয়ে গেলো। সেখানে আওয়ামী ল (আরো পড়ূন)

মাননীয় কৃষিমন্ত্রী, বিটিবেগুন চাই না

[এক]

াননীয় কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরির কাছে আমি একটি দরখাস্ত পেশ করব। কিন্তু তার আগে নিজের সম্পর্কে দুই একটি কথা না বলে পারছি না।

আমি কৃষকদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষেতখামারে কাজ করছি। এটা গ্রাম বা কৃষিব্যবস্থার প্রতি কোন রোমান্টিক ধারণার বশবর্তী হয়ে নয়। তবে অনেকের মতোই শহরের চেয়ে গ্রাম আমার ভাল লাগে। নিজেকে অনেক সময় প্রশ্ন করি, ভাল লাগার ব্যারামটা শহরের ‘গেঞ্জাম’ থেকে দূরে থাকার বাসনা কিনা। কিন্তু সবসময়ই নেতিবাচক উত্তর পাই। কারন শহরও আমার ভাল লাগে, কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। দিনানুদিনের লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে শহরে সাধারণ মান (আরো পড়ূন)

মিশরের রাজনীতি ও নির্বাচনবাদী ইসলামপন্থা

মিসরের সেনাবাহিনী জুলাইয়ের ৩ তারিখে সংবিধান স্থগিত ও নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মরসিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছে। যুক্তি দিয়েছে বিরোধী দলের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বেঁধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমঝোতা করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। সমঝোতার একটা প্রস্তাব শেষ মুহূর্তে মরসি দিয়েছিলেন, কিন্তু ততোদিনে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে। সেনাবাহিনী একই সাথে অধৈর্য বাকভঙ্গীতে হুমকি দিয়ে বলেছে, গণমাধ্যম ও বিরোধী শক্তি মোকাবিলার জন্য এক বছরই যথেষ্ট। একটি নির্বাচিত সরকারকে তার পূর্ণ মেয়াদ পালন করতে না দিয়ে মোহাম্মদ মরসির বিরোধীরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগসাজসে সেনা অভ্যূত্থান ঘটানোর যে পথ গ্রহণ করেছেন তা মিশরের জনগণের জন্য আত্মঘাতী পথ। বলাবাহুল্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ম (আরো পড়ূন)

চার সিটি কর্পোরেশান নির্বাচন

শেখ হাসিনা বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানবেন না, সেটা তিনি পরিষ্কার বলে আসছেন। এর জন্য তিনি বিস্তর রক্তক্ষয় ঘটিয়েছেন। আরও যদি ঘটে তিনি এই অবস্থান থেকে নড়বেন না। আসন্ন আগামি জাতীয় সংসদের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকেই তিনি নির্বাচন করতে চান, সেই ইঙ্গিত রাজনীতিতে নানাভাবে তিনি দিয়ে রেখেছেন। যদি সদয় হয়ে নিজে ক্ষমতার দণ্ড হাতে না রাখেন তাহলেও তাঁকে নিশ্চিত করতে হবে  প্রশাসনের ওপর তাঁর দাপট ও ক্ষমতা পুরাপুরি বহাল রয়েছে। যদি আদৌ নির্বাচন হয় তাহলে দলীয় আধিপত্য ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দিয়ে তাঁকে যে ভাবে হোক নির্বাচনে জিতে আসতে হবে।  তিনি জানেন, রাজনীতিতে সহিংসতার মাত্রা যে স্তরে তিনি নিয়ে এসেছেন তার প্রাণঘাতী মেরুকরণের  কুফল ত (আরো পড়ূন)

ধর্ম প্রসঙ্গে

[ চিন্তা (বৃহস্পতিবার) পাঠচক্রে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিয়মিত আলোচনা হয়। তার মধ্যে ধর্ম, ধর্মতত্ত্ব, দর্শন ভাবুকতা ইত্যাদি অন্যতম। সম্প্রতি বিভিন্ন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ফরহাদ মজহার যে আলোচনা করেছেন এখানে তার কিছু সারসংক্ষেপ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হোল। আলোচনাগুলো যেন হারিয়ে না যায় তার জন্য কিছু বিষয় রেকর্ড করে রাখবার চেষ্টা। আশা করি একে কেন্দ্র করে আরও আলোচনার সুবিধা তৈরী হবে।

বলাবাহুল্য, মুখোমুখি আলাপের গুরুত্ব আলাদা। প্রবন্ধ বা লেখা হিশাবে হাজির করবার চেয়ে জীবন্ত প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা বিষয়ে প্রবেশ করতে অনেক বেশি সহায়ক, এটাই আমাদের ধারণা।  এর বৈশিষ্ট কোথায় পাঠক পড়া মাত্রই বুঝতে পারবেন। প্রাথমিক আলাপের কিছু অংশ এ (আরো পড়ূন)

কামরাঙ্গীর চরে মাদ্রাসায় শিক্ষা বিপ্লবের সূচনা

আহমদ ছফার একটি পুরানা লেখা। সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের আবির্ভাবের কারনে কওমি মাদ্রাসা নানান দিক থেকে আলোচিত। সেই ক্ষেত্রে আহমদ ছফার এই পুরানা লেখাটি প্রাসঙ্গিক হতে পারে ভেবে আমরা এখানে তুলছি। বাংলাদেশের আলেম ওলামাদের প্রতি আহমদ ছফা সদয় ছিলেন, সন্দেহ নাই। তাঁদের কাছাকাছি যাবার চেষ্টা করেছেন একসময় এবং তাঁদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনবার জন্য যথেষ্ট কোশেশ করেছেন। তাঁর লেখার সেই স্বীকারোক্তি আছে। কিন্তু তিনি সফল হতে পারেন নি। এর নানা কারন থাকতে পারে। যেমন, ‘রেঁনেসা’, ‘আধুনিকতা’, ‘আধুনিক শিক্ষা’ ইত্যাদির প্রতি তাঁর নির্বিচার পক্ষপাত তাঁকে আলেম-ওলামাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল হয়ত। তিনি নিজেও সে ব্যাপারে সচেতন (আরো পড়ূন)

‘বেটার লেইট দেন নেভার’

বাংলাদেশের কয়েকজন সম্পাদক গত ১৮ তারিখে মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, বন্ধ টিভি চ্যানেল ও আমার দেশ ছাপাখানা খুলে দেবার জন্য বিবৃতি দিয়েছেন। মাহমুদুর রহমান গ্রেফতার হবার প্রায় ৪০ দিন পর এই বিবৃতি এলো। এই ৪০ দিনে অবশ্য বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেক কিছুই ঘটে গিয়েছে। তবুও একদমই কোন বিবৃতি না আসার চেয়েও দেরিতে আসাকে মন্দ বলা ঠিক না। সাহেবরা যেভাবে বলেন, ‘বেটার লেইট দেন নেভার’। আমরাও তাই বলি। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।

হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ লংমার্চ ও সমাবেশের পাঁচ দিন পর ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পত্রিকা অফিস থেকে গ্রেফতার করে সাদা পোশাক পরা (আরো পড়ূন)

অপারেশন ফ্লাশ আউট

নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশান ফ্লাশ আউট’ – অর্থাৎ হেফাজতিদের শহর থেকে টিয়ারগ্যাস ছুঁড়ে গুলি মেরে বোমা ফাটিয়ে যে ভাবেই হোক তাড়িয়ে দিতে হবে। শহর সাফ করতে হবে। শহর ধনি ও বড়লোকদের জায়গা। ভদ্রলোকদের নগর। সুশীলদের রাজধানী। যাদের পাহারা ও রক্ষা করবার দায়িত্ব র‍্যাব, পুলিশ ও বিজিবির। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও মজুদ। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছিল ‘অপারেশন সিকিউরড শাপলা’, অন্যদিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) একই  অপারেশনের নাম দেয় ‘অপারেশন ক্যাপচার শাপলা’। চরিত্রের দিক থেকে এটা ছিল মূলত একটি সামরিক অভিযান। নিজ দেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের বিরুদ্ধে সাঁজোয়া যান ও মারণাস্ত্রসহ ঝাঁপিয়ে পড়া।  (আরো পড়ূন)

শিক্ষা ও কওমি মাদ্রাসার রাজনীতি

হেফাজতের আবির্ভাব এবং তাদের ১৩ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে নিজ নিজ রুচি ও হিংসার মাত্রা অনুযায়ী রাজনীতির বিভিন্ন পক্ষ বিভিন্ন ভাষায় প্রতিপক্ষকে আক্রমণ এবং নিজ নিজ শ্রেণির পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এর দ্বারা সমাজে শ্রেণি ও শক্তির চরিত্র আমরা কিছুটা শনাক্ত করতে পারছি। এর মধ্য দিয়ে সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশে বুদ্ধিবৃত্তিক স্তর সম্পর্কেও ধারণা করা যায়। আসলে বাংলাদেশে কী ঘটছে তা বুঝবার জন্য সঠিক তথ্যের চেয়ে প্রচার ও প্রপাগান্ডার দিকে অতি মাত্রায় ঝোঁক এবং বিশ্লেষণের চেয়েও নিজের বদ্ধমূল অনুমান ও মতের গোঁড়ামি নির্বিচারে উগরে দেবার মানসিকতাই প্রকট হয়ে আছে।

যথেষ্ট না হলেও বিভিন্ন শ্রেণিগুলোকে চেনার জন্য তাদের দাবিদাওয়াগুলো হলো প্রাথমিক উ (আরো পড়ূন)

হেফাজতের দাবি: নাকচ করলেই নাকচ হয় না

এক

এপ্রিলের ৮ তারিখে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রচার করে বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ যথারীতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংকটের সময় উদ্ধার করেছে। সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছিল হেফাজতে ইসলামের তেরো দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে। ছয়ই এপ্রিলে ঢাকা শহরের শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে হেফাজতে ইসলাম শুধু নিজেদের আবির্ভাবকেই স্পষ্ট করে তোলেনি, একই সঙ্গে তাদের ১৩ দফা সামনে নিয়ে এসে সরকার ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী সুশীলদের মহাবিড়ম্বনায় ফেলে দিয়েছে। তাছাড়া ঢাকার কূটনৈতিক মহলও নড়েচড়ে বসেছিল। হেফাজতের মহাসমাবেশে এতো লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটবে এটা কারো কল্পনার মধ্যেও ছিল না।

হেফাজতে ইসলা (আরো পড়ূন)

‘নারী নীতি’ নিয়ে বিভ্রান্তি

এক

হেফাজতে ইসলাম এপ্রিলের ৬ তারিখে ঢাকা শহরে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে প্রশাসনের সঙ্গে ওয়াদা অনুযায়ী ঠিক ঠিক পাঁচটার সময় শেষ করে ফিরে গেছেন। ঢাকা শহরের মানুষ শাপলা চত্বরে এতো আলেম ওলামাদের একসাথে কখনো দেখে নি, তারা বিস্মিত। কত মানুষ জড়ো হয়েছিলেন তা নিয়ে সঠিকভাবে কোন পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও সংখ্যাটা তাক লাগিয়ে দেয়ার মতোই ছিল। হেফাজতের এই লং মার্চ যেন না হতে পারে তার জন্য সরকার নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল; ঢাকাগামী সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ করার পরও এতো মানুষ কি করে ঢাকায় এলো তা বিস্ময়ের ব্যাপার বটে।

হেফাজতের এই কর্মসুচী শেষ হয়েছে, তাঁরা নিজ নি (আরো পড়ূন)

নষ্ট শহরে হেফাজতের গণবিস্ফোরণ

হেফাজতি ইসলামের ছয় এপ্রিলের সমাবেশ শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে টান টান উত্তেজনা এবং আতংকের সাময়িক অবসান ঘটেছে। সাময়িক এ কারণে যে সমাজের বিরোধ যে-রাজনৈতিক রূপ লাভ করেছে তাতে এই টান টান অবস্থার পরিসমাপ্তি সহজে ঘটবে না। বরং হেফাজতে ইসলামের মধ্য দিয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক শক্তির আবির্ভাব আমরা দেখলাম। যাদের সম্পর্কে সমাজের ধারণা খুবই অল্প। বিদ্যমান দ্বন্দ্ব-সংঘাতের বাস্তবতা ও চরিত্রের কারণে তারা তাদের ধর্মীয় দাবিকে রাজনৈতিক দাবি হিশাবে হাজির করতে সক্ষম হয়েছে। শহুরে ভদ্রলোক ও বিদ্যমান ব্যবস্থার সুবিধাভোগী শ্রেণি তাদের পশ্চাতপদ ও গণবিরোধী চিন্তাচেতনার আবর্জনা এরপরও ঘাঁটতে থাকবে। দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকবে তারা। বুঝতে চেষ্টা করবে না কেন ঘটনাটি ঘটল। এর আর্থ- (আরো পড়ূন)

এখন ঘুরে দাঁড়াবার সময়

‘নাগরিক’ বা ‘নাগরিকতা’ আমাদের রাষ্ট্র কিম্বা সমাজচিন্তার গুরুত্বপূর্ণ কোন ধারণা নয়। মানবাধিকার নিয়েও আমরা কথা বলি এবং কাজও করি, কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের সঙ্গে নাগরিক ও মানবিক অধিকারের সম্পর্ক ঠিক কোথায় এবং কিভাবে তারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গাঠনিক ভিত্তি হিশাবে কাজ করে সেই সব বিষয়ে আমাদের সমাজে ভাবনা চিন্তার অভাব আছে। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি, ফলে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কল্পনা ও আবগের প্রায় পুরোটাই দখল করে আছে। আমাদের বুদ্ধিবৃত্তির সাড়ে পনেরো আনা অংশ খরচ হয় স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিচারণে। কিন্তু পরাধীনতার হাত থেকে মুক্তির জন্য সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধ করা আর নিজেদের একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিশাবে বিশ্বসভায় প্রতিষ (আরো পড়ূন)

কে হবেন রাষ্ট্রপতি?

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান মানুষের প্রচুর ভালবাসা পেয়েছেন। ব্যক্তি হিশাবে এটা বিরল সৌভাগ্য। তবে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর মূল্যায়ন রাজনৈতিক ভাবেই হওয়া উচিত। সেটা তাঁর মৃত্যুর পরপরই করতে হবে এমন কথা নাই। আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সেটা খাপ খাবে না। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগের নেতা নেত্রীদের যে সাংস্কৃতিক মান দেখি তুলনায় তাঁকে ফেরেশতা মনে হয়। হয়তো এই জন্য মানুষ তাঁকে প্রাণভরে দোয়া করেছে। জানাজায় বিপুল সংখ্যায় শরিক হয়েছে। তাঁর নিরীহ জীবন, অহিংস বাচনভঙ্গী ও শারিরীক অঙ্গভঙ্গীর শালীনতা বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষকে কাছে টেনেছে। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর এই ব্যক্তিগত গুণগুলোই সশব্দে জানান দিয়ে গিয়েছে।

(আরো পড়ূন)

নির্মূলের রাজনীতি ও শাহবাগ: অনিশ্চিত গন্তব্য

ঘটনার শুরু ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগন হামলায়, যা ৯/১১ বলে পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একে বিশেষ ধরনের ‘সন্ত্রাসবাদ’ বলে আখ্যা দেয় এবং তা নির্মূল করবার জন্য নতুন ধরণের যুদ্ধের সূচনা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার জন্য ‘আল কায়েদা’কে দায়ী করে। বুশের নেতৃত্বে আমেরিকা আল-কায়েদার রাজনীতি ও হামলা মোকাবিলার যে নীতি গ্রহণ করে তার বৈশিষ্টগুলো হলোঃ

১. খ্রিশ্চান ইভানজেলিক ধারায় আল কায়েদা নির্মূলের যুদ্ধকে ইসলামের বিরুদ্ধে খ্রিশ্চান জগতের ক্রুসেড সাব্যস্ত করে লড়া।

২. “ওয়ার অন টেরর” বা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের ডাক দেয়া, এই ডাকের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রকে পক্ষে টানা। স (আরো পড়ূন)

বাংলাদেশে নিউকনি সেপাই

আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিভাষায় ‘নিউকন’ ধারনাটির প্রবর্তন ঘটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সত্তর দশকের শুরুর দিকে, মাইকেল হ্যারিংটনের হাত ধরে। মাইকেল নিজেকে ‘সমাজতন্ত্রী’ বলে দাবি করলেও তাঁর রাজনীতি উদারনৈতিক মার্কিন গণতান্ত্রিক পরিমণ্ডল বা লিবারেলিজম থেকে আলাদা কিছু নয়। তিনি চান শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটাভুটির নিয়ম মেনে সমাজতন্ত্র কায়েম বা একধরণের সহনীয় পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরণের লিবারেলদের সংখ্যা কম নয়। এই উদারনীতিবাদীরা ধর্ম নিরপেক্ষও বটে। কিন্তু সত্তর দশকের দিকে ভিয়েতনাম যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দেখা গেল এই উদারবাদী বা লিবারেলদের বিশাল একটি অংশ হঠাৎ ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে নির্মম মার্কিন যুদ্ধনীতি (আরো পড়ূন)

পূর্ব বঙ্গের কৃষক আন্দোলনঃ সাম্প্রদায়িকতা না শ্রেণীসংগ্রাম?

আবুল মনসুর আহমদরে অনেকেই কেবল ব্যঙ্গ লেখক হিশাবে চিনতে চান। কিন্তু তাকে কেবল ব্যঙ্গ লেখক মনে করা তাঁকে ব্যঙ্গের শামিল। এতে তাঁর আরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান আড়াল হইয়া যায়। ১৯৪৭ সালের আগের ও পরের ইতিহাস, বিশেষ কইরা আমাদের এই অঞ্চলের কৃষি প্রশ্ন ও তার রূপান্তর জানতে বুঝতে চাইলে আবুল মনসুর আহমদরে বাদ দিয়া সেইটা এক প্রকার অসম্ভব। তিনি ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’ নামে একটা আত্মজীবনী লেইখা গেছেন। যেইটা নিছক আবুল মনসুরের আত্নজীবনী না, আমাদের এই ভু-খন্ডের আত্মজীবনীও বটে।

বইটা বিশাল, পুরা বইয়ের আলোচনা এইখানে সম্ভব না। আমরা শুধু কৃষক-প্রজা পার্টির ইতিহাসে নজর ফিরাব। আমাদের ইতিহাস আলোচনায় কৃষক-প্রজা পার্টি নিয়া আলোচনা করতে দেখা যায় না। (আরো পড়ূন)

অসামান্য বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম

তাঁর সঙ্গে দুইবার মাত্র দেখা হয়েছিল। এর একটা বড় কারণ, তিনি তাঁর জ্ঞানচর্চা ও শিক্ষকতার সূত্রে থাকতেন চট্টগ্রামে। দ্বিতীয় কারণ আমরা এমন এক সমাজ তৈরী করেছি যেখানে জ্ঞানের কদর নাই, বিজ্ঞান তো দূরের কথা। সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও বিশ্বসভায় নেতৃত্ব অর্জনের ক্ষেত্রে মৌলিক বিজ্ঞান চিন্তার ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের বিন্দুমাত্র ধারণা নাই। বিজ্ঞানীর যোগ্য সামাজিক সম্মান আমরা দিতে জানি না; তাঁদেরকে ঘিরে আমাদের কোন সামাজিক সংঘ নাই; চিন্তার আদান প্রদানের কোন সাধারণ পাটাতন নাই। ফলে জ্ঞানবিজ্ঞানের আউলিয়া হয়ে তাঁরা তাঁদের নির্জন সাধনায় একা একা রত থেকেছেন। এখন যখন সংবাদ পাচ্ছি যে তিনি আর নাই, তখন বেদনায় কাতর হতে পারি, কিন্তু সেটা কুমিরের অশ্রুর বেশি মূল্য পা (আরো পড়ূন)

শ্রেণি ও শক্তির নতুন বিন্যাস চলছে

বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভাবাচ্ছে সবাইকে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও শক্তিও নতুন পরিস্থিতিতে নতুন ভাবে বিন্যস্ত হচ্ছে। ভীত সন্ত্রস্ত মধ্যবিত্ত শ্রেণি দুই পক্ষের মধ্যে কোন একটা সমঝোতার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে শশব্যস্ত। তারা চাইছে রাজনীতির প্রধান দুই প্রতিপক্ষ সংলাপে বসুক। কোন একটা ফর্মুলা বের করে নির্বাচন করুক। হীনবীর্য পাতিবুর্জোয়া নীতিবাগীশরা যথারীতি সহিংসতা নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্কে আসর গুলজার করে রেখেছে। জামাত-শিবিরকে দানব বানাবার কাজে সকল সৃষ্টিশীলতা ব্যয় করতে তারা কসুর করছে না, যেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর তার ট্রিগার হ্যাপি পুলিশ বাহিনী দিয়ে জামাতি দানবদের আরও নিখুঁত টার্গেটে হত্যা করতে পারে। অন্যদিকে জামাত বির (আরো পড়ূন)

ইনসাফ না থাকলে যা ঘটে

বাংলাদেশের সমাজ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে, এতে সন্দেহ নাই। এই বিভাজনকে এতদিন আমরা যেভাবে আওয়ামী লীগ- বিএনপি বলে চিনতাম সেই বিভক্তি নয়। এই ভাগাভাগি আরও গভীরে, আরও ব্যাপক, আরো বিস্তৃত।

সমাজে মানুষ বিভিন্ন পরিচয় নিয়ে হাজির থাকে। সমাজের ভাষা ও সংস্কৃতিগত নানান ভিন্নতা ও বৈচিত্র আছে, নানা নৃতাত্ত্বিক জাতি আছে, বিভিন্ন ধর্ম রয়েছে এবং তাদের নিজের নিজের সংস্কৃতি, ধর্ম ও আত্মপরিচয়ের নানান ব্যাখ্যাও আছে। এই বিভিন্নতা ও বৈচিত্র থেকে সমাজ ও সংস্কৃতি তাদের পারস্পরিক ঐক্যের রসদ সংগ্রহ করে। সমাজ গতিশীল থাকে। পরস্পরের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা যেমন থাকে, তেমনি নানান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় ও নিত্যনতুন সম্পর্ক নির্মাণের মধ্য দিয়ে একট (আরো পড়ূন)

'ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ': প্রাসঙ্গিক মন্তব্য

“শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার যে সংকট আমরা দেখছি তাতে এটা নিশ্চিত বলা যায় বাংলাদেশে ফ্যসিবাদ আরো প্রকট ও রাজনৈতিকভাবে আরো হিংস্র রূপ নিয়ে হাজির হবার সম্ভাবনা রয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সংবিধান ও বিচার বিভাগকে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করবার জন্য যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তা একটি আগাম ইঙ্গিত মাত্র”। (ফ্যসিবাদ সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক মন্তব্য)

কথাগুলো গত বছর (২০১২) ফেব্রুয়ারিতে ‘ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ’ নামে প্রকাশিত বইয়ের ভূমিকা হিশাবে লেখা হয়েছিল। ফ্যসিবাদ এখন পূর্ণ রূপ নিয়ে বাংলাদেশে হাজির হয়েছে এবং দেশের মানুষকে স্পষ্ট দুই ভাগে ভাগ করে ফ (আরো পড়ূন)

শেখ হাসিনার নাম হবে ‘কারজাই’

দৈনিক সমকাল ঘোর আওয়ামীপন্থী পত্রিকা হিশাবে পরিচিত। গত আটই মার্চে দেখলাম তারা আট কলামে বড় লাল অক্ষরে প্রথম পাতায় শিরোনাম করেছে ‘মহাসংকটে দেশ’। বোঝা যাচ্ছে এটা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের কোন একটি অংশের উপলব্ধি। ঘটনা ঘটছে দ্রুত। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী ও শক্তি এই পরিবর্তনশীল ঘটনার মধ্যে কখন কী উদ্দেশ্যে কি অবস্থান গ্রহণ করছে সেটা এই ধরণের খবর দেখে আন্দাজ করা যায়। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর যে অংশ চতুর্দিকে পরিস্থিতি দেখে আতংকিত হয়ে পড়েছে এবং অশান্তি, সহিংসতা, বল প্রয়োগ ইত্যাদিকে নৈতিক জায়গা থেকে নিন্দা করে ভেবেছিল প্রলয় বন্ধ থাকবে, তারা এখন প্রকাশ্যে তাদের আতংক ব্যক্ত করছে। ইন্টারেস্টিং।

এই আতংকিত মধ্যবিত্তের পক্ষে সম্ভাব্য রাজনৈতিক (আরো পড়ূন)

রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের নতুন সাংগঠনিক রূপ

প্রথমে একটি কথা স্পষ্ট ভাবে বলা দরকার। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের নাগরিকদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটেছে, অনেক বাড়ি জ্বালিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা হয়েছে। যারা এই হামলার স্বীকার হয়েছেন তাদের প্রায় প্রত্যেকেই গরিব ও নিপীড়িত শ্রেণির মানুষ। তাঁদের অপরাধ তারা হিন্দু। মনে রাখতে হবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণমানুষের পালটা ক্ষমতা যদি কেউ তৈরী করতে চায় তাহলে তার প্রথম কাজ হচ্ছে মাঠে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা। এটা স্রেফ বিএনপি বা জামাতের একটি কি দুটি বিবৃতি দিয়ে দায় সারার ব্যাপার নয়। মাঠে করে দেখানোর বিষয়।

রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা এই ধরণের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার (আরো পড়ূন)

‘গণহত্যা’ কী?

সরকার যে হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে পরিকল্পিত ভাবে একটি বিশেষ গোষ্ঠিকে ‘নির্মূল’ করাই সরকারের উদ্দেশ্য। একে কেন গণহত্যা বলা হচ্ছে তাতে অনেকে আপত্তি করছেন। এই হত্যাযজ্ঞ যারা চালিয়ে যেতে চান তারাই এই প্রশ্ন তুলছেন। যদি রক্ত তারা ঝরাতে না চান তাহলে সকল পক্ষকে অবিলম্বে হানাহানি বন্ধ করবার জন্যই তারা ডাক দিতেন। কূটতর্ক করতেন না। কিন্তু তারা তা না করে এই হত্যাকাণ্ড গণহত্যা কিনা সেই কূটতর্কই শুরু করেছেন। আমি এর আগে বারবার বলেছি সরকার যেভাবে মানুষ হত্যা করছে সেটা গণহত্যাই। এই হত্যালিপ্সা নিবৃত্ত করা দরকার। পুলিশের প্রতিও দাবি জানাতে হবে যেন অবিলম্বে গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করে। জামাত-শিবিরকেও অবিলম্বে সকল প্রকার হামলা ব (আরো পড়ূন)

বেহাত শাহবাগ ও রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞের সম্পর্ক

‘ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই’ শ্লোগান নিমিষে পরিণত হল ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি’ শ্লোগানে— ট্রাইব্যুনাল দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যু দণ্ডাদেশ রায় ঘোষিত হওয়ার পর। আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল শাহবাগ চত্বরে যেখানে ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের ডাকে যুদ্ধাপরাধীদের ‘ফাঁসির’ দাবিতে সাধারণ মানুষ, মিডিয়া এবং তথাকথিত বামপন্থীরা ২৫ দিন ধরে অবস্থান করছিলেন। অন্যদিকে জামায়াত-শিবির-পুলিশ সংঘর্ষে মারা পড়ল ৬ পুলিশ সদস্য সহ ৫১ জন, আহত তিন শতাধিক এবং এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। কোথাও জামায়াত-শিবির পুলিশের উপর হামলা করেছে কোথাও পুলিশ বিক্ষোভ মিছিলে গুলি করেছে। যেহেতু মরছে জামায়াত-শিবির মিডিয়াও একটি পক্ষ নিয়ে নিউজ ট্রিটমেন্ট দিচ (আরো পড়ূন)

নির্মূলের রাজনীতি

নির্বিচারে পুলিশ গুলি করে একদিনে ষাটেরও অধিক মানুষ হত্যা করেছে, এখনও হত্যাযজ্ঞ চলছে। ফলে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। এই বর্বরতার কঠোর নিন্দা করা। এর আগে ‘এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করুন’ বলে আবেদন জানিয়েছি সকল পক্ষের কাছে। কিন্তু তার পরিবর্তে এই হত্যাযজ্ঞকে কেন ‘গণহত্যা’ বলা হোল তা নিয়ে শোরগোল শুরু করে দিয়েছে দলবাজ ও মতান্ধরা। তারা বলছে জামাত শিবির পুলিশের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে, অতএব নির্বিচারে পুলিশ দিয়ে মানুষ হত্যা জায়েজ। কারন মারা হচ্ছে জামাত-শিবির। তাদের দাবি, যেহেতু পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে অতএব ক্ষমতাসীন সরকারের গ (আরো পড়ূন)

বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির পরিণতি

এ লেখাটি মূলত একটি অভিভাষণ। এই সময়ে রাজনৈতিক মঞ্চে সর্বাধিক আলোচিত মানুষ মাহমুদুর রহমানের বই প্রকাশনা উপলক্ষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে অভিভাষণটি দেওয়া হয়েছিল। শাহাদৎ তৈয়ব ভাষণটির অনুলিখন করেছেন। মাহমুদুর রহমানের প্রকাশনার মধ্যে দুইটি তার নিজের লেখা এবং একটি তিনি সম্পাদনা করেছেন। বইয়ের দুইটির নাম হচ্ছে, 'জয় আসলে ভারতের' এবং 'গুমরাজ্যে প্রত্যাবর্তন' , সম্পাদিত বইটির নাম 'দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশঃ সমাজচিন্তকদের ভাবনা'। এই পাতায় ছাপবার দরকারে দরকারে কিঞ্চিৎ সম্পাদনা করে এখানে পেশ করা হোল।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক মেরুকরণ যে চরিত্র গ্রহণ করেছে তাতে শাহবাগের রাজনীতি ও আচরণের বিপরীতে বিপুল ম (আরো পড়ূন)

এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করুন

দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে পুলিশ যেভাবে মানুষ হত্যা করেছে তাকে নির্বিচার গণহত্যা ছাড়া মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের দিক থেকে আর কিছুই বলা যায় না। বিক্ষোভ ও মিছিল দেখলেই গুলি করবার নির্দেশ পালন করছে পুলিশ। মনে হচ্ছে বাংলাদেশে হত্যার উৎসব চলছে। কাদের মোল্লার রায়ে কেন তাকে ফাঁসি দেওয়া হোল না একদল তার বিরুদ্ধে ফেব্রুয়ারির ছয় তারিখ থেকে শাহবাগে  অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে, দাবি করছে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্তদের বিচার নয়, যেভাবেই হোক ফাঁসি দিতে হবে। ফাঁসির রায় ছাড়া শাহবাগ  ঘরে ফিরবে না। আদালতের ওপর এই অন্যায় চাপ অব্যাহত রাখা হয়েছে। এটা ঘটছে প্রকাশ্যে। পেছনে রয়েছে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় ক্ষমতার চাপ।

আদালত&nbs (আরো পড়ূন)

নারী কি শুধু শ্লোগানদাতা?

ঢাকার শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে নারী কন্ঠ সোচ্চার।কখনো গণজাগরণ মঞ্চ থেকে কখনও ছোট ছোট দলে জোরালো কন্ঠে শ্লোগান তুলে হাজার হাজার মানুষকে উদ্বেলিত করেছেন কয়েকজন তরুণী, এটা অবশ্যই চোখে পড়ার মতো এবং ভাল। অনেক তরুণও শ্লোগান দিয়েছেন, কিন্তু তাদের কথা তেমন কেউ বলাবলি করছে না, কারণ মিডিয়া নারীকেই তুলে ধরতে চেয়েছে।এটা ঠিক এই নারীরা মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে না পারলে গলা ফাটালেও এতো আলোচনা হোত না। শাহবাগে তরুণরা যে আন্দোলন করছেন তার সাথে শুরু থেকে নারীদের সম্পৃক্ততা জানা যায় নি, ব্লগার বলতে আমরা শুধু কয়েকজন পুরুষদের চেহারা বা নাম দেখছি। তবে আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে নারীকে দেখা যাচ্ছে। সেই দেখা যাওয়ার বিষয়টি একটু পর্যালোচনা করতে চাই।

গত ৫ (আরো পড়ূন)

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও গোষ্ঠির মধ্যে নানান বিরোধ ও অমীমাংসিত প্রশ্ন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ রয়েছে। তা সত্ত্বেও দলীয় সংকীর্ণতা ও বিভাজনই তীব্রতর হয়েছে, নতুন কোন দিশা হয়ে উঠতে পারে নি। রাজনৈতিক বাস্তবতা বর্তমানে এমন এক মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে যা যেকোন সময় বিপজ্জনক বাঁক নিতে পারে।

নিয়ন্ত্রণহীন সংঘাতের আশংকা গত কয়েকদিনে আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশেষত, গত দুই সপ্তাহের ঘটনা-ঘটন সর্বশেষ যে সংঘাত প্রবণতা তৈরী করেছে তাতে অনেকের মত আমরাও উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতি যেভাবে দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাচ্ছে তা কিছুতেই ইতিবাচক হবে বলে আমরা মনে করি না। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি বিস্তারিত হব (আরো পড়ূন)

“টেলিভিশন”: সিনেমার গল্পের সমস্যা

মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর সিনেমা ‘টেলিভিশন’ রিলিজ হয়েছে সম্প্রতি সিনেমা হলে। কিছু তরুণ বন্ধুদের উৎসাহে শুক্রবার সকালে দশটায় অর্থাৎ প্রথম দিনের প্রথম শো দেখতে গিয়েছিলাম। দর্শকরা ছবিটি কিভাবে নেয়, কি ধরণের প্রতিক্রিয়া জানায় ইত্যাদি জানার দিক চিন্তা ভাবনা করে বন্ধুরা বলাকা হল বেছে নিয়েছিল।

সে হিসাবে যথারীতি সকালে যাওয়া। গিয়ে দেখা গেল টিকেটের চাহিদা এত বেশি যে বলাকা-২ বা আগের নাম বিনাকা হলে, তাও ব্যালকনি নয়, নীচতলার টিকেট পাওয়া গেল। সকাল দশটার আগেই হাউসফুল বোর্ডও টাঙানো হয়েছিল দেখেছিলাম। সকাল নয়টার দিকে বাসা থেকে রওয়ানা দেবার সময় ভেবেছিলাম এই শৈতপ্রবাহের সকালে নিশ্চয় হলে গিয়ে দেখব ভীড় তেমন নাই। দর্শকেরা হয়ত পরের শোগুলোতে ভীড় কর (আরো পড়ূন)

নারী আন্দোলন ও নারী নির্যাতন

সম্প্রতি নারী নির্যাতন, বিশেষ করে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা যেন মহামারীর আকার ধারণ করেছে। সবশেষ ঘটনা মাত্র ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা। করেছে এমন একজন যে এই একই শিশুকে ধর্ষণ করার কারণে জেল খেটে জামিনে ছাড়া পেয়েছে।

এগুলো কিসের আলামত? যে দেশে একটি শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ নাই, সে দেশের আর কী থাকে? ধর্ষিত শিশুটি যে বয়সের তাকে নারী বলাও যায় না। যে বয়সে সামাজিকভাবে নারী-পুরুষ বিভাজন স্পষ্ট হতে থাকে শিশুটি সেই সন্ধিচিহ্ন থেকে অনেক দূরে। এই বয়সে ছেলে মেয়েরা একসাথে খেলে, খায় দায়, ঘুমায়, দুষ্টামি করে। এই বয়সের শিশুকে নারী বানিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। নারী হবার বয়সে না পৌঁছেও রেহাই পায় নি সে এই বর্বরতা থেক (আরো পড়ূন)

অহিংসা ও বিপ্লব

[ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী উপমহাদেশে অহিংসার বাণী শুনিয়েছিলেন, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তাতে মোহিত হন নি, তিনি তাকে ‘আফিম খাওয়ানো’ মনে করতেন। মওলানার দাবি, “অহিংসার বাণী এবং অহিংস কৌশল মানুষের বিপ্লবী চেতনাকে ভোঁতা” করে দেয়। কিন্তু এটা নিছকই চেতনাগত সমস্যা নয়। এটা হচ্ছে “চোয়ালেই লাগাম আঁটিয়া দেওয়া”। চিন্তার যে গভীরতা থেকে ভাসানী কথাগুলো বলেছেন তা বুঝতে হলে তাঁর 'অহিংসা ও বিপ্লব' লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

প্রথমত অহিংসাবাদ জালিম ব্যবস্থা উৎখাত করবার জন্য ব্যবস্থার রক্ষকদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের অনিবার্যতা ও প্রয়োজনীয়তাকে (আরো পড়ূন)

তালেবান, স্বাস্থ্যকর্মী, গোয়েন্দা এজেন্ট ও জাতিসংঘ

তালেবান হামলায় স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু। প্রশ্ন হচ্ছে, যুদ্ধের গোয়েন্দা এজেন্ট হয়েই কি জাতিসংঘ নিজেকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে?

গত ১৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানের করাচী ও পেশোয়ারে ছয় জন স্বাস্থ্যকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে পাকিস্তানে এধরণের গুলিতে নিহত বা বোমা বিস্ফোরণ কিম্বা আত্মঘাতি বোমার আঘাতে হতাহত হওয়া প্রায় রুটিন ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সেই বিচারে ১৮ ডিসেম্বরের এই ঘটনা আলাদা বা নতুন কিছুনা। কেউ কেউ হয়ত বলবেন, সংখ্যার দিক থেকে এটা হতাহতের পরিসংখ্যানে সংখ্যা বৃদ্ধির বেশি কিছু নয়। কিন্তু একে আর দশটা রুটিন ঘটনার মতো করে দেখার বিপত্তি আছে। এই ছয় জন স্বাস্থ্যকর্মী হত্যার ঘটনায় চোখ ফেলার কারণ এখানে ভিন্ন। সে দৃষ্টিকোণের কেন্দ্রে আছ (আরো পড়ূন)

উত্তম কুমার বড়ুয়াকে চাই

রামুতে যারা পরিকল্পিত ভাবে এই হামলা করেছেন তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। হাইকোর্ট রিট জারি করেছে যেকোনো ধর্মীয় উপসানালয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। মানে এটা প্রমাণ হল যে বাংলাদেশে মুসলিম ভিন্ন অন্য ধর্মের মানুষরা নিরাপদ নয়। প্রথম আলো সহ প্রায় সব সংবাদ মাধ্যম মিছিলে সমাবেশে লীগ নেতৃত্ব থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা আর ইসলামী জঙ্গিদের দিকে সন্দেহের তীর ছুড়েছেন। একে সাম্প্রদায়িক হামলার পরিচয় দেয়ার ক্ষেত্রে প্রথম আলো সব চেয়ে অগ্রগণি ভূমিকা পালন করেছে। যা একটা বিশাল প্রভাব ফেলেছে নাগরিকদের ভেতর। বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদ সমাবেশ করতেও দেখা গেছে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। এতে আরো সহজ হয়েছে সুশীল সমাজ কে খুশি রেখে নিরাপরাধ মানুষদের গ্রেফতার করা।

বিশ্ব (আরো পড়ূন)

বৌদ্ধ মন্দির ও জনপদের আগুনে বাংলাদেশও ছাই হয়ে যেতে পারে

যে সকল দুর্বৃত্ত বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ জনপদ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে তারা সজ্ঞানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্তিত্বের গোড়ায় আগুন দিয়েছে। পুড়ে যাওয়া ভগবান বুদ্ধের মূর্তি তথাগতের নয়, বাংলাদেশের নিজেরই ছবি। পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ছবি চোখে লেগে আছে। ছাই হয়ে যাওয়া উপাসনাস্থল, প্রায় ভস্ম হয়ে যাওয়া নানান জিনিসপত্রের পাশে পুড়ে যাওয়া টিনের স্তুপ। ঐসবের মধ্য দিয়ে তথাগতের মূর্তি – দূর থেকে মুর্তির গায়ে আগুনে পুড়ে যাবার চিহ্ন, অথচ ওর মধ্যেও দূরে মাথা উঁচু করে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে সুপারি গাছের সারি। ভস্মস্তুপ থেকে নতুন ভাবে উপাসনা গৃহ হয়তো আবার বানানো অসম্ভব নয়। পুড়ে যাওয়া বাড়িঘরগুলোও হয়ত আবার বানানো সম্ভব হবে। কিন্তু যে জায়গাটুকু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়ে বা (আরো পড়ূন)

আতাউস সামাদ ও তারামন বিবির 'বীরপ্রতীক' পদক

সামাদ ভাই যেন হঠাৎ করেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন, কিন্তু তাঁর দরাজ গলার হাসি এবং কথা বলার বিশেষ ভঙ্গি আমাদের কানে বাজতেই থাকবে।সামাদ ভাইয়ের অনেক সাংবাদিক ছাত্র-ছাত্রী আছেন, আমার সে সৌভাগ্য হয় নি। কিন্তু আমি তাঁকে যেভাবে দেখেছি, এবং তাঁর কাছ থেকে যে উপকার পেয়েছি আজ সে কথা না বললে বড় অপরাধ হবে। না, সেটা ব্যাক্তিগত উপকার নয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান কিভাবে দিতে হয় এবং তার জন্য কিভাবে কাজ করতে হয়, কৌশলী হতে হয়, সে শিক্ষা তিনি তাঁর অজান্তেই আমাকে দিয়েছেন। ওর মধ্য দিয়ে তিনটি বিষয়ে তাঁর নীতি ও অবস্থান তিনি আমাদের কাছে অনায়াসেই প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন। কিন্তু সেটা করেছেন মুখে কিছু না বলে শুধু কাজ করবার মধ্য দিয়ে, নীরবে, নিজেকে প্রদর্শন করবার বা গৌরব দা (আরো পড়ূন)

দারুণ রায়! দারুণ বৈচারিক প্রতিভা!

“আমি হচ্ছি ভাঙা কুলা। পঞ্চম সংশোধনী থেকে শুরু করে ত্রয়োদশ সংশোধনী পর্যন্ত সবগুলো রায়ই আমাকে দিতে হয়েছে” - সাবেক বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, মানবজমিন, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১২

বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা বিচার করে বিদ্যমান গণবিরোধী অগণতান্ত্রিক রাজনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থার বিপরীতে জনগণের রাজনৈতিক শক্তি বিকাশের রাজনীতি কী হতে পারে তার নীতি ও কৌশল নির্ধারণই এখন বাংলাদেশের প্রধান বিবেচ্য বিষয়। সেই দিকে নজর রেখে কয়েক কিস্তিতে লেখা শুরু করেছিলাম, প্রথম লেখা ছিল ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে আঞ্চলিক উত্তাপ’ (এখানে দেখুন) । তবে অনিবার্য কারনে লেখার ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েছে (আরো পড়ূন)

বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে ফিরে আসে নাই

ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের হেড অফিস থেকে গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০১২ দিন-শেষে (অর্থাৎ বাংলাদেশের ২১ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে) পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে এক প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

অনেকেই জানেন গত কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভি ওয়াশিংটনে আছেন, এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কথা বলার জন্য তিনি সেখানে আছেন।এখনও ফেরেননি। বিশ্বব্যাংকের সাথে গত ২০ সেপ্টেম্বর তাঁর আলাপের পর বিশ্বব্যাংকের এই বিবৃতি তৈরি ও প্রকাশিত হওয়ার কয়েকঘন্টা আগেই অর্থমন্ত্রী মাল মুহিত ঐদিনই (তবে আমাদের তখন রাত্রি) দেশের রাতের স্থানীয় খবরে ‘বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে ফিরে আসছে’, ‘বিবৃতি আসছে’ ইত্ (আরো পড়ূন)

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আঞ্চলিক উত্তাপ

অনেকে দাবি করছেন, বাংলাদেশের রাজনীতি সংঘাতের দিকে যাচ্ছে আবার। এই দাবির পেছনে তারা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিকেই দায়ি করেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংঘাত নতুন কিছু নয়। ফলে শেখ হাসিনার সরকারের মেয়াদ শেষ হবার তারিখ যতোই ঘনিয়ে আসবে ততোই সংঘাতের সম্ভাবনা বাড়বে। কিন্তু এই সংঘাত বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও রাজনীতির জন্য অতিশয় বিপজ্জনক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা খুব কমই ছিল। কিন্তু ভারতের আভ্যন্তরীন রাজনীতির কারণে পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে এই কথাটি বলবার জন্যই এই লেখাটি লিখছি। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়াদি নিয়ে লিখবার আগে আঞ্চলিক পরিপ্রেক্ষিত সম্পর্কে এই ধারণাটুকু দিয়ে শুরু করতে চাইছি।

বাংলাদেশে আগামি নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড় (আরো পড়ূন)

নতুন গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্র প্রণয়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া ছাড়া বাংলাদেশের  বিকল্প নাই

[ এ বছর ২৩-২৪ জুন নিউইয়র্কে এবিসি কনভেনশানে ফরহাদ মজহার যোগ দিয়েছিলেন। উত্তর আমেরিকার সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকা “ঠিকানা’ এই সম্মেলনের প্রধান উদ্যোক্তা। নিউ ইয়র্ক থাকা কালীন ‘ঠিকানা’ পত্রিকার তরফে জাভেদ খসরু তখন একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। অগাস্টের শেষ সপ্তাহে "শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে কেন বলা যাবে না, তিনি কি ফেরেশতা?"  শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশে সাক্ষাৎকারটির একটি সংক্ষিপ্ত রূপ দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় (২৬ আগাস্ট ২০১২) ছাপা হয়েছে। তাদের শিরোনামঃ "সংবিধান জনগণের অধীন থাকলে সংসদ, নির্বাহী ও বিচার বুভাগে শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে বিতর্ক উঠত না"। এখানে পুরা সাক্ষাৎকারটি পেশ করা হোল।] (আরো পড়ূন)

শেখ মুজিবুর রহমান

[ দুই বাংলার সাহিত্য সংস্কৃতি সমাজ ভাবনাকে এক মলাটের মধ্যে তুলে ধরার বাসনায় কবি গৌতম চৌধুরী গত শতকের ৯০ দশকে কলকাতা থেকে ‘যুক্তাক্ষর’ নামে একটি কাগজ বের করেছিলেন। প্রথম সংখ্যা বেরোয় আগস্ট ১৯৯৪ সালে। উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার বাংলাভাষীদের লেখা একই মলাটে পেশ করা। ওর মধ্য দিয়ে পরস্পরকে চেনা ও জানা ছিল প্রাথমিক একটি উদ্দেশ্য। কিন্তু আরও বড় আশা ছিল সীমান্তের দুই দিকেই উপমহাদেশের ইতিহাস ও তার ফলাফলকে নির্মোহ দৃষ্টি দিয়ে বিচার করবার চর্চা প্রশস্ত করা এবং তার ইতিবাচক ফল হিশাবে শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি সমাজ ইতিহাস ভাবনা ইত্যাদির মধ্যে তা আত্মস্থ করা। অল্প কয়েকটি সংখ্যা বেরিয়েছিল, তবুও স্ব (আরো পড়ূন)

দুর্নীতি বিরোধিতার তত্ত্ব পাল্টিয়ে সুশীলদের হাসিনা রক্ষার রাজনীতি

বাংলাদেশের সঙ্গে পদ্মাসেতু প্রকল্প চুক্তি বিশ্বব্যাংক বাতিল করায় বিশ্বব্যাংক নিয়ে তর্ক উঠেছে। বিতর্ক নানান দিক থেকে জমে উঠেছে। অন্যান্য তর্কের তুলনায় 'সুশাসনের' প্রবক্তা 'সুশীল সমাজ' কী অবস্থান নিল তার আলাদা গুরুত্ব আছে। মনে হচ্ছে তারা বড়ই অস্বস্তি আর বিপদে আছে। এই তর্ক তাদের তাদের ইজ্জত ও সম্মান একেবারে ছেড়াব্যাড়া করে ছেড়েছে। অবস্থা হয়েছে দশহাত শাড়ির মত, একদিক ঢাকতে গেলে আরেক দিক উদোম হয়ে পড়ে। এই এক দুর্দশা। শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে গেলে তাদের দুর্নীতিবিরোধী নীতি ও তত্ত্ব যায়, তবু শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে তারা তাদের তত্ত্বই বদলাচ্ছে।

বাংলাদেশে ২০০৪ সাল থেকে এক বগলে দুর্নীতি উৎপাটন আর অপর বগলে তথাকথিত সুশাসনে (আরো পড়ূন)

হুমায়ূন, রাজনীতি ও ‘মানবিক সম্পর্ক’

‘আমার কাছে মানবিক সম্পর্ক রাজনীতির চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয় বলে মনে হয়’- হুমায়ুন আহমেদ

হুমায়ূন ‘জনপ্রিয়’। কিন্তু এই জনপ্রিয়তাটা কিভাবে ব্যাখ্যা করব? জনপ্রিয়তার সুবিধাটা হুমায়ূনের পুঁজি হতে পেরেছে। তাকে নিয়ে বই ও মিডিয়া ব্যবসায়ী ব্যবসা করে গেছে; হুমায়ূনের মৃত্যুর ফলে মৃত হুমায়ূন নিয়েও আরও ব্যবসায়িক ফায়দা তোলার সুযোগ তৈরী হয়েছে। তার জন্য ব্যবসায়ীরা আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেটা শুরুও হয়ে গিয়েছে। হুমায়ূন কর্কট বা ক্যান্সার রোগে মারা গেছেন। ক্যান্সারে মারা যাবার কারনে যে মানবিক সহানুভূতি তৈরী হয় সেটাও ব্যবসার কাজে লাগবে। বাজার এইভাবেই কাজ করে।

আবার এই জনপ্রিয়তা রা (আরো পড়ূন)

ইন্ডিয়া থিকা হুমায়ূন আহমেদ

[হুমায়ূন আহমেদ সম্প্রতি গত হয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা অনস্বীকার্য, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর অপরিসীম উৎসাহ এবং একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও তাদের সমর্থকদের পক্ষপাত। অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুর আগে হুমায়ূন শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘দেয়াল’ নামে একটি উপন্যাস লিখেছেন। কথাকার হিশাবে হুমায়ূন গণমাধ্যমের যে বিপুল সমর্থন ও প্রচার পেয়েছেন তার কণামাত্রও আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের কপালে জোটে নি। এই তথ্য তুলনার জন্য নয়, বরং হুমায়ূনের সাহিত্যিক ও নান্দনিক বিচারের চেয়েও একটি জনগোষ্ঠির বিশেষ সময়ের সামাজিক ও রাজনৈতিক লক্ষণ বোঝার জন্য এই তুলনা মনে রাখা জরুরী। এর সুবিধা হচ্ছে সাহিত্যিক, নাট্যকার কিম্বা ছবিওয়ালাদের সমাজ ও রা (আরো পড়ূন)

পদ্মা সেতু ঋণ বাতিল ও বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশে বিশ্বব্যংকের যে এত ভুরি ভুরি সমালোচক আছে পদ্মাসেতু নিয়ে কথা-বার্তা উঠার আগে তা ঠাহর করা যায় নাই। এহ বাহ্য, প্রকারান্তরে মিডিয়ার উপর শেখ হাসিনার দখল কতখানি তা বেশ অনুভব করা গেছে। এসব সমালোচনার মূল বিষয়, হাসিনা সরকারের দিকে দুর্নীতির উঠানো আঙ্গুল যে যেভাবে পারে সত্য-মিথ্যা, আর্ধেক বুঝা, না-বুঝা দিয়ে মুচড়ে দেয়া। আর সেই সঙ্গে বিশ্বব্যংকের বিরুদ্ধে এ উসিলায় একপ্রস্থ লিখার আনন্দে অনেকে জ্ঞানের বহর খুলতে শুরু করেছে! ষ্ট্রাটেজিটা হলো,হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যেখান থেকে এসেছে সেই প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংককের গায়েই কালি লাগানো;এতে যার যা সাধ্যে কুলায়, এমন সমস্ত তীর ছুড়ে যতটা সম্ভব হাসিনার ইমেজ ড্যামেজ বা ক্ষতি রিপেয়ার করা। ব্যাপারটা (আরো পড়ূন)

ইজিপ্ট ২: ইসলামি রাজনীতিতে রাষ্ট্র ও ক্ষমতা ভাবনার সঙ্কট

আগের পর্বে বলেছিলাম, গণ-আন্দোলনের চাপে মোবারকের সরে যাওয়ার পর ট্রানজিশনাল বা অন্তর্বতীকালিন সরকার কে হচ্ছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্বতীকালিন সরকার হিসাবে যা তৈরি হবে তা গঠন করার সময় ও পরে এর উপর রাস্তার আন্দোলনের যদি একক কোন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃত্বই না থাকে তবে বুঝতে হবে গণ-আন্দোলন একটা গর্ভস্রাবে পরিণত হতে যাচ্ছে। অন্তর্বতীকালিন সরকারে কে থাকবে, কারা সদস্য হবে তা নিয়ে গণ-আন্দোলনের কাউকেই প্রকাশ্যে বা ড্রয়িং রুমে ডেকেও মতামত চাওয়া হয় নাই। অন্তর্বতীকালিন সরকার কিভাবে হচ্ছে সেই পুরা ব্যাপারটাই ঘটেছে, বলা ভাল ঘটতে সক্ষম হয়েছে মোবারক ও সামরিক কাউন্সিলের কর্তৃত্বে, নিয় (আরো পড়ূন)

মোরসির ক্ষমতা কতদূর প্রশ্ন কেন উঠছে?

ইজিপ্টের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মানে দ্বিতীয় দফার রান-অফ নির্বাচন শেষ হবার পর, আরও তাৎপর্যপূর্ণ এই যে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণায় ২৫ জুন সন্ধ্যায় ব্রাদারহুডের প্রার্থী মোহম্মদ মোরসিকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। তবু দেশি-বিদেশি মিডিয়ায় সব জায়গায় মূল আলোচনার বিষয় মোরসির ক্ষমতা কি কি, কত দিনের প্রেসিডেন্ট, কি তাঁর কাজ এবং কাজের সীমা ইত্যাদি। কোন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী (প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট) বলতে প্রচলিত যে ধারণা দুনিয়ায় আছে সেই রকম একটা ভাবের মধ্য দিয়ে এই নির্বাচন ঘটেছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোন রাষ্ট্রের বেলায় নির্বাহী প্রেসিডেন্ট বলতে দুনিয়াতে প্রচলিত ভাবটা কে কি বুঝে তা দিয়ে কোন কাজ চলতে পারে না, বরং ঐ সুনির্দিষ্ট রাষ্ট্রের বেলায় নির্বা (আরো পড়ূন)

হিলারির সফর ও বাংলাদেশের ‘কৌশলগত’ তাৎপর্য

যতোদূর জানা যায়, হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে আসেন নি, অর্থাৎ যে সময় শেখ হাসিনা তাকে চেয়েছেন সেই সময় নয়, ডক্টর ইউনুস নিয়ে টানাপড়েন একটা কারন ছিল। এমন কি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরপরই তাঁকে বাংলাদেশে আনবার চেষ্টা চলছিল। এই বছর মে মাসে চিন থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লী যাবার পথে মাঝখানে ছুটির দিনে বাংলাদেশ সফরে আসার দিনক্ষণ হিলারি নিজেই নির্ধারণ করেছেন। আসার পর  তিনি প্লেন থেকে নেমেছেন দেরি করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি তার জন্য যে নৈশভোজের আনজাম করেছিলেন, হিলারি তাতে শামিল হন নি। অনেকে ধরে নিয়েছেন তিনি সরকারের কাছ থেকে একটা দূরত্ব বজায় রাখতে চেয়েছেন। কি (আরো পড়ূন)

হিলারি ক্লিনটনের ‘স্মার্ট পাওয়ার এপ্রোচ’

হিলারি ক্লিনটন শুধু বাংলাদেশে আসছেন না। প্রথমত তিনি আসছেন চিন থেকে। তারপর তিনি আসবেন বাংলাদেশে। বাংলাদেশ থেকে যাবেন ভারতে। কলকাতায় মমতা ব্যানার্জির সঙ্গেও দেখা করবেন। তাঁর বাংলাদেশ সফরকে দিল্লী-ঢাকা-ওয়াশিংটন মিলে চিনের বিরুদ্ধে একটা প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তোলার সফর হিশাবে দেখতে চাইছেন অনেকে। এটা খুবই সরল ভাবে দেখা। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা এবং ভাঙন বেসামাল হয়ে পড়ছে প্রায়ই। এর কারনে শক্তিশালী দেশগুলোর সামরিক ও নিরাপত্তা ভাবনা নতুন বাস্তবতায় বদলাচ্ছে। এর রূপ ঠিক কী দাঁড়াবে সেটা এখনও স্পষ্ট হয়ে ওঠে নি। চিনের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈরিতাও আগের মতো তীব্র নয়, এবং এই বৈরিতা চিরস্থায়ী হবে সেটাও আগাম অন (আরো পড়ূন)

মানবাধিকার ও হরতাল বিরোধিতার রাজনীতি

মানুষকে ‘গুম’ করে ফেলার অপরাধ মানবাধিকারের চরম লংঘন। রাষ্ট্র নাগরিকদের রক্ষা করবার কথা, কিন্তু রাষ্ট্রই নাগরিকদের ‘গুম’ করে ফেলছে। যে ‘গুম’ হয়ে যাচ্ছে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না, কিম্বা কিছুদিন পর তার লাশ আবিষ্কৃত হচ্ছে। এই অপরাধের বিরুদ্ধে বিএনপির ডাকা হরতালের ইতিবাচক দিক হচ্ছে মানবাধিকার রক্ষার লড়াই জাতীয় রাজনীতির বিষয়ে পরিণত হবার সম্ভাবনা এই প্রথম বাংলাদেশে তৈরী হয়েছে। কিন্তু হরতাল বিরোধী প্রচারনাও তীব্য চলছে। হরতাল বা কঠোর রাজনৈতিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে যেভাবে চতুর্দিকে প্রচার চলছে সেই প্রচারের রাজনৈতিক চরিত্র বোঝা এখন একটা জরুরী কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘গুম&r (আরো পড়ূন)

‘গুম’ হয়ে যাওয়ার বিভীষিকা ও বাংলাদেশের বিপদ

বিএনপির নেতা সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী এখনও ‘গুম’ রয়েছেন। আজ ২৩ এপ্রিল তার জন্য বিএনপির দ্বিতীয় দিনের হরতাল চলছে। যদি ইলিয়াস ছাড়া না পান তাহলে এই হরতাল লাগাতার চালানো হবে বলে বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে আরও অনেকে গুম হয়েছে। তারা সাধারন নাগরিক। মানবাধিকার কর্মীরা এর বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে সোচ্চার ছিলেন। এতে ‘গুম’ হয়ে যাবার বিভীষিকা মানুষের মনে ছাপ ফেলেছে। ইলিয়াস আলী একজন গুরুত্বপুর্ণ রাজনৈতিক দলের নেতা। তিনি ‘গুম’ হয়েছেন বলে ‘গুম’ ব্যাপারটি এখন একটি দলীয় রাজনৈতিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই লেখা যখন লিখছি তখন তাঁর নির্বাচনী এলাকা বিশ্বনাথপুরে পুলিশ ও গ্রামবাসীর (আরো পড়ূন)

মাশুল ছাড়াই চালু হল ট্রানজিট

কোন ধরনের ট্রানজিট ফি ছাড়াই ইনডিয়াকে ট্রানজিট সুবিধা দিতে গত ৩০ নভেম্বর প্রথম সমঝোতা স্মারকটিকে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ। এই সমঝোতার ফলে দেশটির প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইনডিয়া কোন ধরনের ফি ছাড়াই তার পশ্চিমের মূল ভূখ- থেকে যুদ্ধবিক্ষুদ্ধ পূর্বাঞ্চলে যাওয়ার করিডোর সুবিধা পাবে বাংলাদেশের অবকাঠামো ব্যবহার করে। উল্লেখ্য, উনিশশ একাত্তরে সাবেক পাকিস্তানের সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধে জিতে রাষ্ট্র হিশাবে বাংলাদেশের যাত্রা শুরুর পর থেকেই ইনডিয়া এমন করিডোর সুবিধা পেতে কূটনৈতিক দেন দরবার সহ নানা উপায়ে চেষ্টা করে আসছিল।

তিরিশে নভেম্বরের ওই সমঝোতার পাশাপাশি এখন অন্যান্য বড় আকারের ট্রানজিট চুক্তিগুলার আনুষ্ঠানিকতা দ্রুত শেষ করতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় (আরো পড়ূন)

কৃষি ও খাদ্যে সার্বভৌমত্ব

উবিনীগ ও নয়াকৃষি আন্দোলনের ধান মেলা ও কৃষক সমাবেশ

ডিসেম্বর মাসের দুই থেকে চার তারিখ উবিনীগ ও নয়াকৃষি আন্দোলনের ধানমেলা ও কৃষক সমাবেশ হয়েছিল টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার রিদয়পুর বিদ্যাঘরে। নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘উবিনীগ’ এর একটি উদ্যোগ হচ্ছে নয়াকৃষি আন্দোলন। দেশীয় বীজের সংরক্ষণ, পুনরুৎপাদন, খাদ্য সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা এবং রাসায়নিক সার ও কীট নাশক মুক্ত চাষাবাদ বিস্তারে মেলাটির আয়োজন করা হয়। উনিশটি জেলা থেকে দুই হাজার কৃষক মেলায় যোগ দিয়েছিলেন। মেলায় ছিলেন চিন্তার নিজস্ব প্রতিবেদক আতাউর রহমান রাইহান

‘আঁরা কত সোন্দর আছিলাম!’

নিজের নাম ঠিকানা জানি (আরো পড়ূন)

টাঙ্গাইলে  নয়াকৃষির ধান মেলা

ধানের বৈচিত্র রক্ষা ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম

উবিনীগ ও নয়াকৃষি আন্দোলনের আয়োজনে দুই থেকে চার ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের রিদয়পুর বিদ্যাঘরে ধান মেলা ও কৃষক সমাবেশ চলছে। মেলায় বিভিন্ন এলাকার নয়াকৃষির কৃষকদের সংগৃহীত ধানের বীজের প্রদর্শনী চলবে। প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত এ মেলা চলবে। এসবের পাশাপাশি ডিসেম্বরের তিন তারিখে বিশ্ব কীটনাশক বন্ধ দিবস উপলক্ষে সকাল নয়টায় মিছিল হবে। চার ডিসেম্বর হবে কৃষকদের শপথ অনুষ্ঠান। এছাড়া প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে একটা পর্যন্ত ও বিকাল তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত দুটি অধিবেশ (আরো পড়ূন)

প্রতিরক্ষানীতি

একীভূত সীমান্ত বা যৌথ টহলের আত্মঘাতী বন্দোবস্ত

সম্প্রতি ঢাকায় শেষ হওয়া বিডিআর এবং বিএসএফ শীর্ষ সম্মেলনটা রুটিন কর্মসূচি। দুদেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিবদমান সমস্যা সুরাহার জন্য এধরনের বৈঠক ঢাকা কিম্বা দিল্লিতে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানের নেতৃত্বে হয়। সেখানে ইনডিয়ার তরফে কিছু গৎবাঁধা আশ্বাস শুনিয়ে দেয়া হয়। ব্যাস এটুকুই। তারপরও, যথারীতি চলতে থাকে যখনতখন গুলি করে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা, ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন, অনুপ্রবেশ, জায়গা দখল, বাংলাদেশের সীমানায় এসে বাঙ্কার স্থাপন সহ যাবতীয় আগ্রাসী কর্মকাণ্ড। এটা একটা নিরবচ্ছিন্ন এবং (আরো পড়ূন)

সীমান্তে ইনডিয়ার আগ্রাসন ও অনুপ্রবেশ

সরেজমিন জৈন্তাপুর

ওপরের আলোকচিত্রে দেখা যাচ্ছে জৈন্তাপুর সীমান্তে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হ্যান্ডমাইক দিয়ে ইনডিয়ার অনুপ্রবেশকারীদের ফিরে যেতে বলছে। সিলেট জৈন্তাপুর সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়ারা বাংলাদেশের সীমানার ভেতর ঢুকে জমি জবরদখল করার ঘটনা ঘটাচ্ছে অনেক দিন ধরে। গত মার্চ-এপ্রিলে সেখানে খাসিয়াদের বাংলাদেশী জমি জবরদখল এবং বিএসএফ-বিডিআরের মারাত্মক উত্তেজনার পর দুইদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত বিরোধ নিরসনে কয়েক দফা বৈঠকও হয়। কিন্তু এরপরও গত চার জুলাই জৈন্তাপুরের শ্রীপুর-মিনাটিলা সীমান্তে অনুপ্রবেশ ও আগ্র (আরো পড়ূন)

স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এর সাথে আলাপচারিতা

ড. মিজানুর রহমান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যসেবা খাতে মানবাধিকার নিশ্চিত হচ্ছে কি না--সে বিষয়ে তদারকি করতে সম্প্রতি তিনি রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলা পরিদর্শন করেন। এর সূত্র ধরে মানবাধিকারের সাথে স্বাস্থ্যসেবার সম্পর্ক এবং বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবা খাতে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে জনাব রহমানের সাথে চিন্তা’র পক্ষ থেকে আলাপে ছিলেন রোকেয়া বেগম

 চিন্তা: আমরা জানি, আপনি স্বাস্থ্য ইস্যু নিয়ে কাজ (আরো পড়ূন)

সরকারি হাসপাতাল বা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যসেবা

ঢাকার তিনটি সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার হালচাল

 চিন্তা’র তরফে সম্প্রতি ঢাকা শহরের তিনটি সরকারি হাসপাতাল--ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্বাস্থ্যসেবার হালচাল ঘুরে দেখেছেন আমাদের প্রতিবেদক রোকেয়া বেগম ও শাহীনুর বেগম

 ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১০। সকাল ১১.৩০ টা থেকে ১.৩০

এই সময়ের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনডোর বিভাগ ও বহির্বিভাগ ঘুরে রোগীদের অবস্থা দেখার চেষ্টা করি। আমরা দেখতে পাই, ইনডোর ব (আরো পড়ূন)

মুখ দেখে যায় কি চেনা? - ২

রাষ্ট্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, পর্দা ও আধুনিক আকিদা

(গত কিস্তির পর)

নারীরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল। স্বয়ংসপূর্ণ না। সেহেতু তারা পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্বের যোগ্য না। ইচ্ছার স্বাধীনতা তত্ত্বের মহাপ্রচারক রুশোর চিন্তার ধরন ছিল একই। দুর্বল নারীদের রাজনীতিতে আসার দরকার নাই। তারা বরং অন্দর মহলেই থাকুক। নারীবাদীরা স্বভাবতই রুশোর ওপর খাপ্পা। কিন্তু সুখ্যাত ফরাসি নারী ইতিহাস বিশেষজ্ঞ মোনা ওযফ মনে করেন, নারী-পুরুষের এই বিভেদ আসলে সমতা বিরোধী না, বরং বিমূর্ত সমতা ভাবের অন্তর্গত। নারী-পুরুষের বিভেদকে দূর করতে না পারলেও তাকে ঢেকে ফেলে। কাজেই ব (আরো পড়ূন)

মুখ দেখে যায় কি চেনা? - ১

পোষাক ও পর্দা: ধর্মনিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্র

ধরা যাক এমন একটা পরিস্থিতি। ল্যাংটা অবস্থায় হঠাৎ একজন দেখল, অন্যকেউ তাকে দেখে ফেলেছে। তবে ল্যাংটা নিজেই তার চোখ ঢেকে ফেলে। ভাবখানা এমন; যাক বাবা বাঁচা গেল! আমার উদাম শরীর কেউ দেখল কি না--সেটা অন্তত নিজের চোখে আর দেখতে হচ্ছে না। কিন্তু না, বিষয়টা এখানেই শেষ না। এভাবে নিজের চোখ ঢেকে আর কতক্ষণ! মুখোমুখি যে দেখছে তারও যদি একই হাল হয়, তবেই না স্বস্তি আসে। ক্রমশ ল্যাংটা রাজ্য কায়েম (আরো পড়ূন)

পোষাক খাতে মজুরি ও মুনাফা

ন্যূনতম মজুরি পাঁচ হাজার টাকা হলে কি রফতানিমুখি পোশাক খাত বন্ধ হয়ে যাবে?

তীব্র শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে সরকার তৈরি পোশাক খাতের শ্রমের ন্যূনতম মজুরি নতুন করে নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশের মুদ্রার মান ও দ্রব্যমূল্যের বিচারে এ তিন হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির ফলে শ্রমিকরা দারিদ্র্যসীমার অনেক নিচে থেকে জীবন ধারণ করতে বাধ্য হবে। এ খাতের মালিকরা বলছেন, শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী যদি ন্যূনতম মজুরি পাঁচ হাজার টাকা করা হয় তবে দেশের তৈরি পোশাক খাত বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজার, সেই বাজারে বাংলাদেশের (আরো পড়ূন)

কয়লা নীতি

বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং জ্বালানি নিরাপত্তায় কয়লা নীতি

দেশের চলমান জ্বালানি সংকট কাটাতে কয়লা ব্যবহারে এখনো কোন উদ্যোগ চূড়ান্ত করে নাই সরকার। কয়লা ওঠানোর উদ্যোগ এখনো নীতিগত স্তরেই আটকে আছে। জ্বালানি তেল আমদানি করতে হচ্ছে, ক্রমেই বাড়তে থাকা বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে শিল্পখাতের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। আমদানি করা জ্বালানির ওপর নির্ভরতার কারণে একদিকে জ্বালানি নিরাপত্তার অনিশ্চয়তা কাটছে না, অন্যদিকে ব্যয়ও বাড়ছে। কয়লা নীতি না থাকায় কয়লা ওঠানোর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে দে (আরো পড়ূন)

অস্বাভাবিক তাড়াহুড়ায় ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

জ্বালানি নিরাপত্তা ও শিল্পখাত ঝুঁকিতে পড়বে

বিদ্যুৎ সংকট সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার কথা বলে ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করতে বেসরকারি কোম্পানিগুলার সাথে চুক্তি করছে সরকার; আর এই চুক্তির পুরা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে--অনেক ক্ষেত্রে কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়াই এবং অস্বাভাবিক তাড়াহুড়া করে। এমন বেসরকারি কেন্দ্র--ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র--চালু হলে সরকার প্রতিযোগিতামূলক দামে ওই বিদ্যুৎ কিনে নেবে। ফলে, প্রচলিত প্রক্রিয়ার বাইরে এমন তড়িঘড়ি উদ্যোগে একদিকে যেমন চলমান সংকট হয়ত কিছুটা উতরানো যাবে। কিন্তু বাংলাদে (আরো পড়ূন)

পুনর্মুদ্রণ: আদালত অবমাননা ও আদালতের এখতিয়ার

ইতিহাস, সামাজিক বিতর্ক ও আদালতের এখতিয়ার

একটি রিট আবেদনের মামলায় মাননীয় বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি মোঃ মমতাজ উদ্দিন আহমদ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২১ জুন শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিশাবে স্বীকৃতি দিয়ে একটি রায় ঘোষণা করেন। সেই রায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র পুনর্মুদ্রণের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য ২০০২ সালে গঠিত প্রত্যয়ন কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে সরকার চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে বলে অভিমতও দেওয়া হয়েছে। প্রফেসর এমাজউদ্দীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র পুনর্মুদ্রণের বিষয়ে সুপারি (আরো পড়ূন)

ফ্যাসিবাদ ও বাংলাদেশের সংবাদপত্র

সংবাদপত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিহিংসা

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর জুলুম নিপীড়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার যে তৈরি হচ্ছে সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই। আওয়ামী নেতানেত্রীদের ভাষা ব্যবহারের মধ্যেই মাহমুদুর রহমানের প্রতি যে ঘৃণার প্রকাশ দেখেছি তাতে আতংকিত হয়েছিলাম আমি। ভাষা ব্যবহার, মুখ চোখের অঙ্গভঙ্গি ও চামড়ার আন্দোলন থেকে মানুষের অন্তরের বাসনা সহজেই বোঝা যায়। বিশেষত মতিয়া চোধুরীর কাছ থেকে অনেক কিছু আমরা আশা করি না। অগ্নিকন্যার আগুন যদি প্রতিহিংসার অগ্নিরূপ ধারণ করে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তখন (আরো পড়ূন)

আঞ্চলিক: নেপালে স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক পরিগঠন

চার বছর ধরে জমে থাকা দায় শোধ করতে হবে দ্রুত

  • সাবেক গেরিলা যোদ্ধাদের সন্তোষজনক বেসামরিক জীবনযাত্রা অনিশ্চিত
  • সেনাবাহিনীর গণতন্ত্রায়ন ও নির্বাচিত মন্ত্রীসভার অধীন করার বিষয়ে অগ্রগতি হয় নাই
  • রাষ্ট্রের চরিত্র ও কাঠামোর বিষয় এখনো অমীমাংসিত

সুরাহা করতে হবে চার বছর ধরে জমে থাকা সমস্যা

নেপালের সাংবিধানিক পরিষদ এখন সংবিধান প্রণয়নে আরো একবছর সময় পাচ্ছে--গত আটাশে মে’তে অন্তর্বর্তী সংবিধানে সংশো (আরো পড়ূন)

আঞ্চলিক: নেপালের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি

মাঝরাতের সমঝোতায় আরো এক বছর সময় পেল নেপাল

নেপালের সংবিধান হয়তো মাওবাদীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল ঊনত্রিশে মে’তে রাজপথ থেকেই ঘোষিত হতে যাচ্ছিল, যদি তার আগের দিন গত আটাশে মে মাঝরাতে দেশটির সাংবিধানিক পরিষদের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়াতে অর্ন্তবর্তী আইনভায় সমঝোতায় না পৌঁছতে পারতেন রাজনীতিকরা। সেক্ষেত্রে আবারো চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছিল দেশটি। কিন্তু সেই আশংকা এড়ানো গেল। খুব শীঘ্রই নতুন অন্তবর্তী সরকার গঠন করা হবে, আগের সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হবে এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন--এই তিন দফা প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী আইনপরিষদে সংখ্য (আরো পড়ূন)

ইনডিয়ার পানি আগ্রাসন ও নিরাপত্তা ঝুঁকি

ফারাক্কা ব্যারেজ, স্পাই-থ্রিলার ও দক্ষিণ এশিয়ায় আশু সংঘাত

এক.

বাংলাদেশের এই জমিন তৈরি করেছে শিরা-উপশিরার মতো বয়ে যাওয়া নদ-নদী, তারা জলের সাথে বয়ে এনেছে পলি, কণা কণা পলি জমে জমে তৈরি হয়েছে আমাদের পায়ের নীচের মাটি- বদ্বীপ বাংলাদেশ। এই দেশের বিশাল সবুজে যেই প্রকৃতি ও প্রাণের সমারোহ, সেই সমস্ত আয়োজন নিশ্চিত হয় জলের বিপুল প্রবাহে। পানি ও প্রাণের এক অবিচ্ছেদ্য মানিক-জোড়। পুরো দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশ ও প্রাণব্যবস্থার টিকে থাকার অলঙ্ঘনীয় শর্ত হচ্ছে জলের এমন অবাধ প্রবাহ। অথচ বাংলাদেশের বেলায় জলের এই চলাচল আটকে দিচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র, ইনডিয়া। বাংলাদেশের মানুষ সহ সব প্রাণের অস্তিত্ব হুমকিতে ফেলে দিচ্ছে- প্রাণব্যবস্থা, প্র (আরো পড়ূন)

শ্রম দিবস, নারী দিবস ও পোশাক শিল্পে নারী শ্রমকি

আজ পহেলা মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। আবার কিছূদিন আগে ঘটা করে পালিত হয়েছে ৮ই মার্চ- আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবর্ষ পূর্তি। মে দিবস পালনে বিশেষ জোর না থাকলেও নারী দিবস পালনে রাষ্ট্রীয়ভাবে যেমন বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল তেমনি সমানগুরুত্ব পেয়েছে দেশের উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার সংস্থা, নারী সংগঠন, রাজনৈতিক দল সমূহ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কাছে।

এবারের নারী দিবসের শতবর্ষে সমঅধিকার ও সমসুযোগ প্রতিষ্ঠায় নারী হোক রাজনীতির সমঅংশিদার, শ্লোগানটি সামনে রাখা হয়েছে। তারপরও অনেক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কাছে নারীর উপর সহিংসতার নানা মাত্রা প্রধানভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। বিষয়বস্তু হিশাবে এসব সংস্থা শতকরা কতোভাগ নারী পারিবারিক জীবনে স্বামী অথবা (আরো পড়ূন)

বিডিআর বিদ্রোহ, সীমান্ত নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিবেচনা

পিলখানায় গত বছর সংগঠিত বিডিআর বিদ্রোহের পর আমরা সামগ্রিকভাবে এই প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের ভিতরের যেসকল সমস্যার কথা অভিযোগ আকারে উঠে এসেছিল সেসব বিষয় সহ সর্বোপরি বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা এবং জাতীয় প্রতিরক্ষার গুরুতর সংকট বিবেচনায় বিডিআর-এর গুরুত্ব, এর পুনর্গঠন, পোষাক পরবির্তন, ঘটনার তদন্ত ইত্যাদি নানান দিক নিয়ে কথা বলি। আমরা একজন বিডিআর জাওয়ান, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক হিশেবে মেজর জেনারেল (অব:) মইনুল হোসেন চৌধুরী এবং সাবেক ডিজি বিডিআর হিশেবে মেজর জেনারেল (অব:) ফজলুর রহমানের কাছ থেকে বিষয়গুলো বুঝতে চেয়েছি তারা কিভাবে এগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন। বিশেষত, জাওয়ানদের ক্ষোভ, অভাব-অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও গণহারে অভি (আরো পড়ূন)

'সেনাঅফিসারদের প্রতি বিডিআর জাওয়ানদের একটা ক্ষোভ কিন্তু রয়েছে'

চিন্তা : আপনার নামটা বলুন?

রউফ : আব্দুর রউফ।

চিন্তা : আপনি বিডিআর-এর কত নাম্বার ব্যাটালিয়ানে চাকুরি করতেন?

রউফ : ৩৮ রাইফেল ব্যাটালিয়ানে চাকুরি করতাম।

চিন্তা : আপনি কত সালে চাকুরিতে জয়েন করেছিলেন। আর কত সালে চাকুরি থেকে অবসর নেন?

রউফ : চাকুরিতে ঢুকেছিলাম ১৯৮৮ সালে। আর চাকুরি ছেড়ে চলে এসেছি ২০০৮ সালে। প্রায় ২০ বছর।

চিন্তা : আপনার এই চাকুরি জীবনের কত বছর পিলখানায় কাটিয়েছেন?

রউফ : পিলখানায় আমি প্রায় ১৫ বছর ছিলাম। এছাড়া সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামেও থেকেছি।

চিন্তা : তো, পিলখানায় সাম্প্রতিক সময়ে যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এটা একদিকে যেমন মর্মান্তিক, অন্যদিকে তেমনি অনাকাক্সিক্ষত। আমরা যারা সাধার (আরো পড়ূন)

'আমি বিডিআর বিদ্রোহে হতভম্ব নই কিন্তু মর্মাহত এত লোকের জীবন যাওয়াতে'

[ মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বের জন্য বীরবিক্রম উপাধি পেয়েছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চকুরির সময় ১৯৭১ সালে মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। জয়দেবপুরে। ১৯ মার্চ জয়দেবপুরে সংঘটিত প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের ইতিহাসে তিনি প্রথম ব্যাক্তি যিনি বাঙালিদের ওপর গুলি চালাতে পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্দেশ সরাসরি অমান্য করেছেন। ২৫ মার্চের পর জয়দেবপুর থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বাঙালী সৈন্যদের নিয়ে যুদ্ধে যোগ দেন। কামালপুরসহ আরও কয়েক স্থানে তিনি যুদ্ধ করেন। মইনুল হোসেন চৌধুরী মেজর জেনারেল হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। সেনাবাহিনীতে চাকরিরত থাকাকালে (আরো পড়ূন)

ভারতের পানি ডাকাতি

পানি আগ্রাসন রুখে দিন, সোচ্চার হোন

ফারাক্কা

এ বছর বাংলাদেশের সর্বাধিক তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে যশোরে ৪৩.৭ ডিগ্রী। ১৯৯৫ সালের ২৪ মার্চ বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো বাংলাদেশের ঈশ্বরদীতে। অর্থাৎ বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বৃদ্ধি। এর জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী ভারত কর্তৃক ফারাক্কা বাঁধের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নদী গঙ্গার পানি একতরফা প্রত্যাহার।

(আরো পড়ূন)

টিপাইমুখ বাঁধবিরোধী সংগ্রাম সফল হোক: একটি আহবান

বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে, এটা খুবই স্পষ্ট। ফারাক্কা বাঁধের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জনগণের রয়েছে। এই দেশের জনগণ ‘কারবালা’ কথাটির অর্থ শুধু আক্ষরিক বা ঐতিহাসিক অর্থে বোঝে না। কেউ কাউকে পানিতে মারবার প্রচেষ্টার মধ্যে যে বীভৎস মানসিকতা কাজ করে তাকে বাংলাদেশের মানুষ কারবালার করুণ ইতিহাসের অভিজ্ঞতা থেকে ঘৃণা করতে শিখেছে। ফারাক্কা বাংলাদেশকে কারবালায় পরিণত করেছে। এই উপমহাদেশের পরিবেশ আন্দোলনের ইমাম মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী যখন ফারাক্কার লংমার্চ করেছিলেন তখন তিনি এই বীভৎসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই অসুস্থ শরীর নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। তিনি ভারত কিম্বা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান নি, তিনি প্ (আরো পড়ূন)

কওমি মাদ্রাসার উপর আক্রমণ: দরকার আলেম সমাজের গণসম্পৃক্ততা

‘কওমি মাদ্রাসাগুলি জঙ্গি প্রজনন কেন্দ্র’ আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদের এমন আগ্রাসী মন্তব্যের পর সারাদেশের মাদ্রাসাগুলোর ছাত্রশিক্ষক, আলেমউলামা ও ধর্মপ্রাণ মানুষ হতবাক হয়ে যায়। এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। যার ফলে কওমি মাদ্রাসাগুলো নতুন করে আলোচনায় চলে আসে। পশ্চাৎ থেকে প্রচারমাধ্যমের উসিলায় তুমুল আক্রমণের বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়। সাথে সাথে মাদ্রাসার নেতৃস্থানীয় আলেমদের প্রবল প্রতিবাদ জনগণের কাছে মোটামুটি এটা বুঝাতে সক্ষম হযেছে যে, ঢালাও এবং উদ্দেশ্যমূলক মন্তব্যের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নাই।

দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। সময় খুবই নাজ (আরো পড়ূন)

মাদ্রাসা শিক্ষা প্রসঙ্গে

মাদরাসা শিক্ষা প্রসঙ্গে

ইসলামী শিক্ষার একটি গৌরবময় ও সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। প্রায় ১৩০০ বছরের এই সময়ে ইসলামী শিক্ষাবীদরা জ্ঞানের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছিলেন তৎপর, সরব এবং অগ্রসর। বিস্তৃত এবং সুবিশাল ইসলামী সাম্রাজ্য জুড়ে ইতিহাসখ্যাত শিক্ষাকেন্দ্রগুলির প্রতিষ্ঠা ঘটে। এই বিস্তৃত সময়জুড়ে পৃথিবীতে শিক্ষার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব্ দিয়ে গেছে ইসলামী শিক্ষাবীদরাই। তা সত্ত্বেও অবাক করা একটি বিষয় বেশ লক্ষনীয়।

ইসলামী শিক্ষা দর্শন- এই শিরোনামে যেমন বর্তমানে, তেমনি পিছনের দিনগুলিতেও , খুব একটা কাজ হয়নি। এই অবস্থার যেমন দেখা মেলে পাশ্চাত্য জ্ঞান চর্চার পরিমন্ডলে, তেমনি ইসলামী বিশ্বেও। ইসলামী জ্ঞান চর্চার পরিমন্ডলে এই শিরোনামে কাজ না হওয়ার কারণ মোট (আরো পড়ূন)

ইতিহাস, সামাজিক বিতর্ক ও আদালতের এখতিয়ার

একটি রিট আবেদনের মামলায় মাননীয় বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি মোঃ মমতাজ উদ্দিন আহমদ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২১ জুন শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিশাবে স্বীকৃতি দিয়ে একটি রায় ঘোষণা করেন। সেই রায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র পুনর্মুদ্রণের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য ২০০২ সালে গঠিত প্রত্যয়ন কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে সরকার চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে বলে অভিমতও দেওয়া হয়েছে। প্রফেসর এমাজউদ্দীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র পুনর্মুদ্রণের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য ২০০২ সালে গঠিত প্রত্যয়ন কমিটির তিনি একজন সদস্য। তিনি তাঁর আত্মপক্ষ ব্যাখ্যা করে একটি ব (আরো পড়ূন)

বিডিআর ঘটনা: ইনটেলিজেন্স ও রাষ্ট্র

বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে সবচেয়ে কম আলোচিত দিকটা হলো ইনটেলিজেন্স বা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ। বলা যায়, বিডিআর ঘটনা ইনটেলিজেন্স বিকল বা পরাজিত হবার একটা আদর্শ ঘটনা। এই ইনটেলিজেন্স বিকল বা পরাজয় আবার ঘটেছিল দুই ক্ষেত্রে। দুই ক্ষেত্রে মানে একটা ঘটনা ঘটার আগের আগাম তথ্যের কথা বলছি। আর একটা ঘটনা ঘটে গড়াতে শুরু হয়ে জানা যাবার পর কমপক্ষে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত সময়ের কথা বলছি।

ইনটেলিজেন্স (গোয়েন্দা তথ্য) আর অস্ত্র (বাহিনী) - এরা দুজনে দুজনার। যার হাতে অস্ত্র, বাহিনীতে সংগঠিত অথচ কাজের `ইনটেলিজেন্স নাই অথবা বিকল পরাজিত - এটাকে কেবলমাত্র বাচ্চাদের খেলনা বন্দুক নিয়ে খেলাপাতির খেলার সাথেই বোধহয় তুলনা করা যায়। এই তুলনা আমরা করতেই পারি। কিন্তু সমস্যা হলো (আরো পড়ূন)

ক্রুসেড, জেহাদ ও শ্রেণীসংগ্রাম

১. কয়েকটি পদ্ধতিগত প্রশ্ন

লড়াকু আহমদ ছফা আর কাছে নেই; কিন্তু তার নাম ধারণ করে বানানো ‘আহমদ ছফা রাষ্ট্রসভা’-র প্রথম আলোচনা অনুষ্ঠান ‘ক্রুসেড, জেহাদ ও শ্রেণীসংগ্রাম’। আফগানিস্তানে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও হিংসা-যুদ্ধ এবং আমাদের কর্তব্য বিষয়ে এই সভা। আরও বড়ো পরিসরে বললে দুনিয়া জুড়ে পুঁজির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সম্প্রদায়, জাতি, জনগোষ্ঠি, রাষ্ট্র কিম্বা নারী ও পুরুষের মধ্যে যে লড়াই চলছে তাকে শ্রেণীসংগ্রামের দিক থেকে বোঝার চেষ্টা করা। লড়াইয়ের বাস্তব রূপ যেমন আছে, তেমনি তার বাস্তব ভাষাও আছে, কেতাবি ভাষা নয়। স্থানকালপাত্র বা ইতিহাস ভ (আরো পড়ূন)

ফিলিস্তিন ও জায়নবাদবিরোধী লড়াই

আধিপত্যবাদ? বর্ণবাদ? সাম্রাজ্যবাদ?

ফিলিস্তিনের জনগণের লড়াইকে সাধারণত ‘পাশ্চাত্য আধিপত্যে’র বিরুদ্ধে সবচেয়ে দীর্ঘ, বেদনাজনক এবং কঠিন সংগ্রাম বলে গণ্য করা হয় যার কোনো শান্তিপূর্ণ আশু মীমাংসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু ফিলিস্তিনের প্রশ্ন কি নিছকই ‘আধিপত্য' সংক্রান্ত প্রশ্ন? এ লড়াই একই সঙ্গে ‘বর্ণবাদ’ এবং ‘সাম্রাজ্যবাদ’ বিরোধী লড়াই। আল কুদস দিবস পালন উপলক্ষে অনেকে যথার্থই এই লড়াইকে ‘বর্ণবাদ’ ও ‘সাম্রাজ্যবাদ’ বিরোধী লড়াই বলে গণ্য করেছেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কথাগুলোর মানে কী? ‘আধিপত্যবাদ’, ‘ব (আরো পড়ূন)

ইন্তিফাদা জিন্দাবাদ: ফিলিস্তিনি শিশু-কিশোরদের ঢিল আর গুলতি লড়াই

ফিলিস্তিনের শিশু-কিশোররা লড়ছে ঢিল আর গুলতি দিয়ে। তাদের বিরুদ্ধে ইজরাইলের আধুনিক মারণাস্ত্র, স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, মারকেভা ট্যাংক, মিসাইল, হেলিকপ্টার গানশিপ আর আনুষঙ্গিক ভারি যুদ্ধবাহন। একেকটি ঢিল আর গুলতির গুলির বিপরীতে সব স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র গর্জে উঠছে ইজরায়েলি সৈন্যদের হাতে। শিশু-কিশোরদের বুক আর মাখার খুলি লক্ষ্য করে ছোঁড়া হচ্ছে গুলি। মরছে তারা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনের উল্লেখ করে মার্কিন ভাষাতত্ত্ববিদ এবং মানবাধিকারের প্রশ্নে সরব নোয়াম চমস্কি বলছেন, এই ধরণের বিশদ ও বিস্তৃত প্রতিবেদনের কোনো উল্লেখ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হয় না বললেই চলে। চমস্কি যখন তার ‘আল আকসা ইন্তিফাদা’ নিবন্ধটি লিখছেন ততদিনে কমপক্ষে ১০০ জন ফিল (আরো পড়ূন)

গান্ধী, ফিলিস্তিন ও ইসলাম


‘ফিলিস্তিন আরব জনগণের, ঠিক যে-অর্থে বিলাত ইংরেজদের, অথবা ফ্রান্স ফরাসিদের। আরবদের ওপর ইহুদি জনগোষ্ঠীকে চাপিয়ে দেয়া ভুল কাজ এবং অমানবিকও বটে। ... নিঃসন্দেহে এটা মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ হবে যদি আরবদের অপমানিত করে ফিলিস্তিনের খানিকটা বা পুরোটাই ইহুদিদের হাতে তাদের জাতীয় আবাস দাবি করে তুলে দেয়া হয়।’

এই মন্তব্য একজন মহাপুরুষের। তিনি বিতর্কের উর্ধ্বে নন, সত্যি। এই উপমহাদেশের হিন্দু ও মুসলমান দুটো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা, দ্বেষ ও দাঙ্গা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে তার আন্তরিক অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু তিনি হিন্দু জনগোষ্ঠীর কাছে যতোটা গ্র (আরো পড়ূন)

এই সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিন

এক

সিলভেস্টার স্ট্যালোন নামে অতিশয় পেশিবান এক অভিনেতা আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। র‌্যাম্বো নামক এক যুদ্ধবাজ নায়কের ভূমিকায় ইনি অভিনয় করে থাকেন। খালি গায়ের মারমুখো মাস্তান। নখ থেকে চুল পর্যন্ত যুদ্ধাস্ত্রে সজ্জিত। এই নায়ক হামেশাই অন্য দেশ আক্রমণ করে। মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করবার তাগিদ তার ট্রিগারে, “মুক্তি” আর “গণতন্ত্র” নামক মন্ত্র তার বারুদে সদাই ধ্বনিত। তার কাজ দুনিয়ার তাবৎ “খারাপ লোক”-গুলোকে গুলি করে মেরে ফেলা। কোন নীতি নেই, বাছ বিচার নেই। পৃথিবীর একদিকে আছে “গুড গাইস” অর্থাৎ ভাল লোক। ভাল লোকদের নেতার গায়ের রং, বলা বাহুল্য, সবসময়ই সাদা; আর, ম (আরো পড়ূন)

তাঁত ও তাঁতী অর্থনীতি, রাজনীতি ও জীবন

(দেশের বিভিন্ন এলাকার তাঁতীদের অবস্থা সম্পর্কে জানার সুযোগ সাধারণত হয় না। তবু তাঁত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তাঁতীদের সারিষ, সুতানাচার অভাব, পুঁজির টানাটানি ইত্যাদি খবর মাঝেমধ্যে পত্রিকায় আসে। যেটা আসে না সেটা হোল তাঁতখাতের হালহকিকত। আমরা কি এগুচ্ছি নাকি পিছিয়ে যাচ্ছি তার হদিস নেই। এই সব কথা ভেবে ভীত ও তাঁতীদের নিয়ে এই ক্রোড়পত্র। পাঠকদের

তাঁতীদের জীবন এবং তাঁতখাতের অবস্থা সম্পর্কে একটা ধারণা দেবার চেষ্টা করেছি আমরা। আমরা মনে করি আমাদের শিল্পায়নের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে তাঁতখাতের বিকাশের মধ্যে এবং এ নিয়ে আরো ব্যাপক ভাবনাচিন্তা তর্কবিতর্ক হওয়া দরকার। ব্যাপার (আরো পড়ূন)

কাসেদ আলী কি ভাবতেন: ব্যক্তিগত আলাপের আলোকে একজন অগ্রজ কমিউনিস্টের রচনাবলীর প্রাথমিক পাঠ

‘মার্কসবাদ ফতোয়া ফরাজবাদ নয়’- কাসেদ আলী

কাসেদ আলীকে চোখে দেখার আগে তাঁকে নামে চিনতাম। তাঁর “উপমহাদেশে শ্রেণী ও সমাজ” পুস্তিকাটি পড়ে তাঁর সম্পর্কে একটা ধারণা গড়ে তুলেছিলাম মনে মনে। কারো লিখা পড়ে লিখক সম্পর্কে ধারণা করে নেবার কাজটা বোধহয় আমরা সকলেই কমবেশী করি। বইটি কাসেদ আলী লিখেছিলেন ১৯৬৮-৬৯ সালে। যতোদূর আমার মনে পড়ে বইটি আমার হাতে এসেছিল ১৯৭৬ সালে। দেশ স্বাধীন হবার পর দেশে ছিলাম না অনেকদিন, কিছু সময়ের জন্য ফিরেছিলাম ১৯৭৬ সালে। সেই সময় বাংলাদেশের বিপ্লবী রাজনীতির সঙ্গে যাঁরা জড়িত তাঁরা কি চিন্তা ভাবনা করছেন সেটা গভীর আগ্রহের সঙ্গে জানার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের (আরো পড়ূন)